![মুক্তিসংগ্রামের গল্প নিয়ে ঢাকায় চলচ্চিত্র উৎসব](uploads/2024/04/18/1713456752.235698kk.jpg)
সমকালীন বিশ্বচলচ্চিত্র অঙ্গণে আলোচিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব 'লিবারেশন ডকফেস্ট বাংলাদেশ’। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এ উৎসবের থিম- জয় প্যালেস্টাইন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ছাড়াও ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজেও প্রদর্শিত হবে নানা চলচ্চিত্র।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বলছে, উৎসবের মূল উদ্দেশ্য, মানুষের মুক্তিসংগ্রাম ও মানবাধিকার রক্ষার যেসব লড়াই সংগ্রাম পৃথিবীর নানাদেশে চলছে, সেই বাস্তবতা বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মেন্টর এক্সপোজিশন অব ইয়াং ফিল্ম ট্যালেন্ট নীলোৎপল মজুমদার এবং ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা হাওবাম পবন কুমার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর এমপি এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উৎসব পরিচালক মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, আগামী পাঁচ বছর শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ আমরা যদি উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাই, তাহলে শিল্প ও সাংস্কৃতির চেয়ে বড় কোন অস্ত্র হতে পারে না। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন এখন আমাদের দরকার। একইসঙ্গে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গণে উদ্ভাবনী মেধা খুবই দরকার।
লিবারেশন ডকফেস্ট বাংলাদেশের ১২তম আয়োজন শুরু হয়েছে প্যালেস্টাইনের নির্মাতা মোহামেদ জাবালির ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ প্রদর্শনীর মাধ্যমে। চলচ্চিত্র বাছাই কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত ৩৫টি চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ এবং 'সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড' বিভাগে দেখানো হবে। এছাড়া সমকালীন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ আরও ১০টি চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে ‘বিশেষ প্রদর্শনী’। এ বিভাগে ইয়েমেনি নির্মাতা সায়মা আল তামিমির নিরীক্ষাধর্মী চলচ্চিত্র ‘ডোন্ট গেট টু কমফোর্টেবল’, ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা ইলিওনো বোয়াসিনো নির্মিত ‘দ্যা পাঠান সিস্টার্স’, ভারতের হাওবাম পবন কুমারের ‘ফ্লোটিং লাইফ’, কৃষ্ণেন্দু বোসের ‘বে অব ব্লাড’ সিনেমাগুলো দেখা যাবে৷
চলচ্চিত্র বাছাই কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত ২০২২-২০২৩ সালে নির্মিত অনধিক এক ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভাগে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা হবে। উৎসবের শেষদিন দুটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের নাম ঘোষণা করা হবে। জাতীয় বিভাগে বিজয়ী ছবির নির্মাতাকে ১ লাখ টাকা এবং আন্তর্জাতিক বিভাগে বিজয়ী ছবির নির্মাতাকে ১ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া তরুণ জুরিদের বিচারে জাতীয় বিভাগে একটি এবং আন্তর্জাতিক বিভাগে একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রকে পুরস্কৃত করা হবে। এছাড়া ‘স্টুডেন্ট পার্সপেক্টেভ’ বিভাগে নির্বাচিত ৬টি চলচ্চিত্র থেকে সর্বাধিক দর্শক ভোট পাওয়া ছবিকে অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
উৎসবে তরুণ নির্মাতাদের নিয়ে 'এক্সপজিশন অব ইয়াং ফিল্ম ট্যালেন্ট শিরোনামে কর্মশালা' অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
উৎসবের প্রতিটি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য টিকেটের মূল্য ৩০ টাকা। একটি টিকেট কেটে নির্ধারিত চলচ্চিত্র দেখার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গ্যালারি ঘুরে দেখা যাবে।
জয়ন্ত সাহা/এমএ/