ঢাকা ৬ বৈশাখ ১৪৩২, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
English

সব ক্ষেত্রেই নারীর মূল্যায়ন চাই: উমামা ফাতেমা

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
সব ক্ষেত্রেই নারীর মূল্যায়ন চাই: উমামা ফাতেমা
উমামা ফাতেমা

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন পাল্টে দিয়েছে দেশের রাজনীতি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পদত্যাগের দাবির আন্দোলনে। বাংলা ব্লকেডসহ নানা আলোচিত কর্মসূচিতে ছাত্রদের পাশাপাশি সরব উপস্থিতি ছিল ছাত্রীদের। একই সঙ্গে নেতৃত্ব এবং মিছিল সমাবেশে নারীদের উপস্থিতি বাড়াতে সমন্বয়করা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। জুলাই আন্দোলনে মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি আন্দোলন-পরবর্তী বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সরব আছেন উমামা ফাতেমা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল সরব। তবে আন্দোলন-পরবর্তী তাদের অনেককে মূল ফোরাম কিংবা আলোচনায় দেখা যাচ্ছে না বলে অভিমত অনেকের। আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে আলাপেও বিষয়টি উঠে আসে উমামা ফাতেমার বক্তব্যে।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের অভিজ্ঞতা নিয়ে উমামা বলেন, আন্দোলনে নারীরা ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসেন। কিন্তু এখানে নারী পরিচয়ে তারা আসেননি। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আসেন। তারা সাহস নিয়ে আন্দোলনে আসেন। ১৫ জুলাই দেখেছি নারীদের ওপরও ছাত্রলীগ ভয়ংকরভাবে হামলা চালিয়েছে। পুরো আন্দোলনে নারীরা সরব ভূমিকা রেখেছেন।

৫ আগস্ট পরবর্তী অন্যরকম দেখা যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পাওয়ার বা ক্ষমতার বিষয় আসছে সেখানে নারীদের মূল্যায়ন অনেক কম। পাওয়ারের জন্য সবার আগ্রহ থাকে, পাওয়ারে যেতে অনেক কিছু মোকাবিলা করে আসতে হয়, যা একটা মেয়ের পক্ষে অনেক কঠিন। এই কারণে আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে নারীরা অনেকে পিছিয়ে গেছেন। শুধু মিছিলের সামনে নারীদের রাখা হয়। কিন্তু নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার অনেক ফরম্যাট থাকে। আমরা দেখেছি নারীরা ট্রাফিক কার্যক্রম, ত্রাণ কালেকশন ও বিতরণেও ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু সেভাবে মূল্যায়ন হয় না। আমার মতে, মিছিল নয় সব ক্ষেত্রেই নারীর ভূমিকাকে মূল্যায়ন করতে হবে।

আন্দোলনের মুখ: উমামা ফাতেমা

সমস্যার সমাধান হবে রোডম্যাপ দিলে

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪২ এএম
সমস্যার সমাধান হবে রোডম্যাপ দিলে
ড. শাহদীন মালিক

অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ মাস হয়ে গেছে। সংস্কারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। ব্যাংকিং সেক্টরটা একটু ঠিকঠাকভাবে চলছে। দ্রব্যমূল্য কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য সেক্টরে বদলি-পদোন্নতি ছাড়া বড় কোনো সংস্কার চোখে পড়ছে না। সংস্কার লাইনে তেমন কিছু এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। ঐকমত্য কমিশনে সব দল একমত হলেও বড় সংস্কার তো সম্ভব না।
 
সংস্কার এখন মুখে ও কাগজে এই দুই জায়গায় রয়েছে। আমি যদি প্রধান উপদেষ্টার জায়গায় থাকতাম, তা হলে এখন একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে মান-ইজ্জত নিয়ে বেরিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য হতো। সব ভালো তার, শেষ ভালো যার । শেষটা ভালো হবে যদি সুষ্ঠু একটা নির্বাচন দিতে পারে। আর যদি নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেরি হয়, পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা হলে ড. ইউনূসের জন্য এটা শোভনীয় হবে না। অতএব ঐকমত্যের ভিত্তিতে কোরবানির ঈদের পর নির্বাচনের একটা রোডম্যাপের ইঙ্গিত দেওয়া উচিত হবে। ডিসেম্বর-জুন না বলে বা সঠিক কোনো তারিখ না বলে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি- এমন একটা তারিখ দিলে নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে দলগুলো। তখন এটাই হবে তার (প্রধান উপদেষ্টা) জন্য সেফ এক্সিট। তার জন্য সেফ এক্সিট হলো একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মান নিয়ে বিদায় নেওয়া। এটা মাথায় রেখেই তার এগোনো উচিত হবে। রোডম্যাপ দিলে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে তখন অন্য চাপও কমে যাবে। সমালোচনা-আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে। 

