ঢাকা ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সিন্ডিকেটে জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে, কাউকে ছাড় নয় : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:২৯ এএম
সিন্ডিকেটে জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে, কাউকে ছাড় নয় : অর্থমন্ত্রী
সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তমন্ত্রণালয়ের জরুরি বৈঠক। ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। রবিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের জরুরি বৈঠকে বলা হয়েছে, যারা সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থির করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত, তাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বৈঠকে বলা হয়েছে, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য সরবরাহ রয়েছে। কোনো ধরনের সংকট নেই,  কিন্তু কিছু মহল কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না। 

প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অর্থমন্ত্রী। এ সময়  খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজারে পণ্যের সংকট নেই। তারপরও কিছু মহল কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। আমরা ওই সব অসাধু ব্যবসায়ীকে ধরব। সেভাবে সরকার কাজ করছে।’ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নতুন অর্থমন্ত্রী বলেন,  ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কাজেই দুশ্চিন্তার  কিছু নেই। দরকার হলে আইন করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রমজান আমাদের লক্ষ্য নয়। তবে রমজান যেহেতু আসন্ন, সে জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’ 

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। সে জন্য সবাইকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। একটা কিছু করার জন্যই আমরা আলোচনা করেছি। অপেক্ষা করুন এবং দেখুন কী হয়, ওয়েট অ্যান্ড সি।’ 

চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মাহমুদ আলী বলেন, দাম কিছুটা কমেছে। আরও কমবে। তিনি বলেন, চালের দাম নিয়ে বেশি আলোচনা চলছে। সে জন্য চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

এখন আলুর ভরা মৗসুম। তারপরও ৭০ টাকা কেজি কেন? এর জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী। শুধু বলেছেন, আলুচাষিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সিন্ডিকেটকারীদের খুঁজছি কঠোর অ্যাকশন নেওয়ার জন্য।’ কবে নাগাদ জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক হবে, এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এটা  বলা  সম্ভব নয়। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি, একটা ভালো ফলাফল পাব।’ 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

এদিকে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, কিছু মহল কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এটা যাতে আর না হয় সে জন্য বৈঠকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এ মুহূর্তে বাজারে পর্যাপ্ত পণ্যের সরবরাহ রয়েছে।

কোনো নিত্যপণ্যের ঘাটতি নেই। তা হলে দাম বাড়ছে কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু মধ্যস্বত্বভোগী, মতলববাজ কারসাজির মাধ্যমে বাজারকে অস্থির করে তুলছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সরকারকে বিপদে ফেলার চেষ্ট করছে। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, যারা কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

১৫ বছর ধরে সিন্ডিকেট ধরতে পারেননি কেন–এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হাতে কোনো তথ্যপ্রমাণ ছিল না। এখন আমরা শনাক্ত করার কাজ শুরু করেছি। নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর তাদের ধরা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে। দায়ীদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, এটা আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। সে লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে।’ 
গর্ভনর

ডলারসংকট নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘রজমানের যেসব পণ্য আমদানি করা হচ্ছে, গত বছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৮টি প্রোডাক্টের যত এলসি হয়েছিল, এবার তার থেকে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। পণ্যগুলো সময়মতো দেশে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। কোনো মধ্যস্বত্বভোগী সমস্যা না করলে পণ্যের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।’

এমএ/

নতুন বাজেট অনুমোদন ২২ জুন: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম
নতুন বাজেট অনুমোদন ২২ জুন: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ২২ জুন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মতামত দেওয়া যাবে ১৯ জুন পর্যন্ত।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘মতামত দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়ত তা আসতে থাকবে। এক দিনে তো আর সব মতামত আসবে না।’

সাধারণত ২৯ জুন অর্থবিল পাস হয় এবং তার পরের দিন নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। এবার যেহেতু সংসদ নেই। তাই রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আগেভাগেই বাজেট পাস করা হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র মানুষের জন্য সুখবর দেখা যাচ্ছে না বলে অনেকেই অভিমত দিয়েছেন। এ বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সুখবর আছে। বাজেটের কোথায় কোথায় পরিবর্তন হয়েছে, তা দেখুন।’ এ বাজেট সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফেরাবে বলেও মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা।

বৈঠকে পুলিশের জন্য গাড়ি কেনাসহ সার, এলএনজি ইত্যাদি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটি অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি স্থবির হওয়ার সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিয়েছে, কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে। ফলে লেনদেনের সমস্যা হবে না।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে আরও বেশি ছুটি থাকে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বড়দিনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে ২০ থেকে ২৫ দিন ছুটি থাকে। নেপালে দুর্গাপূজার সময় ৩০ দিন ছুটি থাকে।

যমুনা সেতুতে একদিনে টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১১:৫৬ এএম
যমুনা সেতুতে একদিনে টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা
ছবি: খবরের কাগজ

