ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার
বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি : সংগৃহীত

ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে ব্যাংকগুলো নিজেরাই স্বতন্ত্রভাবে সুদহার নির্ধারণ করবে এবং তা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।

বুধবার (৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সম্পর্কিত সিদ্ধান্তের কথা ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে।

গত জুলাইয়ে ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের গড় হার অর্থাৎ সিক্স মান্থ মুভিং অ্যাভারেজ রেটস অব ট্রেজারি বিল অ্যান্ড বন্ডস বা স্মার্ট রেট করিডর প্রথা চালু করে। এর আওতায় প্রতি মাসেই বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্মার্ট রেট ঘোষণা করে আসছিল। সর্বশেষ গত মাসে এ স্মার্ট রেট করিডর অনুযায়ী ঋণের সুদহার দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ঋণের এ উচ্চ সুদহারের সমালোচনা করে ব্যবসায়ীরা তা কমানোর দাবি করে আসছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে কাজ চলছে। এ লক্ষ্য সামনে রেখে বাজারে টাকার সরবরাহ কমাতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই সুদহারে আপাতত ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়। এটিকে কন্ট্রাকশনারি বা সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বলা হচ্ছে।

নীতি সুদহার বাড়ল

বুধবারই নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি ৫০ পয়েন্ট বেসিস বাড়িয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি ৭ শতাংশ থেকে ৫০ পয়েন্ট বেসিস বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোকে তহবিল সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংককে বেশি সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ তহবিল সংগ্রহে ব্যাংকের ব্যয় বাড়বে।

উন্নয়ন সহযোগীদের বৈঠক ইইউর অব্যাহত সহযোগিতা চায় বিজিএমইএ

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
ইইউর অব্যাহত সহযোগিতা চায় বিজিএমইএ
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। এ সময় বিজিএমইএর অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

দেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। বিশেষ করে চলমান ‘এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)’ স্কিম থেকে জিএসপি প্লাসে উত্তরণের সময়কাল বৃদ্ধি করে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়।

রবিবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, স্পেন, ইতালির রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এই আহ্বান জানান।

বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশ যাতে করে তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য এই সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের প্রধান ও রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস-মোলার, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দো, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ ডি-অ্যাফেয়ার্স থিজস ওয়াউডস্ট্রা, ইউ ডেলিগেশনের উপপ্রধান (ডেপুটি হেড অব মিশন) ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার, স্প্যানিশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল অ্যাটাশে এসথার পেরেজ তাহোসেস এবং বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের বাণিজ্য উপদেষ্টা আবু সৈয়দ বেলাল।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি আরশাদ জামাল (দীপু), মো. নাসির উদ্দিন, মিরান আলী, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক আসিফ আশরাফ, মো. ইমরানুর রহমান, শোভন ইসলাম, হারুন অর রশিদ, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মো. আশিকুর রহমান (তুহিন), শামস মাহমুদ, আবরার হোসেন সায়েম, মো. মহিউদ্দিন রুবেল, শেহরিন সালাম ঐশী, মো. নুরুল ইসলাম, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, মো. রেজাউল আলম (মিরু) এবং বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন আইএলও অ্যান্ড লেবার অ্যফেয়ার্সের চেয়ারম্যান আ ন ম সাইফুদ্দিন।

বৈঠকে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের কল্যাণের মতো ক্ষেত্রগুলোতে শিল্পের অর্জন তুলে ধরা হয়। এ সময় ডিউ ডিলিজেন্স ডিরেকটিভ ও অন্য আসন্ন প্রটোকলগুলো অনুসরণ করার ক্ষেত্রে শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ইইউর সহযোগিতা কামনা করেন বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান।

সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে ইইউর সহযোগিতা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য ইইউর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তিনি পণ্যের ন্যায্যমূল্য ও এথিক্যাল সোর্সিং নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ক্রেতাদের আহ্বান জানানোর জন্য রাষ্ট্রদূতদের অনুরোধ করেন। এ সময় বিজিএমইএ নেতারা অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ইইউর সঙ্গে অংশীদারত্ব আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ অবদান পোশাক খাতের। আবার এই পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ। চীনের পর ইউরোপে দ্বিতীয় পোশাক সরবরাহকারী বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্যমতে, দেশের মোট পোশাকের ৫০ শতাংশ রপ্তানি হয় ইইউভুক্ত ২৭টি দেশে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। তার মধ্যে ইইউতে রপ্তানি হয় ২ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার। এই অঞ্চলে দেশের পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৪ শতাংশ।

