ঢাকা ২ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ১৬ জুন ২০২৪

রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার পেল ২০ প্রতিষ্ঠান

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
আপডেট: ২৩ মে ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার পেল ২০ প্রতিষ্ঠান
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতে অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি, সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ছয় ক্যাটাগরির ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০২১’ প্রদান করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক/প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ প্রদান করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ ও এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা ও নীতি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে শিল্প খাতে উল্লেখযোগ্য ও দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ ধরনের সৃজনশীল উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয় নিয়মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার’, ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার’, ‘সিআইপি (শিল্প) কার্ড’, ‘প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ প্রভৃতি পুরস্কার প্রদান করে আসছে। এ ধরনের স্বীকৃতি শিল্প উদ্যোক্তাদের নিজ নিজ কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের উৎকর্ষ সাধনে অনুপ্রাণিত করবে। এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে নবীন শিল্প উদ্যোক্তারাও নিজেদের পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন এবং বিশ্বমানের শিল্প স্থাপনে উজ্জীবিত হবেন।” 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, ‘কৃষি উৎপাদনে ঈর্ষণীয় সাফল্য থাকা সত্ত্বেও আমরা কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও রপ্তানিতে অনেকটা পিছিয়ে আছি। বছরে আমাদের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয় মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের মতো। অথচ এখানে সম্ভাবনা অনেক বেশি, কৃষিপণ্য রপ্তানি করে প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।’ 

শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ছয় ক্যাটাগরির মোট ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান/উদ্যোক্তাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ছয়টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, ক্ষুদ্রশিল্প ক্যাটাগরিতে চারটি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি এবং হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি।

প্রথমবারের মতো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে জিরা আমদানি

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
প্রথমবারের মতো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে জিরা আমদানি
ছবি: খবরের কাগজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সাত টন জিরা এসেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় একটি ট্রাকে করে জিরাগুলো বন্দরে পৌঁছায়। হাইড্রোল্যান্ড সলিশন নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান এ জিরা আমদানি করেছে। তবে শুক্রবার (১৪ জুন) বন্দর ছুটি থাকায় আজ শনিবার (১৫ জুন) জিরা খালাস করা হবে বলে আশা প্রকাশ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শফিকুল ইসলাম আমদানীকৃত জিরার কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করবে।

আমদানিকারক সূত্র জানায়, প্রতি টন জিরার দাম পড়েছে ২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় ২ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার মতো। আখাউড়া স্থলবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. ছাগিরুল ইসলাম বলেন, হাইড্রোল্যান্ড সলিশন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সাত টন জিরা আমদানির জন্য এলসি খুলেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জিরা নিয়ে একটি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। প্রথমবারের মতো এই স্থলবন্দর দিয়ে দেশে জিরা আমদানি করা হলো। -বাসস

ভারতে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখনো ৮ শতাংশের বেশি

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম
আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
ভারতে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখনো ৮ শতাংশের বেশি
প্রতীকী ছবি

গত মাসে ভারতের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার নেমেছিল ৪.৭৫ শতাংশে। এটি ছিল গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু তার পরও উদ্বেগ কমল না। খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়ে দাঁড়াল ৮ শতাংশের বেশি।

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বাজার করতে গিয়ে এখনো নিম্ন এবং মধ্যবিত্তদের মুখের হাসি মিলিয়ে যাচ্ছে। তাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার কথা ভাবা উচিত দেশটির নতুন সরকারের।

গরমে ধাক্কা খাওয়া উৎপাদন এবং সরবরাহ মে মাসে খাদ্যপণ্যের দামকে বাড়িয়ে খুচরা মূল্যবৃদ্ধির মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বেশ কয়েকটি সমীক্ষা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সেই দিক থেকে কিছুটা নিশ্চিন্ত তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসা মোদি সরকার। কারণ মূল্যবৃদ্ধি টানা চার মাস ধরে অল্প অল্প করে কমে ৪ শতাংশের অনেক কাছে নেমেছে। খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রেও তা এপ্রিলের ৮.৭০% থেকে সামান্য কমে হয়েছে ৮.৬৯%। তবে সংকট যে যায়নি, সেটা এখন বুঝতে পারছে তারা। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানই জানিয়েছে, গত মাসে সবজির দাম বেড়েছে ২৭.৩৩% হারে। ডালের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ১৭.১৪%, মাছ-মাংস-ডিমের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশের ওপরে, ফলের প্রায় ৭%। কমেছে শুধু ভোজ্য তেলের দাম।

