ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

বেরোবির শিক্ষক মাহমুদুল হকের মুক্তি চাইলেন রাবি শিক্ষকরা

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
বেরোবির শিক্ষক মাহমুদুল হকের মুক্তি চাইলেন রাবি শিক্ষকরা
সহকারী অধ্যাপক মোহা. মাহমুদুল হক

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সহকারী অধ্যাপক মোহা. মাহমুদুল হকের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। 

শনিবার( ২১ জুন) পৃথক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান।

মোহা. মাহমুদুল হক বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য, দৈনিক ডেইলি স্টারের সাবেক মেট্রো এডিটর, ইউএনবির সাব-এডিটর ছিলেন। এ ছাড়া তিনি রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। 

রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মোজাম্মেল হোসেন বকুল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মাহমুদুল হককে  বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করছি। আমরা রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকরা অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি। যে প্রক্রিয়ায় মাহমুদুল হককে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই স্বাভাবিক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘গত বছরের ২ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে মুদি দোকানি ছমেস উদ্দিনের মৃত্যু হয়। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, সেই দিন পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে ছমেস উদ্দিন হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। অথচ গত ৩ জুনের ওই মামলায় মাহমুদুল হককে ৫৪ নম্বর আসামি করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

এদিকে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন জার্নালিজম অ্যালামনাই ফোরাম অব রাজশাহী ইউনিভার্সিটির (জাফরু) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাফরু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়, একই সঙ্গে মাহমুদুল হকের গ্রেপ্তারে মর্মাহত। তাকে হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে। জাফরু এ মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার প্রত্যাশা করছে। 

এর আগে মাহমুদুল হকের মুক্তির দাবিতে গত শুক্রবার বেরোবির মূল ফটকে মানববন্ধন করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তারা রংপুরের এসপি, তাজহাট থানার ওসি, হাজীরহাট থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানান। তা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। 

জানা যায়, ওই মামলার বাদী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুলিশ তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে। কিন্তু তিনি জানেন না, কে কে আসামি। অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী আবু সাইদের হত্যার ঘটনায় প্রথম শিক্ষক হিসেবে মাহমুদুল হক পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। 

নোবিপ্রবির ৪৭৪ শিক্ষক-শিক্ষার্থী পাচ্ছেন গবেষণা প্রণোদনা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
নোবিপ্রবির ৪৭৪ শিক্ষক-শিক্ষার্থী পাচ্ছেন গবেষণা প্রণোদনা
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ৪৭৪ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পাচ্ছেন গবেষণা প্রণোদনা। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা তিনটি ক্যাটাগরিতে গবেষণা প্রণোদনা দিচ্ছি- পিএইচডি ফেলোশিপ, প্রকাশনা প্রণোদনা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী যৌথ গবেষণা (মাস্টার্স)।’

তথ্য অনুযায়ী, ৩৪৯ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যৌথ গবেষণায় (মাস্টার্স) প্রণোদনা পাচ্ছেন। এ ছাড়া, ২০২২ সালের জন্য ২৮ জন শিক্ষক, ২০২৩ সালের জন্য ৩৩ জন এবং ২০২৪ সালের জন্য ৫১ জন শিক্ষক প্রকাশনা প্রণোদনার জন্য মনোনীত হয়েছেন। এ ছাড়া পিএইচডি ফেলোশিপ পাচ্ছেন ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ জুলাই সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মো. রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে গবেষণা প্রণোদনার চেক বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।

৩ দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
৩ দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ রশিদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রকৌশল খাতে বর্তমানে চরম বৈষম্য চলছে। যার মধ্যে রয়েছে বিএসসি প্রকৌশলের এন্ট্রি লেভেলের পদসংখ্যা সংকোচিত করা, নবম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী পদে অভ্যন্তরীণ কোটার মাধ্যমে ডিপ্লোমাধারী উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা নিয়মের বাইরে পদোন্নতি পেলেও সহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় বিএসসি প্রকৌশলীদের পদ সংকোচিত হচ্ছে। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে ডিপ্লোমাধারী উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।’

বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তারা বলেন, ‘উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে শুধুমাত্র ডিপ্লোমাধারীরা আবেদন করতে পারেন। সেখানে বিএসসি ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারছে না। শুধুমাত্র বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরাই প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করতে পারেন, সেখানে এই পদবিরও অপব্যবহার করা হচ্ছে।’

এ সময় তারা সংবিধানের সমতা নিশ্চিতে অবিলম্বে এই বৈষ্যম নিরসনের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত তিন দফা দাবিগুলো হলো- ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না; টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে অর্থাৎ ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীদের পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে; বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না, এই মর্মে আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।

তিন দফা দাবি ঘোষণা করে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে পলাশী মোড় প্রদক্ষিণ করে বুয়েট শহিদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘জুলাইয়ে গেল হাজার প্রাণ, করতে কোটার পুনর্বাসন?’ ‘কোটার নামে অবিচার বন্ধ করো, বন্ধ করো’ ‘প্রকৌশলীদের সব পদ, শুধুই প্রকৌশলীদের অধিকার’সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া বৈষম্য নিরসনে মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকেন।

জাওয়াদ/সালমান/

ঢাবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে ক্লাস বন্ধ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম
ঢাবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে ক্লাস বন্ধ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান খান

স্ট্রোকের একদিনের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান খান। তার অকাল মৃত্যুতে শোকার্ত পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। প্রয়াত এ শিক্ষার্থীর স্মরণে শোক পালন করতে বন্ধ ছিল বিভাগের সব ক্লাস।

রবিবার (৬ জুলাই) রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ব্রেন স্ট্রোক করে শরীরের বাম অংশ অবশ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আহসান। পরে সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আহসানের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলায়। তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হলের জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবনের ৯০০৩নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

পরে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাদ জোহর নিজ জেলা নরসিংদীর পলাশে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এদিকে আহসান খানের রুহের মাগফেরাত কামনায় বাদ এশা শেখ মুজিবুর রহমান হল মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া বুধবার (৯ জুলাই) বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

আহসানের অকাল মৃত্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শোক জানিয়েছে ছাত্রদল, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। এ ছাড়া দুদিনব্যাপী বৃক্ষ ও ফল উৎসব কর্মসূচি স্থগিত করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

আরিফ/রিফাত/মেহেদী/

ডুজার মৌসুমী ফল উৎসব অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৬ পিএম
ডুজার মৌসুমী ফল উৎসব অনুষ্ঠিত
ডুজার মৌসুমী ফল উৎসব অনুষ্ঠিত ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) আয়োজনে মৌসুমী ফল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমিতির সাবেক, বর্তমান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সম্মিলিত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর ছিল এবারের উৎসব।

সোমবার (৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। 

প্রধান অতিথি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সবসময়ই এমন আয়োজন করে থাকে। যার ফলে আমরা সবাই একত্রিত হতে পারি। দেশীয় ফল নিয়ে এমন আনন্দঘন উৎসব আয়োজন করায় সাংবাদিক সমিতির সবাইকে ধন্যবাদ। সাংবাদিক সমিতি তার অতীতের গৌরবময় ইতিহাস ধরে আগামীতেও এমন কাজ করবে, এটাই কামনা করছি।’

ডুজা সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসানের সঞ্চালনায় উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদসহ ডুজার সাবেক ও বর্তমান সদস্যরা বক্তব্য রাখেন। 

আরিফ/রিফাত/

খুবি শিক্ষার্থীর চাঁদা দাবির অডিও রেকর্ড ফাঁস

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ১২:২০ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৩১ পিএম
খুবি শিক্ষার্থীর চাঁদা দাবির অডিও রেকর্ড ফাঁস
সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ ও জহুরুল ইসলাম তানভীর। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় একটি মেলাকে কেন্দ্র করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থী ও মহানগরের ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ধারী জহুরুল ইসলাম তানভীর এবং সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে। 

রবিবার (৬ জুলাই) এই অভিযোগ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

মেলার আয়োজক মন্টুর কাছে চাঁদা দাবি করার ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড রাতেই ফাঁস হয়।

জানা যায়, জহুরুল ইসলাম খুবির পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের অনার্সের শিক্ষার্থী এবং সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তারা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগরী’ সংগঠনের যথাক্রমে সদস্যসচিব ও মুখ্য সংগঠক। গত বছরের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগরের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নানা কর্মসূচিতেও তারা সক্রিয় অংশ নিয়েছেন।

ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডে সাজ্জাদুলকে মেলার আয়োজকের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করতে শোনা যায়।

কল রেকর্ডে আয়োজক মন্টুকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার দ্বারা সবাইকে কি ঠাণ্ডা করা সম্ভব? আমার কাছে দুই টাকা রেডি আছে, আপনি বললে এখনই দিয়ে যাব।’

আজাদ বলেন, ‘আমি পারব সবাইকে ঠাণ্ডা করতে A to Z, সবাই ঠাণ্ডা থাকবে, কেউ ওইদিকে ঘুরেও তাকাবে না- যদি ১০ টাকা দেন (১০ লাখ)। আর যদি না দেন, তাহলে আজ এ গ্রুপ যাবে, কাল অন্য গ্রুপ যাবে আপনি কয়জনকে ঠাণ্ডা করবেন?’

এ সময় মন্টু বলেন, ‘আমার দ্বারা তো সবাইকে ঠাণ্ডা করা সম্ভব না।’

আজাদ বলেন, ‘আপনার পুলিশ কমিশনারও ঠাণ্ডা করতে পারবে না, বলে দিয়েন তারে।’

পরে মন্টু বলেন, ‘আপনাদের ছোট ভাইয়েরা এসে তানভীর ভাইয়ের কথা বলছে।’

আজাদ বলেন, ‘মেলা ভাঙতে তো আমরা কাউকে পাঠাইনি তাহলে ওদেরই দিয়ে দেন।’

মন্টু বলেন, ‘দুই টাকা দিবার চাচ্ছি, আজকেই আসতেছি ভাই। আর প্রতি গ্রুপে তো দিতে পারব না ভাই। আপনারা বড় ভাই হয়ে যদি কন্ট্রোল করতে না পারেন!’ 

এ প্রসঙ্গে খুবির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইশরিয়াক কবির খবরের কাগজকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে অরাজনৈতিক ঘোষণার পরও কিছু তথাকথিত ‘সমন্বয়ক’ নিজেদের পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। ৫ আগস্টের পর দেখা যায়, তাদের জীবনযাত্রায় হঠাৎ পরিবর্তন এসেছে, তারা দামি বাইকে চলাফেরা করছেন। ছাত্রলীগের প্রচারক আজাদ এখন নিজেকে ‘জুলাই আন্দোলনের কান্ডারি’ দাবি করলেও তার ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপরাধীদের বাঁচাতে তার সক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ। এদের প্রধান হাতিয়ার হয়ে ওঠেছে ‘জুলাই চেতনা’। ভাইরাল হওয়া অডিওতে তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। তারা শুরু থেকেই ‘জুলাই চেতনা’ বিক্রি করে পুরো জাতির সঙ্গে গাদ্দারি করে আসছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্টু বলেন, ‘ফাঁস হওয়া রেকর্ডিং আমার এবং সাজ্জাদের কল রেকর্ডিং। রেকর্ডিংয়ে যা শুনেছেন, সব সত্য। আমি এটা নিশ্চিত করছি।’ 

এর পর তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, ‘আমি ভিডিওটি শুনেছি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। ঢাকায় বসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইনামুল হাসান বলেন, ‘নবপর্যায়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি আর্থিক স্বচ্ছতা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে কোনো অপকর্ম আর সহ্য করা হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব এবং প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাব। গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্মের পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়ার জন্য সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদকে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া না গেলেও জহুরুল তানভীর বলেন, ‘এটা অনেক আগের বিষয়। এ বিষয়ে আমাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না সেটা তদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে। কেন্দ্রীয়ভাবে এর তদন্ত চলছে তার পর জানা যাবে। বর্তমানে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের বিষয়ে কথা উঠছে যা অন্যদিকে নেওয়ার জন্যও হতে পারে।’

এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, ‘আমি এখন ফরেস্টিতে আছি, সারাদিন নেটওয়ার্কের বাইরে ছিলাম। বিষয়টি এখনও দেখিনি। ৯ তারিখে বা ৮ তারিখে যোগাযোগ করলে বিস্তারিত বলতে পারব।’

পপি/