![রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ‘অবচয় সুবিধা’ ৫০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব](uploads/2024/02/13/1707815575.bujet.jpg)
আগামী বাজেটে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিতে ‘অবচয় সুবিধা’ আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। বর্তমানে এই সুবিধা আছে ৩৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ বাজেটে এটি বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বারভিডার সাবেক সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন এ প্রস্তাব করেন। জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আলোচনায় বারভিডার সভাপতি বলেন, যেকোনো পণ্যের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে সর্বোচ্চ হারে মূল্যের অবচয় প্রদানের বিধান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। অবচয় প্রদানের উদ্দেশ্যে বয়স গণনার ক্ষেত্রে আমদানি নীতি অনুযায়ী লিপিবদ্ধ বছর চলতি হিসাবে ধরা হয়। অবচয় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বছর ও গাড়ির প্রকৃতিভেদে এক বছরের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি শূন্য শতাংশ, দুই বছরের পুরোনো গাড়ি ১০ শতাংশ, ২ বছরের অধিক হলে ২০ শতাংশ, তিন বছর পর্যন্ত পুরোনো হলে ৩০ শতাংশ, চার বছর পুরোনো হলে ৪০ শতাংশ ও পাঁচ বছর পুরোনো হলে ৫০ শতাংশ হারে অবচয় প্রদানপূর্বক রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব করেছি। বর্তমান আমদানি নীতিতে পাঁচ বছরের পুরোনো গাড়ি আনা যায়। এর বেশি বয়সী গাড়ি আমদানি নিষিদ্ধ।
গাড়ির অবচয় সুবিধার ওপর ভিত্তি ধরে শুল্কায়ন করা হয়। বর্তমানে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির অবচয় সুবিধা ৩৫ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে গাড়ির দাম ১০০ টাকা হলে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য হবে ৬৫ টাকা। এই টাকার ওপর ভিত্তি ধরে প্রযোজ্য হারে শুল্ক-কর আদায় করা হবে। এ জন্য অবচয় সুবিধা যত বেশি হবে, গাড়ির দাম তত কম হবে।
বারভিডা বলেছে, ডলার সংকটের কারণে বর্তমানে ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে উৎসাহিত করছে না। ফলে দেশে গাড়ি আমদানি কমে গেছে। এ ছাড়া ডলারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গাড়ির দাম ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বাড়তি দামের কারণে গাড়ি বিক্রি এক বছরে ৭০ শতাংশ কমে গেছে। এতে করে সরকারস এই খাত থেকে বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে গাড়ির অবচয় সুবিধা কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হলে আমদানি বাড়বে। ফলে গাড়ির দাম কমবে এবং বিক্রি বাড়বে। এতে করে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
হাবিব উল্লাহ ডন আরও বলেন, এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হলে গাড়ি আমদানি বৃদ্ধি পাবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এ বিধান কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার তৃণমূলে সম্প্রসারিত হবে। নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
অন্যদিকে পুরোনো হাইব্রিড গাড়ি আমদানির সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব দিয়েছে বারভিডা। সংগঠনটি বলছে, পুরোনো রিকন্ডিশন্ড হাইব্রিড গাড়ি আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর হতে বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, হাইব্রিড গাড়ি যেমন পরিবেশের জন্য কল্যাণকর তেমনি জ্বালানি সাশ্রয়ী বিধায় রাষ্ট্র এবং গ্রাহক উভয়েই উপকৃত হচ্ছেন। সিসি স্ল্যাব ৪০০০ পর্যন্ত করভার ৪৪২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৮৯ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে।
প্রস্তাবিত হারে বিবেচনা করা হলে উন্নত প্রযুক্তির পরিবেশ ও জ্বালানিসহায়ক হাইব্রিড গাড়িগুলির আমদানি সহজলভ্য হবে বলে মনে করে বারভিডা। প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো রহমাতুল মুনিম বলেন, শুল্ক সুবিধা দিলে সেই সুবিধার অপব্যবহার হয়। যারা অপব্যবহার করে তারা শিল্পের ক্ষতি করছে। তিনি বারভিডার প্রস্তাব বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।