ড. শাহদীন মালিক
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী

রোডম্যাপ জানালে বিভ্রান্তি দূর হবে

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
রোডম্যাপ জানালে বিভ্রান্তি দূর হবে
আনু মুহাম্মদ

নির্বাচনের দিনক্ষণের বিতর্কটা খুব প্রয়োজনীয় বা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। সংস্কার হবে না, নির্বাচন হবে বা নির্বাচন কোন মাসে হবে। আসলে সংস্কার যেগুলো প্রয়োজনীয় সেগুলো করতে হবে। প্রয়োজনীয় শুধু না, যেগুলো সম্ভব সেগুলো করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার তো সব করতে পারবে না। নির্বাচন ভালো করার জন্য কিছু করতে হবে, প্রশাসনের কিছু পরিবর্তন, বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তন; এগুলো করার জন্য যে খুব বেশি লম্বা সময় লাগে তা তো  না।

সরকার যদি আন্তরিক হয় বা উদ্যমী হয় কয়েক মাসের মধ্যে কিছু আইনগত পরিবর্তন, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন, প্রশাসনিক পরিবর্তন এগুলো করা সম্ভব। এগুলো যদি হয় তাহলে কেউ আপত্তি করবে না। সুতরাং সংস্কারের জন্য সরকারের উচিত হচ্ছে নির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনাটা জানানো। একটা নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না এলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, মতবিরোধ এগুলো আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। সরকারই এটার সমাধান করতে পারে। সরকারের উচিত হচ্ছে কী কী সংস্কার তাদের অগ্রাধিকার, কী কী সংস্কার তাদের পক্ষে সম্ভব এগুলোর একটা তালিকা প্রকাশ করা। নির্বাচন ঠিকভাবে করতে হলে প্রশাসনিক ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।

সরকার সুনির্দিষ্টভাবে বলবে, আমরা এগুলো করতে পারব। এগুলো করতে কত দিন লাগবে সেটা করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার রোডম্যাপটা কী হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে জনগণকে জানালে বিভ্রান্তি দূর হবে। আমার মনে হয়, সরকারেরই দায়িত্ব একটা ঐকমত্যে আসা। সরকার ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছে। বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এটাতে জটিলতার কিছু নেই। কয়েক মাসের ব্যবধান। এটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।

সংস্কারের ভিত্তি মজবুত করতে নির্বাচন জরুরি

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৫ এএম
সংস্কারের ভিত্তি মজবুত করতে নির্বাচন জরুরি
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

১৯৯০ সালে গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছিল। বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়ার পর তিনি ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়েছিলেন এবং এই ৩ মাসের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদ নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি ১৪টি বিষয়ে কী কী পরিবর্তন করা যায়, তার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিলেন। ৩ মাসেই সম্ভব, ৩ মাসে না হলে ৬ মাস, ৬ মাসে না হলে ৯ মাস বা ১ বছরে সম্ভব। নির্বাচনের নির্দিষ্ট একটা সময়সীমা থাকতে হবে। এখন একটা যুক্তি সামনে আনা হচ্ছে- আমরা সংস্কার না করে নির্বাচনে যাব না। তাদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা সংস্কার করতে চান নাকি সংস্কারের নামে অনির্বাচিত ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চান? তারাই সংস্কার চান, যারা একটা শক্ত ভিত্তির ওপর সংস্কার কার্যক্রম করতে চান। ভিত্তি যদি দুর্বল হয় তাহলে লোক দেখানো সংস্কার বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য সাধনের কাজে এটাকে ব্যবহার করা হবে। সুতরাং জনগণের অংশগ্রহণ ও তাদের মতামত নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংস্কারকে স্থায়ীভাবে কার্যকর করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। যারা এটা করে না তারা আসলে সংস্কার মুখে বললেও লিপ সার্ভিস ছাড়া আর কিছু না। আসলে তারা ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, এমনটি সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তবে জনগণের অংশগ্রহণ ও তাদের মতামত গ্রহণ করতে হলে জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের দেশে গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছে। তারা জাতিকে পিছিয়ে দিয়েছে। সুতরাং সংস্কারের ভিত্তি মজবুত করতে হলে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা জরুরি।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম  
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি 

ট্রাম্প কি চীন ও ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন?

