ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪

ঈদ আয়োজনে বিশ্বরঙ !

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
ঈদ আয়োজনে বিশ্বরঙ !

সুদীর্ঘ ২৯ বছর ধরে “বিশ্বরঙ” এর পোশাক মানেই নতুনত্ব এবং ঐতিহ্যগত আভিজাত্যের গর্বিত উপস্থাপনা। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ উৎসবের এই আনন্দের রঙে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে বরাবরের মতোই দেশীয় কাপড় ও উপকরণ ব্যাবহার করে “বিশ্বরঙ” এবারেও ঈদ-উল-ফিতরের আয়োজনে পোশাকে ট্রেন্ডি এবং ট্রেডিশনাল লুকের নান্দনিক উপস্থাপন করেছে, কালের আবর্তে প্রায় হারিয়ে যাওয়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে তৈরি বাহারি রঙের ঐতিহ্যবাহী পোশাক এ ব্যাবহৃত নকশার অনুপ্রেরণায়।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিজ হাতে তৈরি পোশাক দিনে দিনে প্রায় বিলুপ্তির পথে, তাই আমাদের এবারের আয়োজন আদিবাসীদের নিজস্ব সৃষ্টিশীলতাকে আমাদের নাগরিক জীবনে পৌছে দেয়ার অভিপ্রায় মাত্র।  

স্বতন্ত্রতায় বিশ্বাসী বিশ্বরঙ সুপ্রিয় ক্রেতা সাধারণের উৎসব আনন্দে অনন্যা মাত্রা যোগ করার প্রয়াসে প্রতিবারের মত এবারেও নতুনত্ব ও ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। “বিশ্বরঙ” এর পোশাক মানেই নতুনত্ব এবং ঐতিহ্যগত আভিজাত্যেও গর্বিত উপস্থাপনা। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি, ঈদ উৎসবের রঙে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নতুন বিশেষ সমারহ নিয়ে সাজিয়েছে।

বরাবরের মতোই দেশীয় কাপড়, উপকরণ ব্যাবহার করে “বিশ্বরঙ”এবারেও ঈদ-উল-ফিতর আয়োজনে পোশাকে ট্রেন্ডি এবং ট্রেডিশনাল লুকের নান্দনিক উপস্থাপন করেছে। দেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আরামদায়ক কাপড় যেমন সুতি, ধুপিয়ান সিল্ক, তসর সিল্ক, লিলেন, কাতান, জ্যাকার্ড কাপড় ব্যবহার করেছে, রঙের ব্যবহারেও কনট্রাস্ট কালারের পাশাপাশি রঙে ও ম্যাচিউরড টোন এর পরিমিত ব্যবহার লক্ষ্যনীয়।

কাজের মাধ্যম হিসাবে রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারী, কম্পিউটার এমব্রয়ডারী, হ্যান্ড এমব্রয়ডারী, কারচুপি, নকশী কাঁথা জারদৌসীসহ মিশ্র মাধ্যমের নিজস্ব বিভিন্ন কৌশল।  এবারের ঈদ আয়োজনে “বিশ্বরঙ” প্রতিটি শ্রেণীর মানুষের জন্যই ভিন্ন কিছু যোগ করেছে।

শিশুদের  জন্য এনেছে নান্দনিক সব কালেকশন সেই সাথে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নারীদের জন্য আছে ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়া।

শোরুমে গিয়ে কেনাকাটার সুযোগের পাশাপাশি যে কেউ ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবেন।

www.bishworang.com.bd এই ওয়েব পেইজটি এবং BISHWORANG ফেইজবুক পেইজের মাধ্যমে অনলাইনে ঘরে বসেই কিনতে পারেন আপনার পছন্দের পোশাকটি ।

কলি  

 

ঈদে ভিনদেশি স্বাদ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
ঈদে ভিনদেশি স্বাদ

কোরবানির ঈদ মানে মাংসের বাহারি আইটেম। বিশেষ দিনে মাংস রান্না হয় বিভিন্ন স্টাইলে। বিদেশি জনপ্রিয় ও সুস্বাদু কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন শেফ ফারহানা কুনতুম

মাটন রোগান জোশ

উপকরণ
মাটন ১ কেজি হাড়সহ, সরিষার তেল ৫ টেবিল চামচ, দারুচিনি ২ টুকরা, সবুজ এলাচ ৪টি, কালো এলাচ ২টি, লং ৪টি, তেজপাতা ২টি, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, জিরা ১ টেবিল চামচ, মৌরি ১ চা চামচ, টক দই ১ কাপ, কাশ্মীরি চিলি ২ টেবিল চামচ, লবণ ২ চা চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা পেস্ট ১ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, কাছুরি মেথি ১ চা চামচ। 

