![ঢাবির খেলোয়াড়দের ওপর হামলার পর দুই দলকেই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা](uploads/2024/02/13/1707812238.ru-du-photo.jpg)
আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড়দের ওপর হামলার ঘটনার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কেও চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে ঢাবি বনাম রাবির খেলা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে মানবঢাল তৈরি করে পুলিশি পাহারায় খেলোয়াড়দের মাঠ থেকে সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।
এতে চারজন খেলোয়াড় আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ঢাবির কোচ। পরে আলো স্বল্পতার কারণ উল্লেখ করে দুই দলকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি।
হামলায় আহত ঢাবির খেলোয়াড়রা হলেন- সিফাত, ইমন, তূর্য এবং রোকন। তারা সবাই রাজশাহীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে স্বাগতিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখোমুখি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রাবি। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪৯ রান করে ঢাবি। জবাবে খেলতে নেমে দারুণ সূচনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দল। খেলা ১৩ ওভার চলাকালে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ঢাবির খেলোয়াড়রা। পরে কয়েকজন খেলোয়াড় মাঠ ছেড়ে চলে যান। এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর বোর্ডে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৯৭ রান। পরে দুই দলের কোচ ও শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে ফের খেলা শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরও জানা যায়, ১৮ ওভার শেষে ৭ উইকেটের বিনিময়ে রাবির সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩০ রান। পরের ওভারে বল করতে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেস বোলার তূর্য। তার করা একটি বলে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ব্যাটার। বলটি বাউন্ডারি লাইনে ড্রাইভ দিয়ে তালুবন্দি করেন ঢাবির খেলোয়াড় সাকিব। আউট হয়েছে কি না সেই সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে মাঠে ঢুকে পড়েন রাবি শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ঢাবির খেলোয়াড়দের ওপর হামলা করেন। হামলায় কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকেও অংশ নিতে দেখা যায়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষনেতাদের সহযোগিতায় ঢাবির খেলোয়াড়দের প্যাভিলিয়নে নিয়ে আসা হয়। এ সময় দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়াররা। পরে আলো স্বল্পতার কারণ উল্লেখ করে দুই দলকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি।
পরে মানবঢাল তৈরি করে পুলিশি পাহারায় খেলোয়াড়দের মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ঢাবির খেলোয়াড়রা মাঠ ছাড়ার সময় রাবি শিক্ষার্থীদের ‘রাবি-ঢাবি ভাই ভাই, ভয়ের কোনো কারণ নাই’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিক হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রথমে শিক্ষার্থীদের জন্য গ্যালারিতে বসার ব্যবস্থা করেছিলাম। আমরা তাদের মাঠে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু শিক্ষার্থীরা গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ে। হামলার ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। তবে কারা এই হামলার ইন্ধন দিয়েছে বিষয়টি জানতে ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটি :
হামলার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবিরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুজন সেন এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী।
এসআই সুমন/জোবাইদা/অমিয়/