ঢাকা ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বাকৃবির গলার কাঁটা!

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বাকৃবির গলার কাঁটা!
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

দেশে প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যোগ শুরু হওয়া গুচ্ছ পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমে প্রয়োগ করে। তবে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পাঁচটি কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বেশির ভাগই সমালোচনা ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে যেতে পারেনি। ফলে একদিকে বাকৃবি হারাচ্ছে তার স্বকীয়তা, অন্যদিকে আসছে না গুচ্ছ পদ্ধতির আশানুরূপ সাফল্য। এমতাবস্থায়, কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তাদের মতামত তুলে ধরেছেন মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর

স্বকীয়তা হারাচ্ছে বাকৃবি

মো. বকুল আলী
স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ

শিক্ষা ও গবেষণায় বাকৃবি বিগত বছরগুলোয় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে। কিন্তু সম্প্রতি ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যানুসারে, বাকৃবির অবস্থান ষষ্ঠ, যা খুবই দুঃখজনক। কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তার রং হারাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষায় কখনো কোনো ভুল বা অনিয়মের গ্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অন্য কেন্দ্রগুলোর পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বারবার। একসময় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকার ভিত্তিতে দেশের শীর্ষ স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতেন। তবে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কম জিপিএ নিয়েও ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারছে, যা বাকৃবির স্বকীয়তা নষ্ট করছে। সুতরাং বাকৃবিকে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখতে অবশ্যই কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে সরে আসা উচিত বলে মনে করি।

সেশনজটের অন্যতম কারণ

মো. ওমর ফারুক
পঞ্চম বর্ষ, ভেটেরিনারি অনুষদ

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আগে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদের প্রাথমিক বাছাই করা হতো। এরপর তারা বাকৃবিতে পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেতেন; যা এখন আর বিদ্যমান নেই। ভর্তি পরীক্ষা দেশের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ায় পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। এতে অনেক সময় দেখা যায়, যাদের চান্স পাওয়ার কথা নয়, তারাও চান্স পেয়ে যায়।

এ ছাড়া কৃষি গুচ্ছের পরীক্ষা সবার শেষে অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটের সম্মুখীন হচ্ছে, যা বিগত দিনে ছিল না। শুধু শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দিক বিবেচনা করে গুচ্ছ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, যা বাস্তবিক অর্থে তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। কেননা দূর-দূরান্ত থেকেও শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আসে। এরপর ভর্তি, একাধিক মাইগ্রেশনের জন্য একাধিকবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের ভোগান্তির নজিরও আছে। তাই গুচ্ছের সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি বলে আমার মনে হয়। তাই শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে বাকৃবির উচিত কৃষি গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এককভাবে পরীক্ষার আয়োজন করা।

সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি

সুমন গাজী
প্রথম বর্ষ, কৃষি অনুষদ

২০১৯ সাল থেকে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত পাঁচটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এ সমন্বিত প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই সর্বমহলে প্রশ্ন উঠে, বাকৃবির স্বকীয়তায় ভাটা পড়ল কি না বা কৃষিগুচ্ছতে বাকৃবির থাকা উচিত কি না।

আমি বলব, কৃষি গুচ্ছের সুবিধা-অসুবিধা দুটোই রয়েছে। যেহেতু একবারই পরীক্ষা হয়, তাই শিক্ষার্থীদের ভিন্নমাত্রিক প্রস্তুতি নিতে হয় না। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ ও সুবিধামতো কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে পারে। এ ছাড়া জিপিএ স্কোর কম নিয়েও ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করে বাকৃবিতে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়, যা বাকৃবি এককভাবে পরীক্ষা নিলে ক্ষেত্রবিশেষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণেরও সুযোগ হতো না। 

বিপরীত দিকে গুচ্ছতে নিজস্ব প্রশ্ন কাঠামোয় ভর্তি পরীক্ষা নিতে না পারায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের যাচাইয়ের সুযোগ কমে গেছে। নেতৃস্থানীয় নীতিনির্ধারক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরও নিজস্ব মূল্যায়ন পদ্ধতি না থাকায় বাকৃবির স্বকীয়তা হারাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাকৃবির স্বকীয়তা-স্বতন্ত্র মান বজায় রাখতে কৃষিগুচ্ছে থাকা উচিত নয় বলেই আমি মনে করি।

বিতর্কিত হয়েছে বারবার

মো. ফজলুল করিম সিয়াম 
প্রথম বর্ষ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ

