ঢাকা ১৯ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫
English

গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারের ছবি তোলার অভিযোগে আটক ১

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
আপডেট: ২১ মে ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম
গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারের ছবি তোলার অভিযোগে আটক ১
ছবি : খবরের কাগজ

ঠাকুরগাঁওয় সদরে রোড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারের ছবি তোলার অভিযোগে মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে তাকে কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়।

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্বপন কুমার কর্মকার জানান, মাসুদ ব্যালট পেপার নিয়ে গোপন কক্ষে প্রবেশ করেন এবং সিল মারা শেষে ছবি তুলে বের হয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাকে দেখতে পেলে মোবাইলসহ আটক করে। বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আটক মাসুদ তার দোষ স্বীকার করেছেন।

নবীন হাসান/জোবাইদা/অমিয়/

অধিকার আদায়ে প্রবাসীদের সচেতনতা জরুরি: তৈয়্যব

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১১:৫৬ পিএম
অধিকার আদায়ে প্রবাসীদের সচেতনতা জরুরি: তৈয়্যব
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ফাইল ছবি।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রবাসীদের অবদান অপরিসীম। লাকসাম একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি বলেন, সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করলেও অতীতে কিছু সমস্যার কারণে এসব সুবিধা পুরোপুরি পৌঁছেনি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এসব সমস্যা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং ইতোমধ্যে প্রবাসীরা সুফল পেতে শুরু করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) কুমিল্লার লাকসামে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আয়োজিত শিক্ষাবৃত্তি ও আর্থিক অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অনেক সময় নিজেদের নাম, সন্তানের জন্ম তারিখ এবং অন্যান্য তথ্য ভুলভাবে বিভিন্ন জায়গায় প্রদান করেন। এতে পরবর্তীতে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। বর্তমানে সকল তথ্য ডিজিটাল হওয়ায় এসব ভুলের প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে। তাই জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আগেভাগেই এসব সমস্যা সমাধান করতে হবে।

অনুষ্ঠানে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণউদ্যোগ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ লাকসাম উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং জেলার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। নিজের আত্মপ্রচারে না গিয়ে অন্যকে সম্মান জানানো এবং কী রেখে যাচ্ছেন তা মনে রাখাই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

অনুষ্ঠানে আর্থিক অনুদান হিসেবে লাকসাম, নাঙ্গলকোট এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলায়  ছয়জনকে জনপ্রতি তিন লাখ করে ১৮ লাখ, জীবন বিমা বাবদ নাঙ্গলকোট এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলায় তিনজনকে ২৪ লাখ, ক্ষতিপূরণ বাবদ দু’জন প্রবাসীর পরিবারকে ৭২ লাখ ১৪ হাজার ৫৫৩, এসএসসি এবং সমমান শিক্ষার্থীদের ৫ লাখ ৭৭ হাজার  এবং এইচএসসি ও সমমান শিক্ষার্থীদের ৩ লাখ ৬ হাজার করে  মোট এক কোটি ১৪ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, গণউদ্যোগ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

সিফাত/

জিআই সনদ পেল কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান ও অষ্টগ্রামের পনিরসহ ২৪ পণ্য

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
জিআই সনদ পেল কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান ও অষ্টগ্রামের পনিরসহ ২৪ পণ্য
ছবি: বাসস

ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের সনদ পেয়েছে কিশোরগঞ্জের সুস্বাদু রাতাবোরো ধান ও দেশবিদেশে বিখ্যাত অষ্টগ্রামের পনির।

গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাতাবোরো ধান ও পনিরের এ সনদ গ্রহণ করেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।

শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিশিষ্ট শিল্পী, অভিনেত্রী ও সংগীত পরিচালক আরমিন মুসা ও বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার নাকফজলি আম চাষি সমবায় সমিতির সদস্যরা।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান ও অষ্টগ্রামের পনির পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি কিশোরগঞ্জের কৃষি ও খাদ্যশিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। যা স্থানীয় পণ্যের মান ও খ্যাতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

