ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪

মঈন খানের প্রশ্ন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলের দেশে কেন শীতবস্ত্র বিতরণ করতে হয়

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলের দেশে কেন শীতবস্ত্র বিতরণ করতে হয়
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলের দেশে দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে হয় কেন- এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, কয়েক মাস ধরে আমরা শুনছি, যারা বর্তমান সরকারের পক্ষে আছে তারা বলছে যে বাংলাদেশ নাকি বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ। তা হলে আমি প্রশ্ন করতে চাই, এই দ্রুত উন্নয়নশীল দেশে প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে কেন গরিব-অসহায়দের কাছে কম্বল বিতরণ করতে হবে? তা হলে উন্নয়নটা কোথায়?

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘হাজার কোটি টাকা খরচ করে সরকার মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল তৈরি করেছে। তাদের বলতে চাই, তা হলে গরিব মানুষদের কেন একটা কম্বল দিতে পারে না? আমরা এই নির্বাচন বর্জন করেছি এবং আমাদের লক্ষ্য দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে প্রেসক্লাবের সামনে হাজির হয়েছি। এই দিনটি উপলক্ষে দেশে আনন্দ উৎসব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই দিনে ভিখারি মানুষদের কাছে কম্বল বিতরণ করতে হয়। আজ গায়ের জোরে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নিজেদের সরকার বলে দাবি করে তাদের প্রশ্ন করতে হবে, আজ দেশের ১৮ কোটি মানুষ কী চায়?’ 

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিশ্ববাসী জানে গত ৭ জানুয়ারি দেশে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। দেশের কোটি কোটি মানুষ ভোট বর্জন করেছে। নির্বাচনের এই স্বেচ্ছাচারিতার ব্যাপারে কেবল বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগের ভোটাররাও সমালোচনা করেছে। কে নির্বাচিত হবে এবং কে নির্বাচিত হবে না- এগুলো ভোটের আগে থেকে ঠিক করা ছিল।’ 

মঈন খান আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আমরা শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করি। রক্তের বিনিময়ে আমরা যে দেশ অর্জন করেছি, সেই রক্তের দামকে আমরা বৃথা যেতে দেব না। বাংলাদেশ তৈরি হয়েছিল গরিব মানুষদের অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য।’

জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (জেটেব) সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

শফিকুল/সালমান/

বেনজীরকে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে সরকার: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৯:৩১ পিএম
বেনজীরকে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে সরকার: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। ছবি : সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে দেশ থেকে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে সরকার বলে দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদকে যখন শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি নিরপরাধ ছিলেন কী না, এমন প্রশ্ন দেশবাসীর। বেনজীর তো এক দিনে গড়ে উঠেনি। সরকার হীনস্বার্থে বেনজীরকে ব্যবহার করেছে। 

রবিবার (২ জুন) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন। 

চরমোনাই পীর বলেন, সরকার ধর্মনিরপেক্ষতার নামে বিজাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে পৌত্তলিকতা মিশ্রিত নাস্তিকতাবাদী শিক্ষা নীতি চালু করে জনগণের ঈমান-আকিদা ধ্বংস করার জন্য বর্তমান সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এ দেশের জনগণ কখনও বিজাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি গ্রহণ করবে না।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি, নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, আলহাজ খন্দকার গোলাম মাওলা, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কৃষিবিদ আফতাব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।

শফিক/এমএ/

দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে : ১২-দলীয় জোট

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে : ১২-দলীয় জোট
ছবি : সংগৃহীত

১২-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে একটি করদ রাজ্যে পরিণত করতে চাইছে। আগ্রাসন ও গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে। দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে।

রবিবার (২ জুন) রাজশাহী মহানগরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা। 

জোট নেতারা বলেন, ‘আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতের বন্ধু হতে চাই। কিন্তু যে বন্ধু আমাদের শোষণ করবে, যে বন্ধু আমাদের ফারাক্কা, তিস্তা, টিপাইয়ের ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কি বন্ধু হতে পারে? আপনার দেশে গণতন্ত্র থাকবে, আর আমার দেশে গণতন্ত্র যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন, বাংলার মানুষ তা কোনোদিন গ্রহণ করবে না। গত ১৬ বছরে সীমান্তে ১২০০-এর বেশি নিরীহ নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশ আজকে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে আছে।’
 
তারা বলেন, ‘আমরা বিশ্ব সংবাদমাধ্যম ও দেশের সংবাদমাধ্যমে দেখছি, ভারতের ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে বিষক্রিয়া পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেগুলো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। সর্বশেষ যুক্তরাজ্য, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাও ভারতের পণ্যগুলো বাজেয়াপ্ত করেছে। তাদের দুটি ওষুধে ক্যানসারের মিশ্র উপাদান পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর, হংকং সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।’

জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মালেক চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব চাষী এনামুল হক, জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম প্রমুখ।

শফিকুল/সালমান/

দোষী সাব্যস্ত হলে বেনজীরকে দেশে ফিরতেই হবে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
দোষী সাব্যস্ত হলে বেনজীরকে দেশে ফিরতেই হবে: ওবায়দুল কাদের
ছবি : খবরের কাগজ

