ঢাকা ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

আইএমইডির প্রতিবেদন: পায়রা বন্দর প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১২:০৮ পিএম
আইএমইডির প্রতিবেদন: পায়রা বন্দর প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম
ছবি: সংগৃহীত

পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এর বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০১৫ সালে। এই প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় পর খরচ বেড়ে ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকায় ঠেকেছে। বেড়েছে ৩ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বা ২৮৭ শতাংশ। প্রকল্পের শুরুতে বাস্তবায়নের সময় ধরা হয় তিন বছর। পরে ছয়বার সংশোধন করে ৯ বছর বাড়িয়ে চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে সরকারি অর্থ সঠিকভাবে খরচ হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে পরিবহন অডিট অধিদপ্তর।

অডিটে প্রকল্পের শুরু থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ১৩টি আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে। আপত্তিগুলোর অধিকাংশই গুরুতর আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, পায়রা বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত’।

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন মনিরুজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, অনেকে বলছেন, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ কাজের মধ্যে ৮০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ নাও হতে পারে।

কারণ এখনো সুবিধাভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। তারা খাস জমিতে বসবাস করায় কাজে সমস্যা হচ্ছে।

অডিট আপত্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, বিচারাধীন ব্যাপারে কথা বলা ঠিক না। কারণ, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রথমে অনিয়ম হয়েছে বলে অডিটে আপত্তি দেওয়া হয়েছে, পরে খতিয়ে দেখা গেছে যে, সেই অনিয়মের অভিযোগ ঠিক নয়। আমার সঙ্গে কোনো কথা না বলে আইএমইডি থেকে এ ধরনের রিপোর্ট করা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। আলোচ্য প্রকল্পে কোনো ধরনের আর্থিক অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

আইএমইডির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সীমিত আকারে বন্দরের কার্যক্রম চালুকরণ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দর গড়ে তোলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণের জন্য একনেকে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন খরচ ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত অর্থাৎ তিন বছর। কিন্তু তিন বছর কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধন প্রস্তাব করা হলে একনেকে দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালের ২০ মার্চ অনুমোদন দেয়। তাতে খরচ ধরা হয় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এক লাফে খরচ বাড়ে ১৯৭ শতাংশ। তৃতীয় দফায় আবার সংশোধন করে সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।

জানা যায়, সময় ও অর্থ খরচ বাড়লেও কাজের অগ্রগতি ভালো হয়নি। তাই আবারও ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর সংশোধন করা হয়। তখন খরচ ধরা হয় ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। খরচ বেড়েছে ২৮৭ শতাংশ। ফলে এই প্রকল্পে মোট ৯ বছর সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুনে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

প্রকল্পের প্রধান কাজ ধরা হয় ৬ হাজার ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ। এই ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত আনুমানিক ৩ হাজার ৫০০ পরিবারের পুনর্বাসন ও ৪ হাজার ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। জাতীয় মহাসড়ক এন-৮-এর সঙ্গে পায়রা বন্দরের যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং আউটার বার ও নদীপথে চিহ্নিত বারগুলোর প্রয়োজনীয় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নৌপথে মালামাল ও কন্টেইনার পরিবহন নিশ্চিত করা।

ফাস্টট্র্যাক প্রকল্প হওয়ায় আইএমইডি থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকল্পটি তদারকি করা হয়। গত ১৯ আগস্টও পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে তখনো কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে ৬ হাজার ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ ধরা হলেও দখলপ্রাপ্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৯০ একর। এখনো ৯৪২ একর ভূমি অধিগ্রহণ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন। আর ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৪টি প্যাকেজের আওতায় ৩ হাজার ২০০টির মধ্যে নির্মিত ২ হাজার ৬২৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট বাড়ি নির্মাণের জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং দ্রুত নির্মাণ শেষে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে বরাদ্দ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯২ শতাংশ। অবশিষ্ট কাজ শেষ হবে নির্ধারিত সময় ২০২৪ সালের জুনে।

প্রকল্পটির ওপর গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ডিপিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুনে আবশ্যিকভাবে সমাপ্ত করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রকল্প পরিচালককে বাস্তব কাজের অগ্রগতি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তৎপরতা বৃদ্ধি এবং তদারকি আরও জোরদার করতে হবে। প্রকল্প সমাপ্তির তিন মাসের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাপ্ত প্রকল্প রিপোর্ট (পিসিআর) আইএমইডিতে জমা দিতে হবে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ১৩টি অডিট আপত্তি তুলেছে পরিবহন অডিট অধিদপ্তর। উত্থাপিত আপত্তিগুলোর অধিকাংশই আর্থিক অনিয়মের পর্যায়ভুক্ত।

