আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে আরও গণমুখী ও ভোক্তাবান্ধব প্রণয়নে ১৯ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন ভলান্টারি কনজুমারস ট্রেনিং এন্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি (ভোক্তা)। সেই সঙ্গে বাজেটে ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি না করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, আইএমএফ’র চাপ সত্বেও কৃষি-বিদ্যুৎ খাতে ভর্তূকি এবং মূল্যস্ফীতি রোধ ও বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটির নেতারা।
রবিবার (৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল এসব পরামর্শ দেন।
এসময় আরও উপস্থিতি ছিলেন ভোক্তার চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর, ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন নওরোজ, পরিচালক (অর্থ) লুৎফর রহমান লিটন, পরিচালক ড. লতিফুল বারী, মহসীনুল করিম লেবু, সাইদুল আবেদীন ডলার, মিজানুর রহমান তালুকদার, ফজলুল হক, নূরুন নবী ও গোলাম কবীর প্রমুখ।
১৯ দফা সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রব্যমূল্য কমিয়ে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতায় আনতে চাল, ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ক ও মূসক সহনীয় পর্যায়ে রাখা ও বিলাসদ্রব্যসহ ধনীদের ব্যবহার্য পণ্যে শুল্ক-কর বৃদ্ধি, অতি মুনাফাখোরি ব্যবসায়ী গ্রুপগুলোর ওপর মনিটরিং জোরদার, বাজার সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং সীমিত আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির ভর্তুকিযুক্ত পণ্যের উন্মুক্ত বাজার সম্প্রসারণ করা। এছাড়া কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রতিরোধে কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে সরাসরি খুচরা বাজারে বাজারজাত করার ব্যবস্থা নেওয়া, কর্মহীনদের কর্মসংস্থান ও আয়-বৃদ্ধির পদক্ষেপ, বাজেট পরিকল্পনায় উৎপাদন ও যোগান বাড়িয়ে ব্যয়-সাশ্রয়ী নীতি চালিয়ে যাওয়া, উন্নয়ন সহযোগী গোষ্ঠীর চাপ সত্বেও সার ও জ্বালানি খাতে চাহিদা অনুযায়ী ভর্তুকি অব্যাহত রাখার প্রস্তাব, চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি রোধে বাজেটে ঔষধের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার ঘোষণা, কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিতে বাজেটে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দের ৫ শতাংশ, দুর্বল স্বাস্থ্য খাতকে পথ দেখাতে বাজেটে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ, বিশ্বমন্দা ও যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতায় কর্মহীন মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে অন্তর্ভুক্তি, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করা, শিল্প-কারখানায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি ক্রয়ে বিশেষ বরাদ্দ ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা, কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিল, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান ও বিদেশে অর্থ পাচারকারিদের চিহ্নিত করে পাঠানো অর্থ ফিরিয়ে আনা, ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবনতা হ্রাস, ভর্তুকির চাপ কমানোর অজুহাতে সার, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির দাম না বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
খলিলুর রহমান সজল বলেন, বিগত বছরগুলোতে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের আয় হ্রাস, কতিপয় অনৈতিক ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেশনের জালে আবদ্ধ নিত্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থা বাস্তবতায় দেশে ভোক্তাদের অবস্থা নাজুক। অধিকাংশ ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতাও সীমিত হয়ে আসছে।
শফিক/এমএ/