ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

শেকৃবিতে অবৈধ বস্তি ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ হবে কবে?

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ এএম
শেকৃবিতে অবৈধ বস্তি ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ হবে কবে?
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ১০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ টিনশেড বাড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য বিনামূল্যে এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হলেও, তারা এর বাইরে জায়গা দখল করে বস্তি গড়ে তুলেছেন।

এসব বস্তি বহিরাগতদের ভাড়া দিয়ে কর্মচারীরা নিয়মিত আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টার বরাদ্দ পাওয়া কর্মচারীরা বহিরাগতদের সাবলেট দিচ্ছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। বহিরাগতদের অবাধ বিচরণে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন অবৈধ বস্তি উচ্ছেদে উদ্যোগ নিলেও তিন মাসেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, অবৈধ বস্তি ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ হবে কবে?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০১ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব উপাচার্যের আমলেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পছন্দের কর্মচারীদের বিনামূল্যে অস্থায়ীভাবে এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কর্মচারীরা তার বাইরে অতিরিক্ত জায়গা দখল করে ঘর বানিয়ে সেগুলো বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা, মুসলিমপাড়া ও মিনিবাজারের পেছনের এলাকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৫০ জন কর্মচারী তাদের জন্য বরাদ্দ জায়গার বাইরে অতিরিক্ত জায়গা দখল করে টিন দিয়ে অস্থায়ী বাড়ি নির্মাণ করেছেন। যেখানে প্রায় ১৮০টি বহিরাগত পরিবার ভাড়া রয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে বরাদ্দ পাওয়া প্রায় প্রতিটি কর্মচারীই তাদের বরাদ্দ করা বাড়িতে রুম সাবলেট দিয়ে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। ক্যাম্পাসটিতে এখন প্রায় ৩০০ বহিরাগত পরিবার বসবাস করছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর বস্তি উচ্ছেদের উদ্যোগ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রশাসন। সে সময় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ এবং অবৈধভাবে দখল করা সব স্থাপনা ও জমি ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে ভাড়া থাকা ৩০০ পরিবারের মধ্যে ২১০টি পরিবার ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছে। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাকিদের ক্যাম্পাস ছাড়ার জন্য নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।

এর আগে ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেকেন্দার আলীর নেতৃত্বে ২৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভায় বস্তি ও ভাড়াটিয়াদের এক মাসের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নোটিশে সময়সীমা অতিক্রম করলে পানি ও বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্নসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে সে সময় ৪০০ পরিবারের মধ্যে মাত্র ৫০টি পরিবার ক্যাম্পাস ছাড়ে।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী হাবীবুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসন এক মাসের মধ্যে এসব উচ্ছেদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অথচ তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। যারা অনিয়ম করছেন তাদের কেন এত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, সেটাই আমরা বুঝি না।’
 
অবৈধ এসব ভাড়াটিয়া ও বহিরাগতদের অবাধ বিচরণে ক্যাম্পাস মাদক ও চোরাচালানের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। এতে কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত করছে। বিভিন্ন সময় এসব বস্তি থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা প্রহরীরা আটক করেছেন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনের নাম উঠে আসে, যাদের মধ্যে ৫ জন বস্তির, ৩ জন বহিরাগত এবং ৯ জন কর্মচারী। এরা বস্তি থেকে শিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকায় ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইনসহ মাদক সরবরাহ করত।

২০১৮ সালের কলেজগেট এলাকা থেকে র‌্যাব-৪ মো. বাবু নামের একজনকে ২২৫ পিস ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ আটক করে, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্তিতে ভাড়া থাকতেন। একই বছরের ২ নভেম্বর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কর্মীরা মাদকসহ তারিফ নামের একজনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ক্যাম্পাসের মাদকচক্রের ৮ জনের নাম প্রকাশ করেন, যাদের মধ্যে ৪ জন কর্মচারী, ২ জন বস্তির ভাড়াটিয়া ও ২ জন বহিরাগত। এ ছাড়া গত ৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকসহ ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই ক্যাম্পাসের অবৈধ ভাড়াটিয়া।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘অবৈধ এসব বস্তির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা কমে গেছে। মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর বিপদগামী হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ। অন্যদিকে এসব ভাড়াটিয়া অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহারের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই এক সপ্তাহের মধ্যে তারা এই সমস্যার সমাধান চান।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আরফান আলী বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলোতে গিয়ে বহিরাগতদের ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশনা দিয়ে এসেছি। এখন অ্যাকশনে যাব। নির্দেশ অমান্যকারীদের বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করা হবে।’ 
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘সাবেক প্রক্টর বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ফলে নতুন প্রক্টর পদায়নসহ তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

