ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতে ৭ দফা লোকসভা নির্বাচন শুরু শুক্রবার

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩০ এএম
আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪০ পিএম
ভারতে ৭ দফা লোকসভা নির্বাচন শুরু শুক্রবার
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশটিতে নির্বাচন চলবে ১ জুন পর্যন্ত। সাত দফার এই নির্বাচনে ভারতের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার নিম্নকক্ষ লোকসভার ৫৪৩ আসনের আইনপ্রণেতাদের নির্বাচিত করবেন প্রায় ১০০ কোটি ভোটার।

১৪০ কোটি জনসংখ্যার পরমাণু শক্তিধর ভারত ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে অন্যতম বড় এক প্রভাবশালী রাষ্ট্র। তবে অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক উত্থানের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে প্রসারিত ধর্মীয় মেরূকরণের হাওয়ার কারণে দেশটি এক দশক ধরে আলোচনায়। এবার নির্বাচনেও হিন্দুত্ববাদী প্রচারের হাওয়া প্রবল।

ভারতের এবারের নির্বাচনে ভোট দেবেন প্রায় ৯৬ কোটি ৮০ লাখ ভোটার। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৬৭ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দিয়েছিলেন, যা ছিল ভারতের নির্বাচনি ইতিহাসের সর্বোচ্চ। দেশের ২৮টি রাজ্য আর ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চলবে এবারের ভোটাভুটি। এর মধ্যে আজ ভোট গ্রহণ হচ্ছে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে। একই সঙ্গে আজ আরও নির্বাচন হচ্ছে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের বিধানসভার ৬০টি এবং সিকিমের ৩২টি আসনে। নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে ৪ জুন। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী (হ্যাট্রিক) হওয়ার আশা করছেন। তিনি বলেছেন, তার দল ৪০০-এর বেশি আসনে জয়ী হবে। সাম্প্রতিক জরিপও বলছে, মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও এর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী হবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একাই ৩০৩টি আসন পেয়েছিল। আর এনডিএ জোট পেয়েছিল ৩৫২টি আসন। 

এবারের নির্বাচনে অন্যতম চ্যালেঞ্জ বৃহত্তম বিরোধীদল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে। মোদির বিজেপিকে ঠেকাতে এবার বিরোধী ২৬টি দল জোট গঠন করেছে। প্রায় এক বছর আগে গড়া হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) নামের ওই জোট। এটি গঠনের পর ভারতের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মোদি বিরোধীদের মধ্যে এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইন্ডিয়া জোট গঠনের পর কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সফলও হয়েছে বিরোধীরা। এখন দেখা যাক লোকসভা নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসেন? নরেন্দ্র মোদি নাকি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীসহ বিরোধী নেতারা। 

পশ্চিমবঙ্গসহ পূর্ব ভারতের প্রায় সব কটি রাজ্যে প্রথম দফায় ভোট হচ্ছে। পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও ত্রিপুরা।

পশ্চিমবঙ্গে প্রতিটি দফাতেই ভোট হবে। প্রথম দফায় আজ রাজ্যের উত্তর অঞ্চলের তিন আসন কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে নির্বাচন হবে। 

দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর ৩৯ আসনের সব কটিতে ভোট হয়ে যাচ্ছে প্রথম দফায়। এ ছাড়া বিজেপিশাসিত রাজস্থানে ২৫ আসনের অর্ধেক অর্থাৎ ১২টিতে আজ ভোট হবে।

উত্তর প্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে আজ ভোট হবে ৮টিতে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের সংঘাতবিধ্বস্ত মণিপুরের দুটি আসনে ভোট হবে প্রথম দফায়। এই রাজ্যের একাধিক গোষ্ঠী ও সংগঠন ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছে। আসামের পাঁচ আসন ডিব্রুগড়, জোড়হাট, কাজিরাঙ্গা, লখিমপুর ও সনিৎপুরে ভোট হবে আজ। ভারতের অন্যান্য প্রান্তের তুলনায় আসামে বিজেপি বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