এ অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান ও অষ্টগ্রামের পনিরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধন সনদ দেয়া হয়েছে। নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হলো; নরসিংদীর লটকন (৩২), মধুপুরের আনারস (৩৩), ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই (৩৪), মাগুরার হাজরাপুরী লিচু (৩৫), সিরাজগঞ্জের গামছা (৩৬), সিলেটের মণিপুরি শাড়ি (৩৭), মিরপুরের কাতান শাড়ি (৩৮), ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা (৩৯), কুমিল্লার খাদি (৪০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি (৪১), গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না (৪২), সুন্দরবনের মধু (৪৩), শেরপুরের ছানার পায়েস (৪৪), সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি (৪৫), গাজীপুরের কাঁঠাল (৪৬), কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান (৪৭), অষ্টগ্রামের পনির (৪৮), বরিশালের আমড়া (৪৯), কুমারখালীর বেডশিট (৫০), দিনাজপুরের বেদানা লিচু (৫১), মুন্সিগঞ্জের পাতক্ষীর (৫২), নওগাঁর নাকফজলি আম (৫৩), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ (৫৪) এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ (৫৫)।

সূত্র: বাসস

সিফাত/

আইন প্রয়োগের পাশাপাশি পুলিশকে জনগণের সেবক হতে হবে: আইজিপি

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৭:২৫ পিএম
আইন প্রয়োগের পাশাপাশি পুলিশকে জনগণের সেবক হতে হবে: আইজিপি
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, পুলিশকে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের সেবক হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। শুধু আইন প্রয়োগ না করে জনগণের অধিকার রক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে দায়িত্ব পালন করলে এই বাহিনীর প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হবে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জনতার পুলিশ’ মানে শুধু একটি পরিচয় নয়-এটি একটি দর্শন, যা নিরাপত্তার সঙ্গে জনমনে আস্থা, শ্রদ্ধা ও সম্মান গড়ে তোলে। ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে-অস্ত্র নয়, জনগণের আস্থা অর্জনই পুলিশের প্রকৃত শক্তি। পুলিশ যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের পাশে থাকে, তবে তারা ‘ভয়ের প্রতীক’ নয়, বরং হয়ে ওঠে ‘ভরসার আশ্রয়’।

প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, পুলিশ ও জনতার সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করতে হলে উদার মনোভাব, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। যদি পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তি তৈরি হয়, তাহলে তা রাষ্ট্র ও সমাজের বিভক্তিতে রূপ নেয়। এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ গণতন্ত্র।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষয়ের ওপর মাঝে মধ্যে আলোচনা করা উচিত। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এত বড় একটা অভ্যুত্থানের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে, স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সেজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম তা কল্পনা করা যায় না, ধারণা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি কিন্তু গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। 

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালের নির্বাচনে যে খুব নিখুঁত হয়েছে তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয় খুন-গুম ওর সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এই সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সকল সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদার পুলিশ সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে অনেক বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা যদি দরকার এই কথা বলা হয় তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কি দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না, গন্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নেই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। আমাকে একজন আইজিপি বলেছিলেন ঘুষ খাওয়ার থেকে শ্বশুরবাড়ি থাকা ভালো।

সমাপনী বক্তব্য রাখেন পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুল। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগরের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, অধ্যাপক সাজ্জাদ সিদ্দিকী, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য অধ্যাপক চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান প্রমুখ।

সূত্র: বাসস

সিফাত/

পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম
পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান
রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন `নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে- এটা আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে। পুলিশ যে অবস্থা থাকার কথা ছিলো সেখানে নেই বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। এসব বিষের মাঝেমধ্যে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন `নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয় পুলিশ সমাজের অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূল্যে যেতে হবে, এটা হচ্ছে জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যা সমাধান হচ্ছে গণতন্ত্র।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল একটা গণ-অভ্যুত্থান হয়ে গেল। বাচ্চা ছেলেরা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার ধার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সেজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না, ধারণা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, আমরা সেবা দিতে পেরেছি, কিন্তু গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হয়নি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয় সেটা হচ্ছে, যে পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে, আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচনে যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয় খুন-গুম ওর সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছিল।

