ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

জনহিতৈষী মেরি গ্যারেট

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:১০ পিএম
জনহিতৈষী মেরি গ্যারেট
মেরি গ্যারেট। ছবিঃসংগৃহীত।

নারীদের উন্নয়নে উদার হাতে অর্থ দান করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন এক আমেরিকান নারী। তার নাম মেরি গ্যারেট। তিনি ১৮৯৩ সালে শর্ত দিয়ে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুলকে অর্থ দান করেছিলেন। তার শর্ত ছিল, এই প্রতিষ্ঠানকে নারী শিক্ষার্থীদের ঠিক একই শিক্ষা দিতে হবে, যা পুরুষ শিক্ষার্থীরা পান। 

মেরি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৫৪ সালের ৫ মার্চ। তিনি জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের জন্য মেডিকেল স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক উন্মোচন করেছিলেন। তার এই অবদান নারীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সমান সুযোগ ও অংশগ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছিল। মেরি গ্যারেটের এই উদ্যোগ নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল।

ব্যবসায়ী ও ব্যাংকার জন ডব্লিউ গ্যারেটের একমাত্র মেয়ে ছিলেন মেরি গ্যারেট। মা-বাবা ও দাদা-দাদি জনহিতকর কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে ছেলেবেলা থেকেই গ্যারেটের দাতব্য কাজ সম্পর্কে ধারণা ছিল। উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পদ ব্যবহার করে গ্যারেট বাল্টিমোরে ব্রাইন মাওর স্কুল ফর গার্লস প্রতিষ্ঠায় বিশেষভাবে সহায়তা করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের সবচেয়ে বেশি আন্দোলন করতে হয়েছিল ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য। এই দীর্ঘস্থায়ী লড়াইয়ে শামিল ছিলেন মেরি গ্যারেট। তিনি বিভিন্ন সময় অর্থ ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছেন নারীদের উপকারে। ১৯১৫ সালের ৩ এপ্রিল মারা যান মেরি গ্যারেট।

/ফারজানা ফাহমি

হালিমার তৈরি মডেল কমাবে লোডশেডিং

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
হালিমার তৈরি মডেল কমাবে লোডশেডিং
আইইউবির শিক্ষার্থী হালিমা হক। ছবিঃসংগৃহীত।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বাংলাদেশের লোডশেডিংয়ের সমস্যা কমানোর তড়িৎ চাহিদা বিশ্লেষণের নিজস্ব এআই মডেল তৈরি করেছেন ঢাকার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হালিমা হক। কীভাবে তার গবেষণার শুরু হয় ও এ ধরনের গবেষণা থেকে কীভাবে উপকৃত হবে দেশ, তা নিয়ে এবারের আয়োজন। লিখেছেন ফারজানা ফাহমি

মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে ঘন ঘন বিদ্যুৎবিভ্রাট থেকে কীভাবে নিস্তার পাওয়া যায়, এই নিয়ে ভাবতে শুরু করেন হালিমা। এ ধরনের কাজ ইতোমধ্যে উন্নত বিশ্বে হচ্ছে। তাহলে বাংলাদেশে করা যাবে কি না, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন হালিমা। তাই থিসিসের কাজ করার সময় তিনি ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তৈরি করে ফেলেন ঢাকার তড়িৎ চাহিদা বিশ্লেষণের নিজস্ব এআই মডেল।

রোবোটিকসের প্রতি আগে থেকেই আগ্রহ ছিল তার। তাই ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) কিছু কাজেও যুক্ত ছিলেন হালিমা। সেসব দেখেই তাকে একজন শিক্ষক ‘মেশিন লার্নিং’ শেখার পরামর্শ দেন। তখন তিনি তড়িৎ প্রকৌশলের মূল বিষয় ‘পাওয়ার’-এর সঙ্গে কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ ঘটানো যায়, সে বিষয়ে ভাবতে শুরু করলেন। সেখান থেকেই হালিমার মাথায় আসে এআই দিয়ে কীভাবে লোডশেডিংয়ের সমস্যা কমানো যায় এ নিয়ে বিস্তর ভাবনা। যেই ভাবনা সেই কাজ। তাই তিনি এ বিষয়ে থিসিসের কাজে মনোনিবেশ শুরু করলেন।

