গরমে অঞ্চলভেদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, রোববার, ১২ মে ২০২৪

গরমে অঞ্চলভেদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
গরমে অঞ্চলভেদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী
আগারগাঁওয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন শিক্ষামন্ত্রী। ছবি: খবরের কাগজ

শুধুমাত্র কয়েকটি জেলার তাপমাত্রা বাড়ার কারণে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাকে অযৌক্তিক হিসেবে দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ অভিমত দেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে যে পূর্বাভাস পেয়েছি বাংলাদেশের পাঁচটি জেলায় ৪০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রার সম্ভাবনা আছে। তাপমাত্রা ৪০ এর ওপরে যাওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। সুতরাং পাঁচটি জেলার তাপমাত্রা ৪০ এ যাওয়ার ওপর ভিত্তি করে সারা বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়াটা যুক্তিযুক্ত নয়।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র ঢাকার শহরের তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে এই মানসিকতা পরিহার করতে হবে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, জেলায় যদি তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে যায় সেখানে জেলা শিক্ষা অফিসে জেলা মাধ্যমিক অফিসার আছেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আছেন তারা আঞ্চলিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে পারেন এবং সময়সীমা পরিবর্তন করতে পারেন।

কবির/অমিয়/

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়নের তাগিদ সৌদি আরবের: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম
রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়নের তাগিদ সৌদি আরবের: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়া ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকের পাসপোর্ট নবায়নের বিষয়ে তাগিদ দিয়েছে সৌদি সরকার। এ বিষয়ে সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করে।

রবিবার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর নিকুঞ্জে হোটেল লা মেরিডিয়ানে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গিয়েছিল। এর সংখ্যা কত তা আমাদের জানা নেই। তারা আমাদের জানিয়েছে ৬৯ হাজার। সৌদি আরবের নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট না থাকলে তাদের ফেরত পাঠায়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে সৌদি আরবের একটি চুক্তি হয়েছিল, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবে না, তাদের কাগজ রিনিউ করে দেওয়া হবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা স্লো যাচ্ছি কেন? বা আমাদের কোনো অসুবিধা আছে কি না সেটা দেখার জন্য তারা এসেছিলেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমাদের উভয় দেশের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমাদের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, কোস্টগার্ড ও পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি আরবের প্রতিনিধিদল উভয় দেশের বন্দি বিনিময় চুক্তির বিষয়ে প্রস্তাব করেছে। বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। যদি সৌদি আরব এই চুক্তি করে তবে ভালো হবে। বাংলাদেশ থেকে তাদের সিকিউরিটি গার্ডের জন্য আনসার পাঠানোর কথা বলেছি। এ বিষয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। আপনারা জানেন যে ভিআইপি নিরাপত্তার জন্য আনসারদের আমরা গার্ড রেজিমেন্টের হিসেবে তৈরি করেছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা বলেছি, এটি তারাও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছেন। রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে যত তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো যায়, সেটি নিয়ে তারা কাজ করছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভিসা ওয়েভার রয়েছে। ইউএইএর সঙ্গে আমাদের কথা চলছে, ভবিষ্যতে ইউএইএর সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হবে। সৌদি আরব আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে।’

সৌদি আরবে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গার দায়িত্ব কোনো রাষ্ট্র নেবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরব কিন্তু ফেরত পাঠাবে না কাউকে। আবার রোহিঙ্গাদের ওই দেশের নাগরিকত্ব দেবে না। তবে কীভাবে থাকবে। সে জন্য তাদের কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন, সে জন্য তারা আমাদের অনুরোধ করেছিল। আমরা গত বছর সেটি সই করেছিলাম। সেখানে আমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে তারা এসেছিলেন।’

সৌদিতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা কি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছিল। সুতরাং আমরা শুধু তাদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দেব। তাদের নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে যেমন আছে তেমনি থাকবে।’

হজে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা এবার কেমন থাকছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এবার হজ নিয়ে সুন্দর ব্যবস্থাপনা হয়েছে। আমাদের দেশের ইমিগ্রেশন সিস্টেম চালু হয়েছে। এখানে ইমিগ্রেশন করে আর অপেক্ষা করতে হবে না। এদিকে সৌদি আরব রোড টু মক্কা বলে আরও একটি সিস্টেম চালু করেছে। হজযাত্রীরা তাদের লাগেজ এখানে জমা দেবেন। সৌদিতে হজযাত্রীদের যে হোটেল রয়েছে সেখানে তাদের লাগেজ পৌঁছে দেওয়া হবে। আমি আশা করছি, হজযাত্রীরা এই সুযোগটি নেবেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনায় সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সৌদিতে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন। ভবিষ্যতে এই সুযোগ আরও বাড়বে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’