এ ছাড়া পূর্ব ভারতের বিহারের চারটি আসন, ছত্তিশগড়ের মাওবাদী-অধ্যুষিত অঞ্চলের বস্তার আসন, সংলগ্ন মহারাষ্ট্রের আরও অন্তত দুটি মাওবাদী-অধ্যুষিত অঞ্চল চন্দ্রপুর ও গড়চিরোলি ছাড়া মহারাষ্ট্রেরই ভাণ্ডারা, রামটেক ও নাগপুরে ভোট হবে আগামীকাল।

২০১৯ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৩০৩টি, কংগ্রেস ৫২টি, সমাজবাদী পার্টি ৫টি, বহুজন সমাজ পার্টি ১০, তৃণমূল ২২, ডিএমকে ২৩, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ২২ এবং টিডিপি ২টি আসনে জিতেছিল।

এমএ/

নিজের ২০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের বেশিরভাগ আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০৩ পিএম
নিজের ২০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের বেশিরভাগ আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। ছবি: সংগৃহীত

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আগামী ২০ বছরের মধ্যে তার প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের বেশির ভাগই আফ্রিকায় স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করবেন।

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে এক বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মাধ্যমে মানব সম্ভাবনা মুক্ত করলেই আফ্রিকার প্রতিটি দেশ উন্নতির পথে এগোতে পারবে।’ 

একই সঙ্গে তিনি আফ্রিকার তরুণ উদ্ভাবকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি গেটস ঘোষণা দিয়েছেন, ২০৪৫ সালের মধ্যে তিনি তার ৯৯ শতাংশ সম্পদ দান করে দেবেন এবং তার পরিচালিত গেটস ফাউন্ডেশন ওই সময়ের মধ্যে কাজ বন্ধ করবে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমার সম্পদ বিলিয়ে দেব। এর বেশির ভাগ ব্যয় হবে আফ্রিকার সমস্যা মোকাবিলায়।’

বিল গেটসের এই ঘোষণাকে ‘সংকটময় সময়ে আশাজাগানিয়া এক বার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করেন মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রাসা মাশেল। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, গেটস আমাদের পাশে থেকেই এই রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাবেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় আফ্রিকায় সহায়তা কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে এইচআইভি/এইডস চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে গেটস বলেন, ‘তার ফাউন্ডেশন আফ্রিকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দেবে।‘ 

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভের সময় মা যদি সঠিক পুষ্টি পান, তাহলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। শিশুর প্রথম চার বছরেও পুষ্টির সঠিক সরবরাহ জীবনভর প্রভাব ফেলে।‘

গেটস মনে করেন, আফ্রিকায় মোবাইল ফোন যেমন ব্যাংকিং খাতকে বদলে দিয়েছে, তেমনি এআই ব্যবহার করে পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব। রুয়ান্ডার উদাহরণ টেনে তিনি জানান, দেশটি এআই-চালিত আলট্রাসাউন্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা শনাক্ত করছে।

এক ব্লগপোস্টে বিল গেটস লিখেন, ‘মানুষ আমার সম্পর্কে অনেক কিছু বলবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করতে চাই—সে ধনী অবস্থায় মারা গেল—এই কথা যেন কেউ বলতে না পারে।’ তবে ব্লুমবার্গ বলছে, ৯৯ শতাংশ দান করলেও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তিনি তবু বিলিয়নিয়ারই থাকবেন।

সুলতানা দিনা/

বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের ক্রীতদাস : পাক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের ক্রীতদাস : পাক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী
আইএসপিআর-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে (ইসলামাবাদের ভাষায় বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা) যারা অংশ নিচ্ছেন যারা তারা সবাই ভারতের মদতপুষ্ট এবং তারা ‘ভারতের ক্রীতদাস’- বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। 

বেলুচ স্বাধীনতাকামীদের ‘ভারতের ক্রীতদাস’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'বেলুচিস্তান পাকিস্তানের অংশ হিসেবেই থাকবে, কখনও বিচ্ছিন্ন হবে না।’

সোমবার (০২ জুন) রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনা সদর দপ্তর মিলনায়তনে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

