ঢাকা ১ শ্রাবণ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
English

চবিতে ছাত্রী মেসে চুরি, বাড়িওয়ালীর গাফিলতির অভিযোগ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
চবিতে ছাত্রী মেসে চুরি, বাড়িওয়ালীর গাফিলতির অভিযোগ
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীতে ছাত্রীদের একটি মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪ জন ছাত্রীর প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল চুরির অভিযোগ ওঠেছে। মূলত বাড়িওয়ালীর উদাসীনতা ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এমন চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ছাত্রীদের।

সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। 

ভুক্তভোগী ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, গত ১ জুন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে খায়ের মেনশনে চুরির ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জন ছাত্রীর নগদ টাকা, সাটিফিকেট, পোশাক, প্রসাধনীসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিমাণের বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়। এর আগেও গত বছর জুলাইয়ের ২৪ তারিখ চুরির ঘটনা ঘটে। তবে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বাড়িওয়ালী।  

ছাত্রীরা আরও বলেন, এছাড়াও প্রায়ই বাসার বাইরে থেকে তাদের অন্তর্বাসসহ, ফোনের চার্জার, জুতা ইত্যাদি চুরি করা হলেও বাড়িওয়ালা নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেননি। এটা ছাত্রীদের মেস হলেও নেই সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তার কথা বলা হলে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন ওই বাড়িওয়ালী। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একতলা বাড়িতে মোট ৪টা রুম এবং চিলেকোঠায় একটি রুম রয়েছে। তবে, দুইটি রুম ও চিলেকোঠার একটি রুমের মোট ৪ জন ছাত্রীর মালামালা চুরি হলেও বাকি রুমগুলোর কোনো মালামালই চুরি হয়নি। 

ভুক্তভোগী একজন ছাত্রী হিসাববিজ্ঞান বিভাগের রাইসা জহির বলেন, আমি এবং আমার রুমমেট ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলাম। ১ তারিখ রাতে আমাদের রুমে চুরি হয়। খবর পেয়ে পরদিন সকালে এসে দেখি আমার সার্টিফিকেট, মোবাইল ফোন, কাপড়, প্রসাধনী জিনিসপত্র, নগদ টাকাসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাসায় ছাত্রীরা থাকলেও নিরাপত্তার জন্য কোনো গার্ড বা সিসি ক্যামেরাও নেই। প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বাড়িওয়ালী। তাকে এ বিষয়ে বলা হলে উনি বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। যেহেতু বাড়িওয়ালার উদাসীনতায় এমন ঘটনা ঘটেছে আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। 

এর আগে বিভিন্ন সময়ে চুরির ঘটনা স্বীকার করে বাড়িওয়ালী মাহমুদা বেগম রিনা বলেন, চুরি কমানোর জন্য জানালার অতিরিক্ত গ্রিল লাগানো হয়েছে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের উদাসীনতারও দায় দেন তিনি। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, চবি কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীতে মেয়েদের মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা পেয়েছি বাড়িওয়ালী ও তার পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত বাড়িটিতে আসা যাওয়া করেন। আপাতত অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে চোর পরিচিত কেউ-যার এ বাসার সবকিছু জানা আছে। আমরা দেখেছি শুধুমাত্র ছাত্রীদের জিনিসপত্র নিয়ে গেছে, যদিও সেখানে বাড়িওয়ালার আলমিরাসহ দামী জিনিসপত্র অক্ষুণ্ণ আছে এবং চোর যাওয়ার সময় বাড়িতে তালাও লাগিয়ে দিয়ে গেছে। আমরা আশা করি বাড়িওয়ালা কর্তৃপক্ষ আমাদের সহযোগিতা করে বিষয়টির সমাধান সহজ করবেন।


মাহফুজ শুভ্র/মাহফুজ

 

কবি নজরুল কলেজে ‘রক্তাক্ত জুলাই’ স্মরণে পোস্টার প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩১ পিএম
কবি নজরুল কলেজে ‘রক্তাক্ত জুলাই’ স্মরণে পোস্টার প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা
ছবি: সংগৃহীত

পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে পোস্টার প্রদর্শনী ও ‘রক্তাক্ত জুলাই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে কলেজে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জুলাইয়ের শহিদদের স্মরণে সচিত্র পোস্টার প্রদর্শন করেন। এসব পোস্টারে উঠে আসে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপট ও শহিদদের আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস।

পরে কলেজ অডিটরিয়ামে ‘রক্তাক্ত জুলাই’ শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক মিলকী আমাতুল মুগনির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মাদ হায়দার মিঞা এবং মুখ্য আলোচক ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাবিবুল আলম মিয়া।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অন্য শিক্ষকরা। এ ছাড়া কলেজ শাখার ছাত্র রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দেন এবং রক্তাক্ত জুলাইয়ের প্রেক্ষাপটে তাদের নিজ নিজ ভূমিকা তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মিলকী আমাতুল মুগনি রক্তাক্ত জুলাইয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ হায়দার মিঞা বলেন, রক্তাক্ত জুলাই কোনো কল্পিত কল্পনা নয় এই যে আমাদের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া বাস্তব এই শৈশব। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে এই রক্তাক্ত অধ্যায় থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, কবি নজরুল সরকারি কলেজে যারা শহিদ ও আহত হয়েছে এবং যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে তাদের প্রতি আমার মোবারকবাদ ও শুভেচ্ছা। রক্তাক্ত জুলাই আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক বেদনাবিদুর অধ্যায়, যা আজও গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াইয়ের প্রেরণা যোগায়। 