খাজা/এমএ/

মা দিবসে খাবার বিতরণ ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
মা দিবসে খাবার বিতরণ ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে দুস্থ ও ছিন্নমূল মায়েদের মধ্যে দুপুরের খাবার ও পানি বিতরণ করেছে ডিএমপির ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগ। মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার অংশ হিসেবে রবিবার (১২ মে) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও জুরাইন পুলিশ বক্সে আশপাশের দুই শতাধিক ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে এ খাবার বিতরণ করা হয়।

এদিন দুপুর ১২টায় যাত্রাবাড়ীর গোল চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম। এ সময় ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সুলতানা ইশরাত জাহান, সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক ডেমরা জোন) মোস্তাইন বিল্লাহ ফেরদৌস, সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক যাত্রাবাড়ী জোন) তানজিল আহমেদ ছিলেন।

ডিএমপির ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম বলেন, সন্তানের জন্য মায়েদের ত্যাগ অপরিসীম। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মায়েরা অধিকাংশ সময় নিজেরা না খেয়ে তাদের সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেন। ঢাকা মহানগরীতে ছিন্নমূল, দুস্থ ও অসহায় এমন মা আছেন যারা মাসের পর মাস নিজেরা একবেলা ভালো খাবার খেতে পান না। তাই বিশ্ব মা দিবসে সে সব মায়েদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার অংশ হিসেবে ছিন্নমূল মায়েদের জন্য একবেলা ভালো খাবারের আয়োজন করেছি।

মাঠ পর্যায়ে এ কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (যাত্রাবাড়ি) পবিত্র বিশ্বাস, ট্রাফিক  ইন্সপেক্টর (জুরাইন), ইসমাইল হোসেন ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (পোস্তগোলা) মনির আহমেদ।

শুধু অর্থবিত্তে উন্নত নয়, উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৬:০৬ পিএম
শুধু অর্থবিত্তে উন্নত নয়, উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। বাংলাদেশে করাপশনটা একদিনে তৈরি হয়নি। অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমাদের গৌরব, আমাদের অহংকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে সবকিছু ম্লান হয়ে গিয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করার মধ্য দিয়ে মূলত দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ডকে এবং হত্যাকারীদেরকে যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে; সমাজ, রাষ্ট্র সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। সেই জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ ছিল। সে জঘণ্য হত্যাকাণ্ডের বিচার  কার্যক্রম সম্পন্ন করা আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল-যারা ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে, লক্ষ লক্ষ মা বোনকে নির্যাতন করেছে সেসব হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা‌। 

আমরা গর্ব করে বলতে পারি, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে, বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে পেশাদারত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র তৈরি করার যে মহাপরিকল্পনা ছিল-সেই জায়গা থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। এ ধরনের পদক্ষেপ, এ ধরনের উদ্যোগ, এ ধরনের সমাজ গঠনের পদক্ষেপ আমাদেরকে আরও বেশি এক্ষেত্রে উৎসাহিত করবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে। আমরা চাই  ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ। উন্নত বাংলাদেশ মানে শুধু অর্থবিত্তের মধ্য দিয়ে উন্নত হওয়া নয়, উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্বের সুখ সুবিধা আমাদের মধ্যে থাকবে। সেই ধরনের উন্নত বাংলাদেশ চাই, যেখানে সমগ্র পৃথিবী এই বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ববোধ করবে, অহংকার করবে। আমরা যে উন্নয়নের রোল মডেল তৈরি করেছি সে রোল মডেল এখানেই সীমাবদ্ধ না। আমরা তাবত দুনিয়াকে দেখাতে চাই, আমরা ৭১ সালে রক্তের বিনিময়ে মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে দেশ তৈরি করেছি- সে বাংলাদেশ সমগ্র পৃথিবীর জন্য তৈরি করেছি, শুধু আমাদের জন্য  নয়।

