ঢাকা ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মঙ্গলে ছিল বিশাল সমুদ্র!

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ এএম
মঙ্গলে ছিল বিশাল সমুদ্র!
মঙ্গল গ্রহে সমুদ্র থাকার চিহ্ন। চীনা রোভার ঝুরং এ ছবি ধারণ করেছে। ছবি: এনডিটিভি

মঙ্গল গ্রহে উপকূলরেখার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। অতীতে সেখানে যে এক বিশাল সমুদ্রের উপস্থিতি ছিল, এই রেখা সেটিই প্রমাণ করে। সম্প্রতি চীনা রোভার ঝুরং মঙ্গলে প্রাচীন সমুদ্রের এমন প্রমাণ পেয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, প্রায় ৩৬৮ কোটি বছর আগে সেখানে এই সমুদ্র বিদ্যমান ছিল। সমুদ্রটি তুলনামূলকভাবে দ্রুত বরফের সাগরে পরিণত হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলে সমুদ্রের অস্তিত্বের কথা গ্রহটি যে আগে বাসযোগ্য ছিল বলে সেই প্রমাণকে জোরালো করছে।

চীনের ঝুরং রোভার ২০২১ সালের মে মাস থেকে ছয়টি বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম নিয়ে মঙ্গলে অবতরণ করেছে। সম্প্রতি রোভারটি বিভিন্ন তথ্য ও তার চলার পথে নমুনার তথ্য পৃথিবীতে পাঠায়। 

মঙ্গল গ্রহের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এতে পৃথিবীর উপকূলরেখার মতো দেখা গেছে। মঙ্গলের পলল আর আগ্নেয়গিরির কাদাসহ বিভিন্ন খাদের বৈশিষ্ট্য অতীতে সেখানে সমুদ্র ছিল বলে প্রমাণ করছে। নতুন এই সমুদ্রের খোঁজ মঙ্গল গ্রহে অতীতে উষ্ণ বায়ুমণ্ডলসহ অণুজীবের উপস্থিতির ধারণাকে শক্তিশালী করে তুলবে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে সমুদ্রের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী বো উ বলেন, ‘আমরা অনুমান করছি, ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়া নামের মঙ্গলের এলাকায় প্রায় ৩৬৮ কোটি বছর আগে বন্যা হয়েছিল। তখন সমুদ্র সম্ভবত সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে বরফ হয়ে গিয়েছিল। আমরা ধারণা করছি, প্রায় ৩৪২ কোটি বছর আগে সেই সমুদ্র অদৃশ্য হয়ে গেছে।’

আরেক বিজ্ঞানী সের্গেই ক্রাসিলনিকভ বলেন, সমুদ্র সম্ভবত পলি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়।

আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের মতো মঙ্গল গ্রহ প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হয়েছিল। সেখানে প্রাচীন সমুদ্রের উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে মঙ্গল গ্রহ একসময় আরও বাসযোগ্য ছিল। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য ইনডিপেনডেন্ট

মঙ্গলে আগেই পানি ছিল

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
মঙ্গলে আগেই পানি ছিল
শুরুর দিকে মঙ্গলের লালচে ও শুষ্ক পৃষ্ঠ (বামে), ব্ল্যাকবিউটি উল্কাপিণ্ড (ডানে) যার গবেষণায় মিলেছে পানির অস্তিত্ব। ছবি: নাসা

সৌরজগতের লাল গ্রহ মঙ্গল সম্পর্কে জানতে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। অবস্থানের কারণে এই গ্রহের অনেক স্বতন্ত্র রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ক্লোরিন, ফসফরাস ও সালফারের মতো তুলনামূলক কম ফুটন্ত বিন্দুসহ উপাদানগুলো পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলে অনেক বেশি বিদ্যমান।

অতীতে মঙ্গলের পরিবেশ কেমন ছিল, তা জানার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী মঙ্গল গ্রহ থেকে ছিটকে পড়া উল্কাপিণ্ড এনডব্লিউএ৭০৩৪-এর নমুনা বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, অতীতের কোনো একসময়ে মঙ্গল গ্রহে গরম পানি ছিল। সেটি তাদের ভাষায় ২০০ কোটি বছরের বেশি আগে। 

