রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা শহিদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হল মিলনায়তনের ছাদের একটি অংশ ধসে পড়ার ঘটনায় অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চার সদস্যবিশিষ্ট একটি দল।
রবিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনে অভিযান শুরু করে তারা। দেড় ঘণ্টাব্যাপী অভিযান শেষে দুদকের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে ভবন নির্মাণে তারা অসংগতি ও অনিয়ম পেয়েছেন।
বেলা সোয়া ২টায় অভিযান শেষে রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. আমির হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শহিদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীসহ অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের কমিশনের ১০৬ হটলাইন নম্বরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এনফোর্সমেন্ট অভিযানে এসেছি। আমরা ভবনসংক্রান্ত সব নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিকভাবে ভবন নির্মাণকাজে অসংগতি ও অনিয়ম পেয়েছি। এরপর আমরা ভবনধসের সাইট পরিদর্শন করব। সব আলামত কমিশনে সাবমিট করার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের সামনে নির্মাণাধীন শহিদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের মিলনায়তনের একাংশ ধসে পড়ে। এ ঘটনায় ৯ জন আহত হয়েছিলেন। ওই দিন রাতেই জরুরি সভা ডেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে তদন্ত কমিটির সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে আরও সাত কার্যদিবস সময় বাড়ানো হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নির্মাণকাজে গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করা হয়। আহত শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩০তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শহিদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান আবাসিক হল ও ২০ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ করছে রূপপুরের ‘বালিশকাণ্ডে’ আলোচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ওই দুই ভবনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে।