![সহায়তাকর্মীদের মৃত্যুতে ‘ক্ষুব্ধ’ বাইডেন](uploads/2024/04/04/1712197926.biden.jpg)
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাত মানবিক সহায়তাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনি ‘ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত’। ইসরায়েল সহায়তাকর্মীদের সুরক্ষায় যথেষ্ট করছে না বলেও উল্লেখ করেন বাইডেন।
গত সোমবার গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) সাত কর্মী মারা যান। নিহতদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পোল্যান্ডের নাগরিকরা রয়েছেন। ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ মৃত্যুর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
ইসরায়েল যাতে দ্রুত তদন্ত করে, সে দাবি জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের অবশ্যই জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং তদন্তে যা উঠে আসবে, তা প্রকাশ করতে হবে। বাইডেন বলেন, গাজায় সহায়তা বিতরণ ‘অত্যন্ত কঠিন’ হয়ে উঠেছে। বেসামরিকদের জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দিতে কাজ করা সহায়তাকর্মীদের সুরক্ষায় ইসরায়েল যথেষ্ট করছে না।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে কড়া ভাষায় ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছেন বাইডেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় যথেষ্ট করছেন না বলেও উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ইসরায়েলকে অনুরোধ জানিয়েছে, নিজেদের সংঘাতের পরিসর সীমিত করার জন্য। বেসামরিকদের যাতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য।
এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেসের জেনারেল স্টাফ প্রধান (আইডিএফ) হার্জি হালেভি সহায়তাকর্মীদের ঘটনাকে ‘গভীর ভুল’ বলে মনে করেছেন এবং তারা বলেছেন, এটি হওয়া উচিত ছিল না। ঠিকভাবে শনাক্ত করতে না পারার জন্য হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে, ডব্লিউসিকের ঘটনার পর গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ডব্লিউসিকে সেখানে নিজেদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে যারা সহায়তা দিয়ে আসছিল, তাদের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।
ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) প্রতিষ্ঠাতা হোর্হে আন্দ্রেস ইসরায়েলি সংবাদ সাইট ওয়াইনেটে এক মতামতে লিখেছেন, তার সংস্থার সহায়তা বহরে হামলার ঘটনায় সাত কর্মী নিহত হয়েছেন।
আন্দ্রেস লিখেছেন, ‘আমাদের বহরে বিমান হামলার ঘটনা শুধু যুদ্ধের আবহে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ভুল নয়।
স্পষ্টভাবে চিহ্নিত গাড়িতে হামলার ঘটনা এটি। যেটির চলাচলের পথের ব্যাপারে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানত। এটি তার (প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর) সরকারের মানবিক সহায়তাকে মরিয়া পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার নীতির প্রত্যক্ষ ফলাফল।’
তিনি ইসরায়েল সরকারকে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছানোর রাস্তা খুলে দেওয়ার আহ্বানও জানান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলের সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৩ জন। ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩২ হাজার ৯৭৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৫৭৭ জন। অন্তত ৮ হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) তথ্যানুসারে, গাজায় দুই বছরের নিচে বয়স এমন ৩০ শতাংশ শিশু তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, রেকর্ড গতিতে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিকে যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখা এক পোস্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, দুর্ভিক্ষ ঘনিয়ে আসছে গাজায়। আমাদের আরও প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। আমাদের যুদ্ধবিরতি দরকার।’ সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি