ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

কুবিতে প্রশ্নফাঁস, প্রমাণ বিনষ্টের অভিযোগসহ ৫ দাবি শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
কুবিতে প্রশ্নফাঁস, প্রমাণ বিনষ্টের অভিযোগসহ ৫ দাবি শিক্ষার্থীদের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রশ্নফাঁসের ঘটনার প্রমাণ বিনষ্ট করার অভিযোগসহ পাঁচটি দাবি জানিয়েছে উক্ত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যম হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপিটি জমা দেন তারা।

স্মারকলিপিতে পরীক্ষার পূর্বে অতিদ্রুত তদন্ত করে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রদানের দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি বিনষ্ট করার চেষ্টা, অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীর খাতা জব্দ করা এবং আগামী পরীক্ষার পূর্বে অভিযুক্তের খাতার সঙ্গে প্রমাণাদি মিলিয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রদানের দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি, ৩০৬ কোর্সের ফাইনালের ফলাফলে অ্যাসাইনমেন্ট, মিড নেওয়া ব্যতীত নাম্বারিং করার অভিযোগও করেন। 

এ বিষয়ে উক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা ড্রাইভে লিংক নষ্ট হওয়াকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছি না। তাই তদন্তের বিষয় জানতে আমরা বিভাগীয় প্রধানের কাছে গেলে উনি আমাদেরকে একটি লিখিত দিতে বলেন। সেক্ষেত্রে আমরা লিখিত স্মারকলিপিটি রেজিস্ট্রার স্যারের কাছে জমা দিয়েছি।

এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান জানান, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কিছু দাবি নিয়ে এসেছিল। তারা এ বিষয়ে আমাকে অবগত করেছে এবং আমি তাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি। ইতোমধ্যে এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে এবং তাদের সিদ্ধান্ত ও উপস্থাপিত প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের অবশ্যই যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাতে একটি বেনামি মেইল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের চলমান তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সিমেস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় প্রতিটি কোর্সের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে দাবি করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৩ মার্চ উক্ত ব্যাচের সিমেস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই শিক্ষককে তদন্ত চলাকালীন বাধ্যতামূলক ছুটি এবং ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

আতিকুর রহমান তনয়/মাহফুজ 

 

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবি ইবি ছাত্রীদের

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১২ পিএম
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবি ইবি ছাত্রীদের
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রীরা। ছবি: খবরের কাগজ

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রীরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

এ সময় শতাধিক ছাত্রী এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। 

মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যৌন পেশাকে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। যা নারী সমাজের জন্য চরম অবমাননাকর ও সবার উপর চাপিয়ে দেওয়ার মতো সুপারিশ। যা কখনই কাম্য নয়। ইসলামে নারীদের অধিকার কোনো অংশেই কম দেওয়া হয়নি। বরং ইসলাম নারীদেরকে অনেক সম্মানিত করেছে। এই শাহজালালের ভূমি থেকে আমরা কখনই এসব অযৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন হতে দেব না।’

মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপক ড. খোন্দকার আরিফা আক্তার বলেন, ‘কমিশনে যারা বসে আছেন তারা বেশিরভাগই পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত এনজিও কর্মী। বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে, এমন নারীদের নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করে তারপর সংস্কারের প্রস্তাব আনা দরকার। কতিপয় সুপারিশ কোরআন এবং হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পাশাপাশি সব ধর্মের মূল্যবোধকে অপমান করেছে। বাংলাদেশের জনগণ এক বাক্যে তা প্রত্যাখ্যান করছে।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা বর্তমান কমিশন ভেঙ্গে সংস্কার করে নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানান। 

নিয়ামতুল্লাহ/পপি/

শিক্ষক লাঞ্চিতের বিচার না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবেন না শিক্ষকরা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ পিএম
শিক্ষক লাঞ্চিতের বিচার না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবেন না শিক্ষকরা
কুয়েটে প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতি। ছবি: খবরের কাগজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে হামলার সময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন। সেই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না।’

বুধবার (২৩ এপ্রিল) কুয়েটে প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শাহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় তারা জানান, শিক্ষার উপদেষ্টা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও শিক্ষক সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি, এতে তারা ব্যথিত হয়েছেন। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ ফারুক হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজে সহায়তা করে।

প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ভূত ঘটনায় বিবৃতি দেওয়া হলেও তাতে শিক্ষকদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা নানারকম বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করে এখানে কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন হচ্ছে এটা নিয়ে আমরা শংকিত।’

অন্যদিকে ভিসির এক দফা পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এখনও অনশনে অনড় রয়েছেন। ৪৬ ঘণ্টা ধরে না খেয়ে থাকা ৩২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাদের মধ্যে চারজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রতিনিধি দল ক্যাম্পাসে অবস্থান করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। 

এদিকে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারিতে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়, যার ফলে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছেন।

মাকসুদ/তাওফিক/ 

পথশিশুদের নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন শরীফ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
পথশিশুদের নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন শরীফ
ছবি: মো. আশিকুর রহমান

ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় অসংখ্য মানুষের ভিড়ের মাঝেও এক তরুণ নীরবে এগিয়ে চলেছেন সমাজের অবহেলিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে। তিনি শরীফ ওবায়েদুল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী অবহেলিত শিশুদের গিয়ে নিতে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নবোদ্যম ফাউন্ডেশন ও সেভ দ্য টুমরো স্কুল। তার লক্ষ্য—পথশিশুদের জীবনে স্থায়ী পরিবর্তন এবং একটি মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যতের সম্ভাবনা তৈরি করা।

