ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

শেকৃবি ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-সেহরির আয়োজন

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
শেকৃবি ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-সেহরির আয়োজন
সেহরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ছবি: খবরের কাগজ

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) শাখা ছাত্রদল বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে গণ-সেহরির আয়োজন করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত, আহতদের রোগমুক্তি এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির উদ্দেশ্যে এই আয়োজন করা হয়। 

উক্ত সেহরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য হল ভিত্তিক পার্সেল ব্যবস্থা ছিল।

শেকৃবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস বলেন, ‘এই সেহরি আয়োজনের মাধ্যমে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণ করছি এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পাশাপাশি, আহতদের দ্রুত সুস্থতা ও আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হবে।’

সাধারণ সম্পাদক বি এম আলমগীর কবির বলেন, ‘ছাত্রদল সমসময় ইতিবাচক রাজনীতির চর্চা করতে চায়। যার ধারাবাহিকতায় সেহেরির এই আয়োজন। আমরা আশা করি, এই সেহরি আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের শিক্ষার্থী ও অংশীজনের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ঐক্য আরও সুদৃঢ় হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গণ ইফতারি আমরা আগে দেখেছি, তবে গণ সেহরি নতুন উদ্যোগ। ছাত্রদলের ব্যতিক্রম ধর্মী আয়োজন প্রশংসনীয়। আমরা চাই ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রসংগঠন গুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতে থাকুক। এতে ছাত্ররাজনীতি তার পুরাতন ঐতিহ্য ফিরে পাবে।’

মো.আরাফাত রহমান অভি/মাহফুজ

পথশিশুদের নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন শরীফ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
পথশিশুদের নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন শরীফ
ছবি: মো. আশিকুর রহমান

ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় অসংখ্য মানুষের ভিড়ের মাঝেও এক তরুণ নীরবে এগিয়ে চলেছেন সমাজের অবহেলিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে। তিনি শরীফ ওবায়েদুল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী অবহেলিত শিশুদের গিয়ে নিতে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নবোদ্যম ফাউন্ডেশন ও সেভ দ্য টুমরো স্কুল। তার লক্ষ্য—পথশিশুদের জীবনে স্থায়ী পরিবর্তন এবং একটি মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যতের সম্ভাবনা তৈরি করা।

উদ্যোগের সূচনা
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পথশিশুদের কষ্ট কাছ থেকে দেখেছেন শরীফ। সেই অভিজ্ঞতা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। ‘ওদের বয়স বেশি নয়, তবে সংগ্রাম অনেক। ওদের জন্য কিছু করতে হবে’ এই চিন্তাই ছিল তার এই মহৎ উদ্যোগের প্রেরণা।

ফাউন্ডেশনের কাজের পরিধি
নবোদ্যম ফাউন্ডেশন কাজ করছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক সহায়তার মাধ্যমে পথশিশুদের উন্নয়নে। তারা শুধু লেখাপড়া শেখায় না, দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহায়তা করে। শরীফ বলেন, ‘শিক্ষা শুধু বইয়ের ভেতরে নয়, এটা জীবনের হাতিয়ার।’

কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে
সেভ দ্য টুমরো স্কুল পথশিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এখানে তারা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি জীবনের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে। স্কুলটির কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকা হাইকোর্ট এলাকা, ভৈরব, রাজশাহী, সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও মিরপুরে। শরীফের ভাষায়, ‘আমরা শিশুদের বলি—তোমরা বড় স্বপ্ন দেখতে পারো।’

৩৪ লাখ শিশুর জন্য লািলত স্বপ্ন
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩৪ লাখ পথশিশু রয়েছে। শরীফ স্বপ্ন দেখেন এই শিশুদের প্রত্যেকের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার। তার মতে, ‘প্রতিটি শিশুই সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি। আমরা সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাই।’

সামাজিক প্রভাব ও চ্যালেঞ্জ
শুধু শিক্ষা নয়, স্কুলে দেওয়া হয় খাবার, চিকিৎসা ও মানসিক সাপোর্ট। অনেক শিশু এখন নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কাজটা সহজ নয়, তহবিলের অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ এখানে। তবু শরীফের অদম্য মনোভাব এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা এই লড়াইকে সহজ করে তুলেছে।