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৯ পিএম
ট্রাম্প কি চীন ও ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন?
ন্যান্সি কিয়ান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করাটা অনেক ব্যয়বহুল। ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে বাণিজ্যে শক্তিশালী প্রেরণা তৈরি করেছেন। ইউক্রেনের যুদ্ধের মতো বিষয়গুলোয় তাদের বিরোধপূর্ণ অবস্থান থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে এখন এক রকমের ভিত্তি তৈরি হয়েছে। 

অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক যুক্তি ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ কিছু শুল্ক চালু করেছেন। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি অর্থনীতির ওপর সেগুলো আরোপ করেছেন। শুল্ক আরোপ এমনই থাকবে বলে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন। তিনি একটি ছাড়া সব দেশের জন্য নতুন ‘পারস্পরিক’ শুল্ক স্থগিত করেছেন। বাকিদের জন্য সার্বিকভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখেন। চীনের জন্য ট্রাম্প ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে দুটিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি এবং তার ‘স্বাধীনতা দিবসে’ আরোপিত ৩৪ শতাংশ ‘পারস্পরিক’ শুল্কের ওপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক যোগ করেন (যা তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ৮৪ শতাংশে বৃদ্ধি করেন)। ফলাফল? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী সব চীনা পণ্যের ওপর কার্যকর সর্বনিম্ন ১৪৫ শতাংশ শুল্ক হার ধার্য করা হয়। 

চীন প্রাথমিকভাবে দুটি পণ্যে ১০ শতাংশ বৃদ্ধির সমানুপাতিক শুল্ক দিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিল এবং ট্রাম্পের সঙ্গে একটি চুক্তির আশা করেছিল। এর মধ্যদিয়ে তারা সামঞ্জস্যপূর্ণ বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফলে মার্কিন আমদানিতে সামগ্রিক শুল্ক ১২৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ট্রাম্প প্রশাসন বাজি ধরছে যে, মার্কিন বাণিজ্যে তীব্র হ্রাসের ফলে চীন সরকার অর্থনৈতিক ক্ষতি সহ্য করতে পারবে না। চীনের জিডিপির মাত্র ২০ শতাংশেরও কম আসে রপ্তানি থেকে এবং এর রপ্তানির প্রায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়। ২০২৪ সালে চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র। এই রপ্তানির ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ চীনা সংস্থা, কর্মী এবং পরিবারের ওপর অনেক বড় ক্ষতি বয়ে আনবে। এমন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে যখন চীন তাদের স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। 

কিন্তু ট্রাম্পের অদ্ভুত এবং আক্রমণাত্মক শুল্ক আরোপের ফলে চীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছে। অভ্যন্তরীণ নীতির কারণে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে। লেসোথোর মতো ছোট ও দরিদ্র দেশ বা কেবল পেঙ্গুইন অধ্যুষিত দ্বীপপুঞ্জের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের নির্লজ্জ ও নির্বিচারে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের ফলে বেশির ভাগ সাধারণ চীনা অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে পড়েছে। তারা ‘মার্কিন বর্বরতা’কে দায়ী করছে। চীনা সরকার বারবার বাণিজ্যের পারস্পরিক সুবিধার ওপর গুরুত্ব দেয়। বাণিজ্য যুদ্ধে ‘কেউ জিতবে না’ এমন নীতির ওপর তারা জোর দেয়। এই সময়ে চীন জাতীয় সংহতির আহ্বান জানিয়েছে। আমেরিকা যত কম যুক্তিসংগত আচরণ করবে, চীনা সরকার তত বেশি অভ্যন্তরীণ সমর্থন পাবে। 
তাছাড়া, চীন একা নয়। বাইডেন প্রশাসন চীনকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য তার মিত্রদের সঙ্গে অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও ট্রাম্প চীন এবং ঐতিহ্যবাহী মার্কিন মিত্রদের একই দিকে রেখেছেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করেছেন। ইইউ, চীনের মতো ট্রাম্পের আগে প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণা করেছে যখন শেয়ারবাজারের পতন এবং ট্রেজারি স্থবির হয়ে পড়ে।
চীনের ওপর আমেরিকার সাম্প্রতিক মনোযোগকে ইউরোপ এবং অন্য দেশগুলোকে চীনের বিরুদ্ধে পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হতে পারে।