প্রতিমন্ত্রী রবিবার (১২ মে) ঢাকায় হোটেল সোনারগাওয়ে ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মেরিটাইম এন্টি-করাপশন নেটওয়ার্ক (এমএসিএন) বাংলাদেশ রিপোর্ট লঞ্চ ইভেন্ট এবং মেরিটাইম ব্যবসা-বাণিজ্যে জালিয়াতি প্রতিরোধ’ শীর্ষক যৌথ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, এমএসিএন-এর দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র নেতা জোনাস সোবার্গ আরল্যান্ডসেন (Jonas soberg erlandsen), এমএসিএন বাংলাদেশ প্রকল্পের নেতা কমডোর (অব.) সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আব্দুল কাদির, ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক শাহামিন জামান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেরিটাইম সেক্টরে দুর্নীতিকে "না" বলার জন্য সম্মিলিত আওয়াজ তোলার লক্ষ্যে মেরিটাইম এন্টি-করাপশন নেটওয়ার্ক (এমএসিএন) গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে। বাংলাদেশে দুর্নীতি উদ্বেগজনক অবস্থায় নেই, তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ব্যবসায়িকদের বৈশ্বিক মান অনুসরণ করার জন্য এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এমএসিএন সামুদ্রিক সেক্টরে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করেছে এবং মূল স্টেকহোল্ডারদের একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসেছে যাতে অখণ্ডতার একটি জোট গড়ে তোলা যায়। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের ৯০% এর বেশি সমুদ্র পথে হয়ে থাকে। যার পরিমাণ ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিবছর চার হাজারের বেশি বাণিজ্য জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে আসছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বাড়ছে। এগুলো সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী  দেশরত্ন শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ব্যবসাবান্ধব সরকারের কারণে। এ সরকারের আমলে বন্দরের গতিশীলতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প  দিয়েছেন। এই রূপকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে পায়রা বন্দর স্থাপন করা হয়েছে। মোংলা বন্দরের আউটার বার ও ইনার বারে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন, গ্যান্ট্রি ক্রেন এবং অন্যান্য হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। বে-টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ চলমান। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর বাংলাদেশের জন্য বড় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সুযোগ তৈরি করবে এবং এটিকে একটি আঞ্চলিক সামুদ্রিক কেন্দ্রে পরিণত করবে। বৈশ্বিক সামুদ্রিক ব্যবসায় অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, এই বছর আমরা বাল্ক কার্গো পরিবহনে ০.৪৭% বৃদ্ধি বজায় রাখতে পেরেছি। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ৩.০৫ মিলিয়ন টিইউইজ (২০ ফুট দৈর্ঘ্যে) কন্টেইনার হ্যান্ডেল করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা তিনগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০৪০ সাল নাগাদ এটি ৪৮.২ মিলিয়ন টিইউইজ-এ পৌঁছাবে। এই ধরনের বাণিজ্য পরিস্থিতিতে বন্দর এবং বাংলাদেশের অন্যান্য সকল মেরিটাইম স্টেকহোল্ডারদের সুবিধার উন্নতি করতে হবে এবং নিয়ন্ত্রক সম্মতি নিশ্চিত করতে হবে।

বর্তমান সরকার ব্যবসার পরিবেশকে বৈশ্বিক মানদন্ডে উন্নীত করার জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করছে। বন্দর ও নৌপরিবহন পরিচালনায় ডিজিটালাইজেশনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কনটেইনারগুলির স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং, বন্দর, এজেন্ট এবং কাস্টমসের মধ্যে শিপিং তথ্যের ডিজিটাল আদান-প্রদান আজকাল নতুন কিছু নয়। এগুলো পোর্ট অপারেশনে ভূমিকা রাখছে। বিশ্বব্যাপী র‌্যাঙ্কিংয়ে উচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে কাজ করছে। সামুদ্রিক শিপিং একটি বিশ্বব্যাপী খাত যেখানে স্বচ্ছতা এবং সম্মতির বিষয়গুলি বিশ্বব্যাপী দেখা উচিত। স্বচ্ছতা এবং সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য একটি সুরক্ষিত রিপোর্টিং চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করতে হবে যাতে জাতীয় কর্তৃপক্ষ ভুলগুলো লক্ষ্য করতে পারে এবং যখনই প্রয়োজন হয় তখন হস্তক্ষেপ করতে পারে।