আইসিএআইয়ের পূর্বাঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্ত বলেন, ‘মধ্যবিত্ত মানুষের স্বস্তি নেই...গৃহস্থের হেঁশেলে এই খরচ সরাসরি ধাক্কা দিচ্ছে।’ তিনি বলেছেন, জ্বালানির (পেট্রল-ডিজেল) দাম না কমানো পর্যন্ত খাদ্যপণ্য নিয়ে চিন্তা বহাল থাকবে। একাংশের বক্তব্য, সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ৮০ ডলারের বেশ খানিকটা নিচে নামায় ফের দেশে তেলের দাম কমানোর দাবি ওঠে সেই কারণেই। যদিও গত বুধবার তা আবার ৮০ ডলার পেরিয়েছে।

সম্প্রতি ঋণনীতি ঘোষণায় খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাংকও। ইঙ্গিত দিয়ে বলেছে, খুচরা মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে না নামিয়ে সুদ কমাবে না। পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, ‘ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা যেকোনো মুহূর্তে তেলের দামকে অনেক বাড়াতে পারে।’-আনন্দবাজার পত্রিকা

সবার নজর ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ডের’ দিকে

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম
আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম
সবার নজর ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ডের’ দিকে
নড়াইল সদর উপজেলায় চিত্রা অ্যাগ্রো ফার্মে ২২ মনের বেশি ওজনের ষাঁড় ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’। ছবি: খবরের কাগজ

নড়াইলে এবার কোরবানির জন্য ৪ হাজার ৪৭৮টি খামারে ৫৩ হাজার ৬৩৯ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলায় অন্যতম আকর্ষণ ২২ মণের বেশি ওজনের ষাঁড় ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’।

জানা যায়, নড়াইল সদর উপজেলার তারাপুর এলাকায় প্রকৃতির মাঝে গড়ে ওঠা চিত্রা অ্যাগ্রো ফার্মে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ৭৫টি গরু। এর মধ্যে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৫টি ষাঁড়। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ২২ মণের বেশি ওজনের ষাঁড় ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’। ব্ল্যাক ডায়মন্ডের দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ও উচ্চতায় ৬ ফুটের মতো। ষাঁড়টির মালিক দাম হাঁকাচ্ছেন ৮ লাখ টাকা। এরই মধ্যে এটির দাম ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

চিত্রা অ্যাগ্রো ফার্মের কর্মী আরহাম ও আব্দুর রহমান বলেন, “খামারে অনেক গরুর মধ্যে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ সবচেয়ে বড়। এটি খুব শান্ত হলেও মাঝেমধ্যে অশান্ত হয়ে যায়। ষাঁড়টি বের করতে গেলে ১৫ থেকে ২০ জন লোক লাগে। নিয়মিত পরিচর্যায় দুই বেলায় গোসল করানো হয় ষাঁড়টিকে। নিয়ম করে তিন বেলা খাবারে দেওয়া হয় খামারির নিজস্ব জমির কাঁচা ঘাস, ভুট্টা, চিটাগুড়, খৈল, লবণ, গম ভাঙা। ব্ল্যাক ডায়মন্ডের সঙ্গে একই খামারে ৭৫টি গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। চলতি বছরে কোরবানি ঈদের জন্য ৫৫টি দেশি ষাঁড় প্রস্তুত করা হয়েছে এই খামারটিতে।”

খামার কর্তৃপক্ষর দাবি পুরো জেলায় ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ডের’ চেয়ে বড় গরু আর একটিও নেই। এই ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিনই লোকজন ভিড় করছেন খামারে। দরদাম করছেন অনেকে। কেউ কেউ ছবিও তুলছেন।

চিত্রা অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মিল্টন এইচ সিকদার বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায় পড়াশোনা শেষ করে ১৭ বছর মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি করেছি। লোভনীয় অফারকে প্রত্যাখ্যান করে নিরাপদ খাদ্য জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে স্মার্ট কৃষিতে নিজেকে নিয়োজিত করেছি।’

