ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪

পুঁজিবাজারে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় হচ্ছে

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১২:০৫ পিএম
পুঁজিবাজারে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় হচ্ছে

ফ্লোর প্রাইস আরোপের কারণে পুঁজিবাজার ছেড়ে চলে যান বিপুলসংখ্যক নারী বিনিয়োগকারী। এরপর কমতে কমতে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা চলে আসে ৫ লাখের নিচে। পরবর্তীতে বাজারে নারীর অংশগ্রহণ সেভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর দেশের পুঁজিবাজারে ফিরে আসতে শুরু করেছে নারী বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে মোট বিনিয়োগকারী ১৬ লাখ। এরমধ্যে ৫ লাখ নারী। অর্থাৎ মোট বিনিয়োগকারীর ২৫ শতাংশই শেয়ারবাজারে নারী বিনিয়োগকারী রয়েছেন। 

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি সময়ে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার পাশাপাশি প্রাইমারি মার্কেটে কিছু ভালো মানের কোম্পানির আইপিও থাকায় আবারও বাজারে যুক্ত হচ্ছে নারী বিনিয়োগকারীরা।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, সম্প্রতি প্রতিদিন গড়ে শতাধিক নারী পুঁজিবাজারের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিও সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে বিষয়টি জানা যায়। সিডিবিএলের দেওয়া তথ্যমতে, গত কয়েক বছরের মধ্যে চলতি ২০২৪ সালের প্রথম দুই মাসে সবচেয়ে বেশি নারী বিও অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, এটাকে ইতিবাচক প্রবণতা বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। 

বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের (বিপিবিএল) ব্যবস্থাপনা  পরিচালক রূপালী চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় অনেক নারী উদ্যোক্তা পুঁজিবাজারে আসছেন। এটি একটি ভালো দিক। আমি একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এজন্য গর্ববোধ করছি। আমি একজন নারী হিসেবে ২০০৮ সাল থেকে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের এমডির দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের দেশে এমন অনেক নারী রয়েছেন যারা পুঁজিবাজারে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) সাবেক নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করতে পুঁজিবাজারে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে। নারীরা এখনো এ ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন কারণে নারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেন। এসব সমস্যা শিক্ষার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। 

তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বিনিয়োগকারী হিসেবে নারীদের সুপ্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এতে এসব বিনিয়োগ থেকে নারী বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।

বিআইসিএমের সহকারী অধ্যাপক কাশফিয়া শারমিন বলেন, ‘আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলিত। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের আর্থিক স্বাধীনতা নেই। আর্থিক বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে নারীদের পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেখানেও মাত্র এক-চতুর্থাংশ নারী বিনিয়োগকারী।’ কাশফিয়া শারমিন বলেন, বিনিয়োগ আগে শিখতে হবে। তারপর মার্কেটে আসতে হবে। কোম্পানির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জেনে বিশ্লেষণ করে তারপর বিনিয়োগ করুন। সফলতা পাবেন।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্যে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২৯ হাজার ৪৮৭টি। মার্চ মাসের ৫ তারিখে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ লাখ ৩১ হাজার  ৬৪৮ টিতে। অর্থাৎ দুই মাসের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে ২ হাজার ১৬১। 

সিডিবিএল সূত্রে জানা গেছে,  চলতি বছরের মার্চের ৫ তারিখে পুঁজিবাজারে নারী-পুরুষ মিলিয়ে  মোট বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ৩৬৭টি। এরমধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীর ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৭১৯টি। দেশের পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ প্রায় ২৫ শতাংশ। 

দেশের পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করতে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের আয়োজন করে আসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি),  বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)। দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। 

বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জের কমিশন এবং স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম, প্রাইমারি মার্কেট (আইপিও) বিনিয়োগ, সেকেন্ডারি মার্কেট (স্টক এক্সচেঞ্জে) বিনিয়োগ, সিকিউরিটিজ অ্যানালাইসিস ও পোর্টফলিও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 

তথ্যে দেখা যায়, পুঁজিবাজারে পুরুষদের তুলনায় নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা এখনো সীমিত। তবে বিএসইসির নানা উৎসাহমূলক উদ্যোগে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারী বিনিয়োগকারীদের আর্থিক জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিয়মিতভাবে নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করে আসছে।

ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া শারমিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘তার সব নারী বন্ধুরা ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করছেন। তিনি একাই রয়েছেন পুঁজিবাজারে। তিনি বলেন, প্রতিদিনের নিয়মমাফিক গদবাধা কাজ থেকে এই সেক্টরটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ খাতে প্রতিদিন যে পরিবর্তন আসছে, তা মোকাবিলা করতে তার ভালো লাগে।’

পুঁজিবাজারে নারীদের আরও বেশি অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথমেই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। নারীরা যে এ সেক্টরে কাজ করতে পারে, তা সবাইকে মানতে হবে। তিনি বলেন, শুধু নারী বলে বড় কোনো কোম্পানি পরিচালনা করতে পারবে না, তা কিন্তু নয়।’

দায়িত্বপূর্ণ পদগুলোয় নারীদের সংখ্যা কমের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  শুরুতেই পরিবার থেকে একটা বাধা কাজ করে। যেমন কোনো প্রোগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণে বাধা, সন্ধ্যার পর নারীরা ঘরের বাইরে বের হতে পারবে না ইত্যাদি। তাই প্রথমেই পরিবারের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। ছেলে বা মেয়ে ভেদাভেদ না করে মেয়েকে সন্তান হিসেবেই ভাবতে হবে।

দেশের বিভিন্ন জেলাতে বিএসইসি কর্তৃক আয়োজিত বিনিয়োগ শিক্ষা কর্মসূচিতে নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সেশনের আয়োজন থাকে। সেখানে সমাজে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন নারী তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার অভিজ্ঞতা বিনিময় করে থাকেন এবং অন্য নারীদেরও উৎসাহ প্রদান করেন কীভাবে পুঁজিবাজারসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সফলতা লাভ করা যায়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিজ প্রতিষ্ঠানসহ স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বিভিন্ন আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ ও নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে বিএসইসির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহিলা কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. রুমানা ইসলাম, যা বিএসইসিতে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বড় অগ্রগতি।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী বর্তমানে বিএসইসিতে কর্মরত আছেন। বর্তমানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদে নারী পরিচালক রয়েছেন। ওরাকলের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাবা দৌলা ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ব্রোকার হাউস, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসহ বিভিন্ন বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

২০১৫ সালে জাতিসংঘে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে মোট ১৭টি লক্ষ্য স্থির করা হয় যার অন্যতম লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়ন। দেশের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। কোনো দেশের বিনিয়োগ সক্ষমতার অন্যতম মাপকাঠি হলো সঞ্চয়-জিডিপি অনুপাত। 

মে মাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পেল বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
মে মাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পেল বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

গেল মে মাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে এর পরিমাণ ২২৫ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক রবিবার (২ জুন) রাতে খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পরিসংখ্যান বলছে, আগের মাস এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ। এপ্রিলে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ০৪ বিলিয়ন বা ২০৪ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় এর বিনিময় মূল্য ছিল ২২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। মার্চের তুলনায় এপ্রিলে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয় ২ দশমিক ১৬ শতাংশ। 

এদিকে মে মাসের প্রথমভাগে প্রতি ডলারের দর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এক লাফে ৭ টাকা বাড়ানোয় রেমিট্যান্স প্রবাহে এমন উল্লম্ফন ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। তাদের মতে, এতদিন ডলারের বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণ করায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কম ছিল।

বর্তমানে প্রতি এক ডলারে নতুন দর ১১৭ টাকা অনুযায়ী রেমিট্যান্সের অর্থে নগদ আড়াই শতাংশ প্রণোদনাসহ একজন প্রাপক পাচ্ছেন ১২০ টাকারও বেশি। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারপ্রতি ৭ টাকা বাড়িয়ে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি সূচনার কথা ঘোষণা করে।

এ পদ্ধতিতে ডলার কেনাবেচা হবে চাহিদা জোগানের ভিত্তিতে ক্রেতা-বিক্রেতা কর্তৃক নির্ধারিত দরে। একে বাজার দর বলা হচ্ছে। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহে হ্রাস বৃদ্ধি একটি নিয়মিত ও স্বাভাবিক ঘটনা। তবে প্রতিবছরই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। রেমিট্যান্স দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ ও বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এবং রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সহায়তা করা।

এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৩৬ কোটি ডলার। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ১৬৬ বিলিয়ন বা ২১৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।

 

বাজেটে পোশাক খাতে উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব বিজিএমইএর

