উপাত্ত সুরক্ষার নামে যেন ব্যক্তিগত তথ্য অন্যের হাতে চলে না যায় সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২৪-এর পর্যালোচনা ও সুপারিশে ৫ দফা দাবি তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানির ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে টিআইবি ও আর্টিকেল নাইনটিন-এর যৌথ উদ্যোগে ‘খসড়া ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৪ : পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
টিআইবির আউটটাচ এবং কমিউনিকেশন অ্যাডভাইজার মোহাম্মদ তৌহিদ ইসলামের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আর্টিকেল-১৯-এর রিজিওনাল ডিরেক্টর শেখ মানজুর ই আলম, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও টিআইবির এক্সিকিউটিভ ম্যানেজমেন্টের অ্যাডভাইজার ড. সুমাইয়া কবির।
আইনটির খসড়া বিশ্লেষণ করে ৫টি বিষয় পরিবর্তন আনার দাবি জানান তারা। বিষয়গুলো হলো-
অধিকারের উপর ফোকাস করুন, নিয়ন্ত্রণ নয়: এ আইনের একটি মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। গোপনীয়তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর বিদ্যমান সাংবিধানিক বিধানগুলো উল্লেখ করা একটি অধিকার-ভিত্তিক ভিত্তি স্থাপন করে। স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত ব্যতিক্রম ডেটাসহ ‘ব্যক্তি’ এবং ‘ব্যক্তিগত ডেটা’র আরও সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা এবং শক্তিশালী ডেটা সুরক্ষার উপর ফোকাস করাও গুরুত্বপূর্ণ।
ডেটা স্থানীয়করণ: বর্তমান পদ্ধতির মুক্ত বক্তব্য এবং তথ্য অ্যাক্সেসকে বাধাগ্রস্ত করার ঝুঁকি রয়েছে। মানবাধিকারের সঙ্গে আপস না করে ডেটা সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয় এমন বিকল্প অন্বেষণ করা উচিত।
স্বাধীন ডেটা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ: প্রস্তাবিত ডেটা সুরক্ষা আইনের ন্যায্য ও নিরপেক্ষ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রভাব থেকে মুক্ত একটি স্বাধীন ডেটা সুরক্ষা কমিশন প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিচারিক তদারকি: ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় অযাচিত অনুপ্রবেশ রোধ করতে এবং ডেটা সুরক্ষা নীতিগুলোর সঙ্গে সম্মতি নিশ্চিত করতে ডেটা অ্যাক্সেসের জন্য বাধ্যতামূলক বিচারিক অনুমোদনের প্রয়োজন হওয়া উচিত।
স্ট্যাগার্ড এনফোর্সমেন্ট: এটি একটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন পদ্ধতি। যা ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে ছোট সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকরভাবে প্রবিধানগুলো সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং মেনে চলতে দেয়।
এই গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উল্লেখ করে, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা আইন ২০২৪-এর বর্তমান খসড়া ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ারে পরিণত করা যেতে পারে বলে মনে করেন তারা।
সরকারকে এই সুপারিশগুলো বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করে এবং একটি ডেটা সুরক্ষা আইন নিশ্চিত করতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আরও সংলাপের ব্যাবস্থা জনগনের মৌলিক অধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে আস্থা বাড়ায় বলে মনে করেন তারা।
তিথি/অমিয়/