![নজরুলের গানেই বিদ্বেষ, সহিংসতা রুখে দেওয়ার আহ্বান](uploads/2024/05/25/Ministry-of-cultural-1716609029.jpg)
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানে যে সাম্য ও মানবতার বাণী ধ্বনিত হয়েছে বারবার, সে বাণীকে জাতীয় জীবনে ধারণ করে সমাজের সব বিদ্বেষ ও সহিংসতা রুখে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়েছেন রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, গবেষক ও সংস্কৃতিকর্মীরা৷
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর আয়োজনে জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে তারা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷
শনিবার (২৫ মে) ভোর সোয়া ৬টায় জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খানের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানায় বাংলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, জাতীয় জাদুঘর, কপিরাইট অফিস, শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তারা।
নজরুল সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে সারাবিশ্বে যেভাবে যুদ্ধ ও অশান্তি লেগে আছে নজরুল কিন্তু সব সময় এটার বিপক্ষে ছিলেন৷ অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে ছিলেন তিনি। সব সময় শান্তি চাইতেন৷ নজরুলের গানগুলো যদি আন্তর্জাতিকভাবে চর্চা করি, তা হলে বিশ্বকে শান্তির স্থানে নিয়ে যেতে পারব৷
নজরুলসংগীত ও নজরুল রচনাবলির প্রচার ও কপিরাইট বিষয়ে খবরের কাগজের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইজাহার খান বলেন, নজরুলের গানের কপিরাইট সংরক্ষণের দায়িত্ব শুধু পরিবারের নয়, রাষ্ট্রেরও৷ নজরুলের গান যত তাড়াতাড়ি করে ফেলতে পারব, ততই ভালো৷ তা হলে দেশের সম্পদ দেশেই থাকবে৷
পরে তিনি বলেন, আমরা চাইব, কবির যত গান, নাটক, রচনা রয়েছে তা কেবল ইংরেজি ভাষায় নয়, বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়৷ নজরুলের কবিতা ও গান নিয়ে আরও গবেষণা করা উচিত৷
পরে নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, মানুষে মানুষে যে হানাহানি, সমাজে যে বিদ্বেষ- কবি নজরুল এর বিপক্ষে ছিলেন আজীবন৷ তিনি জীবনভর বলে গেছেন মানুষে মানুষে প্রেম থাকবে৷ জাতীয় কবির দর্শন, ভাবনাগুলো জাতীয় জীবনে ধারণ করতে পারলে তবে তার প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাতে পারব৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সারাজীবন অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবিকতার চর্চা করেছেন এবং সাম্যবাদের পক্ষে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। নজরুলের প্রতিবাদ ও সাম্যের কথা তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে আমরা নজরুল চর্চাকে প্রাতিষ্ঠানিক করতে পারব৷
অসাম্প্রদায়িকতা প্রতিষ্ঠায় নজরুল চর্চার তাৎপর্য নিয়ে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, নজরুলকে আমরা তখনই সর্বাত্মকরণে ধারণ করতে পারব, যখন আমরা জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িকতাকে সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া, ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাকসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন৷
পরে ঢাবির বিভিন্ন হলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়৷
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পরে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, সিপিবি, বাসদ, ডেমোক্রেটিক পার্টি ও ১০ দলীয় জোট, সমাজতান্ত্রিক মহিলা দল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট৷
এ ছাড়া সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সুরসপ্তক, ধূমকেতু, আন্তর্জাতিক নজরুল একাডেমি, বাফা, জলতরঙ্গের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জয়ন্ত সাহা/অমিয়/