
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন। এদিকে একই দাবিতে শুক্রবার (২১ মার্চ) বিক্ষোভ করার ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ ও গণ-অধিকার পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল বের করে একদল শিক্ষার্থী। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে স্মৃতি চিরন্তন হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থী।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জোবায়ের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ওপর আমাদের ভরসা রয়েছে। তার আশপাশে নানা লোক বিভিন্ন বাধা সৃষ্টি করছে, বিভিন্ন এজেন্সি বাধা তৈরি করছে। অবিলম্বে গণহত্যার দায় মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র-জনতা মাঠে থাকবে। শহিদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি আমরা মেনে নেব না। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে গণভোটের আয়োজন করা হোক। দেশের মানুষ চায়- খুনি আওয়ামী লীগ যেন ফিরতে না পারে।’
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আগ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হবে না।’
আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘জনগণ ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। হয় আওয়ামী লীগ থাকবে, নয় ছাত্রসমাজ থাকবে। আমাদের শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেব না।’
এ সময় তিনি আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেন।
এ সময় তারা ‘আমার সোনার বাংলায় আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘সাঈদ-ওয়াসিম-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ধরি ধরি ধরি না, ধরলে কিন্তু ছাড়ি না’, ‘আওয়ামী লীগের গতিতে আগুন জ্বালো এক সাথে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিন মধ্যরাতে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে অভিযোগ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট ও সিইও কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে উল্লেখ করেন, তবে দলের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি আজ বিক্ষোভ: আজ শুক্রবার বাদ জুমা ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিল করবে ইনকিলাব মঞ্চ। এ ছাড়া বিকাল ৩টায় গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিলের কথা রয়েছে ওই সংগঠনটির।
আরিফ জাওয়াদ/জোবাইদা/