বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন / উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে অর্থনীতির শ্লথ গতি দেখা যাচ্ছে । খবরের কাগজ
ঢাকা ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে অর্থনীতির শ্লথ গতি দেখা যাচ্ছে

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে অর্থনীতির শ্লথ গতি দেখা যাচ্ছে
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

উচ্চ মূল্যস্ফীতি গত এক বছর ধরে বিরাজ করছে। এই সূচক প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এর প্রভাব যে জনজীবনে অনুভূত হচ্ছে, তার প্রমাণ সরকারি পরিসংখ্যানেই পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লেনদেনসংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে দেশে ব্যাংকিং লেনদেন কমেছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানা কারণে দেশের অর্থনীতিতে শ্লথগতি দেখা যাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ; সেই ধারা থেকে অর্থনীতি এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি।

২০২৪ সালের জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে লেনদেন কমেছে ১২ শতাংশের বেশি। একই সময়ে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে লেনদেন কমেছে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন কমেছে ৩৬ শতাংশের বেশি; ডেবিট কার্ডে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে কমেছে ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে (এমএফএস) লেনদেন কিছুটা বাড়লেও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন ৬ শতাংশের বেশি কমেছে। এমএফএসে লেনদেন বেড়েছে দশমিক ৪৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি লেনদেন কমেছে ক্রেডিট কার্ডে। জানুয়ারিতে এর মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা; ফেব্রুয়ারিতে এই কার্ডভিত্তিক লেনদেন নেমে আসে ১ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকায়। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে প্রায় ৩৭ শতাংশ, লেনদেন কমেছে ডেবিট কার্ডেও।

লেনদেনের এই ঋণাত্মক চিত্র অর্থনীতির শ্লথগতির পরিচায়ক বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে দেশে এক বছরের বেশি সময় ধরে যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, তার জেরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। তার প্রভাব পড়ছে লেনদেনে।

বাংলাদেশের অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়। ফলে ব্যাংক লেনদেন দিয়ে অর্থনীতির পুরো চিত্র পাওয়া যাবে না বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, বর্তমানে অর্থনীতির যে চালচিত্র, তার সঙ্গে ব্যাংক লেনদেন কমে যাওয়ার পরিসংখ্যান মিলে যায়।

অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশে অনেক দিন ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এ বাস্তবতায় অনেকে সঞ্চয়পত্র ভেঙে ফেলছেন; ব্যাংক থেকেও আমানত তুলে নিচ্ছেন। মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে; স্বাভাবিকভাবে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে তার প্রভাব পড়ছে। অর্থনীতির সংগঠিত ক্ষেত্রে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যেমন শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে।

মানুষের হাতে ব্যয় করার মতো অর্থ থাকলে সাধারণত শহর অনেক রাত জেগে থাকে। সম্প্রতি ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনের মতো শহর একসময় সারা রাত জেগে থাকলেও এখন আর সে বাস্তবতা নেই। শহরের যেসব এলাকা নাইট লাইফের জন্য বিখ্যাত ছিল, সেসব এলাকার দোকানপাট বেশ তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোভিডের পর থেকেই এই প্রবণতা শুরু হয়েছে। যার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মানুষের হাতে ব্যয়যোগ্য অর্থের পরিমাণ কমে যাওয়া।

ব্লুমবার্গের সেই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, ঢাকার যেসব এলাকা একসময় সারা রাত জেগে থাকত, যেমন মিরপুর-১০, পল্টন, নীলক্ষেত- সেগুলো এখন আর সারা রাত জেগে থাকছে না। এর সঙ্গে মানুষের হাতে ব্যয়যোগ্য অর্থ কমে যাওয়ার সম্পর্ক আছে বলেই ধারণা করা যায়।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, ‘দেশে এক বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। তার রাশ টেনে ধরতে সুদহার বাড়ানো হয়েছে, যাতে মানুষ বেশি ব্যয় না করে। সেটা করতে গেলে বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বেই। দেশের অর্থনীতি এখন সংকটের মধ্যে আছে। এই পরিস্থিতিতে প্রবৃদ্ধি নয়, বরং স্থিতিশীলতা মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

