জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীমকে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবিপ্রধান বলেন, গত সোমবার একটি অভিযোগ করেছেন মীম। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনেক কথা বলেছেন। মীমকে কেন বার বার ফেল করানো হচ্ছে, সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবে। তবে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল বা হুমকি দেওয়ার বিষয়গুলো আমরা তদন্ত করছি। অভিযোগের বিষয়ে অনেক কিছুই আমাদের হাতে নেই।
এ ছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গেও সাইবার টিম যোগাযোগ রাখছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গেও কথা বলেছি।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পাচ্ছেন জবির ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম। আতঙ্কিত হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার বিকালে ডিবি কার্যালয়ে শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন ও বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন এই শিক্ষার্থী।
অভিযোগ দেওয়ার পর বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মীম বলেন, আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করেছেন। এই অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম ও অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। আমার অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় ফেল করানো হয়।
তিনি আরও জানান, ২০২১ সালে আবু সাহেদ ইমন তাকে যৌন হেনস্তা করেন। এ বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে তার জীবনে নেমে আসে নানা নির্যাতনের খড়গ। সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় যৌন হয়রানি ও নানা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই শিক্ষার্থী সোচ্চার হন। সেখানেই অবন্তিকার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে নিজের প্রসঙ্গও আসে। গণমাধ্যমে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
মীম আরও বলেন, আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না। কখন আমাকে মেরে ফেলা হয় সেটা জানি না। শুধু আমি না, তারা আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। বর্তমান এই অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে এসেছি।