মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ । খবরের কাগজ
ঢাকা ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৫ এএম
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ
মিল্টন সমাদ্দার

সম্প্রতি চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ওই সংবাদে বলা হয়, মানবসেবার আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের ‘নির্মম ও বর্বরোচিত’ চিত্র ফুটে উঠেছে। এদিকে এই ঘটনায় আসল রহস্য কী, সেটা তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

পুলিশ সূত্র জানায়, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গোয়েন্দারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তারা সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করছে। তথ্যপ্রমাণ সঠিক হলে তাকে আটক করা হতে পারে।

অবশ্য এসব বিষয় নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেছেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সেসব সংবাদ প্রচার হয়েছে, সেটি যদি সত্যি হয় অথবা কোনো অভিযোগ আসে তাহলে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’

এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে কমিশন তদন্তের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। কমিশন থেকে সংস্থা দুটিকে দ্রুত তদন্ত শেষে আগামী ৩০ মের মধ্যে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।

ইউশা রহমান জানান, গত ২৫ এপ্রিল দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে আসে। গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালে না নিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে আটকে রাখা, ভুয়া ডাক্তার কর্তৃক মৃত্যুর সার্টিফিকেট তৈরি করা কিংবা লাশের শরীরে কাটাছেঁড়ার যে তথ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তার যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত মর্মে কমিশন মনে করে। এ অবস্থায় অভিযোগের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক দ্রুত কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য ডিএমপি কমিশনারকে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পর্কে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বলা হয়েছে। আগামী ৩০ মে প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, মিল্টন সমাদ্দার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের বৃদ্ধাশ্রম গড়ে রাস্তা থেকে অসুস্থ কিংবা ভবঘুরেদের কুড়িয়ে সেখানে আশ্রয় দেন। সেসব নারী, পুরুষ ও শিশুকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করে প্রায়ই তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করতে দেখা যায়। মানুষের অসহায়ত্ব তুলে ধরে তাদের জন্য বিত্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তার আবেদনে সাড়া দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ১৬টির বেশি নম্বর এবং তিনটি ব্যাংক হিসাবে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা জমা হয়। এর বাইরে অনেকেই তার প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অনুদান দিয়ে আসেন। মানবিক কাজের জন্য এখন পর্যন্ত তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার। কিন্তু মানবিকতার আড়ালে তিনি ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন বলে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

খাজা/

এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন নিজের চেয়েও বেশি নাবিকদের নিয়ে চিন্তা করেছি

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ০১:২৫ এএম
নিজের চেয়েও বেশি নাবিকদের নিয়ে চিন্তা করেছি
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ

প্রায় ছয় মাস পর বাসায় পৌঁছে মেয়ের আবদার রক্ষায় কেক কাটলেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে চট্টগ্রামের মাটিতে পা রেখেই প্রথমে যান জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা সেরে রাত পৌনে ১০টার দিকে ফ্লাইটে ঢাকা যান তিনি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্যাপ্টেনকে রিসিভ করেন স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে। সেখান থেকে বসুন্ধরা আবাসিকের বাসায় পৌঁছে মেয়ের আবদারের কেক কেটে বাবার আগমনের উৎসব করেন বাসায়। 

ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদের বাড়ি চট্টগ্রামের গোসাইলডাঙ্গা এলাকায়। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। মেয়ের লেখাপড়ার সুবিধার কথা বিবেচনা করেই ঢাকায় বসবাস করছেন। তবে আগামী কোরবানির ঈদে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে আসবেন। বাসায় ফেরার প্রথম দিনে ক্যাপ্টেনকে সাবেক কলিগ ও বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনরা ফোন করেছেন। খোঁজখবর নিয়েছেন সবাই।
 
বাসায় পরিবারের কাছে ফেরার অনুভূতির কথা জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাসায় পৌঁছে বাবা-মেয়ে কেক উৎসব করেছি। আমার জন্য স্পেশাল কেক করা হয়েছে। সেটি কেটে খেয়েছি পরিবারের সবাই মিলে। বাসায় পরিবারের কাছে থাকা প্রশান্তির ব্যাপার। গতকাল বিভিন্ন জনের ফোন রিসিভ করে কথা বলতে বলতে দিন পার করেছি। সবাই খোঁজখবর নিচ্ছেন, ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইছেন। অনেকে ফোন করে বলেছেন জিম্মি থাকা অবস্থায় দোয়া করেছেন।’
 
জিম্মি থাকার বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ক্যাপ্টেন বলেন, ‘জিম্মিদশায় মুখে সাহসের কথা বললেও অন্তরে ভয় ছিল। সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করতে চাই না। তবু বলতে হয়, অন্য ২২ নাবিকের দায়িত্ব আমার ওপর ছিল। আমি জাহাজের মাস্টার। তাদের জীবন রক্ষা, নির্যাতন থেকে রক্ষা করা এসব বিষয় সব সময় চিন্তা করতাম। তাদের খাবার, পানির ব্যবস্থার চিন্তা করতে হতো। আমার নিজের চেয়েও বেশি নাবিকদের নিয়ে চিন্তা করেছি। কবে এই জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হব, সেটিই মাথায় বারবার ঘুরপাক করত। অবশেষে আমরা মুক্ত করতে পেরেছি এবং নাবিকরা ফিরে এসেছেন বাড়িতে।’ 