তার পুরো কাজে তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন আইইউবির অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক। যিনি তাকে সব সময় সহায়তা করেছেন। ইতোমধ্যে হালিমার শক্তি চাহিদা বিশ্লেষণ মডেলটি তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলীদের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইইইর একটি উচ্চমানের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। থাইল্যান্ড ও মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত আইইইইর কিছু সম্মেলনেও গবেষণাপত্রটি স্বীকৃতি পেয়েছে।

হালিমার এনার্জি ডিমান্ড সাধারণত বিগ ডেটা নিয়ে বিশ্লেষণ করে এবং কিছু ফিচার ও প্যাটার্ন শনাক্ত করে ভবিষ্যৎ বিদ্যুতের চাহিদার পূর্বাভাস দেয়। মডেলটি এই তথ্য থেকে চাহিদার পূর্বাভাস দিতে শিখার পাশাপাশি গ্রিড ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও সম্পদ বরাদ্দকে সক্ষম করে তুলে।

বর্তমান ও ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে কতটা শক্তির প্রয়োজন তা বোঝার জন্য এবং সেই শক্তির সরবরাহ কে কীভাবে সর্বোত্তমভাবে পরিচালনা করা যায় তা বুঝতে অতীতের ডেটা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেয়।হালিমার তৈরি করা এ মডেলকে আগের ডেটা দেওয়া হলে এআই আপনাকে আওয়ারলি, মান্থলি এবং ইয়ারলি কোন ধরনের বিদ্যুৎ চাহিদা প্রয়োজন তার ধারণা আপনাকে দেবে।

ধরা যাক, আপনার বাসায় অতিথি আসবেন। কিন্তু মুশকিল হলো অতিথি ঠিক কয়জন হতে পারে, কী রান্না করবেন এবং আপনার অতিথিরা কতদিন থাকবে সে সম্পর্কে আপনি জানেন না। এমন কোনো জ্যোতিষীর খোঁজ যদি পাওয়া যেত, আগেভাগেই যে অতিথির আনুমানিক সংখ্যা বলে দিতে পারবেন, তাহলেই কিন্তু সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হয়ে যায়।মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এই ‘জ্যোতিষী’র কাজই করে। বিগত কিছু আয়োজনের তথ্য তাকে দিলে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সে পরের অনুষ্ঠান সম্পর্কে একটা সম্ভাব্য ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করতে পারে।

তাই হালিমা এআই দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা হিসাব করতে বসেছিলেন। মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে উত্তরার পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬৫ লাখ নমুনা বা ডেটা তিনি বিশ্লেষণ করেছিলেন। নমুনার মধ্যে ছিল এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট নম্বর, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের বিদ্যুৎ বিল, শুল্ক, ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক ইউনিট ইত্যাদির তথ্য। এ ছাড়া এ কাজ পরিচালনা করার জন্য কিছু পরিবেশগত তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন হালিমা। যেমন ওই সময়ের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা। হালিমার মেশিন লার্নিং মডেল এই বিপুল তথ্য বিশ্লেষণ করে। তাঁর তৈরিকৃত মডেলটি ৯২% সঠিক বিশ্লেষণ দিতে পারে। 

একটি মেশিন লার্নিং মডেল সফলভাবে কার্যকর করতে হলে প্রতিটি ধাপে দক্ষ পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন। এই ৬৫ লাখ তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করতে টানা তিন থেকে চার দিন তাকে কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে হয়েছে। বারবার বিভিন্ন ছোটখাটো পরিবর্তন এনে নতুন নতুন মডেল প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটি কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ ছিল। এ ছাড়া কোন ধরনের তথ্য দিলে মডেলটি ঠিকঠাক ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সম্পূর্ণভাবে তার ওপর ছিল।

হালিমা মনে করেন, তার তৈরি মডেলের পূর্বাভাস ব্যবহার করে দেশের বিদ্যুৎবিভ্রাট কমানো সম্ভব। তবে কাজটা শুধু প্রকৌশলী ও নীতিনির্ধারকদের নয়। তিনি বলেন, ‘গবেষণাটা বাস্তবে রূপ দিতে হলে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগের প্রয়োজন। এই মডেল সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে টেকসই সমাধান করা সম্ভব।’ 

গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকও এ বিষয়ে একই মত দিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, ‘মেশিন লার্নিং আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রবণতা বুঝতে সাহায্য করে, যার মাধ্যমে আরও কার্যকর নীতিমালা তৈরি করা যায়। ফলে লোডশেডিং কমবে এবং টেকসই নগর-পরিকল্পনার পথ সুগম হবে।’