এই কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা একটি বড় ব্যাপার। কিন্তু সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাস হওয়া করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্স ডিরেক্টিভ বা সিএসডিডিডি আইন পোশাক খাতকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়া ২০২৯ সালের পর জিএসপি সুবিধা চলে গেলেও পোশাক খাত বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। এ কারণে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডিউ ডিলিজেন্স ডিরেক্টিভ আইনটি কার্যকর হলে বাংলাদেশের পোশাককারখানাগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে পরিবেশ ও শ্রমবান্ধব করতে হবে। নতুন করে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে শ্রমের মজুরি। এই আইন বাস্তবায়িত হলে বড় পোশাককারখানাগুলো সক্ষমতা অর্জন করে টিকে থাকতে পারলেও চাপে পড়বে ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্প। এই কারণে একটি বড় অংশীদার হিসেবে ইইউর সঙ্গে এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে মনে করছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা।

যদিও নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার বিজিএমইএর নেতাদের সঙ্গে এটি ছিল প্রতিনিধিদলের দলের সৌজন্য সাক্ষাৎ। তবে ভবিষ্যতে ইইউর সঙ্গে সম্পর্ককে আরও অনন্য উচ্চতায় নিতে এর ভূমিকা অনেক বলে মনে করেন পোশাক খাতসংশ্লিষ্টরা।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক শোভন ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘এটা আমাদের একটি দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছিল। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ডিউ ডিলিজেন্স ল এবং আরও অনেক নীতিমালা সামনে আসছে। আমরা তাদের বলেছি, দেখ আমরা এসব খাতে অনেক বিনিয়োগ করেছি। তারা আমাদের এসব ব্যাপার নিয়ে খুশি।’

শোভন ইসলাম বলেন, ‘ইউরোপ আমাদের বড় বাজার। আমরা মূলত সেখানে আমাদের মার্কেট শেয়ার বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করছি। তবে আমরা যদি ব্যবসায়িক নীতিগুলো বাস্তবায়ন করি তাহলে সেখানে আমাদের বাজার এমনিতেই আরও বড় হবে।’

স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি যে, ইউরোপ আমাদের খুব ভালো একটি উন্নয়ন সহযোগী। আমরা প্রতিনিয়ত সেখানে মার্কেট শেয়ার বাড়িয়ে যাচ্ছি। চায়নার কাছ থেকে আমরা মার্কেট শেয়ার তাদের দিতে চাই। এ কারণে তাদের সহযোগিতা আমাদের একান্ত প্রয়োজন।’

শোভন ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি যে, গত কমিটিতে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভালো কাজ করেছি। এই কমিটিও তাদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে কাজ করতে চাই। এ ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে যেমন সহযোগিতা থাকবে তেমনি আমাদের পক্ষ থেকেও থাকবে। এ জন্য আমরা তাদের নীতিমালাগুলোকে বাস্তবায়ন করব বলেও জানিয়েছি।’

ইসমাঈল/

টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য চাই দক্ষ ব্যবস্থাপনা: অর্থপ্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০২:১৬ পিএম
টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য চাই দক্ষ ব্যবস্থাপনা: অর্থপ্রতিমন্ত্রী
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য আর্থিক খাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। এ জন্য পরিকল্পনাবিদ, শিক্ষাবিদ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।

রবিবার (১৯ মে) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান অর্থপ্রতিমন্ত্রী। 

পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট (পিএফএম) স্ট্র্যাটেজি ২০২৫-২০৩০ প্রনয়ন উপলক্ষে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ব ব্যাংক,ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ আলোচনাসভার আয়োজন করে।  

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং দক্ষতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনে স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। 