চাল-মুরগির দাম কমলেও পেঁয়াজে চড়া

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:১৭ এএম
চাল-মুরগির দাম কমলেও পেঁয়াজে চড়া
ছবি : সংগৃহীত

কোনো কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দাম। ভারত সরকার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে গেছে। পেঁপেসহ সবজি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে মরিচের দাম লাগামহীন হতে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাছের দামও কমেনি। চিংড়ি মাছের দাম লাগামহীন হয়ে পড়েছে। নদীর চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। তবে চাষেরগুলো ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় আদা, রসুনের দামও কমছে না। তবে মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। খেতের ধান উঠায় চালের দামও কমতে শুরু করেছে। ডিমের ডজন এখনো ১৪০-১৪৫ টাকা। তবে অলিগলিতে আরও বেশি ডিমের দাম। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।

কমেনি পেঁয়াজ আলুর দাম

ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করলে হঠাৎ করে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি তা প্রত্যাহার করলেও সেই ঘোষণার কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না বাজারে। দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও মোকামের বেপারিরা ইচ্ছামতো দাম আদায় করছেন। 

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের সুরুজ বাণিজ্যালয়ের খলিল বলেন, ‘ভারতের ঘোষণায় কমবে না পেঁয়াজের দাম। কারণ হচ্ছে বেপারিরা আস্তে আস্তে ছাড়ছেন বাজারে।’ 
এর ফলে পাইকারিতেই বাড়ছে। তা ৬৫-৬৮ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজই বিভিন্ন বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। 

টাউনহল বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘পেঁয়াজের কেজি ৭০-৮০ টাকা। বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় মসলার মধ্যে আদা, রসুন, জিরাসহ অন্যান্য মসলার দামও কমছে না

গত সপ্তাহ থেকেই চায়না রসুনের দাম বাড়তি। কেজি ২৪০ টাকা হয়ে গেছে। দেশি রসুনও ২০০ টাকা। কোথাও ২৩০ টাকা। কারওয়ান বাজারের এরশাদ বলেন, ‘ঈদের আগে আদার দাম বেড়ে গেছে। ভারতের কেরালার আদার কেজি ২৯০-৩০০ টাকা। বার্মার আদা ২৮০ টাকা। তবে চায়না আদার দাম একটু কম ২২০-২৪০ টাকা।’ 

এই বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের শাহ আলম বলেন, ‘এলাচের দাম দুই সপ্তাহ আগেই বেড়ে গেছে। ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা কেজি। জিরার দামও বেড়ে কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা। উৎপাদন বেশি হলেও আলুর দাম কমেনি।’ 

টাউনহল বাজারের দেলোয়ার বলেন, ‘বর্তমানে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। তবে গোল লাল আলুর দাম আরও বেশি ৬০-৭০ টাকা কেজি।’ 

কমেছে মুরগির দাম 

সপ্তাহের ব্যবধানে পোলট্রি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ২০০-২১০ টাকা, সোনালির কেজি ৩৮০-৩৭০ টাকা। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় ব্রয়লার হাউসের হাসান বলেন, পোলট্রির দাম কমেছে। ২০০-২১০ টাকা কেজি। সোনালির দামও কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমে ৪৪০-৪৫০ টাকায় নেমেছে। এর ফলে দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৭০০ থেকে কমে ৬৮০-৬৫০ টাকায় নেমেছে। 

অন্য বিক্রেতারাও বলেন, মুরগির সরবরাহ বাড়তে থাকায় দাম কমছে। তবে ডিমের দাম বিভিন্ন বাজারে ১৪০-১৪৫ টাকা ডজনে স্থির হয়ে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে আরও বেশি দামে ১৫০-১৫৫ টাকা ডজন বিক্রেতারা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কমছে চালের দাম

দেশের প্রায় এলাকায় বোরো ধান উঠতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে ঢাকায় চালের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা কমেছে। আগের সপ্তাহের ৭২-৭৫ মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকায় নেমেছে। ৫৫-৬০ টাকার আটাশ ৫৩-৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল ৪৮-৫২ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা আওয়ালসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, ‘ধান উঠতে থাকায় কমতে শুরু করেছে চালের দাম। তবে আরও কমা দরকার। এই বাজারের হাজি রাইস এজেন্সির মঈন উদ্দিনও জানান, ‘সিন্ডিকেটের কারণেই সেভাবে কমে না চালের দাম।’