প্রণালি
প্যান গরম করে দারুচিনি, সবুজ এলাচ, কালো এলাচ, লং এবং তেজপাতা দিয়ে একটু ভেজে নিন। মাটন দিয়ে হাই হিটে ১০ মিনিট ভাজুন। একটি বাটিতে টক দই, আদা-রসুন পেস্ট, ধনিয়া, জিরা, কাশ্মীরি চিলি, মৌরি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে নিন। ভেজে নেওয়া মাটনে এই মিশ্রণটি দিয়ে কষিয়ে নিন। এইবার লবণ ও পানি দিয়ে পাত্রটি ঢেকে দিয়ে ২ ঘণ্টা রান্না করুন। মাটন হয়ে গেলে গরম মসলা, ঘি, কাছুরি মেথি দিয়ে নামিয়ে নিন। হয়ে গেল মজাদার মাটন রোগান জোশ। 

মাটন স্টাফেন পেপার 

উপকরণ 
মাটন কিমা ৫০০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি বড় ১টি, রসুন ৪ কোয়া (ফাইন চপ), টমেটো পেস্ট ২ টেবিল চামচ, অরিগানো ১ চা চামচ, ব্ল্যাক পেপার গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, বেল পেপার ৫ পিস, লবণ ১ টেবিল চামচ, মোজারেলা চিজ ১ কাপ, পার্সলে ১ চা চামচ। 

প্রণালি
প্রথমে বেল পেপার হাফ করে কেটে নিন। পেঁয়াজ চপ করে নেবেন, রসুন ফাইন চপ করে নিন। চুলায় একটি ফ্রাই প্যানে অলিভ অয়েল দিয়ে দিন। তেলটা গরম হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ৩ মিনিট ভেজে নিন এরপর রসুন কুচি দিয়ে আরও ৩ মিনিট ভেজে নিন। এরপর প্যানে মাটন কিমা দিয়ে ১০ মিনিট ভেজে নিন। টমেটো পেস্ট, ব্ল্যাক পেপার, অরিগানো, পার্সলে ও লবণ দিয়ে কসিয়ে নিন। পরে চিজ দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন। রান্না করা মাটন বেল পেপারে ঢুকিয়ে নিন। উপরে চিজ ছড়িয়ে দিন। ওভেনে ২০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ২০ মিনিট বেইক করে নিন। তৈরি হয়ে গেলে মজাদার মাটন স্টাফেন পেপার।

বিফ পট রোস্ট উইথ টমেটো

উপকরণ 
আস্ত বিফ ৫০০ গ্রাম, ছোট পেঁয়াজ ১০টি, রসুন ৪ কোয়া (ফাইন চপ), ব্ল্যাক পেপার ১ চা চামচ, লবণ ২ চা চামচ, সরিষা পেস্ট ১ চা চামচ, অলিভ অয়েল ৩ টেবিল চামচ, থাইম ১ চা চামচ, রোজ মেরি ১ চা চামচ, টমেটো কাটা ৫ পিস, বরবটি ৫ পিস, পার্সলে ১ চা চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, টমেটো পেস্ট ২ টেবিল চামচ। 

প্রণালি 
আস্ত বিফ টুকরাটি ব্ল্যাক পেপার, লবণ, লেবুর রস, সরিষা পেস্ট দিয়ে ম্যারিনেট করে ৩০ মিনিট রেস্টে রেখে দিন। প্যানে তেল দিয়ে গরম করে ম্যারিনেট করা বিফ দুই সাইড ভালোভাবে ফ্রাই করে নিন। বিফ ফ্রাই হয়ে গেলে উঠিয়ে নিন। ওই পাত্রে রসুন কুচি ভেজে নিন। থাইম, রোজ মেরি, টমেটো পেস্ট এবং পানি দিয়ে ফুটান এবং এর মধ্যে ফ্রাই করা বিফ দিয়ে ২ ঘণ্টা অল্প আচে রান্না করুন। বিফ সেদ্ধ হলে অন্য একটি প্যানে টমেটো, বরবটি এবং পেঁয়াজ সেল ফ্রাই করে নিন। একসঙ্গে সাজিয়ে পরিবেশন করুন বিফ পট রোস্ট উইথ টমেটো, বিনস অ্যান্ড অনিয়ন। 

মিডেল ইস্টার্ন বিফ স্টু

উপকরণ
বিফ ৫০০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি বড় ১টি, আদা পেস্ট ১ টেবিল চামচ, রসুন পেস্ট ১ টেবিল চামচ, গাজর এবং আলু ২টা কিউব কাট, লবণ ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পাপরিকা ১ চা চামচ, টমেটো পেস্ট ২ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টি, কর্ন ফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, গরম মসলা ১ টেবিল চামচ, এলাচ ৩টি, লং ৮টি।
 
প্রণালি
একটি প্যানে তেল দিয়ে গরম করে তার মধ্যে তেজপাতা, এলাচ, লং দিয়ে ভেজে নিন। এরপর এর মধ্যে বিফ দিয়ে ভাজুন ২০ মিনিট। এবার পেঁয়াজ কুচি, আদা, রসুন পেস্ট, পাপরিকা, টমেটো পেস্ট, লবণ দিয়ে পাঁচ মিনিট হাই হিটে ভেজে নিন। এর মধ্যে আলু এবং গাজরের টুকরাগুলো দিয়ে পানি দিয়ে ঢেকে রাখুন ২ ঘণ্টা। এরপর কর্নফ্লাওয়ার পানিতে গুলিয়ে মাংসের মধ্যে দিয়ে ৩ মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন মিডেল ইস্টার্ন বিফ স্টু।