সম্প্রতি স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের নৈতিক মান উন্নয়নে ‘হিলাল টকস’ নামের একটি প্রকল্প শুরু করেছে পাকিস্তান। সোমবার (০২ জুন) রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনা সদর দপ্তর মিলনায়তনে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেন আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

সেখানে এই মেজর জেনারেল বলেন, ‘যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা বেলুচিস্তানে তৎপরতা চালাচ্ছে, তারা শুধু ভারতের মদতপুষ্টই নই, বরং ভারতের ক্রীতদাসও। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ— বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী গোষ্ঠী)-এর পুরো আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করে ভারত। বিএলএ হলো ফিৎনা-ই-হিন্দুস্তান (ভারত থেকে আগত ঝামেলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী); আরও স্পষ্টভাবে বললে— বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের ক্রীতদাস। ভারত তাদের অর্থ দিয়ে কিনে নিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, ‘বিএলএকে মদত দেওয়ার মাধ্যমে ভারত শুধু পাকিস্তানের নয়, উপরন্তু এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। আমরা বিএলএ এবং তাদের প্রভু ভারতকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই— বেলুচিস্তান পাকিস্তানের অংশ এবং পাকিস্তানেরই থাকবে। পাকিস্তানের অর্থনীতি ও সমাজের সঙ্গে বেলুচিস্তানের সম্পর্ক নিবিড় এবং একদিন বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবেচেয়ে ধনী প্রদেশ হবে।’

১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বেলুচিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু। ব্রিটিশ আমলে এই প্রদেশে মাকরা, লাস বেলা, খারান এবং কালাতমোট-এই ৪টি করদ রাজ্য বা প্রিন্সলি স্টেট ছিল। 

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময় মাকরা, লাস বেলা এবং খারান পাকিস্তান ইউনিয়নে যোগ দিলেও খালাতের তৎকালীন রাজা আহমেদ ইয়ার খান বালোচ তখন পাকিস্তানে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান।

পরের বছর ১৯৪৮ সালে তিনি পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন, কিন্তু এবার বেঁকে বসেন আহমেদ ইয়ার খান বালোচের ভাই প্রিন্স আগা আবদুল করিম খান বালোচ। পাকিস্তানে যোগদানের পরিবর্তে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই থেকে বেলুচিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু।

এরপর ৭ দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বেলুচিস্তানের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্কের কোনো উন্নতি তো হয়ইনি, বরং উত্তরোত্তর অবনতি হয়েছে। রাজ্যটির স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। তবে এতে পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি। বেলুচিস্তানজুড়ে বিএলএর সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সংঘাত এখন নিত্যদিনের ঘটনা।

কিন্তু পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদিন সংঘাত ঘটলেও বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা সুদূরপরাহত। কারণ বেলুচিস্তানের কিছু অংশ ইরান ও আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে পড়েছে এবং স্বাধীন বেলুচিস্তানের জন্য প্রতিবেশী ইরান ও আফগানিস্তানের সমর্থন প্রয়োজন। 

কিন্তু ইরান ও আফগানিস্তানের পক্ষে ওই সমর্থন দেওয়া কখনও সম্ভব নয়। তার কারণ, পাকিস্তানের বেলুচরা স্বাধীনতা অর্জন করলে ইরান ও আফগানিস্তানের বেলুচরা স্বাধীন বেলুচিস্তানে যোগ দিতে চাইবে। তাছাড়া বর্তমানে বেলুচ আন্দোলনের নেতৃত্ব বহু ধারায় বিভক্ত, নেতাদের মধ্যে মতবিরোধও তীব্র। সূত্র : জিও টিভি

সুলতানা দিনা/

মুম্বাই বিমানবন্দরে বিষাক্ত ৪৭ সাপসহ এক ব্যক্তি আটক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৫০ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
মুম্বাই বিমানবন্দরে বিষাক্ত ৪৭ সাপসহ এক ব্যক্তি আটক
মুম্বাই বিমানবন্দরে এক যাত্রীর ব্যাগে পাওয়া ৪৭টি বিষধর সাপ। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে বিষাক্ত সাপ সহ কয়েক ডজন বিরল সরীসৃপ পাচারের চেষ্টা করার অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ।