ভবিষ্যতের পথচিত্র
শরীফের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। 
শরীফের গল্প আমাদের শেখায়—সহানুভূতি আর সংকল্প থাকলে পরিবর্তন সম্ভব। একা নয়, সবাই মিলে গড়তে হবে একটি মানবিক সমাজ।

লেখক: শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

/রিয়াজ

কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম
কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার কুয়েটে অনশন স্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাসুদের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অনড় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার কুয়েটে অনশন স্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। 

কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টার আগমনে নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। যার কারণে  ক্যাম্পাসের ফটকগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

এদিকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত আন্দোলনরত ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচি ইতিমধ্যে ৪৪ ঘণ্টা পার হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ও দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় অনশনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সবাই শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অনেকের শরীরে রক্তচাপ কমে গেছে। কুয়েটের আবাসিক হল ও বাইরের ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে সামনে জড়ো হচ্ছেন। 

উপদেষ্টা আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উষ্ম আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছি। তারা সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ভিসিকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা একটা আইন রয়েছে সেই আইনকে মাথায় রেখেই এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি প্রতিনিধি দল আজ (বুধবার) সকালে কুয়েটে এসেছেন। তারা শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন।

মাকসুদ/তাওফিক/ 

ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
জবিতে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি: খবরের কাগজ

‘ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে’- বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ শাখার আয়োজনে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রত্যাশা অনেক, তাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১০ মাস অতিবাহিত হবার পরও ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া একটা প্রোপাগান্ডার টুল হবে সরকারকে নারভাস করে দেওয়ার জন্য এবং আওয়ামী লীগ ব্যবহার করবে এই সরকারকে বিব্রত করার জন্য। বিচারহীনতার সংস্কৃতির পাশাপাশি বিচারের কাঠামো তৈরির আলাপ তুলতে হবে।

ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বিচারহীনতা নিয়ে কথা বললেই রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের বিষয়টিও সামনে আসে। এই পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলমান এবং এটি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা কেবল ২০২৪ সালের ঘটনার বিচার চাই না, আগের বহু বছরের অবিচারও নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। দশকের পর দশকের চলা মামলার বিচারও চাইতে হবে, কৃষক মজুরের জমির মামালার বিচারও চাইতে হবে। আমার কৃষক শ্রমিক দিনমজুর যখন রাষ্ট্রের কাছে তার প্রাপ্য বিচার বাপে তখনই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকার বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে সাধারণ মানুষের আস্থা ধ্বংস করেছে। এমনকি গ্রামের একজন দরিদ্র মানুষকেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার প্রার্থনা করতে হয়েছে, যা আদালতের মাধ্যমেই হওয়ার কথা ছিল। যারা ফ্যাসিবাদের সময়ে ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাদের অনেককেই দেশত্যাগ করতে হয়েছে।’

জাস্টিস ফর জুলাই জবি শাখার সদস্য সচিব মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় কুরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে সভাটি শুরু হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ‘মুক্তিরও মন্দিরও সোপানতলে’ অনুপ্রেরণামূলক গান পরিবেশনের পর বক্তারা আলোচনা করেন। আলোচনা সভায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন হাসান মাহাদী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ জবি শাখার সাবেক আহ্বায়ক সজিবুর রহমান।

মুজাহিদ বিল্লাহ/মাহফুজ

এক বছরে ঢাবিতে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
এক বছরে ঢাবিতে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ
ঢাবিতে পড়তে আসা চীনা শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) এক বছরে চীনা শিক্ষার্থী বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর চীন থেকে ঢাবিতে পড়তে এসেছিলেন ৯ জন। এ বছর পড়তে এসেছেন ১৮ জন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬ জন। এসব শিক্ষার্থী আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধীনে বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। 