কলি

 

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
কোরবানির মাংস সংরক্ষণ

কোরবানির মাংস বিতরণ, অতিথিদের আপ্যায়ন এবং নিজেদের খাওয়া-দাওয়ার পর যে মাংসটা থেকে যায় সেটা তাজা ও টাটকা রাখাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে মাংস সংরক্ষণ না করলে মাংসের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। আর্দ্রতা, আলো, তাপ, জীবাণু, অক্সিজেন প্রভৃতির প্রভাবে পচনের হাত থেকে সঠিক উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা উচিত। তা না হলে এসব মাংস তাজা, স্বাস্থ্যকর ও খাওয়ার উপযোগী থাকে না। কোরবানির মাংস সংরক্ষণ সম্পর্কে লিখেছেন সানজিদা রিমু 

ফ্রিজে রেখে 
মাংস সংরক্ষণের জন্য অবশ্যই ফ্রিজ পরিষ্কার করে নিতে হবে। রাখার আগে মাংস টুকরো করে কেটে পরিষ্কার করে, পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে চর্বি ফেলে দিতে হবে মাংস থেকে। তারপর পলিথিনের ব্যাগে অথবা ফয়েল পেপারে মুড়ে ঠাণ্ডা তাপে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে হবে। এভাবে হিমায়িত মাংস ৮-১২ মাস পর্যন্ত রাখা যায়। 

স্মোকিং পদ্ধতিতে
এটি বেশ পুরোনো একটি পদ্ধতি। যেখানে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় মাংস পোড়ানো হয়। এ পদ্ধতিতে দুটি উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা হয়। একটি হলো হট স্মোকিং আর অন্যটি হলো কোল্ড স্মোকিং। হট স্মোকিংয়ে ৩০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পোড়ানো হয়। কোল্ড স্মোকিং পদ্ধতিতে ১২-২৪ ঘণ্টা স্মোকিং আগুনে ৮৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পোড়াতে হয়। তাপের ধোঁয়ার ফলে মাংসের জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। এই পদ্ধতি সাধারণত মাংস ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে থাকেন।

জ্বাল দিয়ে সংরক্ষণ
আগে যখন ঘরে ঘরে ফ্রিজ ছিল না, তখন বড় বড় পাতিলে জ্বাল দিয়ে রাখতেন কোরবানির মাংস। লবণ ও হলুদ দিয়ে জ্বাল হতো। জ্বাল দিয়ে সংরক্ষণ করতে চাইলে মাংসের চর্বি রেখে দিতে হয়। এই পদ্ধতিতে মাংস রাখলে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস ভালো থাকে। তবে প্রতিদিন নিয়ম করে আবহাওয়া বুঝে দু-একবার জ্বাল দিতে হয়।

রান্না করে সংরক্ষণ
বর্তমানের ব্যস্ত জীবনে অনেকেই একবারে রান্না করে ফ্রিজে মাংস রেখে দিতে চান। রান্না করা মাংস ফ্রিজে রাখতে হলে পৃথক পৃথক পাত্রে রাখতে হবে। যখন প্রয়োজন হবে তখন একটি পাত্র বের করলেই চলবে। এই মাংস ফ্রিজে দুই থেকে তিন দিন এবং ডিপ ফ্রিজে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। চপ, কাটলেট, কাবাব ফ্রিজে তিন থেকে চার দিন এবং ডিপ ফ্রিজে তিন থেকে চার মাস ভালো থাকে। তবে মাংসে প্রায়ই টিনিয়া সেলেনিয়াম নামক পরজীবী সংক্রমণ হয়। তাই মাংস কোটা, প্যাকেট করা এবং সংরক্ষণে সতর্কতা প্রয়োজন।

শুঁটকি করে সংরক্ষণ
মাছের মতো মাংসও শুঁটকি করে সংরক্ষণ করা যায়। গ্রামাঞ্চলে মাংস ধুয়ে হলুদ মেখে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে। এই পদ্ধতিতে মাংস সংরক্ষণ খুবই কম খরচে করা যায়। এক্ষেত্রে মাংসের চর্বি ফেলে দিয়ে পাতলা করে কেটে শুকিয়ে নিলেই হয়। 

লবণ পদ্ধতিতে
এই পদ্ধতিতে লবণ, কিউরিং লবণ, মসলা এবং ব্রাউন চিনি অথবা খাবার লবণ, সোডিয়াম নাইট্রেট ও সোডিয়াম ল্যাকটেট দিয়ে মাংস মেখে ২৪ ঘণ্টা রেখে ফ্রিজে ১ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এই পদ্ধতি টিএফডিএ অনুমোদিত। সল্টিং পদ্ধতিতে মাংস সবচেয়ে বেশি টাটকা এবং পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়ে থাকে। মাংসের অক্সিডেটিভ ও মাইক্রোবিয়াল পচন প্রতিরোধ এই পদ্ধতিতে সবচেয়ে ভালো হয়।