প্রতি বছর প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী কৃষিবিদ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাকৃবিতে আসে। তবে এর জন্য তাদের উত্তীর্ণ হতে হয় ভর্তি পরীক্ষায়। ২০১৯ সালে বাকৃবির অধীনে প্রথমবার অনুষ্ঠিত গুচ্ছ পরীক্ষাটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হলেও ২০২০-২১ সেশন থেকে তৈরি হয় বিতর্ক। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পরীক্ষার প্রশ্ন নিরাপত্তা ও পরীক্ষা ব্যবস্থার নিরাপত্তা ত্রুটি। সে বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কেন্দ্রজনিত সমস্যা এবং প্রশ্নফাঁস ও কোনোরকম নোটিশ ছাড়া ফলাফল পরিবর্তনের মতো ঘটনা ঘটে। পরবর্তী বছরগুলোতেও কৃষি গুচ্ছের প্রশ্নের মান নিয়েও আছে নানা বিতর্ক।

তাছাড়া বিশাল অঙ্কের এই ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ব্যবস্থাপনার মতো সক্ষমতা কৃষি গুচ্ছের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। এসব বিতর্কের অংশীদার হয়ে বাকৃবি নিজের সুনাম হারাচ্ছে। তাই প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাকৃবির উচিত কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে আসা।

হাসান

গঠনতন্ত্র সংস্কার করে অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দাবি

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ পিএম
গঠনতন্ত্র সংস্কার করে অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দাবি
ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) গঠনতন্ত্র সংস্কার এবং অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী। 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষার্থী সমাবেশে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। 

সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি নুজিয়া হাসিন রাশা বলেন, ‘মাত্র পাঁচ বছর পর জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শুধু গণতন্ত্র কায়েম হয় না। একটা দেশে গণতন্ত্র আনতে শিল্প-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র চর্চার থাকার পাশাপাশি প্রতিনিধি নির্বাচন থাকতে হয়। স্বৈরাচার এরশাদের পর ডাকসু নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। বিগত ১৫ বছরে কোনো সুষ্ঠু ডাকসু নির্বাচন নেই। সর্বশেষ ২০১৯ সালে যে ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল সেটিও প্রশ্নবিদ্ধ। যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্বাচন না হয়, গণতন্ত্র কখনোই ফিরবে না। প্রতিনিয়তই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, আমরা তোমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছি। কিন্তু কারা এই প্রতিনিধি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা কি আমাদের প্রতিনিধি, তাদের কি আমরা নির্বাচিত করেছি?’

এ সময় তিনি অবিলম্বে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্থার করে অবিলম্বে ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান। এ ছাড়া অবিলম্বে ঢাবিতে ‘ডাকসু কি এবং কেন চাই, এ নিয়ে আলোচনা’র আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

সাধারণ সম্পাদক সামি আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা একটি বিপ্লবের মধ্যে যাওয়ার পরও আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি। ৫ আগস্টের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন পদে পরিবর্তন আসার পর তারা বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও ডাকসুর বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত হলে আবাসন সংকট থেকে শুরু করে বিভাগগুলো সমস্যা রয়েছে গিয়েছে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীর সমস্যা নিরসনে ডাকসুর গণতন্ত্রে ক্ষমতা কাঠামো সংস্কার করে অবিলম্বে যেন ডাকসু নির্বাচন দেওয়া হয়।’ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ইসরাত জাহান ইমুসহ বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর নেতারা বক্তব্য রাখেন।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/ 

বেরোবি ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরামের কমিটি গঠন

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
বেরোবি ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরামের কমিটি গঠন
ইয়ুথ জার্নালিস্ট ফোরাম বাংলাদেশের (ওয়াইজেএফবি) বেরোবি শাখার সভাপতি গাজী আজম হোসেন ও সম্পাদক সাকিব সরকার। ছবি: খবরের কাগজ

ইয়ুথ জার্নালিস্ট ফোরাম বাংলাদেশের (ওয়াইজেএফবি) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখায় দৈনিক খবরের কাগজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি গাজী আজম হোসেনকে সভাপতি এবং নিউজ সারাক্ষণের প্রতিনিধি সাকিব সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় শাখার সভাপতি তানভীর আলাদিন ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন কাদেরের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী এক বছরের জন্য এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহসভাপতি মো. হেলাল মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল হুমাইরা জান্নাতি ঐশি, কোষাধ্যক্ষ মো.সুলাইমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খাদেমুল সরদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামরুল ইসলাম কব্য, প্রশিক্ষণ ও দপ্তর সম্পাদক রিফাত ইসলাম, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মিনহাজুর রহমান মেহেদী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাইফুল্লাহ মাসুম এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মুনিরা আঞ্জুম রুমালী,আনিকা তাসকিন ও সোহানুর রহমান।