 এটি কিছুটা হলেও কাজ করতে পারে। মেক্সিকো ইতোমধ্যেই চীনের ওপর মার্কিন শুল্কের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু মার্কিন স্বার্থের ওপর স্বপ্রণোদিত ক্ষতির বেশির ভাগই ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি যদি ইইউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে সফলভাবে আলোচনা করে, তবুও ইউক্রেন এবং গ্রিনল্যান্ড যারা অর্থনৈতিক অংশীদার তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমেরিকার প্রতি ইউরোপীয়দের বিশ্বাসে কিছুটা ঘাটতি পড়বে। 

আমেরিকার প্রতি হতাশা হঠাৎ করে ইউরোপকে চীনের মিত্র করে তুলবে না। চীনের বিরুদ্ধে ইইউর প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বৈদ্যুতিক যানবাহন রপ্তানি এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থন করার জন্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যকে আরও ব্যয়বহুল এবং সবার জন্য অপ্রত্যাশিত করে তুলেছে। ট্রাম্প ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার জন্য শক্তিশালী প্রেরণা তৈরি করেছেন।

তাছাড়া, ট্রাম্প যখন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন, তখন ইউরোপ এবং চীন উভয়ই বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয় অনুভব করে। বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং সৌর-প্যানেল উৎপাদনে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি চীন সবুজায়নে শক্তি প্রযুক্তি এবং পারমাণবিক শক্তির দ্রুততম বিকাশকারী শক্তি বিকল্প যা ইউরোপে নতুন করে আগ্রহ অর্জন করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইউরোপীয় উৎপাদকদের ওপর চীনা রপ্তানির প্রভাব নিঃসন্দেহে একটি জটিল বিষয়। তবে আমেরিকান বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে তাদের অর্থনীতিকে চাঙা করতে উভয় পক্ষকেই আপস করতে অনুপ্রাণিত করবে। 

চুক্তি কেমন হবে তা বলা কঠিন। তবে অনেক বিকল্প পথ রয়েছে। চীন তার ইউরোপীয় আমদানি বৃদ্ধি, ইউরোপে রপ্তানির সীমা নির্ধারণ এবং তার মুদ্রার মান বৃদ্ধি করতে পারে। এটি AI, EV ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশনের মতো ইউরোপীয় শিল্পগুলোকে শক্তিশালী করতে প্রযুক্তিকে ভাগ করে নিতে পারে। এই খাতে চীনা সরকারের ভর্তুকি যা ইউরোপীয়রা চীনকে অন্যায্য সুবিধা প্রদানকারী হিসেবে দেখে থাকে। এটি ইউরোপীয় উৎপাদক এবং ভোক্তাদের জন্য সুবিধায় পরিণত হবে। ইউরোপ তার পক্ষ থেকে আরও বিশ্বব্যাপী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় চীনা অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে পারে, যা চীনা নেতারা দীর্ঘদিন ধরে চেয়ে আসছেন।

যদিও চীন রাশিয়াকে পরিত্যাগ করার সম্ভাবনা কম, তবুও চীনা স্বার্থের ক্ষেত্রে তারা বাস্তববাদী মনোভাব দেখিয়েছে। ইউরোপীয়দের প্রতি সদিচ্ছা দেখাতে চাইলে তারা আমেরিকান কৃষি আমদানির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইউক্রেনীয় খাদ্যপণ্যের আমদানি বাড়াতে পারে। ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের সহায়তা করতে পারে। ইউক্রেন পুনর্গঠনে সহায়তা করার জন্য বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণে তার দক্ষতা ব্যবহার করতে পারে এবং চীনা ভাড়াটে সৈন্যদের রাশিয়ায় যোগদান থেকে বিরত রাখতে পারে।

