ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

গুচ্ছ থেকে বের হতে কুবি প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
গুচ্ছ থেকে বের হতে কুবি প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে আলটিমেটামের ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের না হলে সকল ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই আলটিমেটামের ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

সরজমিনে দেখা যায়, দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী সময়ে তারা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলীর সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তারা উপাচার্যের কাছে আশানুরূপ আশ্বাস না পেয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় এবং গুচ্ছবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে সেখান থেকেই আলটিমেটাম ঘোষণা করে।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফ ভুঁইয়া বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতির মতো হাস্যকর একটা বিষয় নিয়ে আমাদের বার বার এভাবে দাঁড়াতে হচ্ছে এটা লজ্জাজনক।’ 

তিনি বর্তমান সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে গুচ্ছ পদ্ধতি বহাল রেখে যদি আপনারা জটিল পরিস্থতির সৃষ্টি করতে চান, আমরা আপনাদেরকে রূখে দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত। সর্বোপরি আমরা চাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এইবছর থেকে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সেশন থেকে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে যাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী পাবেল রানা বলেন, ‘গুচ্ছ স্বৈরাচারী হাসিনার বন্দোবস্ত। এই স্বৈরাচারীর বানানো গুচ্ছে আমরা থাকব না। কোন বিশ্ববিদ্যালয় থাকল অথবা কারা থাকল না, এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকরা আমাদের সঙ্গে আছেন। আমরা একদম স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের যে ভর্তি পরীক্ষা হবে সেটা অবশ্যই গুচ্ছ মুক্ত হতে হবে।’

ইংরেজিতে বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন আবির বলেন, ‘গুচ্ছের অভিশাপ থেকে আমরা সবাই মুক্ত হতে চাই। আমরা চাই না গুচ্ছের যাতাকলে পড়ে কোনো শিক্ষার্থীর এক বছর নষ্ট হোক এবং কোনো সিট খালি না থাকুক। বিশ্ববিদ্যালয় যেন তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ফিরে যেতে পারে। উপদেষ্টামণ্ডলীকে আমরা বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে আপনারা প্রশাসনে এসেছেন, তাই শিক্ষার্থীদের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ থেকে মুক্ত করুন।’

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে গত ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলীর থেকে জানা যায়, কুবি গুচ্ছ পদ্ধতিতেই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিবে। এ ঘোষণা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন সমালোচনার সৃষ্টি হতে থাকে।

আতিকুর রহমান তনয়/মাহফুজ

 

পড়াশোনায় সফল হতে ৪টি বিষয় মেনে চলুন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০০ পিএম
পড়াশোনায় সফল হতে ৪টি বিষয় মেনে চলুন
ছবি: সংগৃহীত

সমাজের কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে, সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রতিভা এবং দক্ষতায় উন্নতি করা সম্ভব না। এই বিশ্বাসের মানুষ মূলত জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে পছন্দ করে। কোনো প্রচেষ্টা থাকে না এদের মধ্যে। অন্যদিকে আর এক শ্রেণি বিশ্বাস করে- কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জীবনে উন্নতি ঘটানো সম্ভব। এরা জীবনের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যায়। অবশেষে তারা এর সুফলও পায়।

আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্বাস ধারণের মাধ্যমে শিক্ষাগত জীবনে এবং পরবর্তী সময়ে পেশাগত জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন খুব সহজে। এজন্য আপনাকে কয়েকটি বিষয় ভালোভাবে চর্চা করতে হবে।

ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করুন
ড. ডুইকের মতে, একজন মানুষ যেকোনো সময়, এমনকি এখনই ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে তার পরামর্শ হলো, নিজেকে নিজে ইতিবাচক মনোভাবের কথা বলতে থাকা বিশেষ করে যখন মন নেতিবাচক চিন্তা করে। উদাহরণস্বরূপ, ‘আমি কখনোই পরীক্ষায় ভালো করতে পারব না’ বলার পরিবর্তে বলুন, ‘অনেক মানুষের জন্য পরীক্ষায় ভালো করা সহজ নয়, কিন্তু আমি ভালো পরীক্ষার্থী হওয়ার চেষ্টা করব।’

লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
আপনি কী অর্জন করতে চান সেটা যদি আপনি না জানেন তাহলে কীভাবে সফলতা পাবেন? তাই প্রথমে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেটাতে দৃঢ় থাকুন। মনে রাখবেন, পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ে বিশ্বাসী ব্যক্তি সব সময় ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে দেখে এবং একই সঙ্গে সেই লক্ষ্যে কাজ করে ফলাফল নিজের পক্ষে নিয়ে আসে।

লক্ষ্যকে ভুলে যাবেন না
আপনার লক্ষ্যকে মনে রাখুন। যেটা আপনাকে কাজ করতে মানসিক শক্তি ও উৎসাহ জোগাবে। যেমন আপনি যদি চিকিৎসক হতে চান তাহলে আপনি বড় কোনো চিকিৎসকের ছবি পড়ার টেবিলের সামনে রাখতে পারেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন মনীষীর উক্তি বা স্টিকি নোট ব্যবহার করে নিজেকে নির্দিষ্ট কাজে শক্তভাবে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে।

