উত্তরবঙ্গের প্রথম নারী স্নেক রেসকিউয়ার হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদের ওই শিক্ষার্থীর নাম কামরুন নাহার কনা।
কামরুন নাহার কনা ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন হাবিপ্রবি ইউনিটের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২২ সালের ২৯ জুলাই ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন তাদের কার্যক্রম হাবিপ্রবিতে শুরু করে বলে জানান কনা।
কামরুন নাহার কনা বলেন, ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ কনজার্ভেশন ফাউন্ডেশন থেকে তিনি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সেখানে হাতেকলমে ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কাজ শিখেছেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে কুকুর ও বিড়াল নিয়ে আমি কাজ করতাম। করোনা মহামারির সময় গ্রামে থাকা অবস্থায় দেখলাম মানুষ সাপ দেখলেই নির্বিচারে মেরে ফেলে। সাপের প্রতি নির্মম আচরণ, সাপ দেখলেই মেরে ফেলার মতো প্রবণতা দেখেই সাপকে বাঁচানোর জন্য ইচ্ছা করে। আমার কাজের জন্য আমি পরিবার থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়ে থাকি। তাদের অনুপ্রেরণা ছাড়া এত দূরে কখনোই আসতে পারতাম না।’
কামরুন নাহার কনা এ পর্যন্ত নির্বিষ ও বিষধর সাপ মিলিয়ে প্রায় ৪০টির মতো সাপ রেসকিউ করেছেন বলে জানিয়েছেন। কনার কাছে সাপ বাঁচানো মূল লক্ষ্য নয়। তিনি মনে করেন, সাপ ধরে ছেড়ে দেওয়া সাময়িক একটা সমাধান মাত্র। সাপের কামড়ে যেন একজন মানুষও মারা না যায়, তা নিশ্চিতকরণ এবং সেই সঙ্গে সাপের প্রতি ভীতি কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
কনা বলেন, নারী রেসকিউয়ার হিসেবে কোনো দিন তিনি বিপদের সম্মুখীন হননি। সব জায়গায় সকলের কাছে থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। সাপে কাটা রোগীদের নিয়ে কাজ করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। কিভাবে সাপে কাটা অসুস্থ রোগী দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাতে পারবেন, কোথায় গেলে এন্টিভেনম পাবেন, কিভাবে চিকিৎসা নিতে পাবেন; এ ধরনের দিকনির্দেশনা কনার সংগঠন থেকে দেওয়া হয়।
কনার মতে, প্রত্যেকটি জেলা হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনমের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি ওঝা যেন মানুষকে আর প্রতারিত করতে না পারে, সেই ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করতে হবে।
কনা চান প্রত্যেকটি স্কুল-কলেজে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা, যেন সাপের প্রতি মানুষের যে ভীতি রয়েছে তা কমে যায়।