ঢাকা ১৩ চৈত্র ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১

ছাত্র-শিক্ষকদের ফ্যাসিস্ট বলায় উত্তাল বরিশাল

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৬ পিএম
ছাত্র-শিক্ষকদের ফ্যাসিস্ট বলায় উত্তাল বরিশাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

গত বছরের ৫ আগস্টের আগে নিয়োগ করা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থী সবাইকে ফ্যাসিস্ট বলা এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা নিয়ে বরিশালে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গত রবিবার বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, ৫ আগস্টের আগে নিয়োগ করা সব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিস্টের রিক্রুটমেন্ট। তার দেওয়া ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাতেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষক প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে ভিসির বক্তব্য প্রত্যাহার এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছেন। অন্যথায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।  

এদিকে ভিসির বক্তব্যের প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত রবিবার রাতে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল করেছেন। গতকাল সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। অন্যদিকে ভিসির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নগরীতে বিএনপির পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ফলে এসব কর্মসূচিতে ভিসিবিরোধী আন্দোলন জোরালো হয়ে উঠছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে ভিসির দেওয়া বক্তব্যের একটি ব্যাখ্যা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উপাচার্যের বক্তব্যের কারণে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে যে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনোভাবে কাম্য নয়। একই সঙ্গে উপাচার্যের শব্দচয়নের কারণে কেউ ব্যথিত হয়ে থাকলে তাদের কাছে তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উপাচার্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে উপাচার্য বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণের জন্য। জুলাই আন্দোলনের পর আমরা যারা বিভিন্ন জায়গাতে এসেছি, তাদের বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সমস্যায় ফেলা হচ্ছে। এই কাজগুলো অত্যন্ত অনুচিত হচ্ছে, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত। শুরু থেকে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ভর্তি  শিক্ষার্থী, তারা সবাই ফ্যাসিস্ট আমলের। কেউ যদি বলে আমি ফ্যাসিস্টের কেউ নই, সেটা দাবি করতে পারবেন না। সেই আমলে সবাই রিক্রুটেড। আমরা জানি কীভাবে রিক্রুটমেন্ট হয়েছে। এখন প্রশ্ন, শিক্ষার্থীদের কেন উসকে দেওয়া হচ্ছে?’

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মালার বিষয়ে ওই ভিডিওতে ভিসি ড. শুচিতা শরমিন বলেন, যে ঘটনা জুলাই আন্দোলনেও হয়নি, এবার তার চেয়ে বড় ঘটনা ঘটে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভাইস চ্যান্সেলরের বাংলোর শুধু গেট ভাঙা হয়েছে এমন নয়, কেচি গেটের ভেতরেও ভাঙার চেষ্টা হয়েছে। আমাদের সব শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই-তিনজন যদি বিচ্যুত হয়ে যান, তাদের দিকেও আমাদের তাকাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ নষ্ট থেকে শুরু করে সম্মান নষ্ট করা, ইমেজ নষ্ট করলে মামলা হতেই পারে।’

তিনি বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহার করতে হলে শিক্ষার্থীদের আমার কাছে আসতে হবে, কথা বলতে হবে। তারা যে ভুল করেছে সেই অনুশোচনা হলে নিশ্চয়ই আমরা বিবেচনা করব।  আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার জন্য বসিনি। আমরা শিক্ষার্থীদের মানবিকতা, উন্নয়ন কল্যাণ দেখতে চাই, ধ্বংস দেখতে চাই না।’ 

গতকাল দুপুরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা  বলেন, আমরা প্রমাণ সহকারে জানি উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন নিজে ছিলেন ফ্যাসিস্ট শক্তির একজন চিহ্নিত দোসর। ২০২৪ সালের আমি-ডামির নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়ে বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষক ও পেশাজীবীরা যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তাদের সেই বিবৃতিপত্রে ১০৮ নম্বর স্বাক্ষরকারী ছিলেন উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন। এমন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে ফ্যাসিস্ট বলেছেন, এর চেয়ে লজ্জার ও ঘৃণার কিছু হতে পারে না। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই এবং আমরা দাবি জানাচ্ছি এই বক্তব্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর কাছে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ভিসি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এযাবৎকালের সব নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। এই কথা দ্বারা তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অন্যায়ভাবে আহত করেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যেরও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

