ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

উচ্চশিক্ষায়  ঋণসহায়তা

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৫ এএম
আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
উচ্চশিক্ষায়  ঋণসহায়তা

দরিদ্র, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সম্ভাবনাময় মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সংকটের কারণে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অকালে ঝরে যায়। এসব শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণে দেশি-বিদেশি বেশকিছু বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণসহায়তা দিয়ে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে উচ্চশিক্ষা শেষ করে আজ অনেক শিক্ষার্থী বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের ঋণ দিয়ে তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে ও উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করছে। উচ্চশিক্ষায় ঋণসহায়তা নিয়ে লিখেছেন মাহমুদ কবীর।

যাচাই করে ঋণসহায়তা নিন

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান এসএসসির পর উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণসহায়তা দিয়ে থাকে। আপনি যদি মেধাবী হন এবং আর্থিক অনটনের জন্য পড়াশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তবে শিক্ষা ঋণসহায়তা দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। একই সঙ্গে কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ ঋণসহায়তা দেয়, কীভাবে দেয়, কোন পদ্ধতিতে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে এবং কত বছরের জন্য আপনাকে এ ঋণ দেওয়া হবে- এসব বিষয় সচেতনভাবে জেনে নেবেন। একই সঙ্গে কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানের ঋণ আপনার জন্য মানানসই তা ভালোভাবে যাচাই করে নেবেন।

শিক্ষা ঋণসহায়তা নিয়ে যে কেবল দেশে পড়াশোনা করতে পারা যায় এমনটা নয়। বিদেশে পড়তে গেলেও এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণসহায়তা নেওয়া যায়। তাই শিক্ষা ঋণসহায়তা নিয়ে কেবল দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরাই নয় সামর্থ্যবান মেধাবীরাও দেশে-বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষ করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন ঘটাতে পারেন।

যেসব ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ঋণসহায়তা দিয়ে থাকে সেগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, এইচএসবিসি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এনসিসি, ইবিএল ব্যাংক এবং ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক।

আবেদন করার যোগ্যতা: ঋণ গ্রহণকারী শিক্ষার্থী ঋণ পরিশোধে সক্ষম এটা প্রমাণিত হলেই ঋণ নিতে পারবেন। যেসব শিক্ষার্থীর বাবা-মা সরকারি অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন তারাও এসব ব্যাংক থেকে ঋণসহায়তা নিতে পারবেন। ঋণসহায়তা নিতে অবশ্যই অভিভাবকের আয়ের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শর্তের বিনিময়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণসহায়তা নিতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: প্রয়োজনীয় তথ্য বা ডকুমেন্ট যেমন- আয়ের উৎস ও প্রমাণপত্র, কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ফর্ম অথবা ডকুমেন্ট এবং যে ছাত্রছাত্রীর জন্য ঋণ নেওয়া হবে তাদের সম্মতিপত্র জমা দিতে হবে। বিদেশে পড়তে যাওয়ার অফার লেটারের ফটোকপি, সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের ফটোকপি, লিগ্যাল গার্ডিয়ানের সলভেন্সি সার্টিফিকেট এবং গ্যারান্টি দিতে হবে। স্বামীর ক্ষেত্রে স্ত্রী গ্যারান্টার হবে এবং স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামী গ্যারান্টার হবে। তারপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার জমা করা তথ্য ও ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করে খুব স্বল্প সময়ে আপনার সন্তানের জন্য শিক্ষা ঋণ দেবে।

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড: ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে এনবিএল স্টুডেন্ট লোন নামে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণসহায়তা দিচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সলভেন্সি পারপাসে এই ঋণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ এবং সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ঋণসহায়তা দেওয়া হয়।
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, বাবা-মা, অভিভাবক, লিগ্যাল গার্ডিয়ান ও শিক্ষার্থী নিজে এই ঋণসহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী সুদে ঋণসহায়তা দেওয়া হয়। 
এইচএসবিসি: দেশে এবং দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার বা প্রফেশনাল ডিগ্রির জন্য এইচএসবিসি ব্যাংক ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ দেয়। ঋণের পরিমাণ নির্ভর করে অভিভাবকের মাসিক আয়ের ওপর। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় লোন করা ব্যক্তির মাসিক আয়ের চার গুণ বেশি পরিমাণ ঋণ দিয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে।

প্রাইম ব্যাংক: ব্যাংকটি মূলত ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকের আয় অনুযায়ী ঋণ দিয়ে থাকে। এই স্কিম থেকে আগ্রহীরা সাধারণত এক থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। এটির পরিশোধকাল সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত হয় এবং শতকরা ১৫ ভাগ সুদ দিতে হয়।

উত্তরা ব্যাংক: এ ব্যাংকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ১২ শতাংশ।

ওয়ান ব্যাংক: ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ৯ শতাংশ।

ইবিএল ব্যাংক: এ ব্যাংক ১ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ৯ শতাংশ।

এনসিসি ব্যাংক: এনসিসি ব্যাংক ১ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ১২.৫ শতাংশ।

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক: ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেতে পারে। ঋণ পরিশোদের সময় এক থেকে চার বছর পর্যন্ত।

কলি

 

ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বরাত দিয়ে ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ হবে না’ এমন একটি প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সন, ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়েছে। তবে উপাচার্য এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে দাবি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, উপাচার্য শুক্রবার গণমাধ্যমে রাজনীতি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি এবং তিনি কখনোই বলেননি যে, ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এই বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে গণমাধ্যমকে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল লিখেছেন, ‘ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো কথা আমি কোথাও বলিনি। ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো প্রশ্নও আমাকে করা হয়নি এবং আমি মন্তব্যও করিনি।’ একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রতিবেদকের মুখ দিয়ে প্রকাশিত বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য। সবাইকে অপপ্রচার ও গুজব থেকে সাবধান থাকার অনুরোধ রইল।’

এর আগে দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল এবং স্যার এএফ রহমান হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব এ ঘোষণা দেন। তারপর গণসংযোগের জন্য ৯ দফা দাবিতে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন। এর আগে জুমার নামাজের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহিদদের জন্য দোয়া করেন শিক্ষার্থীরা। 

নিহত রুদ্র সেন শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স (সিইপি) বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গত ১৮ জুলাই রাতে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভেলা দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যান।

প্রধান ফটককের নামকরণকালে সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘কাগজের এই লেখা যদি ছিঁড়ে ফেলা হয়, আমরা আবারও রক্ত দিয়ে লিখে রেখে আসব একই নাম। রুদ্র মরে গিয়েও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। সারা দেশের শহিদদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি দ্রুত আমাদের ৯ দফা মেনে নেওয়া না হয়, যদি অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ, ইন্টারনেট কানেকশন স্বাভাবিক করা, ক্যাম্পাগুলোতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে সন্ত্রাসমুক্ত না করা হয়, যদি হল-ক্যাম্পাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো টিয়ার শেল-গ্রেনেড-গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে। শহিদদের রক্তের ওপর কোনো সংলাপ হবে না। পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মমভাবে সব হত্যা (শহিদ), হামলা-নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তারের চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালমান থাকবে।’

এ সময় তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ছাত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার বা গুম হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে দেশে চলমান গণহত্যা-নির্যাতনের ভয়াবহতা সর্বত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি
নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহত আবু সাঈদের মা-বাবার হাতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেক দিন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সে সময় ভিসি আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। তিনি আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। আমি স্যারকে বলেছিলাম, আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। ভিসি স্যার আশ্বস্ত করেছেন। সন্তানকে তো আর ফিরে পাব না। আমাদের পরিবারের একজনকে একটা চাকরি দিলে আমরা হয়তো একটু ভালোভাবে চলতে পারব।’ সাঈদের বাবা আরও জানান, প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন। এ ছাড়া পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন। 

মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার কলিজার টুকরা ছিল আবু সাঈদ। তার টিউশনির জমানো টাকায় চলতাম আমরা। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোনো সান্ত্বনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারী কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়া।’ আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ, কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম।

প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসি স্যারের নির্দেশে সাঈদের মা-বাবার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ সাড়ে ৭ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এর পর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন। সেদিন সন্ধ্যার পর পরই দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। নিহত আবু সাঈদের পরিবারের পাশে বেরোবি থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হাসিবুর রশীদ। ১৭ জুলাই থেকে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি
অধ্যাপক জাহিদুল করিম

সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ও কিছু প্রতিবাদী শিক্ষককের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে অব্যাহতিপত্রটি পোস্ট করার পর ভাইরাল হয়ে যায়। 

এ ব্যাপারে ম্যাসেঞ্জারে খুদে বার্তা পাঠিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অব্যাহতিপত্র রেজিস্ট্রারকে মেইল করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

জাহিদুল করিম ২০১০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করছেন। 

শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলীয়করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’ 

জাবিতে ১৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করা এই শিক্ষক বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধকে জাগ্রত করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি থেকে আমি অব্যাহতি ঘোষণা করছি।’

জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৩ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তালিকা করে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানান উপাচার্য। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী  আহত হয়েছে, এমন সব শিক্ষার্থীদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি প্রক্টরকে। তালিকার মাধ্যমে হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হবে। অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তাদের তালিকা পেলে আমরা যেকোনো সাহায্য করতে পারব।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে, অনিক নামের একজন শিক্ষার্থীকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার খাদ্যনালী ফুটাে হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তালিকা করা শুরু করেছি। ৮-৯ জন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খোঁজ পেয়েছি। যাদের টাকার প্রয়োজন ছিল, দ্রুত টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমাদের তালিকার কাজ চলমান রয়েছে। আজ থেকে বিভাগ অনুযায়ী খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যার যে ধরণের সহয়তা দরকার হবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গুলিবিদ্ধ ৫ শিক্ষার্থী ঢামেকে ছিল। তাদের চারজন রিলিজ পেয়েছে। আরেকজনকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। আমরা সাবর্ক্ষণিক তাদের খোঁজ রেখেছি। আমি নিজেও নিয়মিত ঢামেকে যেয়ে তাদের দেখে এসেছি। উপাচার্য মহোদয়ও আমাদের মাধ্যমে তাদের খোঁজ নিয়েছেন নিয়মিত।’

মুজাহিদ বিল্লাহ/অমিয়/