মাংসের আচার
আম, জলপাই কিংবা বরইয়ের মতো মাংসেও আচার তৈরি করে সংরক্ষণ করা যায়। হাড়-চর্বি ছাড়া মাংস ছোট ছোট করে কেটে আচার বানিয়ে ফ্রিজের বাইরেও সংরক্ষণ করা যায় বছর খানেক। তেলের নিচে ডুবে থাকলে এই আচার একদমই নষ্ট হবে না। মাঝে মধ্যে রোদে দিলেই অনেক দিন ভালো থাকবে।

মাংস ভেজে সংরক্ষণ
মাংস কেটে পরিষ্কার করে আদা বাটা, রসুন বাটা পেঁয়াজ বাটা দিয়ে মাংসটি কিছুক্ষণ ম্যারিনেট করে রাখতে হবে। এরপর গরম ডুবো তেলে মসলাসহ মাংসগুলো ভেজে নিয়ে তেল ছেঁকে তারপর মাংস সংরক্ষণ করা যায়।

কলি

ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কার

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কার
মডেল: রাইসা,ছবি: শরিফ মাহমুদ

ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কার করা খুবই জরুরি। ঈদের দিন বিভিন্ন রান্নার আয়োজন করা হয় থাকে। সেগুলো কিছু খাওয়া হয়, কিছু তুলে রাখা হয়। ফ্রিজ ঠিকমতো পরিষ্কার না থাকলে খাবারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। অনেক সময় পুরোনো হয়ে যাওয়া খাবার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে। কোরবানির তাজা মাংস সংরক্ষণের পরও অনেক সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রবল হয়ে দেখা দিতে পারে। তখন মাংস খেলে আপনার শরীরে নানা রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কীভাবে পরিষ্কার করতে পারেন সে সম্পর্কে জানাচ্ছেন তামান্না মুন


ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে পুরোনো খাবারগুলো খেয়ে নিতে হবে। যদি সম্ভব না হয় তাহলে ফ্রিজ পরিষ্কারের দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে খাবারগুলো বাইরে বের করে রাখতে হবে।

ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করতে হবে। নাহলে ফ্রিজের বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকলে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা থাকলে খুব সহজেই ফ্রিজ থেকে বরফ আলাদা হয়ে যাবে। তখন বরফ তুলতে কষ্ট হবে না। এরপর ফ্রিজের ভেতর থেকে সেলফ বা তাকগুলো বের করে নিতে হবে এবং ড্রয়ারগুলো খুলে ফেলতে হবে। তারপর ডিটারজেন্ট মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। একটি ব্রাশ দিয়ে ফ্রিজের রাবারগুলো ও কোনাগুলো ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নেবেন। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে খেয়াল রাখবেন তাক, ড্রয়ারগুলো যেন শুকনো থাকে। ভেজা অবস্থায় তাক, ড্রয়ারগুলো ফ্রিজের ভেতর রাখবেন না।

দরকার হলে তোয়ালে ভিজিয়ে পুরো ফ্রিজ মুছে নিয়ে তাক, ড্রয়ারগুলো ফ্রিজে রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ফ্রিজ চালু থাকলেও খাবার ঠাণ্ডা হয় না। সেক্ষেত্রে প্রথমেই লক্ষ করতে হবে টেম্পারেচার সুইচ প্রয়োজন মতো বাড়ানো আছে কি না। মাঝে মাঝে দরজায় লাগানো প্লাস্টিকের প্যাডে ফাটল ধরলেও এ সমস্যা হতে পারে। প্রয়োজনে সার্ভিসিং করে নিতে হবে।

এ ছাড়া যাদের ম্যানুয়াল ডিফ্রস্ট ফ্রিজ রয়েছে, তাদের এটি পর্যায়ক্রমে ডিফ্রস্ট করা প্রয়োজন। কারণ বরফ জমা হওয়া ফ্রিজের শীতল করার ক্ষমতাকে হ্রাস করে। তাই ফ্রিজে বরফ জমে গেলে, তা নির্দিষ্ট সময় পরপর গলিয়ে ফেলা প্রয়োজন।

যদি আপনার ফ্রিজে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে তাহলে পানিতে বেকিং সোডা ও লেবুর রস মিশিয়ে মুছে নিতে পারেন। এ ছাড়া ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতে এক কোণে খাবার সোডা রাখতে পারেন। সামান্য ভিনেগার এক টুকরো কাপড়ে মেখে ফ্রিজে রেখে দিলে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন।

মাংস সংরক্ষণের সময় চর্বি ও ময়লা ফেলে ফ্রিজে মাংস রাখবেন। প্রতিদিনের জন্য আলাদা আলাদা করে ভাগ করে রাখতে পারেন। এতে খুঁজে পেতে সহজ হবে। রান্না করার অন্তত ১৫ মিনিট আগে ডিপ ফ্রিজ থেকে মাংস বের করে নেবেন।