এদিকে ভিসির অপসারণের দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে গতকাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচিতে বিএনপি, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী অংশ নেন। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মহাননগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের পক্ষে স্বাক্ষরকারী ড. শুচিতা শরমিনের চেয়ে বড় চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট অন্য কেই নেই। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ ও পতিত শেখ হাসিনার দোসর জুলাই-আগস্টে যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের ফ্যাসিস্ট  বলছেন, যা বড়ই হাস্যকর।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে অপসারণ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে হবে। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন ছাত্রদলের ভাইবোনেরা। 

বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে বেরোবির মাটিতে: উপাচার্য

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম
বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে বেরোবির মাটিতে: উপাচার্য
ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে অর্জিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী।
 
বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় একাডেমিক ভবন-২ এর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সেক্টর কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধাসহ যাদের ত্যাগ ও সংগ্রামে অবদান রয়েছে, তাদের সকলের প্রতি উপাচার্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপাচার্য বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্ব মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে নতুন রাষ্ট্র স্বাধীন বাংলাদেশের। ৭১ ও ২৪ এর স্বাধীনতা অর্জনের মূল থিম ছিল বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তিনি সকল পর্যায় থেকে বৈষম্যমুক্ত দেশ গঠনে ভূমিকা রাখার আহ্বান  জানান।

এর আগে দিবসটি উপলক্ষে সকালে প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেট থেকে স্বাধীনতা শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়ে শহীদ আবু সাঈদ চত্বর ঘুরে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বাধীনতা স্মারকের সামনে এসে শেষ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর, আবাসিক হল, ইনস্টিটিউটসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।

এরপর স্বাধীনতা স্মারকে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী। এরপর পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, আবাসিক হল, ইনস্টিটিউটসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস ২০২৫ উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মিজানুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোঃ হারুন-অর রশিদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর মোঃ ফেরদৌস রহমান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোঃ তানজিউল ইসলাম, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারের উপ-গ্রন্থাগারিক মোঃ আব্দুস সামাদ প্রধান প্রমুখ।

এর আগে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এদিকে, স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনিক ভবনসহ ক্যাম্পাসে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গাজী আজম/সিফাত/

শিক্ষার্থীদের জন্য লক্ষ্য ঠিক করা কতটা জরুরি, জেনে নিন

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
শিক্ষার্থীদের জন্য লক্ষ্য ঠিক করা কতটা জরুরি, জেনে নিন
ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্য নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা গুণ, যা একজন শিক্ষার্থীকে তার শিক্ষাজীবনের যেকোনো পর্যায়ে উপকার করে থাকে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, লক্ষ্য নির্ধারণ করার কারণে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফলে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

শিক্ষার্থীদের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণের গুরুত্ব: লক্ষ্য নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দেয়, অনুপ্রেরণা বাড়ায় এবং সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা উন্নত করে। পাশাপাশি এটি আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলে, যা সামগ্রিক ব্যক্তিগত বিকাশে সহায়তা করে। এ ছাড়া অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণের মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষমতায় উন্নতি ঘটাতে পারে এবং ভবিষ্যতের সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করতে পারে। লক্ষ্য নির্ধারণ মোটাদাগে শিক্ষার্থীদের যেসব উপকার করতে পারে তা হলো-
অনুপ্রেরণা বৃদ্ধি: লক্ষ্য নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। ছোট ছোট লক্ষ্য স্থাপন এবং তা অর্জন করলে শিক্ষার্থীরা সাফল্যের অনুভূতি পায়। এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তাদের আরও বড় লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করে।

সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা: লক্ষ্য নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। বৃহৎ লক্ষ্যগুলোকে ছোট ও কার্যকরী ধাপে বিভক্ত করার মাধ্যমে তারা হাতে থাকা কাজগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে সুন্দরভাবে শেষ করতে পারে।

আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ববোধ: লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। যখন শিক্ষার্থীরা তাদের লক্ষ্যগুলো ঠিক করে, তখন তারা তাদের পরিকল্পনার প্রতি দৃঢ় থাকার গুরুত্ব শেখে।

