ঢাকা ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
English

চরমোনাই আহছানাবাদ রশীদিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সাফল্য

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ১১:২৭ পিএম
আপডেট: ১২ মে ২০২৪, ১১:৩৩ পিএম
চরমোনাই আহছানাবাদ রশীদিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সাফল্য
ছবি : সংগৃহীত

এবারও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় গৌরবময় ফলাফল অর্জন করেছে চরমোনাই আহছানাবাদ রশীদিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (১২ মে) ঘোষিত ফলাফলে এ বছর দাখিল সাধারণ, বিজ্ঞান ও কারিগরি শাখায় ২৯জন শিক্ষার্থী এ প্লাস, ৬২ জন এ গ্রেড ও ৬ জন এ মাইনাসসহ মোট ৯৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। 

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মাদরাসাগুলোর মধ্যে চরমোনাই মাদরাসা বরাবরই ঈর্ষণীয় ফলাফল করে আসছে।

ভালো ফলাফলের জন্য চরমোনাই কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী মহান রব্বুল আলআমীনের মহান দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছেন।

ফলাফলের ঐতিহ্য ধরে রাখায় চরমোনাই মাদরাসার সকল ছাত্র, শিক্ষক, গভর্ণিং বডির সদস্য এবং সকল ছাত্র অভিভাবক, দাতাসদস্য, বিভিন্নভাবে সহযোগী ও শুভাকাঙ্খীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রিন্সিপাল।

উল্লেখ্য, এ মাদরাসার দাখিল শাখায় ভোকেশনাল (কারিগরি), আলিম জামায়াতে বিজ্ঞান, ফাযিলে আল কুরআন, আল হাদীস ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে অনার্স কোর্স এবং কামিলে হাদীস, তাফসীর ও ফিকহ বিভাগ চালু আছে।

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১২:১৮ এএম
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন: নাহিদ ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম।’

প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি... যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণ-অভ্যুত্থানের পর। দেশের পরিবর্তন, সংস্কার.....। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে।’

‘আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো’ বলেন নাহিদ ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন গঠিত এনসিপির নেতা।

নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, ‘আমাদের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন। এবং সবগুলা দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন। সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

নাহিদ ইসলাম জানান, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ।’

এই আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জানিয়েছেন ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ তিনি।

‘উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবতেছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়.... সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

প্রসঙ্গত আজই অন্তর্বর্তী সরকারের দুইজন উপদেষ্টা এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ বা অব্যাহতি চেয়েছে বিএনপি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর চলমান আন্দোলন থেকে আজ দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। পরে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে বিএনপি এই দুই উপদেষ্টাসহ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানেরও অব্যাহতি দাবি করেছে।

এদিকে, বিএনপির এই দাবির পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টাকে ‘বিএনপির মুখপাত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পদত্যাগে বাধ্য করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এনসিপির এক শীর্ষ নেতা, তবে তা ‘সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়ন না হলে’।

এই তিনজন হলেন— আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।

এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পূর্বের যে কোনো বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের কারণে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা

সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের পরিচয় প্রকাশ

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১১:২৮ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ১১:৫২ পিএম
সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের পরিচয় প্রকাশ
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দিনগত রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর ওই নামগুলো প্রকাশ করে। এছাড়াও ওই ব্যক্তিদের কোন পরিস্থিতিতে এবং কেন আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল সেটিরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

আইএসপিআর জানিয়েছে, তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ জন ব্যক্তিবর্গের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হলো।

আইএসপিআর আরও জানায়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর কতিপয় কুচক্রী মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলশ্রুতিতে, সরকারি দপ্তর, থানাসমূহে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরণের সংবেদনশীল ও নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়। এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল। এই প্রেক্ষিতে ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজন (স্ত্রী ও শিশু) সহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল।

আইএসপিআর জানিয়েছে, সেসময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ১ থেকে ২ দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে ৫ জনকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা মামলা হলে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে গত ১৮ আগস্ট আইএসপিআর এর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই দিনে ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়। তাই সকলকে এই ধরণের বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।

আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা:

আলমগীর হোসেন/এমএ/

 

১ জুন থেকে রেল স্টেশনে মোবাইল কোর্ট

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম
১ জুন থেকে রেল স্টেশনে মোবাইল কোর্ট
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে আগামী ১ জুন থেকে গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে এ তথ্য জানানো হয়। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো.আফজাল হোসেনসহ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় যাত্রীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময় প্লাটফর্মে বিনা টিকেটের যাত্রী প্রবেশ প্রতিরোধ, টিকিট কালোবাজারি, বিনা টিকেটে ভ্রমণ, ঝুঁকিপূর্ণভাবে ছাদে ভ্রমণ, নির্দিষ্ট প্লাটফর্ম ছাড়া অন্যত্র যাত্রী উঠানামা ও স্টেশন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি যেকোনো কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন রেলপথ সচিব। 

ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকলেও পাওয়ার কার, খাবার গাড়ি ও ইঞ্জিনে যেন কোনো যাত্রী উঠতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতেও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জয়ন্ত সাহা/সুমন/

চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না
‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ’ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। ছবি: খবরের কাগজ

নিজেদের পাওনা বা অধিকার বিষয়ে অজ্ঞতার কারণেই চা শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গুটি কয়েক চা শ্রমিক নিজেদের সুবিধা নিতে সব চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করছেন।’ এ সময় এমন রাজনীতি থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘চা বাগানের অনিয়মই চা শ্রমিকদের প্রধান অন্তরায়। কাজেই চা শ্রমিকদের উন্নয়ন করতে চাইলে, চা বাগানের অনিয়মকে আগে ভাঙতে হবে এবং বাগানের প্রতিটি শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করতে হবে।’

ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স সম্প্রতি ‘নারী চা শ্রমিকদের অধিকার, সেবা প্রাপ্তিতে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা ও আইনগত প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। এই গবেষণা ফলাফল এবং ‘আমরা পারব’ নেটওয়ার্কের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে আলোচনা হয় এ অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে চা বাগান থেকে আগত নারী চা শ্রমিক ও ‘আমরা পারব’ নেটওয়ার্ক এর সদস্যরা অতিথিদের কাছে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

তারা বলেন, ‘চা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা এ মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন মজুরি নির্ধারণ করতে হবে যা দিয়ে তারা পরিবারসহ মর্যাদাপূর্ণ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন। তাদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম দারিদ্র্যের আবদ্ধতা থেকে মুক্ত হতে পারে। এ ছাড়া শ্রম আইনের কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যেন মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে না পারে।’

সভার প্রধান অতিথি মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান বলেন, ‘সরকারের প্রতিটা সেক্টরেই বিধি অনুযায়ী সার্ভিস ব্যবস্থা চালু রয়েছে, কিন্তু যথাযথ মনিটরিং ম্যাকানিজম না থাকায় উল্লিখিত সার্ভিসসমূহ নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সামাজিক সুরক্ষা প্রোগ্রামসমূহে চা শিল্পের শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তিকরণে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’  

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের অন্যতম একটি শিল্প হলো চা শিল্প, যেখানে একটা বড় জনগোষ্ঠী শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত। কিন্তু অন্যান্য সেক্টরের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন হলেও এই চা শিল্পের শ্রমিকদের তেমন কোনো উন্নয়ন খুঁজে পাওয়া যায় না, এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ কমিশন অবশ্যই খতিয়ে দেখবে।’

ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের নির্বাহী কমিটি সদস্য ইকবাল জিল্লুল মজিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা।

তিথি/সুমন

এনবিআর এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই: অর্থ মন্ত্রণালয়

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম
এনবিআর এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই: অর্থ মন্ত্রণালয়
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে জারি করা ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, দুটি নতুন বিভাগের জন্য অ্যালোকেশন অব বিজনেস (কার্যপরিধি নির্ধারণ) এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এসব আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ। এ কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ১২ মে জারি করা রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৫ জন সদস্য এবং এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দুজন প্রতিনিধি, রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টারা সবার বক্তব্য ধৈর্যসহকারে শোনেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় উত্থাপিত সব বিষয় অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত দেন যে, ‘রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে জারি করা অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর বাস্তবায়ন করা হবে।’

এমন ফলপ্রসূ আলোচনার পর বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। কিন্তু তা মেনে না নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ পুনরায় অসহযোগ আন্দোলনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ যেমন, দুইটি বিভাগের নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন, পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, সচিব কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন ইত্যাদি সম্পাদন করতে হবে- যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ বিষয়।

তাছাড়া, দুটি নতুন বিভাগের জন্য অ্যালোকেশন অব বিজনেস এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এসব আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ। যেহেতু এই কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আজ রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত দুজন সদস্যের মধ্যস্ততায় দিনব্যাপী দফায় দফায় আলোচনার একপর্যায়ে তাদের পাঠানো সমঝোতা প্রস্তাব সম্পূর্ণ মেনে নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেহেতু অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বাস্তবায়ন করার কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ, সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কার্যক্রম আগের মতো অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায় সব কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।

বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এনবিআরের সব কার্যক্রম আগের ন্যায় অব্যাহত থাকবে।

কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যদের কোনো পদ-পদবি কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই, বরং সংস্কারকাজ সম্পাদন হলে তাদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগ আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।

রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে অর্থবছরের শেষ সময়ে জাতীয় বাজেট কার্যক্রম এবং রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস সময়ে দপ্তরে উপস্থিত থেকে তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম চালু রেখে এবং করদাতাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।