আয়োজন শেষে শহিদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় এবং সবার জন্য দোয়া ও আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।

সালমান/

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৩ এএম
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন
ছবি: খবরের কাগজ

পাহাড়ের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) দিবস উদযাপন করা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের। রাবিপ্রবিকে সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ের তোলার অঙ্গীকার করছেন ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান। 

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে রাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দিবসের সুচনা করেন ভিসি।

দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনে এসে শেষ। এ সময় কেক কেটে ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ জামশেদ আলম পাটোয়ারী, ম্যানেজমেন্টের  সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জুনাইদ কবির, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবু তালেব, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্সেস টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের সহকারী অধ্যাপক জিএম সেলিম আহমেদ বক্তব্য রাখেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে রাবিপ্রবিকে সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ের তোলার অঙ্গীকার করেন ভিসি। 

তিনি বলেন, আমরা গত ১০টি বছর পার করে এসেছি। ফিরে দেখছি যে, ১০ বছরে আমরা কতটা উন্নতি করলাম, কী করার কথা ছিল, কোথায় যাওয়ার কথা ছিল, কতটা আমরা পথ পাড়ি দিয়েছি। আমাদের সীমাবদ্ধতা কী ছিল, ত্রুটি কী ছিল। তা দূর করবার জন্য সামনে কী করা প্রয়োজন।

ভিসি বলেন, আমরা দেখেছি এরমধ্যে সবচেয়ে নেতিবাচক ঘটনা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট। সেকারণে এবারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্লোগান ঠিক করেছি 'বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অঙ্গীকার, সেশনজট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আমার অধিকার'।

দিনব্যাপী এ আয়োজন পরে ফুড ফেস্টিভ্যাল, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসের সমাপনী হয়।

২০০১ সালে ১ জুলাই রাবিপ্রবি স্থাপিত হলে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর চরম বিরোধীতায় পিছিয়ে পড়ে কার্যক্রম। পরে ২০১৪ সালে বাড়ি ভাড়া করে একাডেমিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ২২৭ কোটি টাকা ব্যায়ে অবকাঠামো নির্মাণ করে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করে কর্তৃপক্ষ। 

জিয়াউর রহমান/অমিয়/

জবিতে শিক্ষককে মারধর:৩ ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার, দুজনের প্রবেশ নিষেধ

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:০৮ এএম
জবিতে শিক্ষককে মারধর:৩ ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার, দুজনের প্রবেশ নিষেধ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) তিন নেতার ওপর ছাত্রদলের হামলার ঘটনায় শাখা ছাত্রদলের তিন নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া দুই সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসিন হোসেন সাইফ, সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু হেনা মুরসালিন ও বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান ইমান। তারা সবাই শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য।

এছাড়া একই ঘটনায় শাখা ছাত্রদলের দুই সিনিয়র নেতাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহমুদুল হাসান ও একই শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাহিদুল ইসলাম।

একইসঙ্গে ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আজিজুল হাকিমকে সতর্ক করে তার নামে ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে কারণ দর্শানো ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এ সময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদের গালিগালাজ ও হামলা করে তারা। 

একইসঙ্গে শাখা বাগছাস সভাপতি, মুখ্য সংগঠক ও যুগ্ম-আহ্বায়ক যথাক্রমে মো. ফয়সাল মুরাদ, ফেরদৌস হাসান এবং ফারুককে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের উপরও হামলা ও মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

মুজাহিদবিল্লাহ/অমিয়/

ইবি ছাত্রীকে বাসের হেলপারের মারধর, ক্যাম্পাস গেটে ৫ বাস আটক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২ পিএম
ইবি ছাত্রীকে বাসের হেলপারের মারধর, ক্যাম্পাস গেটে ৫ বাস আটক
ছবি: খবরের কাগজ

বাস চালকের সহযোগী দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী। এ ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে পাঁচটি বাস আটক করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস বাসস্ট্যান্ডে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে চলাচলরত জনি বাসের (লোকাল) সহযোগী দ্বারা মারধরের শিকার হন ওই ছাত্রী। এতে তার হাত, কপাল, মাথা ও নাকে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে ৪টি রূপসা ও ১টি জনি পরিবহনের বাস আটক করে।