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১২:৪২ পিএম
বাজেটে পোশাক খাতে উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব বিজিএমইএর
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারের নীতি সহায়তা চায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর অর্ধেক কমানোর প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার (২ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা জানান বিজিএমইএর নতুন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এস এম মান্নান কচি। 

তিনি বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ ১০ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বিজিএমইএ। আর এটি বাস্তবায়নেই সরকারের নীতি সহায়তা প্রত্যাশা করা হচ্ছে। 

সেই সঙ্গে আসন্ন বাজেটে বিজিএমইএর কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়।

এগুলো হলো- রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর করা, প্রনোদনার জন্য দেওয়া নগদ সহায়তার উপর আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা, ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইনসেনটিভ অব্যাহত রাখা, পোশাক খাতের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ভ্যাটমুক্ত রাখা, অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানির উপর কর রেয়াত এবং এসব পণ্য বিকল বা নষ্ট হলে প্রতিস্থাপনের জন্য রেয়াতি হারে আমদানির সুযোগ দেওয়া।

এছাড়া শ্রমিকদের জন্য ফুড রেশনিং বাবদ বিশেষ তহবিল বরাদ্দ এবং নন-কটন পোশাক রপ্তানি ও বিনিয়োগে সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। 

সরকারের নীতি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমাদের সরাসরি রপ্তানিকারী কারখানার সংখ্যা পাঁচ হাজার থেকে দুই হাজার ২০০টিতে নেমে এসেছে। আমরা যদি কারখানাগুলো টিকিয়ে রাখতে পারতাম, তাহলে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পেত, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। 

তবে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত হিসেবে পোশাক শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ও সক্ষমতা রয়েছে বলেও মত দেন তিনি।

এ সময় পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে আমাদের পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যেখানে আগের অর্থবছর একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। একই সময়ে আমরা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ পিছিয়ে পড়েছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বৈশ্বিক আমদানি কমেছে ৭ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ। এর কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ, মূল্যস্ফীতির কারণে খুচরা বিক্রি কমে যাওয়া।

ব্যাংক সুদ ১৫ শতাংশ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ৫৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে গড়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৫০ শতাংশ। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পরিবহন খরচসহ সার্বিক উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অন্যদিকে গত ৮ মাসে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলোর দরপতন হয়েছে ৮-১৬ শতাংশ। শিল্পাঞ্চলের বাইরে বিনিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত বিনিয়োগ ও রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

তিনি বলেন, অনেক কারখানা এরই মধ্যে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে। এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ না দিলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি যেন এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। শিল্পাঞ্চলের কাজ শেষ হওয়া এবং জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে তারপর যেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আসন্ন বাজেটে রপ্তানির স্বার্থে অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানির ওপর কর রেয়াত এবং এসব পণ্য বিকল বা নষ্ট হলে প্রতিস্থাপনর জন্য রেয়াতি হারে আমদানির সুযোগ দেওয়া যুক্তিযুক্ত। শ্রমিকদের জন্য ফুড রেশনিং বাবদ বিশেষ তহবিল বরাদ্দ ও নন-কটন পোশাক রপ্তানি ও বিনিয়োগে সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।

এ সময় বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী, সিদ্দিকুর রহমানসহ বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

চাল-মুরগির দাম কমলেও পেঁয়াজে চড়া

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:১৭ এএম
চাল-মুরগির দাম কমলেও পেঁয়াজে চড়া
ছবি : সংগৃহীত

কোনো কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দাম। ভারত সরকার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে গেছে। পেঁপেসহ সবজি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে মরিচের দাম লাগামহীন হতে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাছের দামও কমেনি। চিংড়ি মাছের দাম লাগামহীন হয়ে পড়েছে। নদীর চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। তবে চাষেরগুলো ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় আদা, রসুনের দামও কমছে না। তবে মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। খেতের ধান উঠায় চালের দামও কমতে শুরু করেছে। ডিমের ডজন এখনো ১৪০-১৪৫ টাকা। তবে অলিগলিতে আরও বেশি ডিমের দাম। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।

কমেনি পেঁয়াজ আলুর দাম

ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করলে হঠাৎ করে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি তা প্রত্যাহার করলেও সেই ঘোষণার কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না বাজারে। দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও মোকামের বেপারিরা ইচ্ছামতো দাম আদায় করছেন। 

