কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় ও বুধবার (৮ মে) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার আগানগর গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারের জেরে আগানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সরুল্লার বাড়ি এবং উত্তরপাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারী বাড়ির লোকজনের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৮ জনকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে আগানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার সরুল্লার বাড়ি ও পার্শ্ববর্তী উত্তরপাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারী বাড়ির লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আনন্দ বাজারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার নিয়েও দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলমান।
এদিকে গত ২২ এপ্রিল জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অতিথি প্যানেলের নাম নিয়েও দুপক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই সময় স্থানীয় নেতারা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। তবে মীমাংসার পরও নিবৃত্ত হয়নি কোনো পক্ষই। মঙ্গলবার বিকেলে ড্রেজারের পাইপ চুরির বিষয় নিয়ে দুপক্ষের লোকজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র বল্লম, টেঁটা, রাম দা, এককাট্টা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশত লোক আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গতকাল সকালে পুরো গ্রামবাসী আত্মীয়তার সূত্রে উভয়পক্ষের সঙ্গে যোগ দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে আগানগর গ্রাম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোয়েব রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে ৩০ জন ও বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ টেঁটা ও বল্লম বিদ্ধ হয়ে এখানে আসে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ১৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগানগর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।