![‘মোরা না খাইয়া কষ্টে দিন কাডাব, ভারতীয়রা তো ঠিকই মাছ ধইরা নেবে’](uploads/2024/05/20/barguna-news-1716175974.jpg)
‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় মোরা সাগরে মাছ ধরতে না গেলেও ভারতীয়রা তো ঠিকই মাছ ধইরা নেবে। এই সময় মোরা না খাইয়া কষ্টে দিন কাডাইলেও ভারতের ট্রলারগুলা ঠিকই মাছ ধরবে। এই ৬৫ দিনে আমাগো হাজার হাজার জেলে কর্মহীন হইয়া পড়বে। এ চিন্তায় জাইল্লা পল্লিগুলা আন্ধার ইইয়া যাইতাছে।’
রবিবার (২০ মে) বিকেলে কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদর উপজেলার গোরাপদ্মমা এলাকার জেলে মো. দুলাল হাওলাদার।
দেশের মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে সাগরে মাছ ধরার ওপর রবিবার মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারি আইন মেনে উপকূলীয় বরগুনার বেশির ভাগ জেলে ট্রলার ঘাটে ফিরলেও নিষেধাজ্ঞার এই সুযোগে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা দেশের জলসীমানায় ঢুকে ইলিশ শিকার করে নিয়ে যায় বলে দাবি মো. দুলাল হাওলাদারসহ স্থানীয় জেলেদের। এ ছাড়া এ সময়ে সরকারের দেওয়া খাদ্যসহায়তাও অপ্রতুল বলে দাবি জেলেদের।
জানা যায়, বরগুনায় ২৭ হাজার ২৫০ জন সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে। এসব জেলের জন্য প্রথম ধাপে সহায়তার চাল বিতরণ করতে গত ২৯ এপ্রিল ১ হাজার ৫শ ২৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, জেলে পল্লিতে জেলে পরিবারগুলোতে কর্মহীন হয়ে যাওয়ার চিন্তা বিরাজ করছে। অভাব অনটনে কাটবে এই ৬৫ দিন।
বরগুনার ঢলুয়া এলাকার নাসির নামের এক জেলে বলেন, ‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমরা ৪০ কেজি চাল পাই। এ ছাড়াও যারা জেলে না, তারাও চাল পায়। কিন্তু আমাদের জন্য বরাদ্দ ৮৬ কেজি চাল আমরা পাই না। এই দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞায় ৪০ কেজি চালে আমাদের পরিবার চালানো কষ্ট হয়।’
পাথরঘাটার জেলে মো. সালাম বলেন, ‘এ সময়ে নদীতে ও সাগরে তেমন মাছও নেই। থাকলে পুঁজি করে কিছু টাকা রাখতে পারতাম। ধারদেনা করে জীবন চলে। আর অন্য কোনো কাজের ব্যবস্থা নেই যে সামনের ৬৫ দিন কাজ করে খাব।’
বরগুনা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের অনেকটাই কষ্টে কাটবে। এই ৬৫ দিনের জন্য জেলেদের বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেওয়ার দাবি জানাই সরকারের কাছে। পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ একই সময়ে সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব চাল আমরা পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলেদের কাছে বরাদ্দকৃত চাল পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, ‘নিবন্ধনের বাইরে থাকা জেলেদের তালিকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তালিকার কাজ চলছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে অন্য কোনো সহায়তা বৃদ্ধি করলে তা জেলেদের কাছে পৌঁছে দেব।’