ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪

বেইলি রোড ট্র্যাজেডি অবশেষে সাংবাদিক অভিশ্রুতির পরিচয় শনাক্ত

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৪, ০৮:২৭ পিএম
অবশেষে সাংবাদিক অভিশ্রুতির পরিচয় শনাক্ত
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বৃষ্টি খাতুন (অভিশ্রুতি শাস্ত্রি)। ছবি : সংগৃহীত

অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনের (অভিশ্রুতি শাস্ত্রি) পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। বাবার নাম সবুজ শেখ ওরফে শাবলুল আলম এবং মা বিউটি খাতুনের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলেছে বৃষ্টির ডিএনএ। 

রবিবার (১০ মার্চ) বিকালে খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।

চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হন বৃষ্টি। বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুত নামেই পরিচিত ছিলো। বৃষ্টি ছিলো মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি নামে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার তার লাশ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর মন্দিরের পুরোহিত ও তার বাবা-মা বৃষ্টিকে নিজের সন্তান হিসেবে দাবি করে। এর পর নেওয়া হয় ডিএনএ নমুনা। নমুনা নেওয়ার ১১দিন পর বৃষ্টির ডিএনএ সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে। 

বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের প‌শ্চিমপাড়ায়। কলেজের সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর নাম বৃষ্টি খাতুন। 

অন্যদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে থাকা ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলামের ডিএনএ শনাক্ত হয়েছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলো নাজমুল। 

ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম জানান, বৃষ্টি ও নাজমুলের পরিবারের সদস্যরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলো। গত শনিবার তাদের ডিএনএ শনাক্ত হয়েছে। উভয়েরই পরিবারের সঙ্গে ডিএনএ মিলেছে। 

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ডিএনএ শনাক্তের পর তদন্ত কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা তারাই নেবে। 

মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে রমনা থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, মরদেহ শনাক্তের বিষয়ে সিআইডি এখনও আমাদেরকে কোনো কিছু জানায়নি। ডিএনএ যদি শনাক্ত হয় তবে অবশ্যই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। 

এ বিষয়ে বৃষ্টির বাবা শাবলুল আলম সবুজ ও নাজমুলের মামা আনোয়ার হোসেন জানান, মরদেহ নেওয়ার জন্য এখনও তাদের কিছু জানানো হয়নি। তারা অপেক্ষায় আছেন। 

চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় এক রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে শিশুসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

তুলি/এমএ/

এমপি আনার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এডিসি শাহিদুরকে বদলি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম
এমপি আনার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এডিসি শাহিদুরকে বদলি
এডিসি শাহিদুর রহমান। ছবি সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এডিসি শাহিদুরসহ ২১ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

রবিবার (২ জুন) পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে এডিসি শাহিদুর রহমানকে বদলি করে বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

শাহিদুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) ওয়ারী বিভাগের এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

তিনি বর্তমানে ডিবির টিমের সঙ্গে নেপালে আছেন। এর আগে গত ২৬ মে ভারতে যান ডিবির টিমের সঙ্গে। একই প্রজ্ঞাপনে এডিসি শাহিদুরসহ ২১ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আনোয়ারুল আজীম। পরে তিনি নিখোঁজ হন। একপর্যায়ে গত ১৩ মে তিনি সেখানে খুনের হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।

খাজা/এমএ/

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১১:৩৯ পিএম
গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
ছবি : বাসস

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই- এ কথা পুনর্ব্যক্ত করে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, ‘সরকারের যদি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা থাকত, তাহলে দেশে এত সংবাদমাধ্যম বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হতো না।’

শনিবার (১ জুন) নগরীর গুলশান ক্লাবে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সদস্য সংবাদপত্রের প্রকাশনার ৫০ বছর ও ২৫ বছর পূর্তিতে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের।

আলী আরাফাত আরও বলেন, ‘দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতিফলন।’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব সময় গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায় উল্লেখ করে আরাফাত বলেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশ গণমাধ্যমের ব্যাপক বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের যদি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা থাকত, তাহলে তারা সংবাদমাধ্যমের সংখ্যা বাড়তে দিত না, কারণ অধিক সংখ্যায় সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা আরও কঠিন।’ তিনি গণমাধ্যমকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ, যথাযথ তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানান।

আরাফাত বলেন, ‘আমরা সমালোচনা গ্রহণের জন্য একেবারে প্রস্তুত এবং আপনার মতামত শুনতে ইচ্ছুক। আমরা বিশ্বাস করি না যে আমাদের কোনো ব্যর্থতা বা ভুল নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম সরকারের ভুলগুলো সংশোধনের জন্য চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে।’

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না তারা কীভাবে এটি তৈরি করেছে। আমি র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য ইনপুট হিসেবে নেওয়া তথ্যগুলো দেখেছি। রিপোর্টে অনেক ভুল তথ্য পেয়েছি।’ তিনি ২০২৩ সালের রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত পদ্ধতিগত দুর্বলতা এবং ভুল তথ্য চিহ্নিত করে আরএসএফকে একটি চিঠি পাঠানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আরএসএফ সেসব স্বীকার ও সংশোধন করেছে।’