এর আগে ভুক্তভোগী ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে বাসে এসে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস থেকে জনি বাসে উঠেন। এ সময় ভাড়া নিয়ে হেলপারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হেলপার ভুক্তভোগীর ফোন কেড়ে নিয়ে গালে থাপ্পড় মারে ও মাথায় ২-৩ টা ঘুসি ও ধাক্কা মেরে হাতে আঘাত করে। পরে ভিডিও ধারণ ও জোর করে ভুক্তভোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, 'মেয়েটার থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে তার গালে থাপ্পড় মারছে জনি পরিবহন বাসের সহযোগী। এমনকি তার গায়েও হাত দিছে। অথচ কেউ বাধা দেয়নি।'

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, 'পরীক্ষার জন্য আমি ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে আসছিলাম। চৌঁড়হাস থেকে আমি রূপসা বাসে উঠতে চাইছিলাম। তখন ওনারা আমাকে আরেকটা বাস (জনি) দেখিয়ে বললো এটাতে উঠেন। এটা দ্রুত যাবে। তখন হেলপারকে বললাম আমি যেটা বেসিক ভাড়া ২৫ টাকা ভাড়া দিব। তখন বাসে ওঠার পর টাকা নেওয়ার সময় ৪০ টাকা রাখছে। তখন বললাম ভাড়াই তো ২৫ টাকা। তখন হেলপার আমাকে বলল ‘ কোথাকার অশিক্ষিত মেয়ে তুমি, আমি শেখপাড়ায় থাকি ভাড়া কত এটা আমরা জানি না? নাটক শুরু করছ।’ তখন আমি আমার স্বামীকে ফোন দিতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে গায়ে আঘাত করছে। আমার মুখে ২-৩টা ঘুসি মারছে। আমি যখন প্রতিবাদ করতে ছিলাম একটা লোকও আমার সাপোর্টে কথা বলতে ছিলো না। একটা মহিলা বেড়িয়ে বলল সব দোষ ঐ লোকের। কেউ কোনো কথা শুনছিলো না। আমার বাপ-মা তুলে গালিগালাজ করতেছিল। এমনকি আমার ভিডিও ধারণ করে ওরা আমাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিছে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. খুরশিদা জাহান বলেন, 'ওনার হাতে, কপালে, মাথায় আর নাকে আঘাত পেয়েছে। গুরুতর তেমন কিছু হয়নি, রক্তপাত হয়নি। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি ও পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেছি। এর পর কোনো প্রয়োজন হলে আসতে বলেছি।'

শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনায় জড়িত বাস সহযোগীর শাস্তি নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ, ক্যাম্পাস থেকে জনি বাস বাতিল ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ রুট পারমিট বাতিল করা।

লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জুলফিকার হোসেন শিক্ষার্থীদের বলেন, 'তোমরা যেভাবে চাও সেভাবেই হবে। এসব বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা মারধর ও হেনস্তা করেছে তাদের বিচার ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।'

পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ বলেন, 'আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকটা বাস আটক করেছে। বাসগুলো ক্যাম্পাসে নিরাপদে রাখা হয়েছে। মালিক পক্ষ এসেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আলোচনা পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

এ বিষয়ে জনি পরিবহনের বাস মালিক আনিস মিয়া বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর থেকে বিষয়টি জেনেছি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমি বাস মালিক সমিতিকে জানিয়েছি, তারা প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।'

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, 'মালিক সমিতি ও বাস মালিকের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসেছি।'

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতি।

মেহেদী/

নোবিপ্রবিতে হলের খাবার মনিটরিংয়ে যুক্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
নোবিপ্রবিতে হলের খাবার মনিটরিংয়ে যুক্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলে খাবারের মান উন্নয়নে এবার যুক্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরাও। হল প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গঠিত হতে যাচ্ছে 'ডাইনিং মনিটরিং সেল'।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) হল কর্তৃপক্ষের নোটিশে জানানো হয়, ডাইনিংয়ের খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ৫ জন আবাসিক শিক্ষার্থী এবং ২ জন সহকারী প্রভোস্টের সমন্বয়ে গঠিত হবে একটি ডাইনিং মনিটরিং সেল। প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এই সেল পুনর্গঠন করা হবে।

এ লক্ষ্যে হলের আগ্রহী আবাসিক শিক্ষার্থীদের নাম দিতে আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ উদ্যোগ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই মনে করছেন, এতে করে ডাইনিং ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে, পাশাপাশি খাবারের মানেও তৈরি হবে ইতিবাচক পরিবর্তন।

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. মো. তসলিম মাহমুদ বলেন, 'শিক্ষার্থীদের মতামত ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়েই আমরা ডাইনিং মনিটরিং সেল গঠন করছি। আমাদের লক্ষ্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি গ্রহণযোগ্য, মানসম্মত ও স্বচ্ছ ডাইনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

তিনি আরও বলেন, এই মনিটরিং সেলে ৫ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ২ জন সহকারী প্রভোস্ট থাকবেন। প্রতি ১৫ দিন পরপর আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে সেলটি পুনর্গঠন করা হবে। এতে করে সব শিক্ষার্থী পর্যায়ক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।'

দীর্ঘদিন ধরে হলে খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এই উদ্যোগ সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

কাউসার/মেহেদী/