ক্যাপ্টেনের মনোবল শুরু থেকেই শক্ত ছিল। ফলে জাহাজ জিম্মি হওয়ার পর থেকে ক্যাপ্টেনের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার এনি তেমন বিচলিত ছিলেন না। কারণ তিনি জানতেন চলার পথে এ ধরনের বিপদ আসতে পারে। তবে আজ হোক কাল হোক- এর একটা সমাধান হবেই। 

বুধবার বিকেলে ফাহমিদা আক্তার এনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাসায় মেয়ের আবদারের কেক কেটে উৎসব করেছি। ক্যাপ্টেনকে সুস্থ অবস্থায় পেয়েছি এটিই কাম্য ছিল। তবে আমার মনোবল শক্ত থাকার একটিই কারণ, আমি সব সময় ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল আমার সঙ্গে। ফলে আমার চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণই ছিল না। জিম্মি থাকা অবস্থায় জাহাজে কী ঘটত সবই আমার জানা ছিল, ক্যাপ্টেন জানাতেন। নাবিকদের এমনই জীবন বাসা থেকে গেলেই ৬-৭ মাস ফিরতে পারেন না। এভাবেই আমিও শক্ত হয়ে গেছি।’ 

ক্যাপ্টেন গত ২২ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের দায়িত্ব নেন। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে আসেন সিঙ্গাপুর। সেখান থেকে চট্টগ্রাম এবং পরে ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকে যায় জাহাজটি। ৪ মার্চ মোজাম্বিক ছেড়ে দুবাই যাওয়ার পথে ১২ মার্চ সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ। ফলে জিম্মি হন তিনিসহ ২৩ নাবিক। ১৪ এপ্রিল মুক্ত হয়ে দুবাই যায় জাহাজটি। সেখানে কয়লা খালাস করে পুনরায় চুনাপাথর লোড করে চট্টগ্রামে পৌঁছে এমভি আবদুল্লাহ। গত সোমবার নোঙর করে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। ১৪ মে চট্টগ্রাম বন্দরে উষ্ণ সংবর্ধনার মাধ্যমে পরিবারের কাছে ফেরেন নাবিকরা। 

চলছে মাঝারি তাপপ্রবাহ

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
চলছে মাঝারি তাপপ্রবাহ
খবরের কাগজ ডেস্ক

মৃদু তাপপ্রবাহ ছাড়িয়ে বুধবার (১৫ মে) শুরু হয়েছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আগামী শনিবার পর্যন্ত বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কায় জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পাবনা, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং রাঙামাটি জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি (তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অন্যান্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু (তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রির মধ্যে) তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) কোনো বৃষ্টিপাতের তথ্য রেকর্ড করা হয়নি আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪৪ স্টেশনে।

আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা খবরের কাগজকে বলেন, চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে একটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। ২২ তারিখের পরে একটা ঘূর্ণি বায়ুর আবর্তন হতে পারে। এটা থেকে লঘুচাপ পরে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে ও বিস্তার লাভ করতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস অনুযায়ী রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। 

শিং মাছের জিনোম উন্মোচন

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ১০:১১ পিএম
শিং মাছের জিনোম উন্মোচন
ছবি : খবরের কাগজ

জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, অতিরিক্ত আহরণ ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে দেশীয় শিং মাছ বর্তমানে হুমকির সম্মুখীন। তাই এই প্রজাতিকে টিকিয়ে রেখে খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রথমবারের মতো এই মাছের জিনোম সিকোয়েন্স (জীবনরহস্য) উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। বাকৃবির ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম ও তার গবেষক দল এটি উন্মোচন করেন। একই সঙ্গে এই মাছের পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্ত করেছেন তারা। 

বুধবার (১৫ মে) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে গবেষণার ফলাফল সবার সামনে তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গবেষক দল।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম এবং গবেষণাকাজে সাহায্যকারী মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নিত্যানন্দ, স্বর্ণা, হালিমা, জেসমিন, কানিজ এবং সারা উপস্থিত ছিলেন।

গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম জানান, ২০২০-২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্বাদু পানির মোট উৎপাদিত মাছের ২ দশমিক ৫২ শতাংশ আসে শিং ও মাগুর মাছ থেকে। স্ত্রী শিং মাছের বৃদ্ধি পুরুষ শিং মাছ অপেক্ষা ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। তাই এই মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদন অন্যতম একটি উপায়। সফলভাবে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন শনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে শিং মাছের জিন নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সংগৃহীত দেশীয় শিং মাছের নমুনা দিয়ে অধ্যাপক তাসলিমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ, জাপান ও সুইডেনের এক দল গবেষক গবেষণাকাজ শুরু করেন।

