![দিনাজপুরের রসুন চাষিদের দুশ্চিন্তা কেটেছে](uploads/2024/02/12/1707730924.Dinajpur-Garlic.jpg)
টানা কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে রসুন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষকরা। তবে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা বাড়ায় আশানুরূপ ফলন হবে ও দাম পাবেন বলে মনে করছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার গোয়ালডিহি, হাসিমপুর, কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রসুনের চাষ হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেঁকে বসে ঘন কুয়াশা। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া শুরু হয়। এতে স্থানীয় কৃষকরা রসুন নষ্ট হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন।
গত বছরের তুলনায় এবার রসুনে ভালো ফলন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। যা গত বছরে তুলনায় ১২০ হেক্টর বেশি।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ ও পরিচর্যা বাবদ এ বছর খরচ হয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচ বেড়েছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫ থেকে ৬০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজারমূল্য ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। তাই খরচ বেশি হওয়ার পরও ভালো লাভের আশা করছেন তারা।
গোয়ালডিহি জমির শাহপাড়া এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ কয়েকদিন আগে রসুন গাছের পাতার রঙের এমন পরিবর্তন হয়, দূর থেকে দেখলে মনে হতো সরিষার খেত। তবে কিছু দিন থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় কীটনাশক স্প্রে ও পরিচর্যা করে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমি এ বছর এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করছি। বেশ ভালো ফলন হবে এবার, দামও গত বছরের থেকে অনেক বেশি পাওয়া যাবে।’
খামারপাড়া ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল আলম বলেন, ‘এ বছর দেড় বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছি। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে। আশা করি দাম পাব।’
ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছরেই আমি রসুনের আবাদ করি। এবারও আবাদ করেছি। এ বছর দাম ভালো থাকায় ভালো কিছুর আশা করছি।’
খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব সময় রসুনসহ বিভিন্ন খেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি এ বছর রসুনে ব্যাপক সফলতা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, ‘কিছু দিন আগে শৈত্যপ্রবাহের কারণে রসুন খেত হলুদ বর্ণ ধারণ করেছিল। কিন্তু এখন আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় ফলনও ভালো হবে আশা করছি। কৃষকদের সচেতনতার জন্য কাজ করছি।’