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের সুরুজ বাণিজ্যালয়ের খলিল বলেন, ‘ভারতের ঘোষণায় কমবে না পেঁয়াজের দাম। কারণ হচ্ছে বেপারিরা আস্তে আস্তে ছাড়ছেন বাজারে।’ 
এর ফলে পাইকারিতেই বাড়ছে। তা ৬৫-৬৮ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজই বিভিন্ন বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। 

টাউনহল বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘পেঁয়াজের কেজি ৭০-৮০ টাকা। বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় মসলার মধ্যে আদা, রসুন, জিরাসহ অন্যান্য মসলার দামও কমছে না

গত সপ্তাহ থেকেই চায়না রসুনের দাম বাড়তি। কেজি ২৪০ টাকা হয়ে গেছে। দেশি রসুনও ২০০ টাকা। কোথাও ২৩০ টাকা। কারওয়ান বাজারের এরশাদ বলেন, ‘ঈদের আগে আদার দাম বেড়ে গেছে। ভারতের কেরালার আদার কেজি ২৯০-৩০০ টাকা। বার্মার আদা ২৮০ টাকা। তবে চায়না আদার দাম একটু কম ২২০-২৪০ টাকা।’ 

এই বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের শাহ আলম বলেন, ‘এলাচের দাম দুই সপ্তাহ আগেই বেড়ে গেছে। ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা কেজি। জিরার দামও বেড়ে কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা। উৎপাদন বেশি হলেও আলুর দাম কমেনি।’ 

টাউনহল বাজারের দেলোয়ার বলেন, ‘বর্তমানে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। তবে গোল লাল আলুর দাম আরও বেশি ৬০-৭০ টাকা কেজি।’ 

কমেছে মুরগির দাম 

সপ্তাহের ব্যবধানে পোলট্রি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ২০০-২১০ টাকা, সোনালির কেজি ৩৮০-৩৭০ টাকা। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় ব্রয়লার হাউসের হাসান বলেন, পোলট্রির দাম কমেছে। ২০০-২১০ টাকা কেজি। সোনালির দামও কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমে ৪৪০-৪৫০ টাকায় নেমেছে। এর ফলে দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৭০০ থেকে কমে ৬৮০-৬৫০ টাকায় নেমেছে। 

অন্য বিক্রেতারাও বলেন, মুরগির সরবরাহ বাড়তে থাকায় দাম কমছে। তবে ডিমের দাম বিভিন্ন বাজারে ১৪০-১৪৫ টাকা ডজনে স্থির হয়ে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে আরও বেশি দামে ১৫০-১৫৫ টাকা ডজন বিক্রেতারা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কমছে চালের দাম

দেশের প্রায় এলাকায় বোরো ধান উঠতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে ঢাকায় চালের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা কমেছে। আগের সপ্তাহের ৭২-৭৫ মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকায় নেমেছে। ৫৫-৬০ টাকার আটাশ ৫৩-৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল ৪৮-৫২ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা আওয়ালসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, ‘ধান উঠতে থাকায় কমতে শুরু করেছে চালের দাম। তবে আরও কমা দরকার। এই বাজারের হাজি রাইস এজেন্সির মঈন উদ্দিনও জানান, ‘সিন্ডিকেটের কারণেই সেভাবে কমে না চালের দাম।’

কমে না মসলার দাম

কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় বিভিন্ন বাজারে জিরাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়তির দিকে। জিরার কেজি ৭০০-৯০০ টাকা, এলাচ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭ টাকা ও পাঁচ লিটার ৭৯০-৮১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২ কেজি আটা ১১০-১৩০ টাকা কেজি, বেসন ১২০, খোলা চিনি ১৩০-১৪০, প্যাকেট চিনি ১৪৫ টাকা। 

পেঁপের কেজি কমে ৪০-৬০ টাকা

গত সপ্তাহে পেঁপে ৮০ টাকা কেজি হলেও গতকাল ৪০-৬০ টাকায় নেমেছে। মোহাম্মদপুরের টাউন হলের মো. আলম বলেন, ‘সরবরাহ বেড়েছে। এ জন্য প্রায় সবজির দাম কমেছে। পেঁপের কেজি ৪০-৬০ টাকা।’ 

বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে টমেটোর কেজি ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০-৫০, ঢ্যাঁড়স ৪০, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০, শসা ৪০-৬০, ঝিঙে ও ধুন্দুল ৪০-৫০, সজনে ডাঁটা ৮০-১২০, পটোল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা। তবে কাঁচা মরিচ কেজি ২৪০-২৬০ টাকা।