কলি

আমরা ট্রেন্ড অনুযায়ী পোশাকে নতুনত্ব নিয়ে আসি

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
আমরা ট্রেন্ড অনুযায়ী পোশাকে নতুনত্ব নিয়ে আসি
সারা লাইফস্টাইলের পরিচালক শরীফুন রেবা ( ছবি শরিফ মাহমুদ)

দেশের অন্যতম ফ্যাশন হাউস সারা লাইফস্টাইলের পরিচালক শরীফুন রেবা। দীর্ঘ সময়ের পথচলায় ক্রেতাদের মন জয় করে বর্তমানে সারা হয়ে উঠেছে দেশের  প্রথম সারির ফ্যাশন হাউস। সম্প্রতি এক আড্ডায় সারা লাইফস্টাইলের পরিচালক আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন নিজের ফ্যাশন ভাবনা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা। সেই আড্ডার চুম্বকীয় অংশ তুলে ধরেছেন ফিচার সম্পাদক খালেদ আহমেদ

দেশীয় পোশাক বিভিন্ন বিদেশি ফ্যাশনের মিশ্রণ নতুন কিছু নয়। আপনি এই মিশ্রণকে কীভাবে দেখেন?
আমি ব্যাপারটা ইতিবাচকভাবে দেখি, আসলে কাস্টমাইজ করেই তো ফ্যাশন স্টাইল। আমাদের দেশের মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন, সব ধরনের কাপড় পরে, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম একই ধরনের স্টাইল। এখন দেখি প্রতি ধাপে ধাপে ট্রেন্ড পরিবর্তন হচ্ছে, এগুলো আমরা বিশ্ব ফ্যাশন থেকেই নিচ্ছি, দেশ আলাদা হলে, বিশ্ব কিন্তু একই, সবাই সবাইকে অনুকরণ করছে, সবাই সবারটা দেখছে, সেটা আবার ভাগ করে নিচ্ছে। ফ্যাশন অনেক আগে থেকেই মিশ্রণ হচ্ছে, এটা নতুন কিছু না। তবে এখন ফ্যাশন সম্পর্কে মানুষ জানে এবং খবর রাখে। এখান থেকে আমরা নতুন নতুন আইডিয়া পাচ্ছি, যা আমাদের জন্য ভালো হচ্ছে। তাই দেশীয় পোশাক বিভিন্ন বিদেশি ফ্যাশনের মিশ্রণটি আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি।

বাংলাদেশের পোশাক সেক্টরে ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়ের বড় একটা বাজার আছে। এ বিষয় আপনার মতামত কি?
মুক্তবাজার অর্থনীতিতে পৃথিবীর সব দেশেই এখন আমাদের পোশাক যাচ্ছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের তৈরি পোশাক কিংবা কাপড় আসছে।

আমি এটা কোনোভাবেই খারাপ ভাবে দেখি না, একটা পরিবারের পাঁচজন সদস্য থাকলে, একেক জনের পছন্দ একেক রকমের, তারা যে কোনো জিনিস পছন্দ করতে পারে সেটা তার ব্যাপার। কিছু মানুষ আছে সে দেশীয় পরতে চায়, আবার কেউ যদি ভারতীয় পোশাক পরতে চায় এটা একান্ত তাদের ইচ্ছা। আমি অনেক ক্রেতাকে জানি যারা কখনো ভারতীয়, পাকিস্তানি পোশাক কিনে না। তারা দেশি পোশাকই পরতে পছন্দ করে। তাই আমি মনে করি এটি সম্পূর্ণ ক্রেতার ওপর নির্ভর করে তারা কি পরবে। আমি মনে করি না যে, ভারতীয়, পাকিস্তানি পোশাক আমাদের দেশীয় পোশাকের ওপর নেতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলছে। আমরা একটা ফ্যাশন ব্র্যান্ড চালাচ্ছি, আমি মনে করি না তাদের দ্বারা আমরা কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

এবারের ঈদে সারা লাইফস্টাইল কোন ধরনের পোশাক এনেছে?
সারা সব সময় ট্রেন্ড অনুযায়ী পোশাকে নতুনত্ব নিয়ে আসে, এবারের ঈদে আমরা স্ক্রিন প্রিন্টের ওপর পোশাক এনেছি, গত ঈদের স্ক্রিন প্রিন্টের পোশাকে বেশ ভালো সারা পেয়েছি, ক্রেতাদের ব্যাপক চাহিদা ছিল যে স্ক্রিন প্রিন্টের ওপর নতুন ডিজাইনের পোশাক আনার। কাটে ছাটে নতুন প্যাটার্নের ট্রেন্ড অনুযায়ী কিছু টু-পিস এনেছি। এ ছাড়া নতুন সংযোজনের সাবলিমেশন প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি, অল ওভার প্রিন্টের পোশাক এসেছে। পোশাকের মোটিফ ও নকশায় রাখা হয়েছে উৎসবের আমেজ। মেয়েদের জন্য শাড়ি, থ্রি-পিস, টপস, আনারকলি থ্রি-পিস, কুর্তি, কো-অর্ডস, ডেনিম প্যান্ট, শ্রাগ, ওয়ান-পিস, টু-পিস, স্কার্ফ, শারারা, কাফতান, টি শার্ট এনেছি। প্রিন্সেস লাইন, ডাবল লেয়ার, এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক বিভিন্ন কাজ রয়েছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। ছেলেদের জন্য এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি এসেছে, যেগুলো যেকোনো অনুষ্ঠানে পরতে পারবেন। এ ছাড়া ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি শার্ট, পোলো শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, কোটি, পায়জামা রয়েছে। শিশুদের ক্ষেত্রে নতুন পোশাক, এনেছি, পরিবারের সবার জন্য একই ডিজাইনের পোশাক আছে।