এদিকে সুদহার বৃদ্ধির সঙ্গে ডলার-সংকট মোকাবিলায় এখনো আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। মোট আমদানির প্রায় ৭৫ শতাংশ শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও মধ্যবর্তী পণ্য; সে কারণে সুদহার বাড়ানোর প্রভাব প্রবৃদ্ধিতে পড়ছে। এতে বিনিয়োগ ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ব্যাহত হচ্ছে; প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আয়ে। রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায় সরকারের ঋণ বাড়ছে, উন্নয়ন প্রকল্প ঠিকমতো বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৪২ দশমিক ৩০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি কমে যাওয়ার ফলে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ ) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

পুনরায় রিজার্ভ চুরির সংবাদটি ভুয়া: বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১১:৫০ পিএম
পুনরায় রিজার্ভ চুরির সংবাদটি ভুয়া: বাংলাদেশ ব্যাংক
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের রিজার্ভ পুনরায় চুরি হওয়া সংক্রান্ত সংবাদটি ভুয়া বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। 

বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশের নতুন রিজার্ভ লুট নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় একটি পত্রিকা। সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এটি সম্পূর্ণ ভুয়া খবর। 

 

ঘন ঘন সুদহারের পরিবর্তন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যর্থতা

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০২:১৮ পিএম
ঘন ঘন সুদহারের পরিবর্তন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যর্থতা
পূবালী ব্যাংক পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান

সুদের হার ঘন ঘন পরিবর্তনকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা উল্লেখ করে বেসরকারি পূবালী ব্যাংক পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান বলেছেন, এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, ‘বার বার সুদহার পরিবর্তনের কারণে ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা অস্থিরতা ও অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে পড়ছেন এবং টেকসই নীতি নির্ধারণ করতে পারছেন না।’

গতকাল সোমবার ব্যাংকারদের জন্য ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার চলমান উদ্যোগ ব্যাংক মালিকদের জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত সভায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পূবালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘করোনায় ঋণ ও আমানতের সুদহার যথাক্রমে ৯ এবং ৬ শতাংশ বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর গত বছর জুলাইয়ে স্মার্ট রেট করিডর প্রবর্তন করা হয়। মাত্র ১০ মাসের মাথায় এ বছরে সেটি পরিবর্তন করে সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো। এভাবে তো ব্যবসা চালানো কঠিন। মূলত সুদের হার নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের অদূরদর্শিতা ও নীতিগত ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে।’ 

মনজুরুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংক তো ব্যবসা করে। এজন্য কিছু নীতিমালা মানতে হয়। আবার ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালনায় কিছু পদ্ধতি মেনে চলতে হয়। ঘন ঘন সুদহার পরিবর্তন কিংবা একবারে সুদের হার বেশি বাড়ালে তা সমন্বয় করা কঠিন।’   

এ সময় বেসরকারি খাতের ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক উল্লেখ করে বলেন, ‘সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটা চাহিদা ও জোগানের ওপর নির্ভর করে। সারা বিশ্বে সেটাই চর্চা করা হয়। জোর করে সুদের হার আটকে রাখা যায় না, এটা উচিতও নয়। নীতি নির্ধারকরা ভেবেচিন্তে সেই কাজটাই করেছেন।’  

নজরুল ইসলাম মজুমদার আরও বলেন, ‘ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়াটাও যৌক্তিক। একটা বিশেষ প্রেক্ষাপটে এক সঙ্গে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। নিয়ম মেনেই এটি করা হয়েছে। এটা বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলারের দর উঠবে-নামবে, একটা পর্যায়ে কোনো একটা জায়গায় গিয়ে থেমে যাবে। ডলারের দর নিয়ে নতুন কিছু ঘটেনি।’

এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণের বিষয়টি অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা পর্ষদ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত হচ্ছি। পদ্মা ব্যাংক পরিচালনার সামর্থ্য আমাদের আছে। আর পদ্মা ব্যাংকের কারও চাকরি যাবে না।’ 