রবিবার (০২ জুন) মুম্বাই শহরের বিমানবন্দরে থাইল্যান্ড থেকে ফিরে আসা এই ভারতীয় নাগরিককে কাস্টমস কর্মকর্তারা আটকে দেন। কর্মকর্তারা জানান, ওই ব্যক্তির চেক-ইন করা লাগেজে ৪৭টি বিষাক্ত সাপ সহ সরীসৃপগুলি লুকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।

এরপর ভারতের বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনের অধীনে সরীসৃপগুলি জব্দ করা হয়েছে। যাত্রীর তবে এই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি যেহেতু তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন। তবে মুম্বাই বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা একটি পাত্রে রঙিন সাপের ছটফট করার ছবি  এক্সে প্রকাশ করেছেন।

সেই পোস্টে তারা জানান,তারা এক যাত্রীর কাছ থেকে তিনটি মাকড়সার লেজযুক্ত শিংওয়ালা ভাইপার, পাঁচটি এশিয়ান পাতার কচ্ছপ এবং ৪৪টি ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার জব্দ করেছে। তবে সরীসৃপগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়।

রবিবার(০২ জুন)ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানায়।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, ওই যাত্রী তার লাগেজে গোপনে প্রাণীগুলো বহন করছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাণীগুলোর বেশিরভাগই অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।

ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের বিভিন্ন ধারায় ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। তিনি এখনও পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন এবং তার পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মুম্বাই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে রঙিন বিষধর সাপগুলোকে একটি থালায় কিলবিল করতে দেখা গেছে। পোস্টে বলা হয়, যাত্রীর লাগেজ থেকে ৩টি স্পাইডার-টেইল্ড হর্নড ভাইপার, ৫টি এশিয়ান লিফ টার্টল এবং ৪৪টি ইন্দোনেশীয় পিট ভাইপার উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে এই সাপগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভারতে নির্দিষ্ট প্রজাতির বন্যপ্রাণী আমদানির জন্য সরকারি অনুমোদন ও লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে বিলুপ্তপ্রায় ও সংরক্ষিত প্রাণী আমদানিতে কড়াকড়ি রয়েছে।

বিমানবন্দর দিয়ে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা ভারতে নতুন নয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দিল্লি বিমানবন্দরে এক কানাডিয়ান যাত্রীর লাগেজ থেকে একটি কুমিরের খুলি উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া, গত ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক যাত্রীর ব্যাগে পাওয়া যায় পাঁচটি সিয়ামাং গিবন, যেগুলো ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের বনাঞ্চলে পাওয়া যায় এবং বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত।

২০১৯ সালে চেন্নাই বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডফেরত এক যাত্রীর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় একটি হর্নড পিট ভাইপার, পাঁচটি ইগুয়ানা, চারটি ব্লু-টাং স্কিঙ্ক, তিনটি গ্রিন ট্রি ফ্রগ এবং ২২টি মিসরীয় কচ্ছপ।

সুলতানা দিনা/

আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলেন না নরেন্দ্র মোদি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলেন না নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি:সংগৃহীত

৬ বছরের মধ্যে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কানাডার অটোয়াতে ১৫-১৭ জুন অনুষ্ঠিতব্য জি-৭ (G7 ) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। আলবার্টায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের জন্য মোদীকে কানাডা থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

গত বছর দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের পর নরেন্দ্র মোদি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সুবিধা পেতে সেই অর্জন বেশ ফলাও করে প্রচার করেন। এরপর গত পাঁচ বছর জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিতি থেকেছেন তিনি।

কিন্তু এবার সম্ভবত বিষয়টি ব্যতিক্রমই হতে যাচ্ছে। ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথমবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান শীতল সম্পর্কের ইঙ্গিত এটি।