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের আল আমিন বলেন, ‘সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেশি। গত সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন ২৫০ টাকার কম না।’ 

স্থিতিশীল গরু, চড়া চিংড়ির দাম

গত সপ্তাহের মতো গরুর মাংস ৭৭০-৮০০ টাকা, খাসির মাংসও ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। মাংস বিক্রেতারা আরও জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে দাম বাড়তি। এর চেয়ে আর কমবে না দাম।

বিভিন্ন পণ্যের মতো মাছের বাজারেও কিছুটা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের আলালসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, রুই ও কাতল ৩৫০-৫৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা। তবে নদীর চিংড়ি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এক পয়সাও কম হবে না। 

পাবদা ৫০০-৭০০, পাঙাশ ২০০, তেলাপিয়া ২০০-২৫০, শিং ও মাগুর ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। বিক্রেতারা বলছেন, নদীর পানি কমে যাওয়ায় খাল বিলের মাছের দাম বেড়ে গেছে। ইলিশ মাছের দামও বাড়তি। এক কেজির ইলিশ গত সপ্তাহে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল ২ হাজার টাকার কমে বিক্রি করা হবে না বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। তবে ছোট সাইজের ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। 

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট কৃষির কোনো বিকল্প নেই। পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভ্যালু চেইনের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছেন না, অন্যদিকে ভোক্তারা বেশি দামে পণ্য ক্রয় করছেন। মধ্যস্বত্বভোগীরা মুনাফা করছেন। তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার: ভ্যালু চেইন উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমদানি-রপ্তানিকারকদের সুবিধার্থে খুব শিগগির ঢাকা চেম্বারের একটি পূর্ণাঙ্গ হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে। যেখান থেকে ‘আইআরসি’ ও ‘ইআরসি’ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির সব সুবিধা দেওয়া হবে। এ বছরের শেষ নাগাদ ‘যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি)’-এর সেবার সব কার্যক্রম পেপারলেস করা হবে, ফলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি হ্রাস পাবে।”

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘দেশের কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী করে এ খাতের তথ্যপ্রযুক্তি তৈরি করা ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের তরুণ সমাজ সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি খাতের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে, যা খুবই অনেক উৎসাহব্যঞ্জক।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কৃষি খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদনশীলতা ২০-৩০ শতাংশ বাড়ানো যায়। বর্তমানে এ খাতে সাপ্লাই চেইনের অপর্যাপ্ততা, বাজারে পণ্য প্রবেশাধিকারের সুযোগ না থাকা এবং উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন প্রভৃতি সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিদ্যমান অবস্থা উত্তরণে কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন ও কৃষকদের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ানো, কৃষি গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, প্রয়োজনীয় সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং কার্যকর ভ্যালু চেইন ব্যবস্থার প্রবর্তন ও বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।’ 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, আইফার্মারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ, বাংলাদেশে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের ঊর্ধ্বতন কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক (এগ্রিকালচার ক্রেডিট ডিপার্টমেন্ট) ড. মো. আবু বাকের সিদ্দিকী প্রমুখ। 

এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান

আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির সমস্যা বিদ্যমান, এর বাইরে বাংলাদেশ নয়। কৃষি পণ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সার, বীজ ও সেচের বিদ্যুতে  সর্বোচ্চ ভর্তুকি দেওয়া হয়। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।’

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পিকেএসএফ আয়োজিত ‘প্রমোটিং এগ্রিকালচারাল কমার্শিয়ালাইজেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজেস (পেইস)’ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

ঘুর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতিতে বিশ্বে রোল মডেল।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা  ও কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আগামী বাজেটে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকবে বলে তিনি জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যবিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের যে অঙ্গীকার রয়েছে, পিকেএসএফ তা অর্জনে বরাবরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পিকেএসএফ কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই পন্থায় দারিদ্র্য দূরীকরণে কাজ করছে। পেইস প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গ্রামভিত্তিক বাংলাদেশের উন্নয়নে ১৯৭৪ সালে বগুড়ায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্নপূরণে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসেন। তিনি সেদিন না আসলে আজকের বাংলাদেশ আমরা পেতাম না। সেদিন মৃত্যুর ভয়কে তুচ্ছ করে তার ফিরে আসার কারণেই আজ বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা।’

পিএসএফের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইফাদ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আর্নড হ্যামেলিয়ার্স। স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার। অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের প্রকল্প বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।