
রাজশাহীর প্রকৃতি, কৃষি ও সংস্কৃতিকে ঘিরে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) অনুষ্ঠিত হলো প্রথমবারের মতো ‘মৌসুমী ফল উৎসব ২০২৫’। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তনের (টিএসসি) দ্বিতীয় তলায় বৃহত্তর রাজশাহী ওয়েলফেয়ার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
আয়োজনের শুরুতেই জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়। এরপরেই জমে ওঠে প্রকৃতি ও পার্বণের স্বাদে ভরা এক অনন্য আয়োজন। উৎসবে পরিবেশিত হয় রাজশাহী অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী আম, আনারস, লটকন, ড্রাগন ফল, জামরুল, পেয়ারা, কাঠালের মতো নানা দেশি মৌসুমী ফল, যেগুলো গ্রামীণ জীবন ও কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতির প্রাণপ্রতীক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল লতিফ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আরফান আলী, টিএসসি’র পরিচালক ও ল্যাংগুয়েজ বিভাগের অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন, অ্যানাটমি, হিস্টোলজি ও ফিজিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মাসুম এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মোমেনুল এহসান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, ‘এই আয়োজন দেখে বোঝা যায়—শিক্ষার্থীরা শুধু একাডেমিক পড়াশোনাতেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা নিজেদের সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক পরিচয় নিয়েও গভীরভাবে ভাবছে। রাজশাহীর স্থানীয় স্বাদ ও ঐতিহ্যকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তুলে আনা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’
প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল লতিফ বলেন, ‘এই উৎসব শুধুমাত্র ফলভোজের আয়োজন নয়, বরং এটি আমাদের কৃষিপণ্য ও কৃষিভিত্তিক জীবনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংযোগ ঘটানোর একটি শিক্ষাবান্ধব প্রয়াস। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জীবনের কৃষি ও মৌসুমী ফলের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তাধারায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
অনুভূতি জানিয়ে কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আতিক বলেন, ‘আজকের উৎসবে একসাথে অনেক দেশি ফলের স্বাদ গ্রহণ করতে পেরে দারুণ লাগছে। এটি শুধু উৎসব নয়, বরং নিজের শেকড়কে নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার একটি দারুণ উপলক্ষ।’
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মো. আবদুল্লাহিল কাফি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, এই উৎসব নিয়মিত আকারে অনুষ্ঠিত হবে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়বে, আর আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও কৃষিকে ঘিরে তৈরি হবে একটি অন্তরঙ্গ সংযোগ।’