আরাফাত বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে (আরএসএফ রিপোর্টে) স্বচ্ছতার অনেক অভাব রয়েছে। যেমন আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট দেশের গণমাধ্যমের পরিবেশ সম্পর্কে মুষ্টিমেয় কিছু লোককে জিজ্ঞাসা করেন, যা মূলত সেই বিশেষ ব্যক্তিদের মতামত হবে। এটি পুরো দেশের চিত্র হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাই সমগ্র দেশের বাস্তব চিত্র পাওয়ার জন্য গবেষণায় একটি সুপ্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি রয়েছে, যা অনুসরণ করা প্রয়োজন।’ কিন্তু এই বিশেষ গবেষণায় তা অনুসরণ করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা কি সম্ভব যে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের পরিবেশ আফগানিস্তানের চেয়ে খারাপ?’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি তখনই সম্ভব যখন আপনার পদ্ধতিতে কিছু ভুল রয়ে যাবে। তাই সবকিছুকে অভিহিত মূল্যের ভিত্তিতে না নেওয়ার অনুরোধ করছি।’

দেশের গণমাধ্যমের পরিবেশে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের গণমাধ্যমের পরিবেশের উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।’

নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সংবাদের ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক আজাদীর নির্বাহী সম্পাদক শিহাব মালিক প্রমুখ।

নোয়াব প্রকাশনার ৫০ বছর পূর্ণ করার জন্য দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বাঞ্চল এবং ২৫ বছর পূর্ণ করার জন্য প্রথম আলো ও মানবজমিনকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

মে মাসে নির্যাতনের শিকার ২৪৩ নারী

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১১:১৯ পিএম
মে মাসে নির্যাতনের শিকার ২৪৩ নারী
ছবি : সংগৃহীত

চলতি বছরের মে মাসে ১১০ কন্যা ও ১৩৩ নারীসহ মোট ২৪৩ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪০ কন্যাসহ ৬২ জন। তার মধ্যে ১২ কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আর একজন এক ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। এ ছাড়া সাতজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

রবিবার (২ জুন) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। ১৬টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংস্থাটি। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মে মাসে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ২২ কন্যাসহ ২৩ জন। উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন ছয় কন্যাসহ সাতজন। তার মধ্যে এক কন্যা আত্মহত্যা করেছেন। এ ছাড়া যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। তা ছাড়া শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২ কন্যাসহ ১১ জন। পারিবারিক সহিংতায় শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তিনটি। এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন কারণে ৭ কন্যাসহ ৪৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া চারজনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ৩ কন্যাসহ ২২ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ৫ কন্যাসহ ২০ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে এক কন্যা আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছেন। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মে মাসে তিন কন্যাসহ চারজন অপহরণের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া এক কন্যাকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। তিন কন্যাসহ চারজন সাইবার ক্রাইমের ঘটনার শিকার হয়েছেন। বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে দুটি। বাল্যবিবাহের ঘটনা প্রতিরোধ করা হয়েছে পাঁচটি। এ ছাড়া ৫ জন কন্যাসহ ১২ জন বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নারী ও কন্যা পাচারের ঘটনা ঘটেছে দুটি। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছেন দুজন। তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

তিথি/এমএ/

দেবদেবীর অভিশাপে অভিশপ্ত, তাই লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয়েছে: ড. ইউনূস

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১০:২১ পিএম
দেবদেবীর অভিশাপে অভিশপ্ত, তাই লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয়েছে: ড. ইউনূস
ছবি : খবরের কাগজ

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘দেবদেবীর অভিশাপে আমি অভিশপ্ত। অভিশপ্ত জীবনটা বড় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাই আমাকে লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয়েছে। অপমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয়।’

রবিবার (২ জুন) আদালত থেকে বের হওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন তিনি। 

এদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের চার্জগঠনের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত আগামী ১২ জুন আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন।

শুনানির শুরুতে আদালতের এজলাসকক্ষে আসামিদের জন্য তৈরি করা লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়ান তিনি। খাঁচায় দাঁড়ানোর এই অভিজ্ঞতাকে ‘অভিশপ্ত জীবনের অংশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ড. ইউনূস।

তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, শুনানির শুরুতে আদালত ড. ইউনূস ছাড়া বাকি আসামিদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বলেন। তখন ড. ইউনূস বলেন, ‘তার জন্য অন্যদের এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাই তিনি নিজেও লোহার খাঁচায় তৈরি আসামির কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান। মিনিট দুয়েক পর সবাই বিচারকের অনুমতি নিয়ে এজলাসকক্ষের বেঞ্চে গিয়ে বসেন।’

আদালত থেকে বের হওয়ার পর ড. ইউনূস গণমাধ্যমকে বলেন, লোহার খাঁচার তৈরি আসামির কাঠগড়া তো অপমানজনক। অপমান করার জন্য এটি করা হয়েছে। এটা তো আর সম্মান দেওয়ার জন্য বানানো হয়নি। অপমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বানানো হয়েছে। আজ আমি অভিশপ্ত জীবনের শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছেছি। এই প্রথম আমাকে লোহার খাঁচায় দাঁড়াতে হলো।