তিনি  বলেন, ‘পিএফএম কমকৌশল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রণয়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যখন বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে আমরা চ্যালেঞ্জ এবং অভূতপূর্ব সুযোগের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা কোভিড-১৯ মহামারির সুদূরপ্রসারী প্রভাবগুলির মোকাবিলা করছি, এটি পর্যায়ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য সময়োপযোগী ও কার্যকর আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘পিএফএম কৌশল প্রণয়নের আসুন আমরা আমাদের সর্বাত্মক উদ্ভাবনী মতামত ও সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার করি। সবার অংশগ্রহণে আমাদের কাছে এমন একটি ভবিষ্যৎ গঠনের সুযোগ রয়েছে যেখানে বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা শুধুমাত্র টেকসই এবং দক্ষই হবে না, উপরন্তু ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে। যা আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই সমৃদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করবে।’

অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর বার্নাড হেভেন। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী। 

আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি (হেড অব কো-অপারেশন) ড. মিকাল ক্রেজান, কানাডা হাইকমিশনের কর্পোরেট/উন্নয়ন সহায়তা প্রধান জো গুডিংস এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ক্যানাডার সিনিয়র ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজর সিলভিয়া ইসলাম। 

অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু দাইয়ান মোহম্মদ আহসানউল্লাহ ‘পাথওয়ে টু পিএফএম রিফর্ম স্ট্র্যাটেজি ২০২৫-২০৩০’-এর উপর একটি উপস্থাপনা করেন।

অর্থ সচিব বলেন, ‘কার্যকর সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং সুশাসনের প্রচারের লক্ষ্যে সংস্কারের একটি মৌলিক দিক থেকে পিএফএম সংস্কার করা হয়েছে। পিএফএম একটি অপরিহার্য হাতিয়ার, যার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পদ, সেবা প্রদান এবং সরকারের নীতি ও উদ্দেশ্যের আলোকে অর্জসমূহ একত্রীত করে। উন্নত সেবা প্রদান এবং টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ এখন তার পিএফএম সিস্টেমকে প্রযুক্তিচালিত ও দক্ষ সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থায় রূপান্তর করার জন্য কাজ করছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে পিএফএম সংস্কারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হলেও এর থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার জন্য সকল স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে আরও সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

উদ্বোধনী অধিবেশনের পর দুটি কারিগরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রথম অধিবেশনে “সরকারের মূল স্টেকহোল্ডারদের রিফলেকশন” বিষয়ে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা কমিশন সদস্য (সচিব) রেহানা পারভিন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর সদস্য (শুল্ক, নীতি ও আইসিটি) মো. মাসুদ সাদিক এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মফিদুর রহমান। 

এই অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আদবুর রহমান খান। 

বিশ্বব্যাংকের লিড গভর্নেন্স স্পেশালিস্ট ( ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট) সুরাইয়া জন্নাতের সঞ্চালনায় দ্বিতীয় অধিবেশনে “অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের অভিমত” বিষয়ে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফাইন্যান্সের মহাপরচিালক রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসেন,অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনাবল সার্ভিস ডেলিভারির (এসপিএফএমএস) জাতীয় কর্মসূচি পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

অমিয়/

সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক কমেছে ২.৫ শতাংশ

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক কমেছে ২.৫ শতাংশ
ছবি: সংগৃহীত

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে (১২-১৬ মে) ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেরও (সিএসই) সূচক ও লেনদেন কমেছে। স্টক এক্সচেঞ্জের সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৪৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৫ হাজার ৬৬১ পয়েন্টে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ২ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২ হাজার ১৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ২১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ২৪৩ পয়েন্টে।

একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারে মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর। আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত এনবিআরের বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হয়। মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপের এ পরিকল্পনাটি সামনে আসায় পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, এমনিতেই বাজারে দীর্ঘদিন ধরে মন্দাভাব চলছে। তার মধ্যে মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপের খবরে তা আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে। 

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া মোট ৪১২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ২৯০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির দর। এ ছাড়া লেনদেন হয়নি ২০টির। ডিএসইতে গত সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৭৪২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে ছিল ৯৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩ হাজার ৮২১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৭ শতাংশ দখলে নিয়েছে বস্ত্র খাত। ৯ দশমিক ৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। প্রকৌশল খাতের দখলে ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ।

আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে ইতিবাচক রিটার্নে শীর্ষে ছিল জীবন বিমা, জ্বালানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। এ তিন খাতে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৯, ৪ দশমিক ৬ ও ২ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নে শীর্ষে ছিল পাট, কাগজ ও ভ্রমণ খাত। খাত তিনটিতে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে যথাক্রমে ৯ দশমিক ৪, ৬ দশমিক ৪ ও ৫ শতাংশ।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ কমে ১৬ হাজার ২৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৬ হাজার ২৩২ পয়েন্ট। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে ৯ হাজার ৬৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ছিল ৯ হাজার ৭৭২ পয়েন্ট।

সিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ২১৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৩৮ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির বাজারদর।

লেনদেনের শীর্ষে যারা
ডিএসইতে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ই-জেনারেশন লিমিটেড।

সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ২৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে নাভানা ফার্মার ২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, বেস্ট হোল্ডিংসের ২৩ কোটি ৯ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ২০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, গোল্ডেন সনের ১৮ কোটি ২১ লাখ টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ফারইস্ট নিটিংয়ের ১৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং এডভেন্ট ফার্মা লিমিটেডের ১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে যারা
ডিএসইতে গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে রিলায়েন্স ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ড।

রিলায়েন্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ডটির দর বেড়েছে ২৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারদর বেড়েছে ২১ দশমিক ২১ শতাংশ। তালিকায় তৃতীয় স্থানে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। 

তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ, ইজেনারেশনের ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ, ইউনিলিভার কনজ্যুমারের ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রোর ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকসের ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং খান ব্রাদার্স পিপির ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।

দরপতনের শীর্ষে যারা
গত সপ্তাহে শেয়ারদর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি।

সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকটির শেয়ারদর কমেছে ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পূবালী ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে ১৮ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা আইপিডিসি ফিন্যান্সের শেয়ারদর কমেছে ১৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকসের ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ, সোনালী পেপারের ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ, সোনালী আঁশের ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ, বিকন ফার্মার ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং হামি ইন্ডাস্ট্রিজের ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

২০১৫ সালের পর সবচেয়ে কম পেট্রল রপ্তানি চীনের

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
২০১৫ সালের পর সবচেয়ে কম পেট্রল রপ্তানি চীনের
ছবি: সংগৃহীত

২০১৫ সালের জুলাই মাসের পর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চীনের গ্যাসোলিন বা পেট্রল রপ্তানি রেকর্ড পরিমাণ কমেছে। চীনের কাস্টমস ডেটা এবং রয়টার্সের রেকর্ডে শনিবার (১৮ মে) এই চিত্র দেখা গেছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে দেশটির অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ও জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গত মাসে পেট্রল রপ্তানি কম হয়। খবর রয়টার্সের।

চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে চীনের গ্যাসোলিনের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার কোটি মেট্রিক টন। এটি এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৫০ দশমিক ৮০ শতাংশ কম এবং মার্চ মাসের রপ্তানি থেকেও ৬৫ শতাংশ কম। চলতি বছরের মার্চে চীনের পেট্রল রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৫০ হাজার টন।

বৈশ্বিক জ্বালানির তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেঞ্জির তেল ও রাসায়নিক পরামর্শদাতা শিকিং জিয়ার মতে, পর্যটকদের মধ্যে স্বল্প দূরত্বের ভ্রমণের প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহ গাড়িতে ভ্রমণ বিমানের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় করে তুলছে এবং এই প্রবণতা দেশীয় গ্যাসোলিনের চাহিদা বৃদ্ধি করছে।

চীনের পেট্রল রপ্তানি সম্ভবত মে মাসেও নিম্নস্তরে থাকবে। বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, চীনের শ্রম দিবসের ছুটির সময় ভ্রমণ বৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে চলতি মে মাসে দেশটির অভ্যন্তরীণ পেট্রলের চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ থেকে ৬ শতাংশ বাড়বে।

