![অপহৃত নারীকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার মুখে পুলিশ](uploads/2024/02/13/1707804394.itvata-photo.jpg)
মাগুরায় জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অপহৃত এক নারীকে উদ্ধার করতে গিয়ে অপহরণকারীদের হামলার মুখে পড়েছে পুলিশ। এতে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য এবং অপহৃতের ভাই আহত হয়েছেন।
পরে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ অপহৃত নারীকে উদ্ধার করে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করলেও পুলিশের ওপর হামলা এবং অপহরণের ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাগুরার সদর উপজেলার বেঙ্গা বেরইল গ্রামের হারুণ মোল্যার মেয়ে মাছুরা খাতুনের বিয়ে রেজিস্ট্রির উদ্দেশ্যে সোমবার দুপুরে মাগুরা জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয় পরিবারের সদস্যরা। এ সময় মাগুরা সদর উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামের রজব আলি মোল্যার ছেলে জামির হোসেনের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ের কনে মাছুরাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা মেয়েটিকে শহরতলি ইটখোলার সোনালী ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় নিয়ে আটকে রাখে। এ ঘটনার পর মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বিকেল চারটার দিকে ওই ইটভাটায় গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়।
এ সময় সোনালী ইটভাটার ম্যানেজার জামির হোসেনের নেতৃত্বে ভাটার শ্রমিকরা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মেয়েটিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। অপহরণকারীদের হামলায় এসআই হাফিজ এবং এরশাদ, সাইফুল ও ওমর নামে তিন কনস্টেবল আহত হন। পরে সদর থানার অতিরিক্ত পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মাছুরা খাতুন বলেন, ‘১২ বছর আগে মাগুরার সদর উপজেলার দেড়ুয়া গ্রামের দুলাল মোল্যার ছেলে ফারুকের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। কিন্তু তার নির্যাতনের কারণে চার বছর আগে আমাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। ওই ঘটনার পর আমার পরিবার নতুন করে বিয়ে ঠিক করলে আগের স্বামী বারবার বাধা দিয়ে আসছে। সোমবার জজ আদালতে বিয়ে করতে গেলে আমাকে তুলে নিয়ে ইটভাটায় আটকে মারধর করে। সেখানে আমার ছোট ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যরা পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হলে আমার ভাইকেও মারাত্মকভাবে পিটিয়েছে।’
মাছুরার ভাই আহত মোস্তাক হোসেন বলেন, ‘আমার বোনকে অপহরণ করে ইটভাটায় আটকে নির্যাতন করছে- এমন খবর পেয়ে আমি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসি। এরপর পুলিশ এসে আমার বোনকে উদ্ধার করে পুলিশের গাড়িতে উঠালে ভাটার ম্যানেজারের নেতৃত্বে শ্রমিকরা আমাদের পুলিশভ্যান থেকে নামিয়ে বেদম মারধর করে।’
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ‘অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা সোনালী ভাটায় গিয়ে অপহরণের শিকার মেয়েটিকে উদ্ধার করে। তাকে উদ্ধারের পর পুলিশভ্যানে উঠানো হলে ভাটার শ্রমিকরা পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মেয়েটি ও তার ভাইকে মারধর করে। এ সময় তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালায়।’
অপহরণে ব্যবহৃত চারটি মোটরসাইকেল ওই ইটভাটা থেকে জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
কাসেমুর রহমান/জোবাইদা/অমিয়/