![আ.লীগ প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন চোখে পড়ে না ইসির, শোকজ জাপা প্রার্থীকে](uploads/2023/12/02/1701535779.sylethkk.jpg)
হাজারো দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল, স্লোগান দিয়ে সিলেটের ৬টি আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রায় সব প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে গেছেন। বিশাল বহর নিয়ে শোডাউন করে গেলেও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের ভিতরে গিয়েছেন পাঁচজন। আমিও একইভাবে পাঁচজন নিয়েই রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেই। কিন্তু আওয়ামী মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন কারো চোখে পড়লো না। আমি জাতীয় পার্টির প্রার্থীর তাই আমার দোষ ঠিকই চোখে পড়েছে নির্বাচন কমিশনের। এটা হচ্ছে দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচার। কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে মনে ক্ষোভ ও দুঃখ নিয়ে এই কথাগুলো বললেন সিলেট-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইয়াহইয়া চৌধুরী।
মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন সিলেট জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দেখা যায়, কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে শোডাউন করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটে-৪ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী, সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবসহ আওয়ামী বিদ্রোহী প্রার্থীরাও শোডাউন, স্লোগান, মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছেন। কিন্তু শোকজ করা হলো শুধু সিলেট-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইয়াহইয়া চৌধুরীকে। তাই এনিয়ে এখন সিলেটে নানা জনের মনে নানা প্রশ্ন।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইয়াহইয়া চৌধুরীকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শনিবার (২ ডিসেম্বর) তাকে এ সম্পর্কিত একটি চিঠি পাঠান নির্বাচনী এলাকা ২৩০ ও সিলেট-২ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাইন বিল্লাহ। আগামী রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এই শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চিঠি সূত্রে জানা গেছে- গত ৩০ নভেম্বর সিলেট জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় মিছিল সহকারে প্রবেশ করেন মো. ইয়াহইয়া। যা 'সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮' এর বিধি ৮(খ) এর লঙ্ঘন। উক্ত বিধিমালা লঙ্ঘনের বিষয়টি একাত্তর টিভি এর সংবাদের মাধ্যমে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর গোচরীভূত হয়েছে। এমতাবস্থায় 'সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮' এর বিধি ৮(খ) এর লঙ্ঘনের দায়ে কেন তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না, তা ৩ ডিসেম্বর সকাল ১১টার মধ্যে সিলেট ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সিলেট-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, এই কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি, আমি লিখিত জবাব দিয়েছি। আগমীকাল সরাসরি যাবো। আমি নিয়ম অনুযায়ী ডিসি অফিসের ভিতরে মনোনয়ন জমা দিয়ে পাঁচজনকে নিয়ে। এখন বাইরে কেউ মিছিল দিলে স্লোগান দিলে নির্বাচনের মাঠে আমরা না ও করতে পারি না। এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
তিনি বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীরা সবাই দলবল নিয়ে স্লোগান দিয়ে গিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছে অথচ শোকজ করা হল শুধু আমাকে। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের প্রথম নমুনা কিন্তু ভাল না। একজনকে শোকজ করবেন আরেকজনকে শোকজ করতে চিন্তা করবেন এটাতো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নমুনা না।
এ ব্যাপারে সিলেট ২ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, আইনে যেভাবে আছে সেভাবে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। যেভাবে আমাদের কাছে ইনফরমেশন আসে আমরা সেভাবে আমরা পর্যবেক্ষণ করি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে কেউ ব্যক্তিগতভাবে তথ্য দিতে পারেন, আবার আমাদের সম্মুখেও হতে পারে, আবার মিডিয়ার নিউজ দেখেও হতে পারে। আমি ইউটিউবে যে ভিডিওটা দেখেছি সেখানে সিলেট-২ আসনের অন্য কোনো প্রার্থী ছিলেন না।
অন্য আসনের প্রার্থীরাও এরকম আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কিন্তু তাদের কেন শোকজ করা হল না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সিলেট-২ আসনের দায়িত্বে আছি। প্রতিটি আসনের জন্য এ সংক্রান্ত আলাদা আলাদা চেয়ারম্যান নিয়োগ আছেন। তাই আমি সিলেট-২ আসনের ব্যাপারে বলতে পারবো। বাকিদেরটা আমরা নজরে আসেনি।