মিল্টন আরও বলেন, ‘গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যশোরের সাতমাইল হাট থেকে ষাঁড়টি কিনে আনি। তখন এর ওজন ছিল ৪০০ কেজির মতো। আমরা একে প্রাকৃতিকভাবে লালন-পালন করেছি, পরিমিত খাবার দিয়েছি। বেশি খাবার দিলে এর ওজন ৬ থেকে ৭ মণ বেশি হতো। ওজন অতিরিক্ত হলে ঝিমায় যেত, কিন্তু ষাঁড়টি খুবই প্রাণবন্ত। ষাঁড়টিকে আমরা হাটে তুলব না, খামার থেকেই বিক্রি করব।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘নড়াইল জেলায় এবার কোরবানির জন্য ৪ হাজার ৪৭৮টি খামারে মোট ৮৪ হাজার ৮১২ গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। আর সদরের তারাপুরে চিত্রা অ্যাগ্রো খামারটিতে অনেক বড় একটি গরু আছে। শুরু থেকে খামারটির বিষয়ে খোঁজখবর রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে খামারিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।’

সিদ্দিকুর রহমান আরও জানান, জেলায় মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় খামারিরা বড় গরু পালনে কম আগ্রহী। জেলায় ১০টি গরুর হাটে ভেটেনারি টিমের উপস্থিতিতে সুস্থ গরু পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে ভোক্তার কাছে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, জেলায় খামারি রয়েছেন ৪ হাজার ৪৭৮ জন। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ৫৩ হাজার ৬৩৯টি গবাদিপশু মোটাতাজা করেছেন। তার মধ্যে ষাঁড় ১৫ হাজার ৩৪৮টি, বলদ ২ হাজার ২৮৮৬, গাভি ৪ হাজার ৭১৫, ছাগল ৩১ হাজার ২৫৫ ও ভেড়া ৩৫টি। জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৩৮ হাজার ৬৭৬টি। পশু চাহিদার তুলনায় উদ্বৃত্ত থাকছে ১৪ হাজার ৯৬৩টি, যা পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে পাঠানো হবে।

চুয়াডাঙ্গায় দেড় হাজার কোটি টাকার পশু বেচাকেনার সম্ভাবনা

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:১৫ পিএম
আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ০৩:১৫ পিএম
চুয়াডাঙ্গায় দেড় হাজার কোটি টাকার পশু বেচাকেনার সম্ভাবনা
চুয়াডাঙ্গায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশুর হাটগুলো। ছবি: খবরের কাগজ

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশুর হাটগুলো। পশু কেনাবেচায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। গত বছর থেকে এবার পশুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে দাবি ক্রেতাদের।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে গেছে, জেলায় প্রায় ১ হাজার ৬১ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হতে পারে। জেলায় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি চাহিদার বিপরীতে পশু রয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি। জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১০ হাজার ৯১৭টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২ হাজার ৬৭৬টি, আলমডাঙ্গায় ৩ হাজার ৫৯৯, দামুড়হুদায় ১ হাজার ৯২৮ ও জীবননগরে ২ হাজার ৭১৪টি। এসব খামারে কোরবানি উপলক্ষে ২ লাখ ১১ হাজার ৮৭৯টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫৪ হাজার ৮৯১টি, মহিষ ১৬০টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬টি, ভেড়া ৩ হাজার ৯২টি এবং অন্যান্য ৭টি পশু।

এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় ২ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। তবে চাহিদার সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি। যা থেকে প্রায় ৫২ হাজার ৯৫১টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৫৪ হাজার ৮১৯টি, মহিষ ১৬০, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ ও ভেড়া ৩ হাজার ৯২৫টি।

চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে আলমডাঙ্গায়, ৭৯ হাজার ৭০৫টি। এ উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৫৯ হাজার ৭৭৯টি। যা থেকে ১৯ হাজার ৯২৬টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদরে ৪১ হাজার ৬২৭টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার ২২০টি। অবিক্রীত থাকবে প্রায় ১০ হাজার ৪০৭টি পশু। দামুড়হুদায় ৪২ হাজার ৭৮টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার ৫৫৯টি। যা থেকে উদ্বৃত্ত থাকবে ১০ হাজার ৫১৯টি পশু এবং জীবননগরে ৪৮ হাজার ৩৯৭টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩৬ হাজার ২৯৮টি। অবিক্রীত থাকবে প্রায় ১২ হাজার ৯৯টি পশু।
চুয়াডাঙ্গায় মোট ১১টি পশুহাটের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট বসে ডুগডুগি ও শিয়ালমারিতে। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এই দুই হাটে কয়েক হাজার পশু বেচাকেনা হয়। এসব হাটে দেশীয় প্রজাতির বহুসংখ্যক গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল ওঠে। কিন্তু এবার কোরবানির ঈদ সামনে রেখে হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গরুর খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