পোশাক তৈরিতে প্রধানত কী ধরনের সুতা, রং এবং কাপড় ব্যবহার করছেন?
আমরা কেমিক্যাল রিলেটেড যেকোনো ব্যাপারে খুবই সচেতন থাকি। আমাদের টেস্টিং ল্যাব আছে, যেখানে প্রতিটি প্রোডাক্টের সুতা, রং এবং কাপড় পরীক্ষা করা হয়, কোনো ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, যা শরীর ও ত্বকের ক্ষতি করবে কিনা, ল্যাব পরীক্ষার ১০০% পজিটিভ রেজাল্ট আসলেই তারপর সেটা দিয়ে পোশাক তৈরি করা হয়। আপনাদের যাত্রা শুরু থেকে এ পযর্ন্ত কোন কোন ডিজাইন বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে আপনি মনে করেন?

আপনাদের তৈরি কোন ডিজাইন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল?
সব ফ্যাশন হাউসের নিজস্ব কিছু স্টাইল থাকে, সারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে নতুনত্ব নিয়ে এসেছে যেমন- ডেনিম নিয়ে আমরা বেশ আলাদা কাজ করেছি। ডেনিমের শাল, কুর্তি এগুলো নতুন মাত্রা যোগ করেছে আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে। এ ছাড়া উইন্টার জ্যাকেটেও আমাদের অনেক নতুনত্ব নিয়ে এসেছি।

সারা লাইফস্টাইলের শুরুর দিকে আপনার যে স্বপ্ন ছিল তারই প্রতিফলন আজকের অবস্থান। আগামী পরিকল্পনা জানতে চাই?
সারা লাইফস্টাইলে বর্তমানে মোট ১৪টি আউটলেট আছে। আমরা চাই সারা দেশে আউটলেট করার। পুরো দেশের মানুষ সারা থেকে পোশাক কিনতে পারবে এমন একটা জায়গায় সারা লাইফস্টাইলকে নিয়ে যেতে। তাই দেশের মধ্যেই আগে ব্যাপক পরিসরে আগাতে চাই, এই বছর ৪টি আউটলেট ওপেন করার ইচ্ছা আছে। আন্তর্জাতিকভাবে যেতে সারা লাইফস্টাইলের আরেকটু সময় লাগবে। আমরা সব সময় আমাদের গ্রাহকদের রুচির কথা মাথায় রেখে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভিন্ন কিছু করার জন্য ডিজাইন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। যদিও আমরা দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তবুও আমরা খুচরা ব্যবসায় নতুন। আমরা প্রতিনিয়ত শিখছি। দেশে ভালোভাবে কাজ করে তারপর আন্তর্জাতিকভাবে যাওয়ার ইচ্ছা আমাদের। এ ছাড়া আমরা আগামীতে সব জেলা শহরে যেতে চাই।

সারা লাইফস্টাইলের কো-ব্র্যান্ড ঢেউয়ের পোশাকের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বলুন।
কো-ব্র্যান্ড ঢেউ আসলে আমরা টিনএজ আর ভার্সিটি পড়ুয়াদের জন্য এনেছি, এখনকার প্রজন্ম অনেক এগিয়ে গিয়েছে। তারা বিশ্বের সব ফ্যাশন সম্পর্কে জানে এবং জেনে সেই রকম পোশাক পরতে পছন্দ করে। সারা লাইফস্টাইলে ওয়েস্টার্ন পোশাক ডিজাইন করত না, তাই অনেক তরুণী তাদের পছন্দের পোশাক খুঁজে পেত না। তাই ওয়েস্টার্ন পোশাক থেকেই ঢেউ করা, আর ভালো সাড়াও পেয়েছি। সারা যেমন জনপ্রিয় হয়েছে, ঢেউও কোনো অংশে কম নয়। একেবার নতুন হিসেবে বেশ ভালো করছে।