যমুনা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩৩ হাজার ৫৬৪ যানবাহন পারাপার হয়েছে।

বুধবার (৪ জুন ) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার (২ জুন) রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার (৩ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮১  হাজার ৫০ টাকা।

নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে।সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে,নেই যানজট।এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ মহাসড়কে সার্বক্ষণিক রাত-দিন কাজ করছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জুয়েল/মেহেদী/

২০২৫-২৬ বাজেট জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি বাজেট দিতে পেরেছি যা জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘অনেকে বলছেন আমরা আগের ধারা অনুসরণ করেছি। হুট করেই বিপ্লব ঘটানো সম্ভব নয়। তবে একেবারেই ইনোভেশন নেই, সেটাও ঠিক নয়। বাজেট এখনো চূড়ান্ত নয়, এটি উন্মুক্ত থাকবে-সাজেশন নেব, তারপর ফাইনাল হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিকূল অবস্থায় সবার সহযোগিতা চাই। কোলাবোরেটিভ ও সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই-চ্যালেঞ্জের মাঝেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সামনের পথ কঠিন। তবে আমরা এনবিআরকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি বিদেশি ঋণ আনার বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক ও রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য ও শিল্প উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এমএ/

যমুনা সেতুতে একদিনে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায়

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:১৭ পিএম
যমুনা সেতুতে একদিনে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায়
ছবি: খবরের কাগজ

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩০ হাজার ১৬৭ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ জুন ) যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, রবিবার (১জুন) রাত ১২টা থেকে সোমবার (২ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ৩০ হাজার ১৬৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৫ হাজার ৩৯৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৩ হাজার টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৭৬৯ টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, 'মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে। আমরা সবাই মিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।' 

জুয়েল রানা/রিফাত/

সুদ পরিশোধে চাপ বাড়বে, বরাদ্দ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
সুদ পরিশোধে চাপ বাড়বে, বরাদ্দ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বাজেটে বরাদ্দের বড় একটি অংশ ব্যয় হয় ঋণের সুদ পরিশোধে। প্রতিবছর বাজেটে এই বরাদ্দ বাড়ছেই। ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় এখন বাজেটের সর্বোচ্চ একক খাত। চলতি বছরের বাজেটেও একই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর মধ্যে শুধু সুদ পরিশোধেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। সুদ পরিশোধের এই ব্যয়ের পরিমাণ প্রস্তাবিত মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এই ব্যয়ের বড় অংশই যাবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধে। 

এই বিপুল বরাদ্দের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে ২২ হাজার কোটি টাকা। অথচ চলতি অর্থবছরে ২০২৪-২৫ সংশোধিত বাজেটে সুদ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ব্যয় বাড়ছে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের সময়ে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ নিয়েছিল সরকার। চলতি বছর কিছু বৈদেশিক ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় শুধু সুদ নয়, আসল অর্থও পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের হার বেড়েছে। গত দুই বছরে মুদ্রার অবমূল্যায়নে বৈদেশিক ঋণের বোঝা আরও বড় হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও চাপের মুখে পড়তে পারে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ঋণের বোঝা যেভাবে বাড়ছে তার বিপরীতে সুদ পরিশোধে বাজেটের বড় একটি অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। এটি সরকারের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। সুদ পরিশোধের চাপ কমাতে হলে সরকারকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তথা রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। তা না হলে সরকার কঠিন চাপের মুখে পড়বে।’

গত কয়েক বছরের সুদ পরিশোধের হিসাবও বড় ঋণ নির্ভরতার আভাস দেয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় ছিল ৭০ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। পরবর্তী বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি, ২০২২-২৩ সালে ৯০ হাজার ১৩ কোটি এবং ২০২৩-২৪ সালে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকায়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর তা বেড়ে ১ লাখ ২২ হাজার কোটিতে পৌঁছাতে চলেছে।

বাজেটে ঘাটতি পূরণের জন্য দুই উৎস থেকে ঋণ নেয় সরকার। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ এবং অন্যটি বিদেশি ঋণ। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে আবার ব্যাংক ব্যবস্থা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেয় সরকার। আর বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থা ও দ্বিপক্ষীয় দেশ থেকে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বাজেট সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ঋণ নেয়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারতের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি ঋণ নিচ্ছে। আর বহুপক্ষীয় সংস্থার মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়া হয়। প্রতিবছর বাজেটে এই দুই উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এসব ঋণের বিপরীতে চড়া সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে সুদের পেছনে ব্যয় বাড়ছেই।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ঋণ পরিশোধে খরচ হয়েছে ৩২১ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ২৫৭ কোটি ডলার (২৮ হাজার ২৮১ কোটি টাকা)। অর্থাৎ পরিশোধের চাপ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।