বিডি থাই ফুড ব্যবহার করতে পারছে না আইপিও তহবিলের অর্থ

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০২:১২ পিএম
বিডি থাই ফুড ব্যবহার করতে পারছে না আইপিও তহবিলের অর্থ
খবরের কাগজ গ্রাফিক্স

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য খাতের প্রতিষ্ঠান বিডি থাই ফুড (প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের) আইপিও তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে পারছে না। ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করলেও তা এখনো কাজে লাগাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। দুই বছরের বেশি সময়ে আইপিও তহবিলের অর্থ ব্যবহার ব্যর্থ হয়ে আবার সময় চেয়ে আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য পুঁজিবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। শর্তছিল, আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দুই বছরের মধ্যে করা হবে।

তথ্যে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইপিও অর্থ সম্পূর্ণরূপে ব্যয় করতে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানিটি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬১ শতাংশ অর্থ ব্যবহার করেছে কোম্পানিটি। ২০২২ সালের পর থেকে কোনো অর্থ ব্যবহার করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। বাকি অর্থ ব্যবহারের জন্য আরও ছয় মাস সময় চেয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করার পর থেকে নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সাল পর্যন্ত সব কাজ স্বাভাবিক ভাবে হলেও এর পর থেকে সব কাজ বন্ধ রয়েছে। 

তিনি বলেন ডলারসংকট এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে কোম্পানিটি যে যন্ত্রপাতি আমদানি করার কথা ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। এতে তাদের কোম্পানিটি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারেনি। বাকি অর্থ ব্যবহারের জন্য আরও ছয় মাস সময় দরকার। এ জন্য ইতোমধ্যে বিএসইসির কাছে এ জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

এদিকে বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের আইপিও অর্থ ব্যবহার করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ যুক্তিযুক্ত মনে করছে না বিএসইসি। এ জন্য কারণ অনুসদ্ধানে ইতোমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। 

বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. রফিকুন্নবী ও সহকারী পরিচালক বিভাস ঘোষ।

প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন যন্ত্রপাতি কেনার জন্য যে তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছিল, ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে যন্ত্রপাতির দাম অনেক বেড়ে গেছে। যে কারণে বরাদ্দকৃত অর্থ যথেষ্ট নয়। বিডি থাই ফুড প্রায় ৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে কোম্পানিটির যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কিনতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। 

বিডি থাই ফুডের পণ্যের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলের রস, কার্বনেটেড পানীয়, পানীয় জল, হার্ড ক্যান্ডি, নরম ক্যান্ডি, ললিপপ এবং গাম তৈরি করে। যার বেশির ভাগই যুক্তরাজ্য, কোরিয়া এবং চীন থেকে আমদানি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ‘নেক্টর’ ব্র্যান্ড নামে তার পণ্য বাজারজাত করে। সারা দেশে ২৭০টি ডিলারের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ ও বিপণন করছে প্রতিষ্ঠানটি।

কোম্পানিটি চীন থেকে একটি রোটারি ওভেন ও প্যাকেজিং মেশিন আমদানির জন্য ৮৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, ভারত থেকে আরেকটি রোটারি ওভেন আমদানির জন্য ১৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা এবং চীন থেকে তিন সেট ছাঁচের যন্ত্রাংশ আমদানির জন্য ৬০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। বাকি ১ কোটি ২১ লাখ টাকা বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি যেমন- ২৫০ কেভিএ ডিজেল জেনারেটর, ৫০০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন বয়লার সংগ্রহ এবং নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হবে।

সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিডি থাই ফুড চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর ’২৩) শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ৩১ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৭ পয়সা।

এদিকে বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ১৭ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২২ পয়সা। এ ছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ১৪ পয়সা।

প্রতিষ্ঠানটির চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ইপিএস ছিল ৪৭ পয়সা। উল্লিখিত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৪৫ পয়সা।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পারিবারিক কোম্পানি বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোন রুবিনা হামিদ। অন্য পরিচালকরা হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালেক, রুবিনা হামিদের স্বামী কাজী আকতার হামিদ এবং এই দম্পতির ছেলে রায়ান হামিদ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার মেয়ে সিনথিয়া মালেক পরিচালনা পর্ষদে না থাকলেও অন্যতম উদ্যোক্তা বিনিয়োগকারী। 