জি-৭ হলো শিল্পোন্নত পশ্চিমা দেশ এবং জাপানের একটি অনানুষ্ঠানিক জোট।এই গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং কানাডা। এছাড়া এই সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল(আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাংক এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, এরই মধ্যে কানাডার আমন্ত্রণ দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউক্রেন এবং অস্ট্রেলিয়া গ্রহণ করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বে এ বছরের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন আগামী ১৫-১৭ জুন আলবার্টার কানানাসকিস রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে শুধু আমন্ত্রণ না জানানো নয়, এখনও দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশও তৈরি হয়নি। এ কারণে মোদির উপস্থিতি অনিশ্চিত।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারত সরকারের এজেন্টদের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলার পর থেকেই ভারত-কানাডা সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভারত এই অভিযোগকে ‘অমূলক’ আখ্যা দিয়েছে। এরপর উভয় দেশ একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে এবং সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়।

যদিও কানাডার নির্বাচনে মার্ক কার্নির জয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উষ্ণতা ফেরার আশা জেগেছিল। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিত্তি এখনো তৈরি হয়নি। 

২০১৯ সাল থেকে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান এবং ইতালি ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ সেশনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, উভয় দেশের রাজধানীতে হাইকমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে ভারত ও কানাডা সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে প্রথম পদক্ষেপ নিতে পারে। নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং আরও পাঁচজন কূটনীতিককে ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করার পর ভারত গত বছর দূতকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে এই পদ শূন্য।

কানাডায় খালিস্তানপন্থীদের তৎপরতা, বিশেষ করে ভারতের পক্ষ থেকে যেকোনো উচ্চ পর্যায়ের সফরের সময় বিক্ষোভের সম্ভাবনা নিয়েও ভারতীয় পক্ষ উদ্বিগ্ন।

যদিও কার্নি সরকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনে আগ্রহী। এখন ধীরে ধীরে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ, যিনি সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

অটোয়ার ওপর খালিস্তানপন্থী এবং ভারত-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকেও নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ না জানানোর জন্য চাপ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মতামত প্রকাশ করা হয়েছে এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে) নরেন্দ্র মোদি কানাডায় এলে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে।

এবারের সম্মেলনে মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নেতারাও আলবার্টায় উপস্থিত থাকবেন। দক্ষিণ আফ্রিকা এ বছর জি-২০-এর স্বাগতিক দেশ।

সুলতানা দিনা/

ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ১০ মরদেহ, বিদ্রোহীদের নির্যাতন করে হত্যা করছে ভারতীয় সেনারা?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:১২ পিএম
ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ১০ মরদেহ, বিদ্রোহীদের নির্যাতন করে হত্যা করছে ভারতীয় সেনারা?
মায়ানমারের নির্বাসিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। ছবি: সংগৃহীত

ভারত-মায়ানমার সীমান্তবর্তী তামু জেলায় একটি অস্থায়ী কাঠের চিতার সামনে পড়ে আছে ১০টি পচেগলে যাওয়া মৃতদেহ। মৃতরা মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি ঐক্য সরকারের সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিকেপি সদস্য, যাদের মধ্যে তিনজন আবার কিশোর বয়সী। বেশিরভাগের গায়ে রক্তমাখা যুদ্ধবেশ। কাঠ, পুরনো টায়ার ও দাহ্য পদার্থ দিয়ে দ্রুত প্রস্তুত করা হচ্ছে গণদাহ। 

ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, মায়ানমারের সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে এখনও চলমান একটি অভিযানে এই ১০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছেন। তারা বলছে, ১৪ মে পরিচালিত এক অভিযানে এদের প্রাণহানি ঘটে।

তাদের দাবি , যুদ্ধসামগ্রীসহ বিদ্রোহী কার্যকলাপে যুক্ত সন্দেহভাজনদের গুলি করে হত্যা করেছে তারা। বুধবার (২৮ মে) এক-এর এক পোস্টে তারা এই অঞ্চলে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বলছে, ‘দশজন ক্যাডারকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।’

কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে মায়ানমারের নির্বাসিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। তাদের দাবি, এসব বিদ্রোহীকে ভারতীয় সেনারা গ্রেফতার করে, নির্যাতন চালিয়ে পরে গুলি করে হত্যা করেছে।

মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই ভারতীয় সীমান্তে আত্মগোপনে ছিল সশস্ত্র বিদ্রোহীরা এতদিন ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে ‘অলিখিত সহাবস্থানে’ ছিল। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে সেই ভারসাম্য ভেঙে পড়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাজার হাজার মায়ানমার শরণার্থীদের মধ্যে, যারা ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তামু অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজনকারী থিদা (ছদ্মনাম) বলেন, আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। চার বছরে এমনটা কখনও হয়নি। এবার যেহেতু ঘটেছে, সামনে আরও হতে পারে—এই আশঙ্কাই আমাদের গ্রাস করছে।

ভারতের সেনাবাহিনী প্রথমে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালানো হয়, তখন বিদ্রোহীরা গুলি ছোড়ে এবং জবাবে ১০ জন নিহত হয়। পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ‘একটি টহলদল হামলার শিকার হলে প্রতিক্রিয়ায় বিদ্রোহীদের হত্যা করা হয়।‘

কিন্তু দু’দিন পর নতুন আরেকটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিহতরা ভারতীয় সীমান্তে বেস্টনী নির্মাণের কাজে নিযুক্তদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিল।‘

নয়াদিল্লির একজন সাবেক সরকারি উপদেষ্টা এ বিষয়ে বলেন, ‘এটি কি আগাম গোয়েন্দা অভিযানে করা হামলা, নাকি তাৎক্ষণিক আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ?—দুটি ব্যাখ্যা একসঙ্গে সত্য হতে পারে না।‘

তামুর স্থানীয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যখন মরদেহ নিতে গিয়েছিলাম, তখন আসাম রাইফেলস আমাদের কিছু কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। বলা হয়, না করলে মরদেহগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হবে না।‘ 

এছাড়া এই কাগজগুলোতে সীমান্ত বেড়া নির্মাণে সম্মতি এবং সংঘর্ষের তথ্য লেখা ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

মায়ানমারের নির্বাসিত সরকার বারবার ভারতকে অনুরোধ করেছে সীমান্ত বেড়া নির্মাণ বন্ধ করতে এবং আলোচনায় বসতে। কিন্তু দিল্লি গত বছর থেকেই তা জোরদার করেছে। এই বেস্টনী ঐতিহ্যগতভাবে উন্মুক্তভাবে চলাচল করা জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছর বলেছিলেন, ‘সীমান্ত বেস্টনী ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার জন্য জরুরি।’

কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পদক্ষেপে উত্তর-পূর্ব ভারতের ভঙ্গুর জনপদগুলোতে নতুন অস্থিরতা ছড়াতে পারে।

এদিকে মায়ানমারের নির্বাসিত সরকার ও স্থানীয়রা স্পষ্ট করে জানান, তারা ভারতকে কোনোভাবে প্রতিরোধ করতে পারবে না। এ নিয়ে তারা বলেন, আমরা তো নিজেদের দেশেই বিদ্রোহী, ভারতীয় সেনার মতো শক্তিশালী বাহিনীকে কীভাবে ঠেকাবো?

এরপর লাশগুলোর দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে থিদা বলেন, ‘লাশগুলোর কি অবস্থার ছিল জানেন? পোকারা শরীরের ভেতর ঢুকে পড়েছিল। অন্তত আমাদের মৃতদের প্রতি তাদের সম্মান দেখানো উচিত ছিল।’

নভেম্বরে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে নির্বাচিত বেসামরিক সরকার উৎখাতের পর মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে  এই এলাকার ১,৬৫০ কিলোমিটার (১,০২৫ মাইল) সীমান্তে স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছে।

ভারতের দিকে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে জাতিগত সংঘাতের ফলে প্রায় ২৬০ জন নিহত হয়েছে, ৬০,০০০ এরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
৩২ লক্ষ জনসংখ্যার এই রাজ্যটি দুটি জাতিগত ছিটমহলে বিভক্ত, একটি উপত্যকা যা মেইটাইদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং একটি কুকি-অধ্যুষিত পাহাড়।

সূত্র: আল-জাজিরা এবং রয়টার্স

সুলতানা দিনা/