ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় রবিবার (১৯ মে) এই নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আস্ সামছ জগলুল হোসেন এই নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত থেকে বের হওয়ার পর খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘এ মামলায় ইশরাক হোসেন হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। রবিবার আদালতে হাজির হয়ে তিনি স্থায়ী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদও জানিয়েছেন, এ মামলাসহ মোট ১২ মামলায় স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন ইশরাক। এর মধ্যে ১১ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে করা মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনের আগে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের পরদিন ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীসহ চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী ও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়।
এই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করেন তারা। এতে পুলিশের এক সদস্য নিহত ও ৪১ সদস্য আহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি জাহিদুল ইসলাম আরেফী (মিয়া আরেফী), চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতা-কর্মী কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। এ সময় ১ নম্বর আসামি মিয়া আরেফী নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।
সেখানে মিয়া আরেফী দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। এই আসামি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বলা হয়, মিয়া আরেফীকে হাসান সারওয়ার্দী ও ইশরাক হোসেন মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। ১ নম্বর আসামি অন্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি করে সারা দেশে নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।