 স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সাম্প্রতিক বেইজিং সফর এবং জুলাই মাসে চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং যে ইইউ নেতাদের সঙ্গে পরিকল্পিত বৈঠকের আয়োজন করবেন তা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, বিশ্বের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলো বর্ধিত সহযোগিতার সুবিধা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। যদি তারা সফলভাবে এটি অনুসরণ করে, তাহলে বাণিজ্য যুদ্ধ চীনের জন্য খারাপ নাও হতে পারে। অর্থনৈতিক সংকট বলে মনে হচ্ছে তা একটি ভূ-রাজনৈতিক সুযোগও হতে পারে।

লেখক: চীনা আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র 
প্রজেক্ট সিন্ডিকেট থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ: সানজিদ সকাল

পানির সংকট: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ ও বিশ্ব

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম
পানির সংকট: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ ও বিশ্ব

পৃথিবীর জন্মপূর্ব ও পরে সব অবস্থায় প্রাণীর জীবনবাহিত হয় পানির সঙ্গে। চিরায়ত বাঙালি প্রবাদ-পানির অপর নাম জীবন। প্রাণীমাত্রই দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি অব্যবস্থাপনার জন্য মানুষের জীবনে এর প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে দিন দিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে প্রকাশ, ১৯৬০ সালে পৃথিবীতে যে পরিমাণ পানির চাহিদা ছিল, ২০২৪ সালে তার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে মানুষের প্রাত্যহিক পানির চাহিদা ও বিশুদ্ধ পানির বড় সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানিবিজ্ঞান পরিদপ্তর বলছে, গত ৩৮ বছরে দেশে পানির স্তর দুই-তৃতীয়াংশ নিচে নেমে গেছে। দিন দিন এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাব মতো বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ মানুষ পানি পায়। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি পান করে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিষয়টির ওপর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মত দিয়েছে, বিশ্বের অন্যতম পানি ঝুঁকিপ্রবণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান বেশ সংকটাপন্ন অবস্থায়। 

বাংলাদেশে সুপেয় পানির উৎসগুলো প্রাকৃতিক ও মানুষের কারণে বড্ড দূষিত হচ্ছে। দেশের মানুষ নিরাপদ পানি ব্যবহারের সংকটের দিকে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ভেতরে মানুষ নানা উৎস হতে পানি সংগ্রহ করে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যমতে, ১৯ দশমিক ৩৪ ভাগ মানুষ পানির সরবরাহ করে পাইপলাইন দিয়ে। ৭৬ দশমিক ৮১ শতাংশ নাগরিক পানি গ্রহণ করে গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে। আর বাকি ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ ভাগ মানুষ অন্যান্য উৎস থেকে পানি পেয়ে থাকে। এ হিসাবের বাইরে ‘শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ পানি বোতলজাত। শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ পানি নদী বা পুকুরের। শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ পাতকুয়ার। শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পানি ঝরনার। শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ পানি বৃষ্টির এবং ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ পানি অন্যান্য উৎস থেকে সংগ্রহ করে।’ 
দেশের পানি প্রাপ্তির পরিসংখ্যান থেকে বিশ্বের দিকে তাকালে সেখানে জীবন বাঁচানো এ উপকরণের আন্তর্জাতিক সংকটের স্বরূপ নজরে পড়ে। বর্তমানে বিশ্বের ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানিসুবিধা থেকে বঞ্চিত। একই সঙ্গে ৩৫০ কোটি মানুষের নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবহারেরও সুযোগ নেই। অবশ্য মানুষ তার এই অসুবিধার জন্য নিজেই দায়ী। কারণ নিরাপদ পানি প্রাপ্তির সংকটের জন্য মানুষ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইউনিসেফ জানায়, ২০০১ থেকে ২০১৮ সালে সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে ৭৪ শতাংশ পানি-সম্পর্কিত ছিল। পানিদূষণের কারণে বয়স্কদের থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশুরা। প্রতিদিন বিশ্বের পানিবাহিত রোগে ১ হাজার শিশুর মধ্যে পাঁচজন শিশু মৃত্যুবরণ করে। 

বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) সবার জন্য পানি ও পয়োনিষ্কাশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাকে ষষ্ঠ লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে। পানির দেশ হয়েও বাংলাদেশে সুপেয় পানির সংকট কম নয়। বর্তমানে এ দেশের তিন কোটি মানুষ সুপেয় পানি গ্রহণ হতে বঞ্চিত। আর এ সংকটের অন্যতম কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। দেশের দক্ষিণে সমুদ্র উপকূল পানিতে সয়লাব। কিন্তু পান করার জন্য মিষ্টি পানির সেখানে বড় অভাব। অন্যদিকে গ্রীষ্মের মৌসুমে বরেন্দ্র অঞ্চলে দেখা দেয় পানির জন্য হাহাকার। ইউনিসেফের এক গবেষণা বলছে, ‘নদী ও পানির দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে সুপেয় পানি পাচ্ছেন না প্রায় তিন কোটি মানুষ। পাকিস্তানে ১ কোটি ৬০ লাখ। চীনে ১০ কোটি ৮০ লাখ, ভারতে ৯ কোটি ৯০ লাখ ও নাইজেরিয়ায় ৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ সুপেয় পানির অধিকার থেকে বঞ্চিত।’ 

বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির অভাবে বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম প্রায় ৫ হাজার শিশু মারা যায়। পৃথিবীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ুর প্রভাব এবং সভ্যতার উত্তরণের সঙ্গে তাল মিলে বাড়ছে পানির চাহিদা। প্রাচীন ও মধ্যযুগে যেখানে মানুষের পানির ব্যবহার ছিল সীমিত। আধুনিক যুগে উন্নত জীবনযাপনের প্রয়োজনে বেড়েছে মাথাপিছু পানির চাহিদা। সংগত কারণেই বিশ্বমানবের বাঁচার অপরিহার্য  এ উপাদানটির ওপর চলছে বিস্তর গবেষণা। গবেষণার পথে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও এশীয়া প্রশান্ত পানি ফোরাম ‘দ্য এশিয়ান ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২৩’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে দেখানো হয়েছে, ‘এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পানিসংকট ভয়াবহ।

 এশিয়া ও প্রশান্ত অঞ্চলের ৪৯টি দেশের মধ্যে ৩৭টি দেশে পানির সংকট রয়েছে। এর মধ্যে সংকট ভয়াবহ রূপ পেতে চলেছে বাংলাদেশ, ভারত, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ায়।’ বিশুদ্ধ পানি ছাড়াও বাংলাদেশের বেশ কিছু অঞ্চলের পানিতে রয়েছে আর্সেনিক সমস্যা। দেশে আর্সেনিক ঝুঁকিতেও আছে ২ কোটি মানুষ। এ সমস্যা পানিবাহিত রোগের কারণ মাত্র। কিন্তু দিন দিন যদি পানির না পাওয়ার সংকট তীব্র হয়, বিপর্যয় ঘটবে সেখানে। কেননা সম্প্রতি দেশের উত্তরাঞ্চলে এর মধ্যে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের গ্রাউন্ড ওয়াটার জোনিং ম্যাপ অনুযায়ী প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে দেশের ৪১ জেলার ১৯২ উপজেলায় তীব্র পানিসংকট দেখা দেয়। 

ফলে দেশের অধিকাংশ এলাকায় মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অথচ শস্য-শ্যামল বাংলা টিকে থাকার জন্য পর্যাপ্ত পানির অতীব প্রয়োজন। মোদ্দাকথা পানির অপর নাম জীবন। বাঁচার অধিকার মানে পানির অধিকার। পানি থাকলে জীবন, না থাকলে জীবের অস্তিত্ব কল্পনাহীন। এখন সব থেকে বড় কথা, এ সংকট থেকে উদ্ধারের পথ বের করা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে এবং বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে হবে। একই সঙ্গে পানির উৎস তৈরি করতে হবে। করতে হবে পানির অপচয় রোধ। মায়াভরা প্রিয় জন্মভূমিকে রক্ষা ও বেঁচে থাকার জন্য পানি ব্যবহারের প্রতি আমাদের সবাইকে যত্নবান হতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের কর্মকাণ্ডে যেন প্রকৃতি বিরূপ না হয়, সেদিকে সতর্ক খেয়াল রাখতে হবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। 

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক 
স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া
[email protected]