আদালতে আনা অভিযোগ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘এ ঘটনার মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। যে জিনিস আমি দিয়ে দিয়েছিলাম, সেটার জন্য আমাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। আমার সঙ্গীরা আজ অভিশপ্ত। এটা আমার মনে কঠিনভাবে দাগ কেটেছে। আমার পরিবারকে আক্রমণ করেছে। আমার বাবাকে আক্রমণ করেছে। এটা আমার কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমার অভিশপ্ত জীবনের অংশ।’

তিনি বলেন, ‘এটা আমার জীবনের একটা স্মরণীয় ঘটনা যে লোহার খাঁচার মধ্যে দাঁড়িয়েছিলাম আদালতের কাঠগড়ায়। এটা অভিশপ্ত জীবনের একটা অংশ। আমরা নোবেল পুরস্কারের কথা সবাই জানি। দুইটা নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। একটা ছিল আমার নামে, আরেকটা গ্রামীণ ব্যাংকের নামে। দুইটারই সমান গুরুত্ব ও মর্যাদা। কোনোটার চেয়ে কোনোটা কম নয়। এটা যৌথভাবে দেওয়া হয়েছে, তাও না। দুইটাই স্বাধীনভাবে দেওয়া হয়েছে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো নজির নাই, একজন নোবেল বিজয়ী আরেকজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে মামলা করতে দুদকে হাজির হয়েছে। এটা আমাদের কপালে হলো। এটা অভিশাপের একটা অংশ। যে অভিশাপ আমরা গ্রহণ করে যাচ্ছি। সে অভিশাপ এমনভাবে হয়েছে, একটা নোবেল বিজয়ী এবং এ নোবেল বিজয়ী হলো খুবই সম্পৃক্ত নোবেল বিজয়ী। অনেকটা পিতা-পুত্রের সম্পর্কের মতো নোবেল বিজয়ী। যে আমার কারণে এটা সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। সেটাও আমার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেয়েছে। এটারই একটা অংশ। যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে দুজনের মধ্যে একজন। এটা আমার বিরুদ্ধে এমনভাবে নিয়ে আসলো খুব কঠিন ভাষায়, রূঢ় ভাষায় আক্রমণ করে।’ 

তিনি বলেন, ‘অভিযোগ থাকতে পারে কিন্তু রূঢ় ভাষায় আক্রমণ করে অভিযোগগুলো করে। যে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে আপনাদের জানিয়েছি, ঘটনা কী ঘটেছিল। এ ঘটনার মধ্যে কোনো সত্যতা তো নেই। যে জিনিস দিয়ে দিয়েছিলাম, সেটার জন্য আমাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে, টাকা মেরে দিয়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি। এ পর্যন্ত যত অভিযোগ এসেছে আমার ও সহকর্মীদের বিরুদ্ধে, তারা অভিশাপের একটা অংশ। এটা আমার কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়নি। যে আমার বাবাকে আক্রমণ করেছে, ভাই-বোনদের আক্রমণ করেছে। এই যে সেটা অভিশপ্ত জীবনের একটা অংশ বলে গেলাম।’

নোবেলজয়ী ড. ইউনূস বলেন, ‘এ সময় কেন তাদের অভিশপ্ত জীবন বহন করতে হচ্ছে সেটা আপনারা জানুন এবং লিখুন। শুধু জানা নয়, কিছু লিখুন। সত্যতা, গুরুত্বটা, ভূমিকাটা কী? রিপোর্টিং বলতে শুধু শুনলাম, লিখলাম এটা না। এর একটা ব্যাখ্যাও আছে। গভীরে যাওয়া, সবাইকে জানান দেওয়া সেটাও একটা অংশ।’

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করলেন আইএমও মহাসচিব

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করলেন আইএমও মহাসচিব
ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশন (আইএমও) এর মহাসচিব অ্যান্টোনিও ডোমিনগেজ ভেলাসকো। 

রবিবার (২ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইএমও সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হওয়ার পর এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে গত ৩০ মে বাংলাদেশ সফরে আসেন অ্যান্টোনিও ডোমিনগেজ ভেলাসকো। সফরের অংশ হিসেবে গত ৩১ মে চট্টগ্রাম বন্দর সফরে আসেন সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্টোনিও ডোমিনগেজ ভেলাসকো এবং যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম। এ সময় তিনি বোট ক্লাব থেকে নদী পথে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। 

একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় শহিদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরের ওপর আয়োজিত একটি সভায় যোগদান করেন আইএমও সেক্রেটারি জেনারেল। 

এ সময় তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টর এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দরের অবদান অপরিসীম। আইএমও তার সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে।’ 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সার্বিক সহযোগিতার জন্য আইএমও মহাসচিবকে বিশেষ ধন্যবাদ। একই সঙ্গে আইএমও এর উত্তরোত্তর সহযোগিতাও প্রত্যাশা করি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইএমও প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্যরা।