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ব্ল্যাকবিউটি নামে পরিচিত উল্কাপিণ্ডটি ২০১১ সালে সাহারা মরুভূমিতে পাওয়া গেছে। ৪৪৩ বছরের পুরোনো এই উল্কাপিণ্ড মহাজাগতিক কোনো সংঘর্ষের কারণে মঙ্গল গ্রহ থেকে পৃথিবীতে ছিটকে পড়েছে বলে ধারণা করা হয়। উল্কাপিণ্ডের জিরকন নমুনা বিশ্লেষণ করে পানির রাসায়নিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। আর এই রাসায়নিকের উপস্থিতি ইঙ্গিত করে যে, মঙ্গল গ্রহে একসময় গরম পানি ছিল। 

বিজ্ঞানীদের মতে, ভূতাপীয় বা হাইড্রোথার্মাল সিস্টেম জীবন বিকাশের জন্য অত্যাবশ্যক। পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের জন্য শুরুতে এই সিস্টেম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান মঙ্গল গ্রহের ভূত্বক গঠনের সময়ও ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কার্টিনের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী অ্যারন ক্যাভোসি বলেন, ‘এই আবিষ্কার মঙ্গল গ্রহের প্রাথমিক হাইড্রোথার্মাল সিস্টেম সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহ অতীতে বাসযোগ্য ছিল কি না, তা বোঝার জন্য নতুন তথ্য পাওয়া যাবে। মঙ্গল গ্রহে গরম পানির প্রাথমিক প্রমাণ শনাক্ত করতে ন্যানো- স্কেল জিওকেমিস্ট্রি ব্যবহার করা হয়েছে।’

বিজ্ঞানীরা লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, ইট্রিয়াম, সোডিয়ামসহ জিরকন কণার প্রয়োজনীয় উপাদান শনাক্ত করতে ন্যানো- স্কেল ইমেজিং ও স্পেকট্রোস্কোপি ব্যবহার করেন। এসব উপাদানের প্যাটার্ন থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গল গ্রহের প্রথম দিকে ভূত্বকে পানি ছিল। 

সূত্র: লাইভ সায়েন্স ও আর্থ ডট কম

দেশি মাছে আশার আলো

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ এএম
দেশি মাছে আশার আলো
ময়মনসিংহের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে সম্প্রতি দেশি মাছের পোনা পরীক্ষা করেন দুজন গবেষক। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের বড় অংশজুড়েই রয়েছে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ। দেশে মিঠা পানির ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৪৩টিই ছোট মাছ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় ভরাট, অতি আহরণসহ নানা কারণে ৬৪ প্রজাতির মাছ ছিল বিলুপ্তপ্রায়। এসব মাছ খাওয়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে গবেষণা শুরু করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা। ধীরে ধীরে ৪০ দেশি মাছের সফল প্রজনন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১২ প্রজাতির মাছ চাষের আওতায় এসেছে।

বিএফআরআই সূত্রে জানা যায়, দেশীয় ছোট মাছে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং রক্তশূন্যতা, গলগণ্ড, অন্ধত্ব প্রতিরোধে সহায়তা করে। মাছের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র নষ্ট হওয়ায় প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা ক্রমান্বয়ে কমছে। বিজ্ঞানীদের গবেষণার ধারাবাহিকতায় পাবদা, গুলশা, টেংরা, কৈ, মাগুর, শিং, গুজি আইড়, দেশি সরপুঁটি, জাতপুঁটি, বাটা, বালাচাটা, কুঁচিয়া, কুর্শা, খলিশা, ভেদা, গুতুম, ঢেলা, গজার, ফলি, চিতল, গনিয়া, মহাশোল, বৈরালি, ভাগনা, আঙ্গুস, বাতাসি, পুঁইয়া, কাকিলা, পিয়ালী, রানীসহ ৪০ মাছের সফল প্রজনন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে হ্যাচারিতে পাবদা, গুলশা, শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা, পাবদা, বৈরালি মাছসহ ১২ প্রজাতির মাছ ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে মাঠ পর্যায়ে চাষও হচ্ছে ব্যাপকভাবে। দেশীয় মাছের চাষাবাদ বাড়ায় লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, প্রাচীনকাল থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ সহজলভ্য পুষ্টির উৎস্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু নানা কারণে অনেক মাছ বিলুপ্তির তালিকায় চলে যায়। মাছগুলোকে খাওয়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে নিরলস গবেষণা চালানো হয়। বর্তমানে গবেষকরা দেশীয় মাছ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছেন। দেশে প্রথমবারের মতো বিএফআরআইয়ে দেশি মাছের ‘লাইভ জিন ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই লাইভ জিন ব্যাংকে ৮৮ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব দেশীয় মাছ এখানে সংরক্ষণ করা হবে।

