জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, উত্তরবঙ্গে কয়েক শ বড় চালের কল আছে, তারা কীভাবে একইভাবে জোটবদ্ধ হয়। ডিম, ব্রয়লার মুরগির মতো এসএমএসের মাধ্যমে গোটা চালের বাজারকে অস্থির করে দেওয়া হয়। ধানের দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বাড়ানো হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিলগালাসহ অসাধু ব্যবসায়ীদের রিমান্ডে নেওয়া হবে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর ফড়িয়াপট্টি চকবাজার এলাকার পাইকারি বাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, ‘মোকামে চালের দাম বাড়ানোর পেছনে একটি চক্র সারা দেশে ধানের দাম বেড়েছে এমন প্রচার করেছে। ধানের দাম যদি বেড়েও থাকে, সেই চালটা তো দুই মাস পরে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে বাজারে আসবে। তাহলে ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে ৪ টাকা বেশি দামে যে চালটা পাওয়া যাচ্ছে, সেই ধানের উৎস তো আগের। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে সেখানে ৪ টাকার ডিফারেন্স ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার আড়ত থেকেই হচ্ছে। তবে বরিশালে তেমন কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। সামান্য লাভে এখানকার ব্যবসায়ীরা ধান-চাল বিক্রি করলেও এখানে হাজার হাজার চালের বস্তা মজুত রয়েছে।’
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আরও বলেন, ‘বর্তমান কস্টিংয়ের সঙ্গে কোনো পার্থক্য হওয়ার কথা নয়। কারণ ট্রাক ভাড়া, দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন বাড়েনি। ফলে ১৫ দিনের ব্যবধানে পূর্বের ধান-চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়া অযৌক্তিক। জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন তদন্ত করে দেখে কম দামে কেনা চাল মজুত করে বাড়তি দামে বিক্রি করছে কি না। ধান-চাল বিক্রিতে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেব।’
ভোক্তা অধিকারের ডিজি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের জোটবদ্ধ হওয়া কিংবা একজনে দাম বাড়িয়েছে বলে সবাই বাড়িয়েছে- এই মনোভাব বন্ধ করতে হবে। এর আগে আলু, ব্রয়লার মুরগি, ডিম নিয়ে যা করেছে; আজ চাল, পেঁয়াজ নিয়েও তা করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান আমাদের।’
ভোজ্যতেলের দাম ও মান নিয়ে ক্ষেভ প্রকাশ করে মহাপরিচালক বলেন, ‘খোলা বাজারে ভোজ্যতেলে ভিটামিনের অস্তিত্ব নেই। দাম ও মান নিয়ন্ত্রণে বোতালজাত তেল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হবে। বরিশালের পাইকারি বাজারে পাওয়া খোলা ভোজ্যতেলের ড্রাম অপরিষ্কার। লেবেলবিহীন ড্রামে পামতেল, সুপার পাম এবং সয়াবিন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দামেও বড় পার্থক্য রয়েছে। এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
বরিশালের বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে করেন মহাপরিচালক।