জ্বালানি পণ্য ও সামষ্টিক বাজার তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এনার্জি আসপেক্টসের চীনের জ্বালানি বাজার বিশ্লেষক জিয়ানান সান বলেছেন, পাঁচ দিনের ছুটিতে দেশীয় ভ্রমণ ২০১৯ সালের মহামারির আগের সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এমনকি দক্ষিণ চীনে ভারী বৃষ্টিপাত দেশের সেই অংশে ভ্রমণকে সীমিত করা সত্ত্বেও ভ্রমণ বেড়েছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এপ্রিল মাসে চীনের ডিজেল রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৭৬ হাজার টন, যা মার্চে রপ্তানি হওয়া ১৪ লাখ ২০ হাজার টনের চেয়েও ৪৬ শতাংশ কম। রপ্তানি সালিশ প্রক্রিয়া দুর্বল হওয়া এবং সীমিত কোটার কারণে এপ্রিলে ডিজেল রপ্তানি কমেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে কাস্টমসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এটি (এপ্রিল মাসের ডিজেল রপ্তানি) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি ছিল।

ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, মে মাসে ডিজেল রপ্তানি আরও কম হবে। কারণ দেশটির জ্বালানি পরিশোধনকারীরা ইতোমধ্যে তাদের বেশির ভাগ কোটা ব্যবহার/পূরণ করে ফেলেছেন।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল গ্যাস কোম্পানি সিনোপেক ও পেট্রোচায়না জুন মাসে তাদের পরিশোধিত জ্বালানির উৎপাদন কমানোর কথা বিবেচনা করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিরিক্ত ডিজেল এশিয়ায় পরিশোধন মুনাফা কমিয়ে দিয়েছে।

খবরে বলা হয়, এপ্রিল মাসে সিঙ্গাপুরে (এশিয়ার বেলওয়েদার) ব্যারেলপ্রতি রিফাইনিং মার্জিন ৬ ডলার থেকে কমে ৪ ডলারের নিচে নেমে গেছে। যদিও দ্বিতীয় প্রান্তিকে কম চাহিদার মৌসুমে বেশকিছু প্ল্যান্ট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ ছিল।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে চীনের জেট ফুয়েল রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৯০ হাজার টন, যা এক বছর আগের একই সময়ের থেকে ৯০ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। কিন্তু এটি গত মার্চ মাসের ১৯ লাখ ৯০ হাজার টন থেকেও কম।

এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এপ্রিলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৬৭২টিতে। তবে এটি ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের ফ্লাইটের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম।

রয়টার্স জানায়, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে সরবরাহ করা জ্বালানি শুল্ক পরিসংখ্যানে রপ্তানি হিসেবে গণনা করা হয়।

বিমান চালনার বাঙ্কারিং চাহিদার পাশাপাশি মূল ভূখণ্ড চীনের বাইরে স্বাস্থ্যকর বিক্রয় মার্জিনের দ্বারা জেট জ্বালানি রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনভিত্তিক একাধিক বাণিজ্য সূত্র জানিয়েছে, এই প্রবণতা মে এবং জুন মাসে অব্যাহত থাকতে পারে।

চীনভিত্তিক বেশ কয়েকটি বাণিজ্য সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বিমানবন্দরের জ্বালানি চাহিদার পাশাপাশি চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে জেট জ্বালানির রপ্তানি ভালো মুনাফা মার্জিনের কারণে বেড়েছে। তারা আরও বলেন, এই প্রবণতা মে ও জুন মাসেও চলতে পারে।

অন্যদিকে এপ্রিল মাসে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানি এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়ে ৬২ লাখ ২০ হাজার টন হয়েছে।

মাদারীপুরে দুই ব্যবসায়ীর কবজায় ডিমের বাজার

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
মাদারীপুরে দুই ব্যবসায়ীর কবজায় ডিমের বাজার
মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরীর ভেতরে হিমাগারে মজুত রাখা ডিম। ছবি: খবরের কাগজ

মাদারীপুরে ডিমের পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বাড়ানো হচ্ছে ডিমের দাম। জেলার দুজন বড় ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি ডিমের বাজার। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানি কম হওয়ায় বেড়েছে ডিমের দাম।

জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের বিসিক শিল্পনগরীর ভেতরে হিমাগারে পর্যাপ্ত জায়গা খালি থাকায় মার্চ থেকে ডিম মজুত শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। গত দুই সপ্তাহে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে, সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম হালিতে বাড়ানো হয়েছে ১২-১৫ টাকা।