/ফারজানা ফাহমি

নারীর ভালো থাকার পাঁচ উপায়

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০০ পিএম
নারীর ভালো থাকার পাঁচ উপায়
ছবিঃসংগৃহীত।

একজন নারীর কাজের কোনো সীমা নেই। ঘুম থেকে ওঠার পরেই কাজ শুরু হয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নানা রকম কাজ করতে হয় তাকে। সংসার সামলে অনেকে নিজের যত্ন নেওয়ার কথা ভুলে যান। অথচ সংসার, সন্তান, পরিবার ভালো রাখতে হলে আগে নিজেকে ভালো থাকতে হবে।  তাই ভালো  থাকতে মানতে হবে পাঁচ উপায়।

শরীরচর্চা ও ইয়োগা: দিনের শুরুতে কমপক্ষে ১৫ মিনিট শরীরচর্চা করতে পারলে ভালো। মনোবিদরা জানান, দিনের শুরুতে ১৫ মিনিট শরীরচর্চা করতে পারলে মন ভালো থাকে। রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে। শরীরের ব্যথা দূর হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা যেমন স্ট্রোক, মেটাবলিক সিনড্রোম, ডায়াবেটিস, ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি, নানা ধরনের ক্যানসার, বাতের ব্যথা ইত্যাদি। শরীরচর্চা করলে পেশির শক্তি বাড়ে, আর শরীরের হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো হয়। 

পছন্দের খাবার খাওয়া: নারীর উচিত পরিবারের সবার কথা ভাবার পাশাপাশি নিজের ভালোলাগা-না লাগাকে প্রাধান্য দেওয়া। প্রতি দিনের রান্নায় নিজের পছন্দের এক পদ রাখার চেষ্টা করতে পারেন। পরিবারের সদস্যদের পছন্দের পাশাপাশি নিজের পছন্দকেও প্রাধান্য দিতে হবে। তাই সপ্তাহে এক দিন নিজের পছন্দের খাবার রান্না করে খেতে পারেন। এ ছাড়া, নিজেকে ভালো রাখার জন্য কিংবা পরিবারের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে রেস্টুরেন্টে গিয়ে পছন্দের খাবার খেতে পারেন।

কুসুম গরম পানিতে গোসল: হেল্থলাইন ডটকম-এর তথ্য, কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে সংক্রমণ মোকাবিলা করা যায়। ত্বকের সমস্যা দূর হয় এবং পেশি শিথিল হয়। তবে অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করবেন না। ডা. কেফারস্টেইনের মতামত- ‘গরম পানি ত্বকের ওপরে কেরাটিন কোষের ক্ষতি করে। কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ত্বক শুষ্ক হয় আর আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না।’ রূপচর্চাবিদদের পরামর্শ- গোসলের পানিতে গোলাপের পাপড়ি, দুধ কিংবা অ্যাসেনশিয়াল অয়েল যুক্ত করে নিতে পারেন। এতে মন ভালো থাকবে। 

ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখুন: সকালে মুখ ধোয়ার পরে, গোসলের পরে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করতে ভুলে যাবেন না। ভারী মেকআপ করার পর ঘুমানোর আগে কটন প্যাড ক্লিঞ্জার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নেবেন এবং ত্বকে ময়েশ্চারাইজার মেখে নেবেন। এতে আপনার ত্বক ভালো থাকবে।

পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ভালো ঘুম শরীরে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। ভালো ঘুম ত্বক, শরীর এবং মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এতে শরীর-মন দুটোই ভালো থাকবে।

/ফারজানা ফাহমি

 

চোখের চিকিৎসায় প্যাট্রিসিয়া বাথ

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪১ পিএম
চোখের চিকিৎসায় প্যাট্রিসিয়া বাথ
প্যাট্রিসিয়া বাথ। ছবিঃসংগৃহীত।

প্যাট্রিসিয়া বাথ এমন একজন চিকিৎসক যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, যখন কোনো নারী অস্ত্রোপচার করতেন না তিনি প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান নারী চিকিৎসক, যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নিজের আবিষ্কারের জন্য পাঁচটি প্যাটেন্ট পেয়েছিলেন

প্যাট্রিসিয়ার জন্ম ১৯৪২ সালের নভেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে মূলত মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং অন্যদের সাহায্য করার আবেগ তাকে একজন চিকিৎসক হতে অনুপ্রাণিত করেছিল