বাংলাদেশের মানুষ গত প্রায় ১০ বছরে অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন হয়েছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?
বাংলাদেশের মানুষ এখন যে পরিমাণে ফ্যাশন সচেতন, সেটা কয়েক বছর আগেও দেখা যায়নি। এখন যেকোনো ট্রেন্ডটা তারা নিজেদের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে, সামাজিক মাধমের একটা বড় ভূমিকা আছে। পাশের দেশের ফ্যাশন ডিজাইনার মণিশ মালহোত্রা, সব্যসাচীর পোশাকের চাহিদা আমাদের দেশে অনেক বেশি। তাদের পোশাক আমাদের দেশে বেশ প্রভাব ফেলেছে। আমি দেখছি ঘুরে ফিরে আমাদের দেশের পোশাকে এগুলোরই প্রতিফলন। দেখেন আমরা শুরুতে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে টার্গেট করে পোশাক তৈরি শুরু করলেও এখন কিন্তু সব শ্রেণির মানুষের কাছে সারা লাইফস্টাইলে পোশাকের চাহিদা ব্যাপক। আর আমাদের নতুন ক্রেতাদের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

বাংলাদেশের ফ্যাশন এবং ঐতিহ্যকে বিস্তৃতভাবে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় বলে মনে করেন?
আমাদের স্বচ্ছ থাকতে হবে। আমরা একটা প্রোডাক্ট বানাচ্ছি, সেটার মধ্যে সততা থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডটা ঠিক মতো ধরে সেটার সঙ্গে মিলিয়ে দেশীয় স্টাইলে পোশাক বানাতে পারি। দেখেন এখন প্রজন্ম একেবারে ট্রেডিশনাল পোশাকের চেয়ে ট্রেন্ডিং ট্রেডিশনাল পোশাক পরতে পছন্দ করে। আর আমরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে যেতে চাই, তাহলে তাদের সঙ্গে মিল রেখেই আমাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পারব। সেটা মাথায় রেখে আসলে কাজ করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি একটাই- কম দামে মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করা। আমরা এই আদর্শকে ধরে রাখতে চাই।

কলি

ঈদুল আজহায় ঘর সাজাবেন যেভাবে

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:২৩ পিএম
ঈদুল আজহায় ঘর সাজাবেন যেভাবে

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েকটি দিন। কোরবানি ঈদ মানেই অন্যরকম ব্যস্ততা, পশু কোরবানি মাংস কাটাকাটি কাজের প্রচুর চাপ থাকে। ঈদে যেহেতু আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব বেড়াতে আসেন। তাই ঈদের আগেই ঘর গুছিয়ে পরিপাটি করাটা জরুরি। ঈদের আগে ঘর সাজিয়ে-গুছিয়ে নেওয়া সম্পর্কে লিখেছেন তামিম হাসান

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
সবার প্রথমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হবে। আপনি যেভাবেই সাজাতে চান না কেন প্রথমে ঘরকে পরিষ্কার করতে হবে। আর ঘর পরিষ্কার বলতে বোঝানো হচ্ছে ঘরের প্রতিটি জিনিস থেকে শুরু করে দেয়াল, জানালার গ্রিল, পর্দাসহ সাজসজ্জার বিভিন্ন জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে হবে। ঘর পরিষ্কার না করে যেভাবেই ঘরকে সাজানো হোক না কেন ঘরের মধ্যে পরিপাটি বিষয়টা আসবে না এবং ঘরকে ফ্রেশ লাগবে না। প্রথমত ঘরের দেয়ালে জমে থাকা ময়লা ঝেড়ে নিন। বিছানায় পছন্দের চাদর বিছিয়ে নিন। সোফার কালারের সঙ্গে মিলিয়ে কভার পরাতে পারেন। বসার ঘরের কার্পেটটি হালকা রঙের হলে মানানসই হয়। এতে করে ঘর বেশ একটা অভিজাত চেহারা পাবে।

নতুন করে ঘর সাজানো
ঘরে তো সবই আছে তবু কীভাবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন করা যায়। কী কী কেনা যায়? যদি কেনার প্রসঙ্গে আসে সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই তা নির্ভর করবে ঘরের আকার আয়তন এবং নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী। এ ছাড়া ঘরের জিনিসপত্র ঘরের মধ্যেই অদল-বদল করে রাখা যায়। ঘরের জিনিসপত্র যদি অদল-বদল করা হয় এতে করে ঘরের আকার এবং আয়তন দেখতে অন্যরকম লাগে এবং ঘরকে বেশ নতুন মনে হয়।

ড্রয়িং রুম
সবার আগে সাজাতে হবে ড্রয়িং রুমকে। কারণ পরিবারের লোক থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন সবাই প্রথমে ভিড় জমাবে ড্রয়িং রুমের ভেতর। ঈদে টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠান দেখার জন্য সবাই একত্রিত হবে ড্রয়িং রুমেই। ড্রয়িং রুমকে অবশ্যই সুন্দর করে সাজাতে হবে। সে ক্ষেত্রে কুশন এবং পর্দার ব্যবহার ড্রইং রুমে বেশি দেখা যায়। দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং, নিজেদের প্রিয় মুহূর্তের বাঁধাই করা ছবি ইত্যাদি দিয়ে আপনার সাধারণ ঘরকে দিতে পারেন নান্দনিকতার ছোঁয়া। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের আঁকা ছবি (ফ্রেমসহ) এবং  ওয়ালম্যাট লাগাতে পারেন। লম্বা ফুলদানি এবং দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ড ছাড়াও সাইড স্ট্যান্ড দিয়ে ড্রয়িং রুমকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারেন।

