বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলাকারীকে অবশেষে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
এর আগে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তকে শেষবার মুম্বইয়ের বান্দ্রা রেলওয়ে স্টেশনের কাছে দেখা গেছে এবং তাকে ধরতে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
বার্তাসংস্থা এএনআই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে থানায় ঢোকানো হচ্ছে অভিষুক্তকে।
মুম্বইয়ের ডিসিপি জানান, আপাতত আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশের অনুমান, ঘটনার পর সকালের প্রথম লোকাল ট্রেন ধরে ভাসাই ভিরারের দিকে রওনা দেয় ওই ব্যক্তি। পরে ভাসাই, নালাসোপারা ও ভিরার এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করে মুম্বই পুলিশ।
শুক্রবার সকালে মুম্বই পুলিশ জানায়, তারা সাইফের পিঠ থেকে বের করা ছুরির অংশটি হাতে পেয়েছে। ওই ছুরির বাকি অংশ কোথায়, তা খোঁজা হচ্ছে।
লীলাবতী হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানায়, অভিনেতার পরিবার ও চিকিৎসকরা শুক্রবারই অভিনেতাকে আইসিইউ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে নিয়ে আসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বৃহস্পতিবার বান্দ্রার ১১ তলার ফ্ল্যাটে হামলার শিকার হন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খান। জানা যায়, এক অনুপ্রবেশকারী তার বাড়িতে ছোট ছেলের ঘরে অভিনেতার পরিচারিকার মুখোমুখি হয়। পরে সাইফ ওই ব্যক্তিকে আটকানোর চেষ্টা করলে ছুরি দিয়ে আক্রমণ চালায়। সাইফের শরীরে ছুরির ছয়টি আঘাত করা হয়।
পরে সাইফকে মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অস্ত্রোপচার হয়।
চিকিৎসকরা জানান, ছুরির আঘাতের কারণে সইফের মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত লাগে। মেরুদণ্ড থেকে ২ দশমিক ৫ ইঞ্চি লম্বা ছুরি বের করা হয়। বর্তমানে সাইফ শঙ্কামুক্ত হলেও চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
মুম্বই পুলিশ অভিনেতার ওপর হামলায় এফআইআর করেছে। অভিযোগকারী ছোট ছেলে জেহর আয়ার বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। হামলাকারী সাইফের পরিবারের কাছে এক কোটি টাকা দাবি করে।
অভিযোগকারী বলেন, হেক্সো ব্লেড দিয়ে পরিচারিকাকেও আঘাত করে সেই অনুপ্রবেশকারী।
তার কথায়, ‘সে তার বাঁ হাতে কাঠের মতো কিছু এবং ডান হাতে একটি দীর্ঘ পাতলা হেক্সাে ব্লেড নিয়ে আমার দিকে ছুটে আসে। ধস্তাধস্তির সময় সে ব্লেড দিয়ে আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। যখন আমি আমার হাত এগিয়ে নিয়ে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করি, তখন ছুরির মতো কিছু আমার দুই হাত এবং বাঁ হাতের মধ্যমা আঙুলের কাছে আমার কব্জিতে আঘাত করে। এ সময় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ‘তুমি কী চাও’, তখন সে বলে, ‘আমার টাকা দরকার’। আমি জিজ্ঞেস করলাম কত? এরপর তিনি ইংরেজিতে বলেন ‘ওয়ান ক্রোর’।
‘এরপর সে সাইফের উপরে হামলা চালায়। আমরা সবাই দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে দরজা টেনে দিই। শব্দ শুনে ঘুমন্ত রমেশ, হরি, রামু ও পাসোয়ান (অন্যান্য কর্মচারীরা) বেরিয়ে আসে।’
সাইফের ওপর হামলার তদন্তকারী দলের সদস্য মুম্বই পুলিশের জোন ৯-এর ডিসিপি দীক্ষিত গেডাম, বলেন, ঘটনাটি একটি ‘ডাকাতির চেষ্টা’ ছিল এবং অভিযুক্তরা সাইফ আলি খানের বাড়িতে প্রবেশের জন্য অগ্নিনির্বাপক সিঁড়ি ব্যবহার করেছিল। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস
অমিয়/