সিঙ্গাপুরের সীমান্তসংলগ্ন মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে জেএস-এসইজেড নামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) তৈরি করা হবে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে তোলা হবে। আগামী বছরের শুরুতে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে।
প্রস্তাবিত অঞ্চলটি ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তবে দুই দেশের এমন উদ্যোগ তাদের মধ্যে শক্তিশালী ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং যোগাযোগ বাড়ানোর সুযোগ করে দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আসিয়ান অঞ্চলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে কাজ করা ‘আসিয়ান ব্রিফিং’-এর এক প্রতিবেদনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। খবর খালিজ টাইমস।
সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক (ইউএই) সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, সিঙ্গাপুরকে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে মালয়েশিয়া। বর্তমানে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের তথা প্রকল্পের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এবং বাজারের চাহিদা নির্ধারণের জন্য একটি সমীক্ষা চলছে। জেএস-এসইজেড নামের এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে এক দেশ থেকে আরেক দেশে পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ করের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
চলতি বছর অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের সঙ্গে দুই দিনের লিডার রিট্রিটে অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়। করোনার পরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এটি ছিল প্রথম দ্বিপক্ষীয় সম্মিলন। সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার মধ্যকার এই দশম লিডারস রিট্রিট দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলকে পৌঁছেছে। অনুষ্ঠানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ছিল পারস্পরিক অর্থনৈতিক সুবিধার কথা বিবেচনা করা।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারিতে জোহর-সিঙ্গাপুর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এইজেড) পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে।
খবরে বলা হয়, ২০২২ সালে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া একে অপরের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হিসাবে স্থান করে নেয়। সে সময় তাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৩৫৪ কোটি ডলার। এ ছাড়া একই বছরে মালয়েশিয়ার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) উৎসগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম উৎস ছিল সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের এই বিনিয়োগ ছিল সেই সময় মালয়েশিয়ার মোট বিনিয়োগের ৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
এদিকে খবরে বলা হয়, জোহর-সিঙ্গাপুর এসইজেড, দুই দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা উন্নয়ন এবং আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য সহজতর করতে সহযোগিতা করবে। এই কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি, কার্বন ক্যাপচার এবং স্টোরেজ এবং কার্বন ক্রেডিট ভাগাভাগি করা।
আসিয়ান ব্রিফিংয়ের তথ্য অনুযায়ী সিঙ্গাপুরও মালয়েশিয়ার সারাওয়াক রাজ্য থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানিতে আগ্রহী। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ বিনিময় সক্ষম করার জন্য আন্তসীমান্ত বিদ্যুতের তার স্থাপনের সম্ভাব্যতা মূল্যায়নের পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে দুই দেশ মসৃণ বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো উন্নত করেছে।
আ. রহিম