লেজার ফ্যাকোশব্দটির সঙ্গে এখন আমাদের দারুণ পরিচয় জেনে অবাক হবেন শব্দটি তৈরি করেছিলেন প্যাট্রিসিয়া চোখের ছানির অস্ত্রোপচারের জন্য এই কৌশল ধারণা উদ্ভাবনের জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয় তিনি চক্ষুবিদ্যায় স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের নেতৃত্বদানকারী প্রথম নারীও প্যাট্রিসিয়া যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তার নাম আমেরিকান ইনস্টিটিউট ফর দ্য প্রিভেনশন অব ব্লাইন্ডনেস

তিনি নিজের গবেষণাকে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ রাখেননি; ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ইউরোপেও পশ্চিম জার্মানির বার্লিনের লেজার মেডিকেল সেন্টার, ফ্রান্সের প্যারিসের রথসচাইল্ড আই ইনস্টিটিউটে চোখের চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন তিনি তার গবেষণা এবং লেজার বিজ্ঞানে দক্ষতার কারণে লেজার অস্ত্রোপচারের জন্য তিনি প্যাটেন্ট পান কিংবদন্তি এই নারী ২০১৯ সালের ৩০ মে মারা যান

/ফারজানা ফাহমি

 

মহাকাশজয়ী সুনীতা উইলিয়ামস

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম
মহাকাশজয়ী সুনীতা উইলিয়ামস
সুনীতা উইলিয়ামস। ছবিঃসংগৃহীত।

পৃথিবীর কোনো কোনো প্রান্তে নারীকে যখন ঘরে বন্দি রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এমনই এক সময়ে প্রস্তুতি ছাড়াই এক নারী রীতিমতো মহাকাশে কাটিয়ে এসেছেন দীর্ঘ নয় মাস। বলা হচ্ছে মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের কথা; যিনি  মহাকাশে গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। নির্ভীক এই নারী এর আগেও অংশ নিয়েছেন বহু মহাকাশ অভিযানে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-নাসার অন্যতম অভিজ্ঞ মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের মহাকাশ জয়ের কাহিনি নিয়ে এবারের আয়োজন। লিখেছেন ফারজানা ফাহমি 

সুনীতা উইলিয়ামস ১৯৬৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ইউক্লিড শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম সুনীতা লিন উইলিয়ামস। তার বাবা দীপক পান্ড্য একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক, আর মা বনি পান্ড্য ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত।তিনি ম্যাসাচুসেটসের নিডহ্যামে বেড়ে ওঠেন এবং নিডহ্যাম হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৮৭ সালে ইউনাইটেড স্টেটস নেভাল অ্যাকাডেমি থেকে শারীরিক বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

স্নাতক শেষ করার পর তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেন এবং একজন হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে কাজ করেন। তিনি বিভিন্ন অভিযানে অংশ নিয়ে ৩ হাজার ঘণ্টারও বেশি সময় ৩০ ধরনের হেলিকপ্টার ও উড়োজাহাজ চালানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি ফ্লোরিডা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে অভিযান প্রকৌশল (ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট) বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

নিজের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে একটা সময় সুনীতা হয়ে ওঠেন নভোচারী। ১৯৯৮ সালে তিনি নাসায় নভোচারী হিসেবে নির্বাচিত হন। প্রশিক্ষণের পর ২০০৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো মহাকাশে যান এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাস কাটান সুনীতা। সেবার তার মহাকাশে কাটানো ১৯৫ দিন ছিল কোনো নারী মহাকাশচারীর মহাকাশে কাটানো সর্বোচ্চ সময়। ওই মিশনে তিনি চারবার স্পেসওয়াক করেন। সেবার সবমিলিয়ে মোট ২৯ ঘণ্টা ১৭ মিনিট স্পেসওয়াক করেছিলেন সুনীতা।

এরপর ২০১২ সালে তিনি আবারও মহাকাশে যান এবং গড়েন নতুন রেকর্ড। ১৫ জুলাই ২০১২ সালে তিনি সয়ুজ-টিএমএ ০৫এম মিশনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার মহাকাশে যাত্রা করেছিলেন। দ্বিতীয় দফায় ১২৭ দিন মহাকাশে কাটান অদম্য এই নভোচারী। এই মিশনে তিনি স্পেসওয়াকের মাধ্যমে ৫০ ঘণ্টার বেশি সময় মহাকাশের বাইরে কাজ করেন। এটিও ছিল কোনো নারী মহাকাশচারীর জন্য রেকর্ড।