বিএফআরআই মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র বলেন, ‘আগে শুধু ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গবেষণা চালানো হতো। বর্তমানে ময়মনসিংহের স্বাদুপানি কেন্দ্র ছাড়াও বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর ও যশোর উপকেন্দ্রেও বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় মাছের অনেক চাষাবাদের আওতায় এসেছে। নদ-নদী, হাওর ও বিলে দেশীয় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মাছের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে।

মহাকাশে রহস্যময় ধনভান্ডার

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ এএম
মহাকাশে রহস্যময় ধনভান্ডার
সৌরজগতের বিশাল গ্রহাণু ১৬ সাইকি। এতে স্বর্ণ ও প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতু রয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের। ছবি: ইন্টারনেট

মহাকাশ সব সময়ই আমাদের কাছে রহস্যময়। কত রহস্যই না লুকিয়ে আছে এখানে। এই যেমন ধরুন কোথা থেকে কীভাবে এর উদ্ভব? রাতের আকাশে কীভাবে উল্কাবৃষ্টি হয়। কেন হ্যালির ধূমকেতু প্রতি ৭৬ বছর পর একবার করে সূর্যকে ঘুরে যায়। সুপারনোভার মধ্যে লুকিয়ে আছে কত অজানা রহস্য। ইদানীং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেখানে লুকিয়ে থাকা ধনভান্ডার। 

সাধারণত ধনভান্ডার বলতে আমরা একধরনের রহস্যময়তার গন্ধ পাই। এটি থাকে পাহাড় বা বনজঙ্গলের গুহায় কিংবা কোনো উঁচু স্থানে। মাটি খুঁড়েই যেটি তোলা হয়। কিন্তু পৃথিবীর কোনো এলাকায় নয়, এবার গবেষকরা ধনভান্ডারের কথা বলেছেন আমাদের সৌরজগতে। আর রহস্যটা সৃষ্টি হয়েছে সেখানেই। 

১৬ সাইকি একটি বিশাল গ্রহাণু। আমাদের সৌরজগতের অন্যতম রহস্যময় বস্তু এটি। এটি মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এটি এমন একটি গ্রহাণু, যা তার ধাতব গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ১৮৫২ সালে ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আনিবালে দে গ্যাসপারিস এটি আবিষ্কার করেন। গ্রিক পুরাণের ‘সাইকি’র নামে নামকরণ করা হয়। এটি সাধারণ পাথুরে বা বরফের অ্যাস্টেরয়েডের মতো নয়। ১৬ সাইকি মূলত নিকেল ও লোহার মতো ধাতু দিয়ে তৈরি। এর ব্যাস প্রায় ২২৬ কিলোমিটার, যা এটিকে অ্যাস্টেরয়েড বেল্টের অন্যতম বৃহৎ গ্রহাণু করে তুলেছে। এটি সূর্যকে প্রায় ৩৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে প্রদক্ষিণ করে।

গবেষকরা মনে করছেন, ১৬ সাইকিতে স্বর্ণ ও প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতুও থাকতে পারে। এর ধাতব উপাদান যদি অনুমানের মতোই সমৃদ্ধ হয়, তবে এর মূল্য কয়েক কোয়াড্রিলিয়ন ডলার হতে পারে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ খননের জন্য আকর্ষণীয়। ওই পরিমাণ অর্থ দিয়ে পৃথিবীর সবাই কোটিপতি হতে পারেন। ১৬ সাইকির এই রহস্য উন্মোচনের জন্য নাসা চালু করেছে পসাইকি মিশন। এটি শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর। কাজ শেষ হবে ২০২৯ সালে। ২১ মাস ধরে এটি ১৬ সাইকির চারপাশে ঘুরে এর পৃষ্ঠতল, গঠন এবং চৌম্বকক্ষেত্র নিয়ে তথ্য পাঠাবে। 