৩ দাবিতে ইউজিসিতে অবস্থান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪২ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
৩ দাবিতে ইউজিসিতে অবস্থান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের
আগারগাঁও ইউজিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। ছবি :সংগৃহীত

তিন দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আগারগাঁও ইউজিসির কার্যালয়ের সামনে তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করে। 

দাবিগুলো হল- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা, দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌক্তিক একটা সিমেস্টার ফি ধার্য করা।

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ইউজিসির কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। আগামী ২০ জানুয়ারি ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঙ্গে আবার সভা হবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তালহা হাবিব খবরের কাগজকে বলেন, ২০ তারিখ আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এ দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত অর্থাৎ মিটিং হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সব প্রকার ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একাডেমিক সব কাজকর্ম থেকে আমরা বিরত থাকব।

কবির/মাহফুজ

বেরোবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে বাঁচাতে ছাত্রদল নেতার আবেদন

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪২ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
বেরোবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে বাঁচাতে ছাত্রদল নেতার আবেদন
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম আল নাহিদকে বহিষ্কার না করে তার পক্ষ নিয়ে আত্মসমর্পণ আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন ছাত্রদল নেতা মো. তুহিন রানা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো.হারুন অর রশীদ বরাবর একটি আবেদন পত্র জমা দেন এই ছাত্রদল নেতা। এ সময় সিয়াম আল নাহিদের স্বাক্ষরটাও তুহিন নিজেই করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

জানা যায়, সিয়াম আল নাহিদ ইইই বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। এর আগে সিয়াম দুইবার অকৃতকার্য হয়। তাই এবার বহিষ্কার হলে তার ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাবে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

সূত্র জানায়, জুলাইয়ের আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ছবি, ভিডিও ফুটেজসহ একাধিক প্রমাণ পাওয়া যায় ছাত্রলীগ নেতা সিয়ামের বিরুদ্ধে। এছাড়া সিয়ামের রুম তল্লাশি করে হল কর্তৃপক্ষ হামলায় ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র এবং মাদক সামগ্রীও পেয়েছিল। 

উল্লেখ্য, সিয়াম আল নাহিদসহ ৭১ জনকে জুলাইয়ে ছাত্র জনতার উপর হামলায় জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেটে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে।

এদিকে জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতাকে বাঁচানোর জন্য তার হয়ে (সিয়াম আল নাহিদ) আত্মসমর্পণপত্র জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতা পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তুহিন রানা। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর তীব্র বিরোধিতা করে। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে তীব্র আলোচনা সমালোচনা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবির অন্যতম সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যারা অস্ত্র, লাঠি নিয়ে মাঠে নেমেছিল, তারা কখনোই আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। অপরাধী যে কেউ হোক না কেন, কোনো ছাড় হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা অন্য কোনো কুচক্রীমহল যদি কোনোভাবে কোনো অপরাধীকে বাচানোর চেষ্টা করে, তা কোনোভাবেই আমরা মেনে নেব না।’

এ বিষয়ে তুহিন রানা বলেন, ‘আমি মানবিক কারণে তার এই আত্মসমর্পণ পত্রটি তার হয়ে জমা দিয়েছি। কারণ সে এর আগে দুইবার অকৃতকার্য হয়েছে। আর একবার অকৃতকার্য হলে তার ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আল আমিন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতাম না। এই মাত্র জানলাম। যদি ঘটনা সত্য হয় তাহলে আমরা খতিয়ে দেখব এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো.হারুন অর রশিদ বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মসমর্পণ আবেদনপত্র জমা দিতেই পারে এটা তার অধিকার। আবেদনপত্রটি শৃঙ্খলা বোর্ডে পাঠানো হবে। 

গাজী আজম হোসেন/মাহফুজ 

 

ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে আবাসিক সিট বরাদ্দের উদ্যোগ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৮ পিএম
ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে আবাসিক সিট বরাদ্দের উদ্যোগ
সলিমুল্লাহ মুসলিম হল। ছবি: খবরের কাগজ

কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে আবারও শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক সিট বরাদ্দের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই হলে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, আগামী ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাপেক্ষে নতুন ছাত্রদের সংযুক্তি প্রদানের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

মেরামত কাজের নকশা প্রণয়ন ও পরামর্শ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব রিসার্চ, টেস্টিং এন্ড কনসালটেশনকে

(বিআরটিসি) ইতোমধ্যেই নিযুক্ত করা হয়েছে।

পাশাপাশি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে নতুন একটি ভবন নির্মাণেরও নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জরিপের কাজ সম্পন্ন করেছে প্রকৌশল দপ্তর।

আরিফ জাওয়াদ/নাবিল/

জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী ক্যাম্পাস রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে দেখছেন?

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে দেখছেন?
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির একটি সোনালি ইতিহাস রয়েছে। তবে ’৭১-পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নেই বেশি তৎপর ছিল। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্যাম্পাস রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এর অন্যতম কারণ হলের সিট দখল, গেস্টরুম-গণরুম সংস্কৃতি, ক্যাম্পাসে ভিন্ন মতামতকে দমন-পীড়ন ইত্যাদি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জোরাল দাবি ওঠে। বিভিন্ন ক্যাম্পাসে এর পক্ষে হয় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ-সমাবেশও। তবে সুষ্ঠু ধারার ক্যাম্পাস রাজনীতির পক্ষেও অনেক শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে দেশের ক্যাম্পাসগুলোয় বিভিন্ন দলের ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যক্রমও দৃশ্যমান। ক্যাম্পাস ছাত্ররাজনীতি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনোভাব তুলে ধরতে আমাদের আজকের এ আয়োজন।

শাহরিয়ার আদনান প্রান্ত

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্ররাজনীতিসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট সিন্ডিকেটের ৮৫তম (বিশেষ) সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যা অবিলম্বে কার্যকর হয়।

অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ, চাঁদাবাজি এবং সিট দখলের মতো সমস্যার সৃষ্টি করে, যা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত করে।

অন্যদিকে, কিছু শিক্ষার্থী এবং সংগঠন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, ছাত্রদল এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের মতো সংগঠনগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিভিন্ন প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। এমনকি, কিছু সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীও এখন ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

কিছু শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, অন্যরা এর বিরোধিতা করছেন এবং ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি স্পষ্ট যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা ও সমাধানের প্রয়োজন।

ইমরান হোসাইন আদিব

প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্ররাজনীতিকে আমরা পুরোপুরি উপেক্ষা করতে পারি না। ব্যক্তিগত জায়গা থেকে অনেকে অপছন্দ করতে পারে কিন্তু অস্বীকার না। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ছাত্ররাজনীতি একটা সাধারণ ও নিয়মিত বিষয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ছাত্ররাজনীতির ভূমিকা অপরিসীম। ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন দল, বিপক্ষ দল হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্ররাজনীতি চলে তবে সবার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা।

বর্তমান সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্র সংগঠনের সক্রিয়তা লক্ষ করা যাচ্ছে। যার সিংহভাগই বিগত লম্বা একটা সময় ধরে এই সক্রিয়তার সুযোগ পায়নি। তাই সেই স্বাধীনতা পাওয়ার পর তাদের প্রধান ধ্যান ধারণা হওয়া উচিত নিজেদের কর্ম তৎপরতা, সিদ্ধান্ত, বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজেদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো। তবে বর্তমান সময়ে এর উল্টো চিত্রও দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতা প্রদর্শন ও দখলদারত্ব নিয়ে ছাত্র রাজনৈতিক সংঘটনগুলোর মাঝে একটা প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সবার মাঝে কেমন একটা ভারসাম্যহীনতা চোখে পড়ছে। মাঝে মধ্যে সংবাদপত্রের শিরোনামে দেখতে হয় অমুক সংঘটনের দলীয় ছাত্র কর্তৃক একজন আক্রমণের শিকার হচ্ছে, হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে সামগ্রিক স্বার্থ না চিন্তা করে শুধু দলীয় ক্ষমতা প্রদর্শনের এই সংস্কৃতি বন্ধ না করতে পারলে ছাত্ররাজনীতি ও সংঘটনগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা হারাবে।