কমে না মসলার দাম

কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় বিভিন্ন বাজারে জিরাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়তির দিকে। জিরার কেজি ৭০০-৯০০ টাকা, এলাচ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭ টাকা ও পাঁচ লিটার ৭৯০-৮১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২ কেজি আটা ১১০-১৩০ টাকা কেজি, বেসন ১২০, খোলা চিনি ১৩০-১৪০, প্যাকেট চিনি ১৪৫ টাকা। 

পেঁপের কেজি কমে ৪০-৬০ টাকা

গত সপ্তাহে পেঁপে ৮০ টাকা কেজি হলেও গতকাল ৪০-৬০ টাকায় নেমেছে। মোহাম্মদপুরের টাউন হলের মো. আলম বলেন, ‘সরবরাহ বেড়েছে। এ জন্য প্রায় সবজির দাম কমেছে। পেঁপের কেজি ৪০-৬০ টাকা।’ 

বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে টমেটোর কেজি ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০-৫০, ঢ্যাঁড়স ৪০, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০, শসা ৪০-৬০, ঝিঙে ও ধুন্দুল ৪০-৫০, সজনে ডাঁটা ৮০-১২০, পটোল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা। তবে কাঁচা মরিচ কেজি ২৪০-২৬০ টাকা।

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের আল আমিন বলেন, ‘সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেশি। গত সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন ২৫০ টাকার কম না।’ 

স্থিতিশীল গরু, চড়া চিংড়ির দাম

গত সপ্তাহের মতো গরুর মাংস ৭৭০-৮০০ টাকা, খাসির মাংসও ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। মাংস বিক্রেতারা আরও জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে দাম বাড়তি। এর চেয়ে আর কমবে না দাম।

বিভিন্ন পণ্যের মতো মাছের বাজারেও কিছুটা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের আলালসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, রুই ও কাতল ৩৫০-৫৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা। তবে নদীর চিংড়ি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এক পয়সাও কম হবে না। 

পাবদা ৫০০-৭০০, পাঙাশ ২০০, তেলাপিয়া ২০০-২৫০, শিং ও মাগুর ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। বিক্রেতারা বলছেন, নদীর পানি কমে যাওয়ায় খাল বিলের মাছের দাম বেড়ে গেছে। ইলিশ মাছের দামও বাড়তি। এক কেজির ইলিশ গত সপ্তাহে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল ২ হাজার টাকার কমে বিক্রি করা হবে না বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। তবে ছোট সাইজের ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। 

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট কৃষির কোনো বিকল্প নেই। পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভ্যালু চেইনের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছেন না, অন্যদিকে ভোক্তারা বেশি দামে পণ্য ক্রয় করছেন। মধ্যস্বত্বভোগীরা মুনাফা করছেন। তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার: ভ্যালু চেইন উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমদানি-রপ্তানিকারকদের সুবিধার্থে খুব শিগগির ঢাকা চেম্বারের একটি পূর্ণাঙ্গ হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে। যেখান থেকে ‘আইআরসি’ ও ‘ইআরসি’ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির সব সুবিধা দেওয়া হবে। এ বছরের শেষ নাগাদ ‘যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি)’-এর সেবার সব কার্যক্রম পেপারলেস করা হবে, ফলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি হ্রাস পাবে।”

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘দেশের কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী করে এ খাতের তথ্যপ্রযুক্তি তৈরি করা ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের তরুণ সমাজ সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি খাতের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে, যা খুবই অনেক উৎসাহব্যঞ্জক।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কৃষি খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদনশীলতা ২০-৩০ শতাংশ বাড়ানো যায়। বর্তমানে এ খাতে সাপ্লাই চেইনের অপর্যাপ্ততা, বাজারে পণ্য প্রবেশাধিকারের সুযোগ না থাকা এবং উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন প্রভৃতি সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিদ্যমান অবস্থা উত্তরণে কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন ও কৃষকদের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ানো, কৃষি গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, প্রয়োজনীয় সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং কার্যকর ভ্যালু চেইন ব্যবস্থার প্রবর্তন ও বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।’ 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, আইফার্মারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ, বাংলাদেশে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের ঊর্ধ্বতন কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক (এগ্রিকালচার ক্রেডিট ডিপার্টমেন্ট) ড. মো. আবু বাকের সিদ্দিকী প্রমুখ। 

এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান

আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির সমস্যা বিদ্যমান, এর বাইরে বাংলাদেশ নয়। কৃষি পণ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সার, বীজ ও সেচের বিদ্যুতে  সর্বোচ্চ ভর্তুকি দেওয়া হয়। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।’