বাংলাদেশে কর্মরত সকল জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক সংবাদপত্র, বার্তা সংস্থা, দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টার ও সাব-এডিটরদের নিয়ে তরুণ সাংবাদিকদের সংগঠন ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশ (ওয়াইজেএফবি)।

গাজী আজম হোসেন/মেহেদী/এমএ/

ইবির গবেষণাগারে বিস্ফোরণ, আহত ৩

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পিএম
ইবির গবেষণাগারে বিস্ফোরণ, আহত ৩
ছবি: খবরের কাগজ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের গবেষণাগারে আগুন লেগে বিস্ফোরণে তিনজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাস্টার্সের তিন শিক্ষার্থী থিসিসের কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফ আল রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন প্রাথমিক চিকিৎসার পর সবাই সুস্থ আছেন।

এতে বিভাগটির শিক্ষার্থী নুরে তাবাসসুমের মুখ ফুল যায়। এছাড়া রকিবুল ইসলামের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা এবং আনিকা খাতুনের পা মচকে যায়। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, অত্যাধিক হিটের কারণে ডিস্টেলেশন কলাম ব্লাস্ট হয়ে পেট্রলে আগুন লেগে যায়। এতে কিছু যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা পেট্রল নিচে ফেলে দিয়ে ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভায়।  

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কয়েকজন থিসিসের কাজ করার সময় ডিস্টেলেশন ব্লাস্ট হয়ে নুরে তাবাসসুমের আপু মুখে এসে লাগে। এতে পাশে থাকা পেট্রলে আগুন লেগে যায়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে পুরো কক্ষটি অন্ধকার হয়ে যায়। আমি দ্রুত এসে সুইচগুলো অফ করে দিই এবং পেট্রলের বোতল নিচে ফেলে দেই। তারপর বাহিরের সুইচগুলো বন্ধ করে দিয়ে ফায়ার এক্সটিংগুইশার  দিয়ে আগুন নিভাই।

মেহেদী/এমএ/

শেকৃবিতে অবৈধ বস্তি ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ হবে কবে?

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ এএম
শেকৃবিতে অবৈধ বস্তি ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ হবে কবে?
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ১০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ টিনশেড বাড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য বিনামূল্যে এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হলেও, তারা এর বাইরে জায়গা দখল করে বস্তি গড়ে তুলেছেন।

এসব বস্তি বহিরাগতদের ভাড়া দিয়ে কর্মচারীরা নিয়মিত আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টার বরাদ্দ পাওয়া কর্মচারীরা বহিরাগতদের সাবলেট দিচ্ছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। বহিরাগতদের অবাধ বিচরণে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন অবৈধ বস্তি উচ্ছেদে উদ্যোগ নিলেও তিন মাসেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, অবৈধ বস্তি ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ হবে কবে?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০১ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব উপাচার্যের আমলেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পছন্দের কর্মচারীদের বিনামূল্যে অস্থায়ীভাবে এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কর্মচারীরা তার বাইরে অতিরিক্ত জায়গা দখল করে ঘর বানিয়ে সেগুলো বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা, মুসলিমপাড়া ও মিনিবাজারের পেছনের এলাকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৫০ জন কর্মচারী তাদের জন্য বরাদ্দ জায়গার বাইরে অতিরিক্ত জায়গা দখল করে টিন দিয়ে অস্থায়ী বাড়ি নির্মাণ করেছেন। যেখানে প্রায় ১৮০টি বহিরাগত পরিবার ভাড়া রয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে বরাদ্দ পাওয়া প্রায় প্রতিটি কর্মচারীই তাদের বরাদ্দ করা বাড়িতে রুম সাবলেট দিয়ে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। ক্যাম্পাসটিতে এখন প্রায় ৩০০ বহিরাগত পরিবার বসবাস করছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর বস্তি উচ্ছেদের উদ্যোগ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রশাসন। সে সময় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ এবং অবৈধভাবে দখল করা সব স্থাপনা ও জমি ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে ভাড়া থাকা ৩০০ পরিবারের মধ্যে ২১০টি পরিবার ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছে। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাকিদের ক্যাম্পাস ছাড়ার জন্য নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।