১৬ সাইকি বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটির খনন এবং এর অর্থনৈতিক দিক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে এত দূরের গ্রহাণু থেকে খনিজ আহরণ করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন তারা। তাই ১৬ সাইকি মহাকাশের এক রহস্যময় ধনভান্ডার হিসেবে থেকে যেতে পারে আমাদের কাছে। তবে এটি গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে জানতে বিরল সুযোগ করে দিতে পারে আমাদের। সূত্র: আজকাল

গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৭ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৭ বাংলাদেশি
গ্লোবাল এটমিক কুইজ

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন (রসাটম) আয়োজিত ‘গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ ২০২৪ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন সাত বাংলাদেশি। অনলাইন এবং অফলাইনে অনুষ্ঠিত এই কুইজে প্রায় ১০০টি দেশের ২৫ হাজারের বেশি বিজ্ঞান অনুরাগীরা অংশ নেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশের সাত জনসহ মোট ১০০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজের ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

এর মধ্যে শীর্ষ তিনজনকে রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে। যাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) রসাটম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তি সুত্রে জানা যায়, ১০ নভেম্বর বিশ্ব বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষে পঞ্চমবারের মতো এই কুইজের আয়োজন করা হয়। গ্লোবাল অ্যাটমিক কুইজ ২০২৪এর মূল লক্ষ্য ছিল সহজভাবে নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের মূল বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা, প্রাত্যহিক জীবনে পরমাণু প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরা এবং পৃথিবীর সুরক্ষায় নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করা। 

মোট ১৩টি ভাষায় কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে ছিল ইংরেজি, বাংলা, রুশ, হাঙ্গেরিয়, স্প্যানিয়, পর্তুগিজ, কিরগিজ, কাজাখ, মঙ্গোলিয়, তুর্কি, উজবেক, আরবি ও ইন্দোনেশিয়। 

বিভিন্ন টপিকের ওপর ২৫টি প্রশ্ন কুইজে অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এমন মূল পাঁচটি ক্ষেত্রের ওপর প্রশ্ন সাজানো হয়। এ সব ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এনার্জি ও পরিবেশ’, ‘পরমাণু বিজ্ঞান’, ‘শিল্প ও পরিবহণ’, ‘স্বাস্থ্য’, এবং ‘খাদ্য ও কৃষি।’ 

অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীকে ডিজিটাল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিজয়ীদের আকর্ষণীয় ‘অ্যাটমিক পাজল’  দেওয়া হয়। 

বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করা এবং পরমাণু প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে রসাটম শিক্ষা অবকাঠামো নেটওয়ার্কে ২৫টি তথ্যকেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালে দুই লাখ ৮০ হাজারের অধিক মানুষ এই তথ্যকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। 

জাহাঙ্গীর হোসেন/জোবাইদা/অমিয়/

নতুন গবেষণা ছায়াপথে দ্রুতগতির তারাগুলো কি বুদ্ধিমান এলিয়েনদের মহাকাশযান?

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ এএম
আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
ছায়াপথে দ্রুতগতির তারাগুলো কি বুদ্ধিমান এলিয়েনদের মহাকাশযান?
ডাইসন স্ফিয়ারের অনুমানমূলক কাঠামোর একটি চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

ছায়াপথের দ্রুতগতির তারকাগুলো হয়তো বুদ্ধিমান এলিয়েনদের নিয়ন্ত্রণে চলছে। নতুন এক গবেষণাপত্রে এমন সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, উন্নত কোনো এলিয়েন সভ্যতা তাদের তারকা বা নক্ষত্রব্যবস্থা ব্যবহার করে মহাকাশে ভ্রমণ করতে পারে।

বেলজিয়ামের ভ্রিজে ইউনিভার্সিটির দর্শনের গবেষক ক্লেমেন্ট ভিদাল তার সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রস্তাব করেছেন, উন্নত কোনো সভ্যতা তাদের নক্ষত্র বা নক্ষত্রজোড়াকে (বাইনারি স্টার সিস্টেম) মহাকাশযানের মতো ব্যবহার করতে পারে। এর মাধ্যমে তারা সম্পদ অনুসন্ধান, মহাকাশ আবিষ্কার বা কোনো সুপারনোভার মতো মহাজাগতিক বিপর্যয় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।