ডাইনিং টেবিল
ঈদুল ফিতর হোক কিংবা ঈদুল আজহা হোক। ঈদের মূল আকর্ষণ হিসেবে সবসময়ই ডাইনিং টেবিল থাকে। অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে ঘরের মানুষ সবার জন্য যেখানে খাবার পরিবেশন করা হয় সেখানে একটু ভিন্নভাবে সাজানোটা আবশ্যক। সেই ডাইনিং টেবিলকে কীভাবে আকর্ষণীয় করা যায় তা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা থাকে গৃহিণীদের। আপনার ডাইনিং টেবিল সাজানোর মাধ্যমেও আপনার সুন্দর রুচির প্রমাণ পাওয়া যায়। অবশ্যই ঈদের দিন তুলে রাখা ডিনার সেট কিংবা নতুন কেনা ডিনার সেট দিয়ে আমরা টেবিল সাজাতে পারি। এ ছাড়া টেবিলের মাঝে বিভিন্ন ধরনের ফুলদানি রাখতে পারি, টেবিলের মাঝে একটা শতরঞ্জি রাখা যায়, ডিনার সেট একটু উজ্জ্বল রঙের হলে বেশ আকর্ষণীয় লাগবে।

অন্দরের সাজসজ্জা
চলতি বছর ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে গরমের মধ্যেই। যদিও বৃষ্টির আভাস রয়েছে। রোদ আর বৃষ্টিময় ঈদে বেডরুম বা শোবার ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিন হালকা রঙের বিছানার চাদরকে। এক্ষেত্রে খাদি, সুতি, ভয়েল ইত্যাদি কাপড় বেছে নিতে পারেন। বাইরের রোদ এড়াতে জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের পিলো কভার পরান বালিশকে। খাটের পাশের ছোট টেবিলে একটি কাঁচের বাটি বা পাত্রে তাজা ফুল রাখতে পারেন। এ ছাড়া ঘরের কোণায়, জানালার কিনারায় রাখতে পারেন ইনডোর প্ল্যান্ট।

ঘরে সবুজের সমারোহ 

ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়েই এখন ঘরের ভেতরটা সাজিয়ে নেওয়া যায়। বসার ঘরে সবুজের ছোঁয়া থাকলে যে কারও মনই ভালো হয়ে যায়। এজন্য ঘরে নানান রকমের ইনডোর প্ল্যান্ট রাখুন। ঘরের সৌন্দর্যচর্চায় সবুজ লতানো গাছ সবার নজর কাড়ে। ঘর এবং ঘরের বাইরের উভয় অংশকে সাজানোর কাজে মানি প্ল্যান্ট গাছ লাগতে পারেন। স্পাইডার প্ল্যান্টের সবুজ রঙা পাতার মাঝে সাদার মিশেল, সরু এই পাতাগুলো চ্যাপ্টা ও বেশ খানিকটা লম্বা। সহজেই গাছটি বেড়ে উঠতে সক্ষম, তাই ঘরের জন্য এই স্পাইডার প্ল্যান্ট বেশ উপযোগী। ঘরকে ছিমছামভাবে সাজাতে কিংবা আভিজাত্যের ছোঁয়া দিতে এই গাছের জুড়ি নেই।

দৃষ্টিনন্দন ফার্নগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই ফিশটেইল ফার্ন। এই ফার্নটি সহজেই ঘরে বেড়ে উঠতে পারে এবং সারা বছর এর সবুজ সতেজতার দেখা মেলে। মৃদু সূর্যের আলো আর অল্প পানি দরকার ফিশটেইল ফার্ন বেড়ে ওঠার জন্য। ঘর সাজানোর জন্য গাছের তালিকায় এটি যুক্ত করতে পারেন। ছোটখাটো গাছগুলো ঘরের শোভা বাড়াবে। প্রশান্তিও দেবে।

সৌখিন শোপিসের ব্যবহার
বাসার কোণায়, জুতার র‍্যাক, বেসিনের ওপরে ছোট দু-একটা শোপিস আপনার বাসার চেহারায় ভিন্ন রূপ দিতে পারে। বড় অ্যাকুরিয়াম দেখাশোনা করতে বেশ ঝামেলা হয়, তাই ছোট গ্লাসের জারে দু-একটি মাছ রাখতে পারেন। তাছাড়া সুন্দর দেখতে কোনো জারে একটু পানি দিয়ে ভাসিয়ে রাখতে পারেন পদ্মফুল। ব্লক, হাতের কাজ এবং ঘর সাজানোর সুন্দর সুন্দর সব আইটেমের জন্য আপনি যেতে পারেন আপনার কাছের শোপিস মার্কেটে।

আর যদি আপনি যদি ঢাকাবাসী হয়ে থাকেন নিউমার্কেট, তালতলা মার্কেট ও মৌচাক মার্কেটে যেতে পারেন। অনলাইনেও কিছু কিছু পেজ আছে যারা ভালো মানের এবং ভিন্নধর্মী প্রোডাক্ট রাখে।

কলি