অভিযোগ উঠেছে, শহিদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কাজী দুই ব্যবসায়ীই পুরো ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছেন। হিমাগারে ডিম মজুত রেখে সিন্ডিকেট করে বাড়িয়েছেন দাম। হঠাৎ ডিমের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতা। বিপাকে খুচরা ব্যবসায়ীরাও। এদিকে ডিমের সংকট থাকায় এবং জেলায় কোনো ফার্ম না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের। 

এদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানান, রমজান মাসে ডিমের দাম কম থাকায়, তখন থেকেই মজুত শুরু করে ব্যবসায়ীরা। পরে সুবিধামতো আস্তে আস্তে বাজারে ডিম ছাড়েন তারা। অসাধু ডিম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাদারীপুর হিমাগারে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ ডিম মজুত রয়েছে। এক হালি ফার্মের ডিম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা। যা খুচরা পর্যায়ে পৌঁছে ৫৫-৬০ টাকায়। এ ছাড়া দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দেখা নেই বাজারে। 

মো. মহিউদ্দিন নামে শহরের কুলপদ্দি থেকে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘হঠাৎ ডিমের দাম বৃদ্ধি হয়। কারণ জিজ্ঞাসা করলে বিক্রেতারা বলেন বাজারে ডিম নেই। মাছ-মাংসের দাম বেশি, এখন ডিমেরও বেশি দাম হলে না খেয়ে থাকতে হবে। এই ডিমের বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া উচিত। প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করছি।’ 

আরেক ক্রেতা তানবির বলেন, ‘মাদারীপুরে ডিমের বাজার চড়া। হঠাৎ ডিমের হালি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমরা সাধারণ মানুষ কীভাবে ডিম কিনে খাব। এমনিতে বাজারে তরকারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বেশি।’

শহরের পুরান বাজারের খুচরা ডিম ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘ডিমের বাজারে সিন্ডিকেট চলছে। বড় বড় ব্যবসায়ী হিমাগারে ডিম মজুত রেখেছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে ডিমের দাম নিয়ে প্রতিনিয়ই ঝগড়া হচ্ছে। আমরাও চাই ডিমের দাম স্বাভাবিক থাকুক।’

আরেক খুচরা ব্যবসায়ী কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘চাহিদামতো ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিম পাওয়া খুবই কষ্ট, দুই থেকে তিন দিন পরপর এক গাড়ি ডিম আসে। তাতে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।’

এদিকে ডিম ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জেলার কোথাও ডিমের ফার্ম নেই। এই ডিম অন্য জেলা থেকে কিনে আনতে হয়। সেক্ষেত্রে খরচ বেশি এবং দামও বেশি পড়ে যায়। বর্তমানে ডিমের চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম। তাই একটু দাম বেড়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত ডিম পাওয়া গেলে, এই সংকট থাকবে না।’

মাদারীপুর কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘দুই ব্যবসায়ীর প্রায় ছয় লাখ ডিম হিমাগারে মজুত রয়েছে। তারা মার্চ মাস থেকে ডিম মজুত রেখেছেন। সুবিধামতো তারা আস্তে আস্তে ডিম বাজারে ছাড়েন। ডিম তিন থেকে সাড়ে তিন মাস হিমাগারে ভালো থাকে। এর বেশি দিন হলে ডিম পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’

মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুবোদ কুমার দাস বলেন, ‘জেলায় প্রতিদিন দেড় লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। কখনো আবার চাহিদা বাড়ে, গরমের সময় ডিম বেশি দিন হিমাগারে রাখা ঠিক নয়। এতে ডিমের গুণাগুণ নষ্ট হয়।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তরের মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘মাদারীপুরে ডিম মজুত করে রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে। দুদিন আগে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক ব্যবসায়ীকে সতর্কও করা হয়েছে। অবৈধভাবে মজুত রেখে ডিমের দাম বাড়ানোটা অযৌক্তিক। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনস্বার্থে আমরা নিয়মিত বাজারে অভিযান পরিচালনা করি। যারা আইন না মেনে ব্যবসা করবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’