জেলার অন্যতম দামুড়হুদার ডুগডুগি পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা এসেছেন হাটে। হাটে পর্যাপ্তসংখ্যক পশু থাকলেও বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশ কম। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্তরা এবার ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু ক্রয়ের দিকে। যে কারণে এবারের কোরবানিতে বড় সাইজের গরুর চাহিদা একটু কম। তবে মাঝারি সাইজের গরু ও ছাগলের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে সাধ্যের মধ্যে না থাকায় সাধারণ ক্রেতারা এবার ছোট গরু ও ছাগল কিনতে বেশি আগ্রহী।

স্থানীয় খামারিরা বলছেন, পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় পালনে খরচ অনেক বেড়েছে। তাই কোরবানির পশুর দাম এবার বেশি হবে।

ডুগডুগি পশুর হাটে গরু কিনতে আসা নোমান নামের এক ক্রেতা বলেন, প্রতি ঈদে এই হাট থেকেই পশু কিনে কোরবানি দেওয়া হয়। এবার তুলনামূলকভাবে গরুর দাম অনেকটাই বেশি। এ জন্য খাসি কিনতে হচ্ছে।

বগুড়া থেকে আসা ব্যাপারী সৈয়দ আলী জানান, ‘পশুখাদ্যের অতিরিক্ত দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি এই হাটে ২৪টি গরু নিয়ে এসেছি। অনেকেই দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। তবে যাদের সামর্থ্য আছে তারা গরু কিনছেন। গত সোমবারে আমার এ হাটে ৯টি গরু বিক্রি হয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শামীমুজ্জামান শামীম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলার হাটগুলোতে প্রায় ১ হাজার ৬১ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হওয়ার আশা করছি। খামারিরা যাতে লাভবান হতে পারেন, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জেলার চারটি বড় পশুহাটে আমাদের পক্ষ থেকে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম থাকবে। এখান থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই যেকোনো পরামর্শ নিতে পারবেন।’

নিত্যপণ্যের দাম চড়া, বেচাকেনায় ভাটা

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ১১:২৭ এএম
আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪, ১১:২৭ এএম
নিত্যপণ্যের দাম চড়া, বেচাকেনায় ভাটা
ছবি : সংগৃহীত

অন্য বছরে বসে থাকার সময় ছিল না। কাস্টমার চাপাচাপি করত। অথচ এবার কোরবানি ঈদে ভিন্ন চিত্র। কাস্টমার নেই। বিক্রিও নেই। সব জিনিসের দাম বাড়ার কারণে বিক্রি কমে গেছে। এভাবে কোরবানির ঈদের বেচাকেনার ব্যাপারে হতাশার কথা জানান কারওয়ান বাজারের লক্ষ্মীপুর জেনারেল স্টোরের কামরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ঈদের আগে আদা ও রসুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়ে গেছে। শুধু এই খুচরা বিক্রেতাই নন, বিভিন্ন বাজারের অন্যান্য বিক্রেতাও বলছেন, ঈদের আগে জিরা, এলাচিসহ বিভিন্ন মসলার দাম বেড়ে গেছে। কাস্টমাররা ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছেন। এ জন্যও বিক্রি কমে গেছে। তবে আগের মতোই পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ডিমের ডজন ১৫৫-১৬০ টাকা। চাহিদা কমায় আলু, পেঁপেসহ অন্যান্য সবজির দাম কিছুটা কমেছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বিক্রি কমেছে মসলার

ঈদুল আজহা এলে বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলারসংকটের কারণে বিভিন্ন মসলার দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। তাই এবার ঈদে বেচা-বিক্রি একেবারে কম বলে বিক্রেতারা জানান। 

তারা জানান, জিরা ৮০০ টাকা কেজি, এলাচির কেজি ৩৪০০ থেকে ৪০০০ হাজার টাকা, গোলমরিচ ১১০০, লবঙ্গ ১৬০০ টাকা কেজি, কিশমিশ ৫৪০ টাকা, কাজু বাদাম ১১৫০ টাকা, কাঠবাদাম ১৩৫০ টাকা। বাজারের সব মসলার দামই বেশি। এ জন্য কেউ বেশি করে কেনেন না।

আব্দুস সালাম নামে এক বিক্রেতা বলেন, কাস্টমার আগের মতো আসছেন না। সামনে ঈদ। অনেকেই বাড়ি চলে যাচ্ছেন। কাজেই ঢাকাতে বিক্রিও কমে গেছে। 