এর আগে ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেকেন্দার আলীর নেতৃত্বে ২৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভায় বস্তি ও ভাড়াটিয়াদের এক মাসের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নোটিশে সময়সীমা অতিক্রম করলে পানি ও বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্নসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে সে সময় ৪০০ পরিবারের মধ্যে মাত্র ৫০টি পরিবার ক্যাম্পাস ছাড়ে।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী হাবীবুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসন এক মাসের মধ্যে এসব উচ্ছেদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অথচ তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। যারা অনিয়ম করছেন তাদের কেন এত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, সেটাই আমরা বুঝি না।’
 
অবৈধ এসব ভাড়াটিয়া ও বহিরাগতদের অবাধ বিচরণে ক্যাম্পাস মাদক ও চোরাচালানের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। এতে কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত করছে। বিভিন্ন সময় এসব বস্তি থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা প্রহরীরা আটক করেছেন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনের নাম উঠে আসে, যাদের মধ্যে ৫ জন বস্তির, ৩ জন বহিরাগত এবং ৯ জন কর্মচারী। এরা বস্তি থেকে শিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকায় ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইনসহ মাদক সরবরাহ করত।

২০১৮ সালের কলেজগেট এলাকা থেকে র‌্যাব-৪ মো. বাবু নামের একজনকে ২২৫ পিস ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ আটক করে, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্তিতে ভাড়া থাকতেন। একই বছরের ২ নভেম্বর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কর্মীরা মাদকসহ তারিফ নামের একজনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ক্যাম্পাসের মাদকচক্রের ৮ জনের নাম প্রকাশ করেন, যাদের মধ্যে ৪ জন কর্মচারী, ২ জন বস্তির ভাড়াটিয়া ও ২ জন বহিরাগত। এ ছাড়া গত ৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকসহ ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই ক্যাম্পাসের অবৈধ ভাড়াটিয়া।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘অবৈধ এসব বস্তির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা কমে গেছে। মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর বিপদগামী হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ। অন্যদিকে এসব ভাড়াটিয়া অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহারের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই এক সপ্তাহের মধ্যে তারা এই সমস্যার সমাধান চান।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আরফান আলী বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলোতে গিয়ে বহিরাগতদের ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশনা দিয়ে এসেছি। এখন অ্যাকশনে যাব। নির্দেশ অমান্যকারীদের বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করা হবে।’ 
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘সাবেক প্রক্টর বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ফলে নতুন প্রক্টর পদায়নসহ তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

কুবির শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ এএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ এএম
কুবির শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ
ছবি : খবরের কাগজ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বায়েজিদ আহম্মেদ বাপ্পীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেছেন ১৮তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী তার অভিভাবকসহ প্রক্টর বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত এক ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী বায়েজিদ আহম্মেদ বাপ্পী ইঞ্জিনিয়ার বাড়ি (বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে একটি মেয়েদের মেস) থেকে জোরপূর্বক আমাকে ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলেন এবং ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী নির্জন স্থানে জোরপূর্বক শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করেন। ফলে আমি মানসিকভাবে সম্পূর্ণ অসুস্থ হয়ে পড়ি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনুমতি ছাড়া ভুক্তভোগীর ছবি তোলে অভিযুক্ত। পরবর্তী সময়ে ছবি তোলার বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য প্রক্টরিয়াল টিম বায়েজিদের স্মার্টফোন খুঁজে অভিযোগের সত্যতা পায়। তদন্তের স্বার্থে তখন তার ফোনটি প্রক্টর নিজের হেফাজতে নিয়ে নেন। পাশাপাশি অভিযোগটি যৌন নির্যাতন সেলে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়।

এ সময় বায়েজিদ আহম্মেদ বাপ্পীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন জব্দ থাকায় সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু যে ধরনের অভিযোগ, সেটি যৌন হয়রানি সেলের কাজের। তাই বিষয়টি যৌন হয়রানি সেল দেখবে। আর প্রাথমিকভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওর ফোন জব্দ ও ক্যাম্পাসে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি।

হল ছাড়ার বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুন বলেন, ‘ওই রুমে আমরা নতুন তালা দিয়েছি। পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীকে যাতে হলে বা আশপাশে না আসে, সে বিষয়ে হল-সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করেছি। এর ব্যতিক্রম হলে আমরা প্রক্টর অফিসকে জানাব।

আতিকুর তনয়/জোবাইদা/অমিয়/