মুখস্তবিদ্যায় নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
মুখস্তবিদ্যায় নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শিক্ষার্থীদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশে বিশেষ করে মুখস্তবিদ্যায় নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (১১ মে) সকালে গণভবনে ডিজিটালভাবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশের সময় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শুধুমাত্র মুখস্তবিদ্যা শিখবে না, একটা শিশুর ভেতর যে মেধা ও মনন থাকে তাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া। তার এ মেধা দিয়েই যেন সে এগিয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের শিক্ষা কারিকুলাম এবং শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় বাচ্চাদের হাতে খেলনার মাধ্যমেই অনেক কিছু তৈরি করা বা অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে। তাদের কেবল বই দিয়ে বসিয়ে না রেখে খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া যেমন- ফ্লোরে যদি একটি মানচিত্র থাকে যেখানে মহাদেশ ও মহাসগর থাকলো, সেখানে বাচ্চাদের শেখানো যে একটা জায়গা থেকে আর একটা জায়গায় তোমরা লাফ দিয়ে যাও। তাহলে খেলতে খেলতেই সে ওই নামগুলোও জেনে যাবে। কাজেই খেলার মাধ্যমে তাদের শিক্ষা যেন প্রাথমিক পর্যায়ে আসে সেটা করে দেওয়া যায়। তা করলে আমার মনে হয় তাদের কতগুলো মহাদেশ আর মহাসাগর তা মুখস্ত করতে হবে না।’

তিনি বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা আওয়ামী লীগ সরকারই শুরু করেছে। গত ১৫ বছরে ৫ হাজার ৯৭টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ আমরা প্রণয়ন করেছি। সেই সঙ্গে শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ সবধরণের সুযোগ-সুবিধা আমরা সরকারে আসার পর দিয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবই বলে গেছেন; শিক্ষায় যে অর্থ ব্যয় হয় সেটা বিনিয়োগ। আমরা বিনিয়োগ করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু সাধারণ বিএ-এমএ পাস নয়, সঙ্গে সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তিসহ সার্বিকভাবে শিক্ষিত হওয়ায় জন্য যা যা দরকার সে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্ব পরিমণ্ডলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো শিক্ষা ব্যবস্থাই আমরা প্রবর্তন করতে চাই। 

৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে এমনও দেখা গেছে, মাসের পর মাস ফল প্রকাশ হয়নি। তবে আমরা এটাকে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে এসেছি। এমনকি কোভিড-১৯ এর নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সময়মতো ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছিল। 

তিনি বলেন, এখন থেকে উদ্যোগ নিতে হবে, কী কারণে আমাদের ছাত্র কমে যাচ্ছে। পাশের হারের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরাই অগ্রগামী। সেটা খুব ভাল কথা, তারপরও অমি বলবো এক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। 

এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্যদের পাশাপাশি তাদের বাবা-মা, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও অভিনন্দন জানান। 

যারা কৃতকার্য হতে পারেনি তাদের মন খারাপ না করতে বলেন।

তিনি বলেন, কারও জীবনে একবারের জন্য এমন ঘটনা আসতে পারে। তবে তারা যদি উদ্যোগ নেয় এবং মনযোগী হয় তাহলে আগামীতে পাশ করতে পারবে। কাজেই সেই আস্থা নিয়েই তাদের চলতে হবে।

শিক্ষার চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোনো জাতির দারিদ্র বিমোচন সম্ভব নয়। এটা আমি বিশ্বাস করি। আজকের ছেলে-মেয়েরাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন হবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের কল্যাণ এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সম্মিলিত ফলাফলের পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। 

এরপর নয়টি সাধারণ, একটি মাদরাসা বোর্ডসহ ১০টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কারিগরি বোর্ডের মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফলের পরিসংখ্যান হস্তান্তর করেন। সূত্র: বাসস

পপি/

৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাস করেনি কেউ

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাস করেনি কেউ
ছবি: খবরের কাগজ

এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪। তবে এবার ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর এমন প্রতিষ্ঠান ছিল ৪৮টি।

রবিবার (১২ মে) প্রকাশিত ফলাফলে জানা গেছে, এবার সারা দেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থী। এর আগের বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন পরীক্ষার্থী। এবার গত বছরের চেয়ে এবার ১ হাজার ৪৪৯ জন কম জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক শুন্য ৪ শতাংশ।

রবিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের তথ্য তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সেখানেই তিনি ফলাফল প্রকাশ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। 

বেলা ১১টায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অনলাইনের পাশাপাশি এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করা যাচ্ছে। 

ফলাফল ঘোষণার পর শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সংবাদ সম্মেলন করেন।

এবার যশোর বোর্ডে সর্বোচ্চ পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। 

চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছর ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

সাদিয়া নাহার/অমিয়/