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পিকেএসএফ আয়োজিত ‘প্রমোটিং এগ্রিকালচারাল কমার্শিয়ালাইজেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজেস (পেইস)’ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

ঘুর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতিতে বিশ্বে রোল মডেল।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা  ও কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আগামী বাজেটে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকবে বলে তিনি জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যবিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের যে অঙ্গীকার রয়েছে, পিকেএসএফ তা অর্জনে বরাবরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পিকেএসএফ কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই পন্থায় দারিদ্র্য দূরীকরণে কাজ করছে। পেইস প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গ্রামভিত্তিক বাংলাদেশের উন্নয়নে ১৯৭৪ সালে বগুড়ায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্নপূরণে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসেন। তিনি সেদিন না আসলে আজকের বাংলাদেশ আমরা পেতাম না। সেদিন মৃত্যুর ভয়কে তুচ্ছ করে তার ফিরে আসার কারণেই আজ বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা।’

পিএসএফের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইফাদ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আর্নড হ্যামেলিয়ার্স। স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার। অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের প্রকল্প বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহযোগিতা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৩:১১ পিএম
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহযোগিতা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

বাংলাদেশে অবস্থানরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

বুধবার (২৯ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠককালে এই আশ্বাস দেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাবলিক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্টের প্রকল্প কর্মকর্তা সমষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ মার্গা পিটার্স ও ইনক্লুসিভ গভর্নেন্সের টিম লিডার ফাস্ট সেক্রেটারি মিস এনরিকো লরেনজন।

ডিএসই কার্যালয়ে এ বৈঠকের সময় তার সঙ্গে ছিলেন ডিএসইর পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাত্বিক আহমেদ, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা খাইরুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বৈঠকে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার একটি উদীয়মান শেয়ারবাজার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বর্তমান শেয়ারবাজারকে উন্নয়নের সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার বিষয়ে ভাবছেন।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে অৰ্থায়ন হয়। আর এর মাধ্যমে দেশের জিডিপির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ডিএসইর সহযোগিতা বৃদ্ধি করার বিষয়ে আলোচনা করেন।

একই সঙ্গে তিনি পণ্য এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্টকরণ ইত্যাদি বিষয়সমূহ নিয়েও আলোচনা করেন। প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

পরে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু প্রতিনিধিদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে সরকারের সম্ভাব্য উন্নয়ন রূপরেখা বাস্তবায়ন করার তথ্য-বিশ্লেষণ এবং সচিত্র দিক নির্দেশনামূলক ‘ওয়ার্ল্ড লিডার শেখ হাসিনা: দ্য পাইওনিয়ার অব গ্লোবাল বাংলাদেশ’ নামক নিজের লেখা একটি বই উপহার দেন।

দুর্বল কোম্পানি ও আইপিওর বিষয়ে ডিএসই ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৩:০৭ পিএম
দুর্বল কোম্পানি ও আইপিওর বিষয়ে ডিএসই ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে
খবরের কাগজ গ্রাফিক্স

বিশ্বব্যাপী স্টক এক্সচেঞ্জকে পুঁজিবাজারের প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলা হয়। বাংলাদেশের আইনেও অনিয়ম প্রতিরোধ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে বেশ কিছু ক্ষমতা দেওয়া আছে। বাস্তবে দীর্ঘদিন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছিল না স্টক এক্সচেঞ্জ। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একের পর এক ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে বলে জানান বাজারসংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি দুর্বল কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের ক্ষমতা স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে কোম্পনিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া হবে বলে জানায় বিএসইসি। 

২০১৮ সাল পর্যন্ত ডিএসই যেকোনো আইপিওর (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) প্রসপেক্টাস পর্যালোচনার পাশাপাশি সুপারিশ করতে পারত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছ থেকে সেই ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুধু পর্যবেক্ষণ পাঠাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে করে অনেক আইপিওতে স্টক এক্সচেঞ্জের নানা ধরনের আপত্তি সত্ত্বেও বিএসইসি সেগুলোর অনুমোদন দিয়েছিল। অবশ্য ডিএসইর সুপারিশ না থাকা সত্ত্বেও কিছু আইপিওর অনুমোদন বিএসইসি দিয়েছিল। ফলস্বরূপ বাজারে অনেক দুর্বল কোম্পানির আইপিওর অনুমোদন দেয় বিএসইসি এবং তাতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সম্প্রতি বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সূচক বাড়া-কমা দেখার কাজ বিএসইসির না। আর কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনাও বিএসইসির কাজ না। কিন্তু পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এই দুটি কাজ করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছি। এখন থেকে আইপিও ও সূচকের উন্নয়ন স্টক এক্সচেঞ্জ দেখবে। 