তিনি বলেন, যা হবার হয়েছে আমাদের আবার নতুন করে মানুষদেরকে সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।

পুলিশ সংস্কার কমিশনক ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে অনেক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা যদি দরকার এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না, গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজকে কথা বলতে পারছি সেটা কতদিন বলতে পারবো, তার কোন গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না। এই সমাজে বিষাক্ত একটা বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। এতদিন যাদের প্রমোশন হয়নি এবং তাদের মধ্যে যাদের চাকরি অল্প সময় আছে তাদেরকে দুই র‍্যাংক করে প্রমোশন দেওয়া উচিত। তারা অবসরে যাওয়ার আগে তাদের যেটা পাওনা সেটা দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুল। পুলিশ সদরদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) ইনামুল হক সাগরের উপাস্থপনায় অনুষ্ঠানে নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবির, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

শেখ জাহাঙ্গীর/এমএ/

শ্রম-শ্রমিক এই দুয়ের ওপরেই আজকের আধুনিক সভ্যতা: কাদের গনি চৌধুরী

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
আপডেট: ০১ মে ২০২৫, ০৪:৩৩ পিএম
শ্রম-শ্রমিক এই দুয়ের ওপরেই আজকের আধুনিক সভ্যতা: কাদের গনি চৌধুরী
বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

শ্রমিকের রক্ত, শ্রম ও ঘামে গড়া আধুনিক সভ্যতা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।

মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সভ্যতার বিকাশে শ্রমিকের অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তারাই পায় না শ্রমের মর্যাদা। অবহেলায় কাটে তাদের দিন। প্রাপ্য মর্যাদাও জোটে না কখনো কখনো। শ্রমজীবী মানুষ হিসেবে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ মিডিয়া সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা দেয় না। অথচ ওয়েজবোর্ডে বেতন দেয় এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন নেয়। এসব ঠকবাজ মিডিয়ার মালিকদের বিরুদ্ধে ইউনিয়নকে সক্রিয় হতে হবে।’

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘আজ আমরা যে আরামের অট্টালিকায় দিন কাটাই সেসব শ্রমিকের ঘামে গড়া। প্রতিটি ইটে লেগে আছে ঘাম। শ্রম, শ্রমিক এই দুয়ের উপরেই আজকের আধুনিক সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের সুউচ্চ অট্টালিকা শ্রমিকদের ঘামের উপরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যে তাজমহলকে নিয়ে আজ বিশ্বের এত মাতামাতি সেই তাজমহল তৈরিতে লেগেছে শ্রমিকদের ঘাম। অথচ আজকের সমাজ যেন কুলি-মজুর এবং সাহেব এই দুই শ্রেণিতে ভাগ হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘সভ্যতা যতই অগ্রসর হচ্ছে ততই এই বিভাজন শক্ত হচ্ছে। এই পার্থক্য গড়ছে অর্থ। যার অর্থ আছে সে মালিক। আর যার নেই সেই শ্রমিক। অথচ সবাই কাজ করে, ফলে সবাই শ্রম দেয় অর্থাৎ শ্রমিক। তবু মালিকের ভূমিকায় যারা আছেন তারা এই সহজ সত্য উপলব্ধি করতে পারেন না আর পারলেও তা স্বীকার করতে চান না।’

পেশাজীবীদের এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে এ বছরের প্রথম দুই মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২১৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিবারের পাশে কোনো মালিক দাঁড়ায়নি। কিন্তু এমনটি কেন হবে?’

এ সময় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশ্বে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বা রোগে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে অর্থনীতি। বছরে বৈশ্বিক জিডিপি হারাতে হচ্ছে ৪ শতাংশ।’

বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে কর্মক্ষেত্রে এক হাজার ৪৩২ জন শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন ৫০২ জন।’

আলোচনা সভায় বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাকের হোসাইন, খায়রুল বাশার ও বাছির জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সুমন/