নিহতের পরিবারের কাছে অনুদান তোলে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক। ছবি: খবরের কাগজ
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ২০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। আহত অপর শিক্ষার্থীর পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চুয়েটের দুই ছাত্রের পরিবার ও আহত ছাত্রের পরিবারের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত ও অপর ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। সড়কে অকালমৃত্যু আমরা কখনো কামনা করি না। সড়ক দুর্ঘটনায় কারও অকালমৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর পরও সরকার, জেলা প্রশাসন ও বাস মালিক সমিতি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে চুয়েটের সড়কটি প্রশস্তকরণ করা হবে। নিহত দুই ছাত্র শান্ত সাহা ও তৌফিকুর রহমানের নামে এ সড়কের নামকরণ করার বিষয়ে নিহত ছাত্রদ্বয়ের অভিভাবকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমরা সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগকে প্রস্তাবনা পাঠাব। দুর্ঘটনায় যে দুইজন ছাত্র মারা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের নামে কোনো ভবন বা চত্বর নামকরণ করা যায় কি-না জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপনসহ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘দুই ছাত্র নিহত ও একজন ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন। এ সময় আমাদের ছাত্ররা বেশকিছু দাবি উত্থাপন করে। তিনি তাদের দাবিগুলো পূরণের অঙ্গীকার করেন। তিনি (ডিসি) কথা রেখেছেন।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহমদ, চুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা, বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থী।
অনুষ্ঠানে ছেলের মৃত্যুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত ছাত্র শান্ত সাহার বাবা কাজল সাহা ও নিহত তাওফিক হোসেনের বাবা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
গত ২২ এপ্রিল বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার সত্য পীরের মাজার গেটসংলগ্ন সড়কে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তাওফিক হোসেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. জাকারিয়া হাসান হিমু।
ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/