আত্মউন্নয়ন: লক্ষ্য নির্ধারণ আত্মবিশ্লেষণ করতে উৎসাহিত করে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গা চিহ্নিত করতে পারে। যা একজন শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য অপরিহার্য এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে লক্ষ্য নির্ধারণ কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়: লক্ষ্য নির্ধারণ কার্যকর করতে শিক্ষার্থীরা প্রথমত তাদের লক্ষ্যগুলো লিখে ফেলবে। এরপর ছোট ছোট ধাপে সেগুলো ভাগ করে কাজে নেমে পড়বে। সর্বশেষ, নিয়মিত কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া অভিভাবকদের দায়িত্ব থাকবে, শিক্ষার্থীদের জন্য এমন একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা যেখানে তারা শিক্ষক ও গুরুজনদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ পেতে পারে। 

লেখক: শিক্ষার্থী, স্পেন


/রিয়াজ

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ, ফেল ৯৪.০৭ শতাংশ

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৭ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৮ পিএম
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ, ফেল ৯৪.০৭ শতাংশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের বিজ্ঞান ইউনিটের (‘ক’ ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ পাস এবং ৯৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শিক্ষার্থীই ফেল করেছেন। তিন বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায়) মিলিয়ে পাস করেছেন ৭ হাজার ৪৩৭ জন। 

সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে এই ফল প্রকাশিত হয়। 

জানা যায়, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৬ হাজার ৯২২ জন, মানবিক থেকে ৩৯৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ১২২ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে নটর ডেম কলেজের মাহমুদুল হাসান ওয়াসিফ প্রথম হয়েছেন। তার প্রাপ্ত নম্বর ১১০। মানবিক থেকে হলিক্রস কলেজের তাবাসসুম তিথি প্রথম হয়েছেন। তার প্রাপ্ত নম্বর ১০৮ দশমিক ৫। অন্যদিকে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে নরসিংদী সরকারি কলেজের সাজিত মিয়া প্রথম হয়েছেন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৩ দশমিক ৮৮।

গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো

ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আগামীকাল (২৫ মার্চ) বেলা ৩টা থেকে ১৬ এপ্রিল বেলা ৩টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয়ের পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারীদের ১৩ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে এবং যথাযথভাবে পূরণ করে ডিন অফিসে জমা দিতে হবে। ফল নিরীক্ষণের জন্য ফি দেওয়া সাপেক্ষে আগামী ৬ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসে আবেদন করা যাবে।

উল্লেখ্য, ‘ক’ ইউনিটে বিজ্ঞান শাখার জন্য ১ হাজার ৮২০টি, মানবিকের জন্য ৫১টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য ২৫টি আসন রয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের আটটি কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার বিস্তারিত ফল admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইটে জানা যাবে। এ ছাড়া, টেলিটক, রবি, এয়ারটেল ও বাংলালিংক মোবাইল নম্বর থেকে DU SCI ˂roll no˃ টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে send করে ফিরতি SMS -এ ফল জানা যাবে।

কৃষি সাংবাদিকতা বিভাগে পুরস্কার পেলেন খবরের কাগজের রায়হান আবিদ

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
কৃষি সাংবাদিকতা বিভাগে পুরস্কার পেলেন খবরের কাগজের রায়হান আবিদ
পুরস্কার গ্রহণ করছেন আবিদ

গবেষণা যখন কেবল গবেষণাগারে সীমাবদ্ধ থাকে, তখন তার আলো খুব কম মানুষের কাছে পৌঁছায়। কিন্তু সেই আলো যদি ছড়িয়ে পড়ে সংবাদপত্রের পাতায়, তখন তা হয়ে ওঠে জনতার সম্পদ। গবেষণার তথ্য যখন সহজ ভাষায় মানুষের কাছে পৌঁছায়, তখন কৃষকের চাষাবাদে আসে নতুন দিগন্ত, নীতি-নির্ধারকদের চোখ খুলে যায়, বিজ্ঞানীরা পান অনুপ্রেরণা। আর এই অসাধারণ দায়িত্বই পালন করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান আবিদ।সেই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেন্টারের (বাউরেস) কৃষি সাংবাদিকতা পুরস্কার পেলেন তিনি।

তার কলমে উঠে এসেছে গবেষণা ও বাস্তবতার মেলবন্ধন, যেখানে বিজ্ঞান শুধু গবেষণাগারের দেয়ালে বন্দি নয়- তা ছুঁয়ে গেছে মাঠে-ঘাটে, কৃষকের জীবনে। শিক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফজলুল হক ভূঁইয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাউরেসের গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