শেইনের সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সপ্তাহে ৭৫ ঘণ্টা কাজ করছেন শ্রমিকরা

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০১:৫৪ পিএম
সপ্তাহে ৭৫ ঘণ্টা কাজ করছেন শ্রমিকরা
শেইনের একটি শোরুম। ছবি : সংগৃহীত

চীনের ফ্যাশন জায়ান্ট শেইনের পোশাক তৈরির কিছু কারখানার শ্রমিকরা এখনো সপ্তাহে ৭৫ ঘণ্টা কাজ করছেন, যদিও কোম্পানি কর্ম পরিবেশ উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এমনটাই জানা যায় সুইস অ্যাডভোকেসি গ্রুপ পাবলিক আই এর একটি প্রতিবেদন থেকে। খবর বিবিসির

পাবলিক আই ২০১৮ সালের তাদের প্রতিবেদনে গুয়াংঝুতে অবস্থিত ছয়টি কারখানার কর্মীদের অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করার বিষয়টি তুলে ধরেছিল। সম্প্রতি এই তদন্তে তারা চীনে অবস্থিত শেইনের পোশাক সরবরাহকারী ছয়টি কারখানার ১৩ জন কর্মীর সাক্ষাৎকার নেন। তাদের তদন্তের ফলাফল বলছে, অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করা এখনো অনেক শ্রমিকের জন্যই স্বাভাবিক ব্যাপার।

পাবলিক আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, শেইনের সর্বশেষ তদন্তের জন্য চীনের ছয়টি কারখানার ১৩ জন কর্মীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সাক্ষাৎকার দেওয়া শ্রমকিদের মতে, অনেক কর্মীর জন্য অতিরিক্ত ওভারটাইম করাটা এখনো সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। 

শেইন বিবিসিকে বলেছে, পাবলিক আইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান করার জন্য তারা কঠোর পরিশ্রম করছে এবং পরিস্থিতির উন্নতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে তারা।

২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শেইন দ্রুতগতিতে বেড়েছে এবং কোভিড মহামারির লকডাউনের সময় বাড়তে থাকা অনেক অনলাইন ব্যবসার মধ্যে এটি অন্যতম ছিল। চমৎকার দামে বিস্তৃত পরিসরের পোশাক সরবরাহ করা এবং ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানোর মধ্য দিয়ে কোম্পানিটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খুচরা ফ্যাশন (পোশাক) বিক্রেতায় পরিণত হয়েছে।

এই কোম্পানিটি গুয়াংঝুতে তার সদর দপ্তরের কাছে হাজার হাজার তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারী ও চুক্তিভিত্তিক নির্মাতাদের ওপর নির্ভরশীল এবং মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি নতুন আইটেম তৈরি করতে সক্ষম।

২০ বছর ধরে সেলাই মেশিনে কাজ করেছেন এমন একজন কর্মচারী সাক্ষাৎকারে পাবলিক আইকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কাজ করি এবং প্রতি মাসে এক দিন ছুটি নিই। আমি আর কোনো দিন ছুটি নিতে পারি না।’

খবরে বলা হয়, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে ওই ১৩টি কারখানার কর্মচারীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল।

সাক্ষাৎকার দেওয়া শ্রমিকরা দক্ষিণ চীনের গুয়াংঝু এলাকার নানকুন গ্রামের পশ্চিমের উৎপাদন এলাকাগুলোতে কাজ করতেন। তবে পাবলিক আই নামের প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার মূল স্থান নানকুনে নিজেরাই আর ফিরে আসেননি। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে গণমাধ্যমের মনোযোগের কারণে পরিবেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

খবরে বলা হয়, সাক্ষাৎকার দেওয়া শ্রমিকদের বয়স ছিল ২৩ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। শ্রমিকরা জানান, তারা দিনে গড়ে ১২ ঘণ্টা কাজ করেছেন। তবে এই ১২ ঘণ্টার মধ্যে মধ্যাহ্নভোজ ও রাতের খাবারের বিরতি অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

