আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিদের পদত্যাগ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রবিবার (১১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ঢাকার ৪টি কলেজের অধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলনের মুখে তারা পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এসব শীর্ষ পদধারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে নানা অসংগতি তুলে ধরে তাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। যার প্রেক্ষিতে তাদের অনেকেই পদত্যাগে বাধ্য হন। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর তাদের অনেকে কর্মস্থলে যাওয়া থেকে বিরত ছিলেন। আজ সোমবার আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
গতকাল শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে এ পদত্যাগপত্র পাঠানো হয়। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘গত ২৮ মে ২০২৩ তারিখ পূর্বাহ্নে আমি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে যোগদান করি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অফিস আদেশ অনুযায়ী গত ২০ আগস্ট ২০২৩ তারিখ হতে চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছি। অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ এবং আমার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আমি কমিশনের চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করছি। এমতাবস্থায়, আমার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণপূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের দেওয়া ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘আমি আজ মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে পদত্যাগ করেছি।’
গতকাল পদত্যাগ করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। তিনি শিক্ষা সচিবের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পৌঁছান বলে জানা গেছে। সেখানে তিনি লেখেন, বর্তমানে আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে উপাচার্যের পদ থেকে এই পত্রের মাধ্যমে অদ্য অপরাহ্ণে পদত্যাগ করিতে আপনার নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করিলাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক এই কামনা করছি। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আমাকে বাধিত করিবেন।’
যদিও এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অভিযোগে আন্দোলন করেন। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। গতকাল তিনি পদত্যাগ করেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো কামরুল আলম খান।
রাষ্ট্রপতির কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ না নেওয়া এবং আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হওয়ায় তাদের পদত্যাগের আহ্বান জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ শিক্ষার্থীরা। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ‘আমি পদত্যাগ করলাম’ লেখে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করেন। একই অবস্থা হয়েছে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মোহসীন কবীরের বেলায়ও। শিক্ষার্থীরা পদত্যাগের দাবি জানালে তিনি স্বাক্ষর করে চলে যান। শিক্ষার্থীদের দাবির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে অপরাগ জানিয়ে পদত্যাগ করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগম।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের হুমকি ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ৮ আগস্ট থেকে বিক্ষোভ করেছেন ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকালও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী এবং কলেজ শাখার অধ্যাপক ও গভর্নিং বডির (কলেজ) সদস্য ফারহানা খানম পদত্যাগ করেন।
ঢাবিতে ২ শিক্ষকের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ, রাজনীতিমুক্ত হল গড়ার শপথ
ঢাবি প্রতিনিধি: দুর্নীতি, অসদাচরণ, অনিয়ম ও নিপীড়নের অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. এম. অহিদুজ্জামান এবং একই ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ইনস্টিটিউটের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
এদিকে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি মুক্ত হল গড়ার প্রত্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা শপথ নিয়েছেন। এ সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবিও জানান তারা।
শপথবাক্য পাঠকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ হতে স্যার এ এফ রহমান হলে সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতি হতে আমি নিজেকে বিরত রাখব এবং হলে যেকোনো ছাত্ররাজনীতির অপচেষ্টা কায়েমের বিরুদ্ধে সচেষ্ট থাকব। হলকে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব করে গড়ে তুলব। হলের শৃঙ্খলা বজায় রাখব। শিক্ষার্থীবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হলের প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষক ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এর আগে ৯ আগস্ট রাজনীতিমুক্ত হল গড়ার শপথ নেন ঢাবির মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান পদত্যাগ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন।
জবিতে ১৩ দফা দাবি শিক্ষার্থীদের
সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নূর নবী। দাবির মধ্যে রয়েছে-ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাসের বাইরে রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও, ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রবেশ করতে হবে। শহিদ ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
ছাত্রলীগের পদধারী যারা ছিল এবং ছাত্ররাজনীতির ওপর ভিত্তি করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছে তারা এবং যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত এবং হতাহত শিক্ষার্থীদের নিয়ে এখনো ঠাট্টা করছে তাদের আগামী ২ দিনের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে হবে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নীতিমালা প্রণয়ন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। দখল হওয়া হলগুলো অনতিবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে এবং মেধার ভিত্তিতে সিট বণ্টন করতে হবে।
কেরানীগঞ্জে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। সে জন্য সেনাবাহিনীর কাছে কাজ দিতে হবে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং গবেষণা বরাদ্দ বাড়াতে হবে। ক্যাফেটেরিয়ায় বাজেট বরাদ্দ দিয়ে খাবারের মান বাড়াতে হবে এবং অতি দ্রুত নতুন আরেকটি ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণ করতে হবে। নারী শিক্ষার্থীদের কমন রুমের মান উন্নত করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শক্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। ক্যাম্পাসের আশপাশে চাঁদাবাজি, রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। পোষ্য কোটা বাতিল এবং রাজনৈতিক নিয়োগ-বাণিজ্য আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে। গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানের রূপ দিতে হবে।
কুয়েট উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে পদত্যাগের আলটিমেটাম
নিয়োগ বাণিজ্য, দলীয়করণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানি ও সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতাসহ নানা অভিযোগে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার ও উপ-উপাচার্য ড. সোবহান মিয়ার পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সভা করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারীরা।
গতকাল ‘কলুষিত রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক ভিসি ও প্রোভিসির পদত্যাগ চাই’ ব্যানার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে মিছিল বের হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আফতাব হোসেন, ড. এম এম হাশেম, ড. শাহজাহান ও রাজিয়া খাতুন প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে পদত্যাগ না করলে ক্যাম্পাসে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শেকৃবি রেজিস্ট্রারের উপর চড়াও বিএনপিপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তারা
শিক্ষার্থীদের অনুরোধে অফিসে আসার কারণে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী কিছু শিক্ষক- কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গতকাল স্মারকলিপি জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রেজিস্ট্রার অফিসে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। অফিস বন্ধ পেয়ে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমকে দ্রুত অফিস আসার জন্য অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার তার অফিসে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে রেজিস্ট্রারকে তার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলেন এবং কার্যক্রম চালিয়ে যেতে যে কোনো বাধা আসলে শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন।
শিক্ষার্থীরা চলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা রেজিস্ট্রারের রুমে ঢুকে তিনি কেন অফিসে আসলেন, অফিসের তালা খুলে কেন অফিসে বসলেন বলে চড়াও হন তার ওপর।
ঘটনাটি জানার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা এবং আবার গিয়ে শিক্ষাকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতির কারণে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের ফোনের কারণে আমি অফিসে আসি তারপর কিছুটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তবে শিক্ষার্থীরা পুনরায় গেলে আমি বেরিয়ে আসি অফিস থেকে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের (বিএনপিপন্থি) সভাপতি ড. আমিনুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন- ঢাবি প্রতিনিধি, কুবি প্রতিনিধি, শেকৃবি প্রতিনিধি, খুলনা প্রতিনিধি ও জবি প্রতিনিধি