তিনি আরও জানান, পরবর্তী সময়ে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে দেশীয় শিং মাছের আটটি ফ্যামিলির প্রায় ৮০০টি পোনার নমুনা নিয়ে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সিকোয়েন্সিং ও জিন শনাক্তকরণের কাজ করা হয়। সর্বাধুনিক সিকোয়েন্সিং প্রযুক্তি ও সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে বায়োইনফরমেটিক অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে ওই জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সময়কালে গবেষণাকাজে অর্থায়ন করে জাপান সোসাইটি ফর দ্য প্রমোশন অব সায়েন্স (জেএসপিএস)।

গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম বলেন, গবেষণায় উদ্ভাবিত ড্রাফট জিনোম (প্রথমবার শনাক্তকৃত জিনোম) দিয়ে পুরুষ ও স্ত্রী শিং মাছ শনাক্ত করা সম্ভব, যা যেকোনো দেশীয় সব প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রে এই প্রথম। এর মাধ্যমে শুধু স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে করে প্রাকৃতিক জলাশয় ছাড়াও কৃত্রিম পদ্ধতিতে অধিক ফলনশীল স্ত্রী শিং মাছ চাষ করা সম্ভব হবে। শিং মাছের জিনোম থেকে শুধু পুরুষ ও স্ত্রী শিং মাছ নির্ধারণকারী জিন ছাড়াও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য দায়ী জিন শনাক্তকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রচলিত হরমোন প্রয়োগ পদ্ধতির পরিবর্তে মার্কার অ্যাসিসটেড সিলেকশনের (এমএএস) মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে, যা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব। গবেষণাকাজের ফলাফল চলতি বছরের মার্চে জাপানিজ সোসাইটি অব ফিশারিজ সায়েন্স আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ‘কনফারেন্স পেপার’ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য শিং মাছ অনেক উপকারী। বিশেষ করে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য এটি বিশেষভাবে সমাদৃত। দেশীয় মাছের অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় ভিন্নধর্মী এ প্রজাতিতে স্ত্রী মাছের উৎপাদন বেশি। আর পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণের এই গবেষণার ফলাফল স্ত্রী শিং মাছ শনাক্ত করে শিং মাছের উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় এ মাছটি সংরক্ষণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

দেশীয় শিং মাছ বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের একটি জনপ্রিয় ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের প্রজাতি। প্রতি ১০০ গ্রাম শিং মাছে রয়েছে ২২০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লৌহ উপাদান, যা লোহিত রক্ত কণিকার প্রধান উপাদান। এ ছাড়া এতে রয়েছে উন্নত মানের আমিষ ও ক্যালসিয়াম। পুষ্টি ও ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি খেতে সুস্বাদু, কম কাঁটা ও স্বল্প চর্বিযুক্ত হওয়ায় মাছটি বিশেষভাবে সুপরিচিত।

১৫৭ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৯:৪৩ পিএম
১৫৭ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
ছবি : সংগৃহীত

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ১৫৭ উপজেলায় তিন দিনের (৭২ ঘণ্টা) জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে ভোটের আগে পরে ২৪ ঘণ্টার জন্য ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক চলাচলও বন্ধ থাকবে।  

তবে ভোটারদের যাতায়াত সুবিধার্থে বাস চলাচল থাকবে সীমিত। এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা শাখা থেকে ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

ইসির তফসিল অনুযায়ী, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে এসব উপজেলায় ২১ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের জন্য ২০ মে রাত ১২টা থেকে ২১ মে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। 

একই সঙ্গে অধিক নিরাপত্তার স্বার্থে ভোটগ্রহণ উপজেলাগুলোতে আগামী ১৯ মে রাত ১২টা থেকে ২২ মে রাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নির্বাচনি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, যানজট নিরসন ইত্যাদি প্রয়োজনে বাস্তবতার নিরিখে ও স্থানীয় বিবেচনায় উল্লেখিত যানবাহন ছাড়াও যেকোনো যানবাহন চলাচলের ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। 

ইসির নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনি এলাকায় রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনি এজেন্ট, দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। তাছাড়া, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজ যেমন- অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। 

সেই সঙ্গে জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবেন। 

এলিস/সালমান/ 

করোনায় আক্রান্ত অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৯:০২ পিএম
করোনায় আক্রান্ত অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে তিনি সচিবালয়ে আসছেন না। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোগ্রামে যুক্ত হচ্ছেন। 

বুধবার (১৫ মে) সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয়কসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি জুমে এই দুই বৈঠকে যুক্ত হন। এ দুটি মন্ত্রিসভা কমিটির বাকি সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে উপস্থিত হয়ে বৈঠকে অংশ নেন।

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অংশ নেওয়া এক সদস্য জানান, অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠক হয়েছে। তবে তিনি সরাসরি বৈঠকে উপস্থিত হননি। কারণ তিনি করোনা পজিটিভ। এ জন্য জুমে বৈঠকে অংশ নেন।

তিনি আরও জানান, করোনা আক্রান্ত হলেও অর্থমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। তাকে দেখলে সুস্থ-স্বাভাবিকই লাগছে। মনে হয়েছে, তিনি ভালোই আছেন। কিন্তু করোনা পজিটিভ হওয়ার কারণে তিনি সচিবালয়ে আসছেন না। 

দেশের ১৮তম অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দিনাজপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবনে তিনি শপথ নেন।