বিদ্যমান তারকাকে মহাকাশযানে রূপান্তর করার একটি সুবিধা হলো, তারা নিজেদের গ্রহসহ পুরো ব্যবস্থা বহন করতে পারবে। নক্ষত্র থেকে একমুখী বিকিরণ বা বাষ্পীভবন ঘটিয়ে এটি সম্ভব হতে পারে। এভাবে নক্ষত্র ও এর গ্রহমণ্ডলীকে একটি নতুন গ্যালাক্টিক গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

এর আগে বিজ্ঞানীরা ‘হাইপারভেলোসিটি’ নামের অত্যন্ত দ্রুতগতির তারাগুলোর ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। এই গবেষণায় তারা জানতে চেয়েছেন, এলিয়েনরা কি এই তারাগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে এত দ্রুতগতিতে চালিত করছে? তবে এখন পর্যন্ত কোনো তারার গতিতে কৃত্রিম হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে ভিদাল নতুন তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, অধিকাংশ তারকা একা থাকে না, বরং বাইনারি সিস্টেমে থাকে। এর মানে, আমরা সম্ভবত কৃত্রিমভাবে গতি বাড়ানো তারাগুলোর অর্ধেক এখনো খুঁজে পাইনি। এমনকি বাইনারি সিস্টেমের নক্ষত্রগুলো একক তারকার চেয়ে অনেক বেশি সুবিধা দিতে পারে। তবে এই গবেষণাপত্রটি এখনো কোনো বিজ্ঞান সাময়িকীতে পর্যালোচনা বা প্রকাশিত হয়নি।

ভিদালের গবেষণায় একটি মডেল সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে একটি নিউট্রন তারা ও একটি নিম্ন-ভরের তারা কাছাকাছি কক্ষপথে অবস্থান করছে। এমন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার জন্য বেশি সুবিধাজনক।

ভিদাল তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, এলিয়ান সভ্যতাকে তারকার থেকে পদার্থ নির্গত করার উপায় বের করতে হবে। এটি অসম চৌম্বক ক্ষেত্র থেকে হতে পারে অথবা তারার পৃষ্ঠে অসম উত্তাপ সৃষ্টি করে এমন কোনো যন্ত্র থেকে হতে পারে। যাইহোক, লক্ষ্য হবে তারার একদিকে অন্য দিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে পদার্থ নির্গত করা। এটি ট্রাস্ট বা চাপ তৈরি করবে, যা বাইনারি সিস্টেমকে বিপরীত দিকে ঠেলে দেবে।

যদি এলিয়েনরা কোনো নিউট্রন তারার ওপর বা কাছাকাছি শক্তিশালী যন্ত্র স্থাপন করে, তবে তারার শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে তারা পুরো বাইনারি সিস্টেমকে নির্দিষ্ট দিকে চালিত করতে পারবে। এমনকি যন্ত্রটি চালু বা বন্ধ করে নির্দিষ্ট সময়ে চালু রেখে কক্ষপথ পরিবর্তন করাও সম্ভব।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, মহাবিশ্বে এমন কিছু বাস্তব নক্ষত্র ব্যবস্থা আছে, যা এই বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে ‘ব্ল্যাক উইডো’ পালসার পিএসআর জে০৬১০-২১০০ ও ‘রেডব্যাক’ পালসার পিএসআর জে২০৪৩+১৭১১-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর গতি বেশ দ্রুত, তবে এগুলোর ক্ষেত্রে এলিয়েন প্রযুক্তির প্রভাব থাকার সম্ভাবনা খুব কম। তবুও এসব ব্যবস্থা গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

এই তত্ত্ব এখনো প্রমাণিত নয়, এটা নিয়ে আরও গবেষণা দরকার। তবে এটি এলিয়েন সভ্যতা ও তাদের সম্ভাব্য প্রযুক্তির বিষয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এমন অনুসন্ধান মহাবিশ্বের অজানা দিক উন্মোচনে সাহায্য করবে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স