সংক্ষিপ্ত সূচিতে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৪ সালের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি থাকবে শিখনকালীন মূল্যায়ন।
প্রত্যেক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ মোট নম্বর ১০০। শিখনকালীন মূল্যায়নের জন্য বরাদ্দ মোট নম্বর ৩০। একজন শিক্ষার্থীর একটি বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ওই বিষয়ের শিখনকালীন মূল্যায়নে তার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে লিখিত বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ৭০ শতাংশ যোগ করে ওই বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল বা গ্রেড নির্ণয় করতে হবে।
কোনো পরীক্ষার্থী যদি ৩ বিষয়ে ডি গ্রেড পায় তাহলে তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে না। তবে ২০২৪ সালে বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চাইলে তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তরণের সুযোগ দিতে পারবে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রকাশ করে।
সেখানে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষার জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, প্রশ্নের ধারা ও মান বণ্টন সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ধারার মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিখনকালীন এবং বার্ষিক পরীক্ষা পরিমার্জিত মূল্যায়ন নির্দেশনার আলোকে অনুষ্ঠিত হবে। তবে মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষার বিশেষায়িত বিষয়গুলোর এবং দশম শ্রেণির মূল্যায়ন কার্যক্রম পূর্বের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হবে।
এতে আরও বলা হয়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২-এর আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে। মূল্যায়ন কার্যক্রম শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব তত্ত্বাবধানে শিক্ষকদের দ্বারা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং প্রদত্ত প্রশ্নপত্রের নমুনা অনুসরণ করে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন। তবে কোনোক্রমেই নমুনা প্রশ্নপত্র হুবহু ব্যবহার করা যাবে না। প্রণীত প্রশ্নের সাহায্যে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন।
শিখনকালীন মূল্যায়নের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকে নির্দেশিত একক কাজ, জোড়ায় কাজ, পোস্টার প্রেজেন্টেশনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শিখনকালীন মূল্যায়নের ‘মূল্যায়ন আইটেম’ হিসেবে বিবেচিত হবে। শিখনকালীন মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির আওতাধীন শিখনকালীন মূল্যায়নের যেসব কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং যেগুলো সামনে সম্পন্ন হবে সেগুলোর রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। শিখনকালীন মূল্যায়নের যাবতীয় কার্যক্রম বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর আগেই সম্পন্ন করতে হবে।
অপরদিকে বার্ষিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষার মোট সময় হবে ৩ ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের নির্দেশিকা, প্রশ্নের কাঠামো, মানবণ্টন ‘বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনায়’ বিস্তারিত এনসিটিবির ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। লিখিত পরীক্ষার উত্তর লেখার জন্য আগের মতো বিদ্যালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় খাতা সরবরাহ করতে হবে।
থাকছে গ্রেডিং পদ্ধতি
পরীক্ষায় ৮০-১০০ নম্বর পেলে গ্রেড পয়েন্ট ৫ (এ+), ৭০-৭৯ নম্বর পেলে গ্রেড পয়েন্ট ৪ (এ), ৬০-৬৯ পেলে গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫ (এ-), ৫০ থেকে ৫৯ পেলে গ্রেড ৩ (বি), ৪০-৪৯ পেলে গ্রেড ২ (সি), ৩৩-৩৯ নম্বর পেলে গ্রেড ১ (ডি) পেয়েছে বলে বিবেচিত হবে। কোনো শিক্ষার্থী যদি একটি বিষয়ে ডি পায়, তাহলে তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হিসেবে ধরা হবে। তবে কোনো শিক্ষার্থী ৩ বা ততোধিক বিষয়ে ডি পেলে সে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হতে পারবে না। তবে ২০২৪ সালে বিশেষ বিবেচনায় প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে উত্তীর্ণের সুযোগ দিতে পারবে।