তাদের দাবি, তারা সাধারণত সপ্তাহে ছয় থেকে সাত দিন কাজ করেন। 

শেইনের সরবরাহকারীদের জন্য নির্ধারিত আচরণবিধিতে উল্লেখ রয়েছে যে, শ্রমিকদের ওভারটাইমসহ সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা উচিত নয়। ব্র্যান্ডটি স্বীকার করেছে যে, পাবলিক আই ২০২১ সালে যখন প্রথম এই বিষয় উত্থাপন করে, তখন এটি ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। সর্বশেষ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় শেইন বলেছে, এই খাতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা একটি সাধারণ চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্র্যান্ড, নির্মাতা ও ইকোসিস্টেমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

কোম্পানিটি আরও বলেছে, এটি শেইনের জন্য অনন্য কোনো সমস্যা ছিল না। তবে পাশাপাশি শেইন এ-ও বলেছে যে, আমরা নিজস্ব সরবরাহ শৃঙ্খলের পরিস্থিতি উন্নত করতে নিজেদের ভূমিকা পালন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

শ্রমিকরা দাবি করেছেন, প্রথম তদন্তের পর থেকে তাদের মজুরি খুব কমই পরিবর্তিত হয়েছে এবং প্রতি মাসে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার ইউয়ানের মধ্যে (৬৬৩ থেকে ১ হাজার ১০৪ পাউন্ড) ওঠানামা করে। পাবলিক আই বলছে, ওভারটাইম বেতন বাদ দিলে শ্রমিকদের মূল মজুরি হলো ২ হাজার ৪০০ ইউয়ান (২৬৫ পাউন্ড)।

এশিয়াভিত্তিক বৈশ্বিক শ্রম ও পোশাক উৎপাদনকারী দেশের জোট এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স অনুসারে, চীনে বর্তমানে ‘লিভিং ওয়েজ’ (একজন শ্রমিকের মৌলিক চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম আয়) প্রায় ৬ হাজার ৫১২ ইউয়ান (৭১৯ পাউন্ড)।
সাক্ষাৎকার দেওয়া শ্রমিকদের দাবি, তারা যদি ভুল করে থাকেন, তবে তাদের সেটা ঠিক করে দিতে হবে। এ জন্য তাদের কোনো অর্থ পরিশোধ করা হয় না।

৫০ বছর বয়সী একজন সুপারভাইজার তদন্তকারী দলকে বলেছেন, ‘যে ভুল করে, সে সেটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য দায়ী। আপনাকে আপনার নিজের কাজের সময়ের মধ্যেই সমস্যাটি ঠিক করতে হবে।’

বিবিসি জানায়, কারখানায় নজরদারি ক্যামেরার বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছে বলেও দাবি করেছেন শ্রমিকরা এবং বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, ফুটেজটি রিয়েল টাইমে শেইনে পাঠানো হয়েছিল, যাতে নিয়মগুলো প্রয়োগ করা যেতে পারে।

পাবলিক আই আরও বলেছে যে, তারা কারখানায় বাচ্চাদের বেবিস্যাট, কিশোরদের প্যাকেজিং আইটেম এবং ধূমপানের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হচ্ছে না বলে পর্যবেক্ষণ করেছে।

বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে শেইন বলেছে, তারা আমাদের সরবরাহ শৃঙ্খলজুড়ে শাসন ও সম্মতি জোরদার করতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। কোম্পানিটি বলেছে, আমরা সক্রিয়ভাবে আমাদের সরবরাহকারীদের কার্যপদ্ধতি উন্নত করার জন্য কাজ করছি। এর মধ্যে রয়েছে কর্মঘণ্টাগুলোর বিপরীতে স্বেচ্ছাসেবী ও শ্রমিকরা যেন তাদের কাজের জন্য ন্যায্য মজুরি পান- সেটি নিশ্চিত করা। এ ছাড়া এই ক্ষেত্রে নিরন্তর উন্নতি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য শিল্পটির সহযোগিতার গুরুত্বকে আমরা স্বীকার করি।

কোম্পানিটি আরও বলেছে, ‘আমাদের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, আমরা তৃতীয় পক্ষের নিরীক্ষকদের সঙ্গে পরিচালিত গবেষণায় দেখেছি যে, চীনে শেইনের সরবরাহকারীদের সুবিধাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, এখানকার কর্মীরা মৌলিক বেতন পান, যা স্থানীয় গড় ন্যূনতম মজুরির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