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনের শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা দূর করার জন্য স্যার পিজে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলে ১০টি কক্ষের সমন্বয়ে একটি ব্লক তৈরি করা হয়েছে। চীন থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান করছেন। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসনসংকট নিরসনে চীন সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী নামে একটি আবাসিক হল নির্মাণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

শ্রেণিকক্ষে চীনা শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

এ ছাড়া আগামী আগস্ট মাসে চীনের শিক্ষার্থীরা দুই সেমিস্টারের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রফেশনাল মাস্টার্স কোর্সে পড়ারও আগ্রহ দেখিয়েছেন তারা। এ লক্ষ্যে চীনের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করতে চায়। সে জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। খুব শিগগির বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষা-গবেষণা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়ের ক্ষেত্রটি আরও সম্প্রসারিত হবে।

এদিকে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিনিময়ের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের একটি শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শুধু ভাষাগত দক্ষতাই অর্জন করছেন না, বরং চীনের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গেও পরিচিত হচ্ছেন।

আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

আমরণ অনশনে চবি চারুকলার ৯ শিক্ষার্থী

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
আমরণ অনশনে চবি চারুকলার ৯ শিক্ষার্থী
অনশনে চবির ৯ শিক্ষার্থী। ছবি: খবরের কাগজ

চারুকলা ইনস্টিটিউটকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন চারুকলার ৯ শিক্ষার্থী। 

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নূর ইকবাল সানি, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান সোহেল। এছাড়াও রয়েছেন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান ইয়াসিন, মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা, তরিকুল ইসলাম মাহী এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল ইসলাম মিনহাজ। 

জানা গেছে, চারুকলা ইনস্টিটিউটকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ৩টা থেকে সেখানে আমরণ অনশন শুরু করছেন তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন করছেন তারা। দীর্ঘ সময় ধরে অনশন করায় নারী শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। 

অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরও চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়নি। বার বার শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন। তাই তারা অনশন কর্মসূচিতে বসেছেন।

চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাফিজা তালুকদার বলেন, ২১ এপ্রিল বেলা ৩টা থেকে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আমাদের বন্ধুরা। এখনও কিছু খায়নি তারা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে প্রক্টর স্যার এবং প্রো-ভিসি কামাল উদ্দিন স্যার এসেছিলেন। এরপরও অনশন ভাঙেন নি শিক্ষার্থীরা।

এর আগে সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে চবি প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত না করার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১ এপ্রিলের মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার কথা দিয়েছিল। কিন্তু তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। প্রশাসন কথা রাখেনি। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। তাই বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনে নামতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, চারুকলা ইন্সস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত একটি ইনস্টিটিউট। এটি চট্টগ্রাম নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে অবস্থিত। ৪টি বিভাগ এবং প্রতিবর্ষে ৭০ টি আসনের সমন্বয়ে গঠিত এ ইন্সস্টিটিউট। এটি দেশের প্রথম চারুকলা বিভাগ ও একমাত্র ইনস্টিটিউট যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থিত। ২০১০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

২০২৩ সালের ২ নভেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে চারুকলা ইনস্টিটিউট সংস্কারের উদ্দেশ্যে ২২ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ওই বছরের ৫ নভেম্বর থেকে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি ওঠে। পরবর্তী সময়ে ২০২৪ সালের ২১ জানুয়ারি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এক বৈঠকে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে ক্যাম্পাসে ফেরার একদফা দাবিটি অনেক লম্বা এবং ব্যয়বহুল একটি প্রক্রিয়া সেজন্য সময় দরকার। বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট সংস্কার করে পরবর্তী সময়ে একদফা দাবির বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে বলে জানান তিনি।

এর পরবর্তীতেও প্রশাসনের কাছ থেকে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের আশ্বাস পেলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের। এরই জেরে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে নগর থেকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ফের একদফা দাবিতে টানা তিন দিন লাগাতার আন্দোলন করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম অচল করে দেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর নগরীর চারুকলা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন করে গণ-অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জেরে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আশ্বাস পেয়ে জন্য আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।

তারেক মাহমুদ/মাহফুজ