সাফল্যের জন্য নিজেকে পুরস্কৃত করুন
ড. ডুইকের মতে, নিজের সিদ্ধান্ত বা কাজের প্রশংসা করার মাধ্যমে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা যেতে পারে। যেমন- ‘তুমি ভালো কাজ করেছ বা তুমি খুব কঠোর পরিশ্রম করেছ’ নিজেকে এমন ধরনের প্রশংসা করাটা ভীষণ জরুরি। আপনার সাফল্য অবশ্যই উদযাপন করবেন তবে এতে বেশি সময় ধরে স্থির থাকবেন না। শুধু নিজেকে বোঝান, যদি চেষ্টা করেন তবে আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারবেন। লেখক: শিক্ষার্থী, এমএম কলেজ, যশোর

/রিয়াজ

ববিতে পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগ নেত্রী

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
ববিতে পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগ নেত্রী
আটক ছাত্রলীগ নেত্রী টিকলী শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) পরীক্ষা দিতে এসে আটক হওয়া এক ছাত্রলীগ নেত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল)  বিকেলে জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারের পাঠানো হয়।

আটক ছাত্রলীগ নেত্রী টিকলী শরীফ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সামনের সারির একজন নেত্রী ছিলেন। গত বছর জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময়ে টিকলী ক্যাম্প ছাড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে সম্প্রতি তিনি বরিশালে আসেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে ভোলা রোডে একটি রেস্তোরাঁর ভেতরে টিকলী শরীফসহ তিনজনকে অবরুদ্ধ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হলে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর তাদের তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। টিকলীর সঙ্গে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী টিকলী শরীফ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কয়েকজন ফোন করে জানান টিকলী শরীফসহ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী ক্যাম্পাসের সামনে একটি রেস্তোরাঁয় বসে গোপন মিটিং করছেন। সেখানে গিয়ে গোপন সভা করা অবস্থায় তাকেসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ ছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশকে অস্থিশীল করার পাঁয়তারা করছেন। 

মঙ্গলবার রাতে পুলিশ হেফাজতে থাকা ছাত্রলীগ নেত্রী টিকলী শরীফ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমার বুধবার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। আমি লাইব্রেরিতে পড়ছিলাম। সন্ধ্যায় বাইরে বের হলে আমার জুনিয়রদের সঙ্গে দেখা হয়, তাদের নিয়ে চা খেতে গেলে সেখান থেকে আমাদের আটক করা হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী বিষয়টি আমাকে জানানোর পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের হস্তান্তর করি। পরবর্তী ব্যবস্থা পুলিশ আইন অনুযায়ী গ্রহণ করবে।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতাকর্মীরা টিকলী শরীফসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। আটক তিনজনের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টিকলীর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় থাকা মামলাটিতে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলার আসামি হওয়ায় তাকে সেখানে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কুয়েট ভিসির পক্ষে শিক্ষক-কর্মকর্তারা, পদত্যাগের দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
কুয়েট ভিসির পক্ষে শিক্ষক-কর্মকর্তারা, পদত্যাগের দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা
কুয়েট ভিসির পক্ষে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মানববন্ধন। ছবি: খবরের কাগজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগান। 

অন্যদিকে কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবির বিপক্ষে ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুধবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মিছিলটি শুরু হয়‌। দুর্বার বাংলার পাদদেশে গিয়ে তারা মানববন্ধন করেন। এ সময় শিক্ষক-কমকর্তারা কিছু শিক্ষার্থী কুয়েটের ভিসিকে হয়রানি করছে বলে দাবি করেন। ক্যাম্পাসে এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে কুয়েট পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।
    
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণার কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু সেই তালিকা প্রকাশ না করে ধুম্রজাল সৃষ্টি করেছে কুয়েট প্রশাসন। তারা বলছেন, বহিষ্কারের নামে আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্রদের হয়রানি করা হতে পারে। সেই সঙ্গে হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবি জানানো হয়। 

শিক্ষার্থীরা বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে জানান, কুয়েটে হামলার ঘটনায় বহিরাগত এক ব্যক্তি কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন, ওই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা মাঠ ছাড়বেন না বলে জানান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভিসি চাপ প্রয়োগ করে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানে নিয়ে গেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে সমর্থন দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। 

 ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি। ছবি: খবরের কাগজ

মঙ্গলবার দুপুরে তালা ভেঙে আবাসিক হলে প্রবেশের পর রাতে হলে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। কুয়েট শিক্ষার্থী শেখ তৌফিক বলেন, ‘আমরা হলে উঠলেও খাবার পানির সংকট রয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ। দুই মাস আগের ট্যাংকির পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হলের কর্মচারীদের এখনো নিয়োগ হয়নি। আমাদের সমস্যাগুলো হল প্রভোস্টকে অবহিত করেছি। তিনি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের কারণে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম দুই মাস বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে চার-পাঁচ মাস শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ। এতে আমরা শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