শেইন পাবলিক আইকে বলেছে, সরবরাহকারীদের নিশ্চিত করতে হবে যে তারা মজুরি ও কাজের সময় নির্ধারণ করতে স্থানীয় আইন ও প্রবিধানগুলো পূরণ করছে। যেখানে (আমাদের মূলনীতির) লঙ্ঘন পাওয়া যায়, সেখানে আমরা দৃঢ় পদক্ষেপ নিই... (সেই সঙ্গে প্রয়োজনে) ব্যবসায়িক সম্পর্কের অবসান করে থাকি।’

নজরদারি ক্যামেরার বিষয়ে শেইন পাবলিক আইকে বলেছে, সরবরাহকারীরা তাদের সুবিধার অংশ হিসেবে ক্যামেরা ইনস্টল করার বিষয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কোম্পানির সরবরাহকারীদের নিরাপত্তা ক্যামেরা ফিড বা ফুটেজের কোনো অ্যাক্সেস নেই।

কারখানায় শিশুদের দিয়ে কাজ করানোর বিষয়ে কোম্পানিটি পাবলিক আইকে বলেছে, ‘আমরা শিশুশ্রমকে কঠোরভাবে নিষেধ করি। যেকোনো লঙ্ঘনকে আমরা অত্যন্ত কঠোরতার সঙ্গে বিবেচনা করি।’

শেইন স্বীকার করেছে যে, কিছু কারখানার কর্মী কাজ ও তাদের শিশুদের যত্নের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার ফলে শ্রমিকরা তাদের সন্তানদের কর্মক্ষেত্রে এনে থাকতে পারে। কোম্পানিটি বলছে, ‘এ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার কারণে, আমরা সরবরাহকারীদের তাদের প্রাঙ্গণের মধ্যে বা কাছাকাছি শিশু যত্ন কেন্দ্র (চাইল্ডকেয়ার সেন্টার) তৈরি করতে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকি।’

সড়কে বেইলি সেতু নির্মাণ প্রভাব পড়বে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০১:৪৮ পিএম
প্রভাব পড়বে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে
আখাউড়ার গাজীবাজারে নতুন বেইলি সেতু নির্মাণের জন্য মালামাল এনে রাস্তার মধ্যে রাখা হয়েছে। এতে যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। ছবি : খবরের কাগজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-আগরতলা সড়কের গাজীরবাজার এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর পাশে আরেকটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হবে। যে কারণে আগামী ১৬ মে থেকে ১৮ মে পর্যন্ত সড়কের এই অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। যার প্রভাব পড়বে আখাউড়া স্থবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। বন্ধ থাকবে আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিসও।

উপজেলার গাজীরবাজার এলাকার বেইলি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নতুন সেতুটি নির্মাণাধীন। পুরাতন বেইলি সেতুটি ভেঙে যানবাহন চলাচলের জন্য একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে বিকল্প সড়কটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। ভারত থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে এলে সড়কটি তলিয়ে যাবে। সড়কের এই অংশ থেকে আখাউড়া সড়কের দূরত্ব মাত্র আধা কিলোমিটার। বড় বড় যানবাহন চলাচলের জন্য এই সড়কটি ছাড়া আর কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। যে কারণে বন্দরের বাণিজ্য কার্যক্রমে প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি এই সড়কে বন্ধ থাকবে আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস। 

তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গাজীরবাজার এলাকায় বেইলি সেতুর পরিবর্তে নতুন পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। বিকল্প সড়কটি বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় সেখানে বেইলি সেতু স্থাপনের জন্য ১৬ মে রাত ১০টা থেকে ১৮ মে রাত ১০টা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। 

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হাসিবুল হাসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘সড়ক বন্ধ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। তবে ওই সময়ে বন্দরে বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ বিকল্প সড়ক দিয়ে ছোট যানবাহনে করে মাছ ও অন্য রপ্তানি পণ্য এনে বন্দরে রাখা সম্ভব, তবে বড় যানবাহন চলাচলে বিকল্প সড়ক না থাকায় আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস বন্ধ থাকবে।