উদ্যোগের সূচনা
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পথশিশুদের কষ্ট কাছ থেকে দেখেছেন শরীফ। সেই অভিজ্ঞতা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। ‘ওদের বয়স বেশি নয়, তবে সংগ্রাম অনেক। ওদের জন্য কিছু করতে হবে’ এই চিন্তাই ছিল তার এই মহৎ উদ্যোগের প্রেরণা।

ফাউন্ডেশনের কাজের পরিধি
নবোদ্যম ফাউন্ডেশন কাজ করছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক সহায়তার মাধ্যমে পথশিশুদের উন্নয়নে। তারা শুধু লেখাপড়া শেখায় না, দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহায়তা করে। শরীফ বলেন, ‘শিক্ষা শুধু বইয়ের ভেতরে নয়, এটা জীবনের হাতিয়ার।’

কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে
সেভ দ্য টুমরো স্কুল পথশিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এখানে তারা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি জীবনের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে। স্কুলটির কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকা হাইকোর্ট এলাকা, ভৈরব, রাজশাহী, সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও মিরপুরে। শরীফের ভাষায়, ‘আমরা শিশুদের বলি—তোমরা বড় স্বপ্ন দেখতে পারো।’

৩৪ লাখ শিশুর জন্য লািলত স্বপ্ন
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩৪ লাখ পথশিশু রয়েছে। শরীফ স্বপ্ন দেখেন এই শিশুদের প্রত্যেকের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার। তার মতে, ‘প্রতিটি শিশুই সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি। আমরা সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাই।’

সামাজিক প্রভাব ও চ্যালেঞ্জ
শুধু শিক্ষা নয়, স্কুলে দেওয়া হয় খাবার, চিকিৎসা ও মানসিক সাপোর্ট। অনেক শিশু এখন নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কাজটা সহজ নয়, তহবিলের অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ এখানে। তবু শরীফের অদম্য মনোভাব এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা এই লড়াইকে সহজ করে তুলেছে।

ভবিষ্যতের পথচিত্র
শরীফের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। 
শরীফের গল্প আমাদের শেখায়—সহানুভূতি আর সংকল্প থাকলে পরিবর্তন সম্ভব। একা নয়, সবাই মিলে গড়তে হবে একটি মানবিক সমাজ।

লেখক: শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

/রিয়াজ

কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৮ পিএম
কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার কুয়েটে অনশন স্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: খবরের কাগজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাসুদের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অনড় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সিআর আবরার কুয়েটে অনশনস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। 

কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টার আগমনে নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। যার কারণে  ক্যাম্পাসের ফটকগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

এদিকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত আন্দোলনরত ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচি ইতোমধ্যে ৪৪ ঘণ্টা পার হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ও দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় অনশনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সবাই শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অনেকের শরীরে রক্তচাপ কমে গেছে। কুয়েটের আবাসিক হল ও বাইরের ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে সামনে জড়ো হচ্ছেন। 

উপদেষ্টা আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উষ্ণ আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছি। তারা সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ভিসিকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা একটা আইন রয়েছে, সেই আইনকে মাথায় রেখেই এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি প্রতিনিধি দল আজ (বুধবার) সকালে কুয়েটে এসেছে। তারা শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছে।

এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন।

মাকসুদ/তাওফিক/ 

ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
জবিতে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি: খবরের কাগজ

‘ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে’- বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ শাখার আয়োজনে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রত্যাশা অনেক, তাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১০ মাস অতিবাহিত হবার পরও ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া একটা প্রোপাগান্ডার টুল হবে সরকারকে নারভাস করে দেওয়ার জন্য এবং আওয়ামী লীগ ব্যবহার করবে এই সরকারকে বিব্রত করার জন্য। বিচারহীনতার সংস্কৃতির পাশাপাশি বিচারের কাঠামো তৈরির আলাপ তুলতে হবে।

ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বিচারহীনতা নিয়ে কথা বললেই রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের বিষয়টিও সামনে আসে। এই পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলমান এবং এটি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা কেবল ২০২৪ সালের ঘটনার বিচার চাই না, আগের বহু বছরের অবিচারও নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। দশকের পর দশকের চলা মামলার বিচারও চাইতে হবে, কৃষক মজুরের জমির মামালার বিচারও চাইতে হবে। আমার কৃষক শ্রমিক দিনমজুর যখন রাষ্ট্রের কাছে তার প্রাপ্য বিচার বাপে তখনই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকার বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে সাধারণ মানুষের আস্থা ধ্বংস করেছে। এমনকি গ্রামের একজন দরিদ্র মানুষকেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার প্রার্থনা করতে হয়েছে, যা আদালতের মাধ্যমেই হওয়ার কথা ছিল। যারা ফ্যাসিবাদের সময়ে ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাদের অনেককেই দেশত্যাগ করতে হয়েছে।’

জাস্টিস ফর জুলাই জবি শাখার সদস্য সচিব মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় কুরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে সভাটি শুরু হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ‘মুক্তিরও মন্দিরও সোপানতলে’ অনুপ্রেরণামূলক গান পরিবেশনের পর বক্তারা আলোচনা করেন। আলোচনা সভায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন হাসান মাহাদী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ জবি শাখার সাবেক আহ্বায়ক সজিবুর রহমান।

মুজাহিদ বিল্লাহ/মাহফুজ