আইপিও কার্যক্রম এবং সূচকের ব্যাপারে কথা হলেও কোম্পানি পরিদর্শন, শেয়ারদর কারসাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা এখনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির হাতেই রয়েছে।

এর আগে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ডিএসইর কর্মকর্তারা তালিকাভুক্ত কোম্পানি তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করতে পারতেন। এ বিষয়ে আইনে বিএসইসির সম্মতি নেওয়ার কোনো বিষয় উল্লেখ ছিল না। কিন্তু সে সময় একটি কোম্পানি ডিএসইর তাৎক্ষণিক পরিদর্শন নিয়ে আপত্তি তুললে আইন পরিবর্তন করে কমিশনের সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়। 

পাশাপাশি কোনো কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে ডিএসইসংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার লেনদেন সময়ে সময়ে সাময়িকভাবে স্থগিতাদেশ দিতে পারত। তবে বর্তমানে এই ক্ষমতা ডিএসই প্রয়োগ করতে পারে না। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক পরিচালক খবরের কাগজকে জানান, শেয়ার কারসাজি হচ্ছে দেখেও স্টক এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থা নিতে পারে না। কেবল অনলাইন সার্ভিল্যান্সের তথ্য বিএসইসিতে পাঠাতে পারে।

পাশাপাশি পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির পর কোম্পানি অনিয়ম করলে, আইন অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের তথ্য না দিলে লেনদেন স্থগিত করে দেওয়া বা তালিকাচ্যুত করা ছাড়া আর কোনো ক্ষমতা নেই। কিন্তু এ ক্ষমতাও ব্যবহার করতে পারে না। কোনো কোম্পানির অফিস বা কার্যালয় পরিদর্শনে যেতেও অনুমতি নিতে হয়। আবার অনুমতি চেয়েও মাসের পর মাস এমনকি বছরও অপেক্ষায় থাকার নজির আছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারদর কারসাজি প্রতিরোধ এবং তালিকাভু্ক্ত কোম্পানি পরিদর্শনে আরও ক্ষমতা চায় প্রতিষ্ঠানটি। 

কোনো শেয়ারের ক্যাটাগরি নির্ধারণ করার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে। সে ক্ষেত্রেও নির্দেশনা নিয়ে পূর্বানুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল বিএসইসি। সমালোচনার মুখে এজিএম না করা কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত করতে অনুমতি দিলেও বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানির ক্ষেত্রে তা কার্যকর করতে দেয়নি।

চলতি মে মাসের ২০ তারিখে বিএসইসি এ-সংক্রান্ত একটি নতুন নির্দেশনা জারি করে। বিএসইসির নির্দেশনায় বেশ কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার যেকোনো একটি শর্ত লঙ্ঘন করলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ওই কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে পারবে। এ নির্দেশনা জুনের ২ তারিখ থেকে কার্যকর হবে। নিদের্শনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠাতে বিএসইসির অনুমোদন লাগবে না। 

বিএসইসির নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি শেষ ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ থেকে বা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির তারিখ থেকে পরপর দুই বছরের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে ব্যর্থ হলে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে।

এর পাশাপাশি আইন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হলেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তবে কোনো রিট পিটিশন বা আদালতে বিচারাধীন কোনো আইনি প্রক্রিয়ার ফলস্বরূপ এজিএম অনুষ্ঠিত না হওয়ার ক্ষেত্রে অর্থাৎ উপবিচারের বিষয় বা জোরপূর্বক ঘটনা ঘটলে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ বছর সময় পর্যন্ত বিবেচনা করা যেতে পারে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যদি তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংস্কার বা বিএমআরইর (ভারসাম্য, আধুনিকীকরণ, পুনর্বাসন এবং সম্প্রসারণ) জন্য এই ধরনের কোনো সময় ছাড়া ন্যূনতম ছয় মাস ধরে একটানা উৎপাদনে না থাকলে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে।

এ ছাড়া পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ছাড়িয়ে গেলে ওই কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা যাবে।

এ ছাড়া কোনো কোম্পানি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘোষিত বা অনুমোদিত ডিভিডেন্ডের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ পরিশোধ বা বিতরণ করতে ব্যর্থ হলে স্টক এক্সচেঞ্জ তা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে পারে।

ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান ছাড়া ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত অন্য কোনো কোম্পানির উদ্যোক্তা-শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালকদের শেয়ার লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।