অন্য খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন, গত বছরের চেয়ে দাম বেড়ে গেছে। তাই এবারে ঈদে বিক্রি কম। গত মাসে ডলারের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু মসলার দাম বেড়ে গেছে। আগের মতো বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭ টাকা ও পাঁচ লিটার ৭৯০-৮১০ টাকা, ২ কেজি আটা ১১০-১৩০ টাকা, বেসন ১২০, খোলা চিনি ১৩০, প্যাকেট চিনি ১৩৫ টাকা, সেমাই প্যাকেট ৪৫-৫০ টাকা।

ঈদের আগে আগে পেঁয়াজের দামও বেড়ে গেছে। গত বছরের এই সময়ে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকার নিচে থাকলেও এবার ৯০ টাকায় উঠে গেছে। ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও সেই ঘোষণার কোনো প্রভাব দেখা যায় না বাজারে। দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও মোকামের ব্যাপারীরা ইচ্ছামতো দাম আদায় করছেন। ৮৫-৯০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। পাইকারিতে ৭৩-৭৭ টাকা বলে বিক্রেতারা জানান।

পেঁয়াজের দামের ব্যাপারে টাউন হল বাজারের শফিকুল খবরের কাগজকে বলেন, মোকামেই বেশি দাম। এ জন্য আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। কয়েক দিন ধরে ৮৫-৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আদা ৩২০-৩৪০ টাকা। রসুনের দামও চড়া। কারওয়ান বাজারের এরশাদ বলেন, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম ঈদের আগে বেশি। ফরিদপুরের পেঁয়াজের কেজি ৮৫ টাকা, আদা ৩২০ ও রসুন ২২০-২৫০ টাকা কেজি। 

সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কমেছে কেজিতে ৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা জানান, ৫৫-৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। টাউন হল বাজারের রফিক বলেন,  সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা কমে বর্তমানে ৫৫ কেজি। গোল লাল আলুর দাম একটু বেশি ৬০ টাকা কেজি।

স্থিতিশীল মাংসের দাম

ঈদ ঘনিয়ে আসায় পোলট্রি মুরগির দাম বাড়েনি। আগের মতোই  ১৯০-২০০ কেজি বিক্রি ও সোনালির দাম ৩০০-৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়। দেশি মুরগিও কমে ৬৫০ টাকা কেজিতে নেমেছে। ডিম বিভিন্ন বাজারে ১৫৫-১৬০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতোই গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। 

কমেছে চালের দাম 

সারা দেশেই বোরো ধান উঠে গেছে। এর প্রভাবে ঢাকায় চালের দাম কমেছে। আগের সপ্তাহের ৬৮-৭০ টাকার মিনিকেট বর্তমানে ৬৬-৬৭ টাকা, ৫৩-৫৫ টাকার আটাশ চাল ৫২-৫৪ টাকা ও মোটা চাল ৫২ টাকা কেজি। 

কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা হাজি মাঈন উদ্দিনসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, ধান উঠায় কমছে চালের দাম। ঈদে পোলাও চালের চাহিদাও বাড়ে। তবে এবার সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না বিক্রেতারা জানান। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোলাওয়ের প্যাকেট চাল ১৫০-১৭০ ও বস্তার চাল ১২০-১৪০ টাকা কেজি।

মাছের দামও কমতির দিকে

ঈদে মানুষ ঢাকা ছাড়তে থাকায় চাহিদা কমে গেছে মাছেরও। কেজিতে গড়ে ৩০-৫০ টাকা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানান। বর্তমানে রুই ও কাতল ৩২০-৫৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৫৫০-৮০০ টাকা। তবে নদীর চিংড়ি ১২০০-১৬০০ টাকা। পাবদা ৫০০-৭০০, পাঙাশ ২০০, তেলাপিয়া ২০০-২৫০, শিং ও মাগুর ৪০০-৬০০ টাকা কেজি।

পড়েছে সবজির দাম

গত সপ্তাহে পেঁপে ৪০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল ৫০ টাকা বিক্রি হতে দেখা যায়। প্রতি কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। টমেটোর কেজি ৪০-৫০ টাকা। করলা ৪০-৫০, ঢ্যাঁড়শ ৩০-৪০, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০, ঝিঙে ও ধুন্দুল ৪০-৫০, শজনে ডাঁটা ৮০-১২০, পটল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা। কাঁচা মরিচ কেজি ২২০-২৩০ টাকা কেজি। তবে শসার কেজি ১০ টাকা বেড়ে ৪০-৬০ টাকা থেকে ৬০-৮০ টাকায় উঠেছে।