সবশেষ গত বছরের ৮ জুন আরেক সহকর্মী বুচ উইলমোরকে সঙ্গে নিয়ে আবারও মহাকাশ যাত্রা করেন সুনীতা। কথা ছিল আট দিনের মহাকাশ অভিযান শেষে ফিরে আসবেন তারা কিন্তু কারিগরি জটিলতায় স্পেস স্টেশনেই আটকা পড়েন তারা। তার পর সেখানে বাধ্য হয়েই কাটান নয় মাস!
দীর্ঘ নয় মাস প্রায় প্রস্তুতিবিহীন মহাকাশ অভিযানে বসে থাকেননি বুচ ও সুনীতা। তারা গবেষণা করে বের করেছেন মাইক্রো গ্র‍্যাভিটিতে কোন কোন ফসল উৎপাদন করা যায়, মহাকাশে ফুল ফোটানো সম্ভব কি না- ইত্যাদি। শুধু তাই নয়, একজন মহাকাশচারীকে যেহেতু নানা শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তার হৃৎপিণ্ড, কিডনি ইত্যাদি কতটা সক্রিয় থাকে, কীভাবে থাকে- প্রায় প্রস্তুতিবিহীন অভিযানে সেসবও সেরে নিয়েছেন অসামান্য প্রতিভার অধিকারী এই দুই নভোচারী।

কয়েক মুহূর্ত লিফটে আটকে গেলে অনেকের যেখানে দম বন্ধ হয়ে যায়, সেখানে সুনীতা মহাকাশের মতো রহস্যঘেরা জায়গায় নিজের প্রিয় ফুলও ফুটিয়ে ফেলেছেন। 

সুনীতা উইলিয়ামস ভেঙে দিয়েছেন নারীর অপারগতার মিথ। সাহস এবং হার না মানা এ নারী প্রমাণ করে দিয়েছেন নারীরা চাইলে সবকিছুই করতে পারে, সেটা হতে পারে পাহাড় জয় কিংবা মহাকাশ।

/ফারজানা ফাহমি

 

রেকর্ড মানবী মেরি ডেকার

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০২ পিএম
রেকর্ড মানবী মেরি ডেকার
মেরি ডেকার। ছবিঃসংগৃহীত।

রেকর্ড করা হয় সেটা ভাঙার জন্য। আবার তিনি যদি নারী হয়ে রেকর্ডের পর রেকর্ড করে যেতে থাকেন, সেটাকে অনেক সময় অবিশ্বাস্য বলে মনে হতেই পারে। তবে মেরি টেরেসা স্ল্যানি (মেরি ডেকার ) তেমনই একজন ক্রীড়াবিদ যার করা একটি রেকর্ড টিকে ছিল প্রায় চার দশক।

মেরি ছিলেন আমেরিকান মধ্যম এবং দীর্ঘ দূরত্বের দৌড়বিদ। এ ছাড়া তিনি ছিলেন একজন টেনিস খেলোয়াড়। দৌড় ও টেনিস উভয় ক্ষেত্রেই তিনি রেকর্ড করেছিলেন। মেরি পুরো ক্যারিয়ারে মোট ১৭টি আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক বিশ্ব রেকর্ড করেছিলেন। ৮০০ মিটার থেকে ১০ হাজার মিটার পর্যন্ত বিভিন্ন দূরত্বের দৌড়ে ৩৬টি মার্কিন জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এসব রেকর্ডের কারণে তাকে ‘রেকর্ড মানবী’ বলা যেতেই পারে। 

মেরি ১৯৮৩ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১ হাজার ৫০০ মিটার এবং ৩ হাজার মিটার দৌড়ে স্বর্ণ পদক জেতেন। তিনি ৫ হাজার মিটার এবং ১০ হাজার মিটার দৌড়ে বিশ্ব রেকর্ডধারী ছিলেন। প্রথম নারী হিসেবে দৌড় প্রতিযোগিতায় ৪ মিনিট ২০ সেকেন্ডের রেকর্ড ভেঙেছিলেন তিনি। 

মেরি টেরেসার ১ হাজার ৫০০ মিটার রেকর্ড ৩২ বছর এবং মাইল (১ হাজার ৭৬০ গজ) রেকর্ড ৩৮ বছর ধরে টিকে ছিল। মেরি টেরেসা ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ আন্তর্জাতিক টেনিস ম্যাচে সবচেয়ে কম বয়সী টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ১৯৮০ সালের ২৫ জানুয়ারি মাইল দৌড়ে ৪ মিনিট ২০ সেকেন্ডের সময়সীমা ভেঙে রেকর্ড গড়েছিলেন।

/ফারজানা ফহমি