অন্যদিকে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলার কনফারেন্স রুমে শিক্ষক-কর্মচারীদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবির বিপক্ষে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন করেন। এ সময় কুয়েটের উপাচার্যকে শিক্ষার্থীরা হয়রানি করছে বলে শিক্ষক-কমকর্তারা দাবি করে এর প্রতিবাদ জানান।

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যে ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকে নির্দোষ হতে পারেন। ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি সেটা যাচাই বাছাই করছে।’ তিনি বলেন, ‘দুষ্কৃতিকারীদের সাজা না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরবেন না।’ এ ছাড়া ৪ মে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরুর পরিবেশ তৈরির জন্য তিনি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে ছাত্রদের হল ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই মাস আগে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। ওই সময় হলের ইন্টারনেট সংযোগ এবং পানির লাইন যেভাবে ছিল এখনো সেভাবে রয়েছে।’

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর নামের তালিকা ও সংখ্যা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি। তাই এসব তালিকা দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। 

শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধনে বলা হয়, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২ মে হল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও গুটিকয়েক শিক্ষার্থী হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেছে, যা স্পষ্টত আইনের লঙ্ঘন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রাখার কথা বলা হয়। তারা যেন কোনো ধরনের অপপ্রচারে প্রভাবিত না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, বিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করেন।

উল্লেখ্য, ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১০ এপ্রিল কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীকে আসামি করে স্থানীয় এক বাসিন্দা আদালতে মামলা করেন। এ কারণে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

 

মিডিয়া পার্টনার খবরের কাগজ ডিইউকিউএসের আন্তর্জাতিক কুইজ ফেস্টিভালের পর্দা নামছে বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম
ডিইউকিউএসের আন্তর্জাতিক কুইজ ফেস্টিভালের পর্দা নামছে বৃহস্পতিবার
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ফেস্টিভালের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কুইজ সোসাইটির (ডিইউকিউএস) উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কুইজ ফেস্ট বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শেষ হতে যাচ্ছে। সমাপনী দিনে রয়েছে অন্তবিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তবিশ্ববিদ্যালয় এবং উন্মুক্ত রাউন্ড। এরপর পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে পর্দা নামবে এবারের আসরের।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ফেস্টিভালের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে উদ্বুদ্ধ করতে কুইজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি ধরে রাখতে এই ফেস্ট কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি।’

কুইজ সোসাইটির সভাপতি ওয়াসি আহাম্মেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগঠনের মডারেটর সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব কায়সার এবং ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ফারজানা বাসার উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ডিইউকিউএসের আন্তর্জাতিক কুইজ ফেস্টিভালে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে মুক্তচিন্তার স্বাধীন দৈনিক ‘খবরের কাগজ’। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত টিএসসিভিত্তিক সংগঠন ডিইউকিউএস কুইজের মাধ্যমে জ্ঞানচর্চাকে উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জ্ঞানচর্চার সেই ধারাবাহিকতায় এবারও আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক কুইজ ফেস্টিভাল। এবারের কুইজ ফেস্টে আন্তস্কুল, আন্তকলেজ ও আন্তবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কুইজ প্রতিযোগিতায় ১০০টি টিম, মেগা কুইজে ৩০টি টিম আর অন্তবিশ্ববিদ্যালয় কুইজে ৭০টি টিম অংশ নেয়। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, ফিলিপাইনসহ ১১টি দেশের প্রতিযোগীরা এই ফেস্টে ভাচুয়ালি অংশ নিচ্ছেন।

আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

নতুন করে ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৭ মে

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
নতুন করে ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৭ মে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পর শুধু বহুনির্বাচনি পরীক্ষা নেবে এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে সেটি মঞ্জুরের পর এবার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আগামী ১৭ মে শুধু ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে অংশ নেওয়া ভর্তিচ্ছুরা এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

এদিকে একই ইউনিটের বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা থেকে অংশ নেওয়া ভর্তিচ্ছুদের ফল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) প্রকাশ করা হবে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাবির অনলাইনে ভর্তি কমিটির সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ থেকে জানানো হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির বিশেষ সভার সিদ্ধান্তক্রমে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের পুনরায় বহুনির্বাচনি আগামী ১৭ মে তারিখে বিকেল ৩টা থেকে ৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের ফলাফল আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১১টায় প্রকাশ করা হবে এবং আগামী ১৯ এপ্রিল তারিখ পর্যন্ত তাদের বিস্তারিত ফরম ও বিষয় পছন্দক্রম পূরণ করতে পারবেন।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ‘একাধিক ভুল থাকায় পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার আবেদন করেন এক পরীক্ষার্থী। কিন্তু তাতে সাড়া না পাওয়ায় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে প্রশ্নপত্রে ভুলের কারণে পরীক্ষা বাতিলে কর্তৃপক্ষের কাছে রিটকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন ‍তোলা হয়। ১৯ মার্চ বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ভর্তি পরীক্ষার ফল স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্ট। 

এদিকে ১৩ এপ্রিল বিকেলে নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে, সেটি মঞ্জুর করে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির হাইকোর্ট বেঞ্চ।

/আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