রায়হান আবিদ জানান, ‘বিজ্ঞান সব সময় সহজ নয়, জটিল সূত্র, কঠিন শব্দ আর গবেষণার সংখ্যাতত্ত্ব, যা সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্যই থেকে যায়। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি বিজ্ঞানের ভাষাকে সহজবোধ্য করে মাটির মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। তার লেখাতে শুধু গবেষণার ফলাফলই ছিল না, ছিল মাঠপর্যায়ের বাস্তবচিত্র, 
গবেষকদের মতামত, কৃষকের অভিজ্ঞতা এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নির্দেশনা।’

আবিদের কলমে ফুটে উঠেছে, উচ্চ ফলনশীল রঙবেরঙের গাজরের দেশের আবহাওয়া উপযোগী করে উৎপাদন, দেশেই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে গবাদিপশুর প্রায় নির্ভুল রোগ নির্ণয়, ইঁদুরের ওপর ফোর-জি তরঙ্গের প্রভাব পর্যবেক্ষণ, উচ্চ অ্যান্থোসায়ানিন যুক্ত বিট রুটের উৎপাদন বৃদ্ধি (ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্যকারী), দেশি শিং মাছের জিনোম সিকুয়েন্স আবিষ্কারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, আমলকী ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির হিট স্ট্রেস কমানো, অপ্রচলিত উদ্ভিদ থেকে উন্নতমানের খাদ্যসামগ্রী তৈরি, পোলট্রির ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগের বিরুদ্ধে আদা-রসুনের নির্যাসের কার্যকারিতা, গবাদিপশুর ব্রুসেলোসিসের টিকা তৈরি, দেশে ঘোড়ার দেহে প্রাণঘাতী গ্ল্যান্ডার্স রোগের উপস্থিতি নির্ণয়, বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনসহ বিভিন্ন কৃষি গবেষণার সংবাদ। 
লেখালিখির অনুপ্রেরণার পেছনের গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার অনুপ্রেরণা ফসলের মাটিতে, কৃষকের হাসিতে, বিজ্ঞানীদের অদম্য প্রচেষ্টায়। আমি চাই, কৃষি গবেষণা শুধু পত্রিকার পাতায় না থেকে বাস্তব জীবনেও পরিবর্তন আনুক, টেকসই উন্নয়নের দুয়ার উন্মোচন করুক।’

তিনি মনে করেন, সত্যিকারের সাংবাদিকতা কেবল তথ্য পৌঁছে দেওয়া নয়, এটি সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। গবেষণাগারে আবদ্ধ জ্ঞান যদি মাঠে-ময়দানে প্রয়োগ না হয়, তবে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেই শূন্যতা পূরণ করতে ও বিজ্ঞান আর বাস্তবতার মাঝে সেতুবন্ধন গড়তে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

ঢাবি অধ্যাপক জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তারের দাবি সাদা দলের

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ এএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ এএম
ঢাবি অধ্যাপক জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তারের দাবি সাদা দলের
ছবি : খবরের কাগজ

ছাত্র-জনতার অভ্যত্থানে গণহত্যায় উৎসাহিত করার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজ‌বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। 

রবিবার (২৪ মার্চ) সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষ‌রিত এক বিবৃ‌তি‌তে এ দাবি জানানো হয়েছে। 

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন ও গণহত্যায় উৎসাহিত করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. জিনাত হুদা শিক্ষক সমিতির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের পক্ষ থেকে আমরা ফ্যাসিস্টের দোসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ড. জিনাত হুদার এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সাদা দলের নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের দ্বারা প্রত্যাখাত এবং তদুপরি ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ড. জিনাত হুদা আর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নন। এরপরও সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল এবং প্রশাসনকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন বলে আমরা মনে করি। এমন অবস্থায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রজনতাকে নিয়ে বিষোদগার, নেতিবাচক মন্তব্য, গণঅভ্যুত্থানের বিরোধিতা এবং শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি হয়ে গণভবনে উপস্থিত হয়ে খুনি শেখ হাসিনার গণহত্যাকে সমর্থন দেওয়ায় ফ্যাসিবাদের দোসর ড. জিনাত হুদাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে, তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

আরিফ জাওয়াদ/জোবাইদা/