দোষী সাব্যস্ত হলে বেনজীরকে দেশে ফিরতেই হবে, সরকার কোনো ছাড় দেবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রবিবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত, মামলা, গ্রেপ্তার- সবকিছু একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সরকার এখানে দুদককে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতিবিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এদেশে ৭৫ পরবর্তীতে কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎসাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটা দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটা দেখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সরকারের সহায়তায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সরকারের কারা গিয়ে তাকে বিমানে তুলে দিয়েছে? কোন অথরিটি গিয়ে তাকে তুলে দিয়েছে? অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন না।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশ থেকে টাকা পাচারের সংস্কৃতি ও অর্থনীতি শুরু হয়েছে বিএনপির আমল থেকে। তারা ক্ষমতায় আসলে বিএনপি নেতারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের মহোৎসবে মেতে ওঠে। এটা দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠিত সত্য। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। পরপর পাঁচ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে।’

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। 

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি কোনো দেশে হয় না এই দাবি কেউ করতে পারে না। আমাদের দেশে যিনি প্রধানমন্ত্রী, সরকারপ্রধান তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা আপাদমস্তক সৎ রাজনীতিক, এটা বিশ্বে স্বীকৃত। তার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম ও সৎ জীবনযাপন করেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির প্রধান নেতাই দণ্ডিত পলাতক তারেক রহমান চিহ্নিত অপরাধী। এমন লোক যে দলে নেতৃত্ব দেয়, সেই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জনগণের বিশ্বাসও রাখতে পারেনা। তারা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরপর পাঁচ বার তারা দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিতেই বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে হঠাৎ করেই ৭ ধারা বাদ দিয়েছে।’

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চোরের রাজা মহারাজা হচ্ছে বিএনপি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

অমিয়/

‘পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মোড়কে আসছে আরেকটি বাজেট’

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
‘পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মোড়কে আসছে আরেকটি বাজেট’
ছবি : সংগৃহীত

দেশে মুদ্রাস্ফীতি আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকার পুঁজিবাদী তথা নয়া উদারনীতি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মোড়কে গত বছরের বাজেটই আবার পুনরায় উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। যুগপৎ অনুপার্জিত আয় এবং শোষণ প্রক্রিয়াকে ক্রমাগত তীব্র থেকে তীব্রতর করার মাধ্যমে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। তাই এবারের বাজেট সর্বমুখী বৈষম্য বৃদ্ধির ধারাকে আরও বেগবান করবে।’

আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫-কে সামনে রেখে রবিবার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সিপিবি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এই অভিমত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি নেতারা বলেন, স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে একটি সূচক ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে, তা হচ্ছে আয়বৈষম্য পরিমাপের সূচক। শহরে বৈষম্য সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রবৃদ্ধির গতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী। বিদেশে টাকা পাচারের প্রবণতায় খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। মানুষের বৈষম্য এক দেশে দুই অর্থনীতিকে দৃশ্যমান করে তুলেছে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক বৈষম্য, নারী-পুরুষের বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপরন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে অনেক এলাকায় বিশেষত উপকূলীয় এলাকায় জানমালের ও সুপেয় পানির ঝুঁকি বাড়ছে। বৈদেশিক দেনা বাড়ছে এবং ঋণ করে ঋণ পরিশোধের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অর্থ পাচার, বিনিয়োগের অভাব ও ঋণ-নির্ভরতার ফলে ডলারের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার মূলে রয়েছে একটি ধনিক গোষ্ঠী। অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী এবং অসৎ রাজনীতিবিদ- এই তিন শ্রেণি বর্তমান অর্থনীতির বৈদেশিক খাতে বিভিন্ন ধরনের সংকটের স্রষ্টা। তারাই আমদানি-রপ্তানির আন্ডার ইনভয়েস-ওভার ইনভয়েস করেন। তারাই হুন্ডির মাধ্যমে খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে তা বাইরে পাঠিয়ে দেন। তারা দুবাই বা মালয়েশিয়ায় বা বাইরের অন্যান্য দেশে নানা স্থাবর সম্পত্তি তৈরি করেন; দ্বৈত নাগরিকত্বের সূত্রে জাতীয় সুযোগ-সুবিধা সংগ্রহ করে অন্য দেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করেন।

দেশের গুরুত্বপূর্ণ নানা খাতে যথাযথ বিনিয়োগ না থাকার প্রসঙ্গ নিয়ে সিপিবি নেতারা বলেন, প্রয়োজনীয় উৎপাদনশীল বিদেশি প্রযুক্তিভিত্তিক বিনিয়োগের অভাবে সরকারের তথাকথিত বৈদেশিক বিনিয়োগগুলো শুধু বৃহৎ অবকাঠামো তৈরি করে চলেছে। কিন্তু ইপিজেড বা এসইজেডগুলো পুঁজির অভাবে তৃষ্ণার্তভাবে অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছে। আর দেশি বিনিয়োগও সেখানে এখনো আসছে না। যুদ্ধবিগ্রহ আর প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বৈশ্বিক নানা প্রেক্ষাপটে জরুরিভাবে প্রতিষেধক ব্যবস্থা না নিতে পারলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে সিপিবির প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান ও লক্ষ্মী চক্রবর্তী, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন ও লুনা নূর।

জামায়াতের রাজনীতি সমর্থন করি না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
জামায়াতের রাজনীতি সমর্থন করি না: মির্জা ফখরুল
জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘তবে জামায়াতের যে সাংগঠনিক কাঠামো তা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। নিজেরা নিজেরা পড়ালেখা করে ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। সে জন্যই বলি রাজনীতির জায়গায় রাজনীতি থাকুক। আপনারা গবেষণা করুন। থিংকট্যাংক হিসেবে কাজ করুন।’

রবিবার (২ জুন) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। 

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর ভাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক সামসুল আলম সেলিম, ডা. আবু নাসের প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকার দেশপ্রেমিক নয়, ওরা বর্গী। সে জন্যই দেশের টাকা লুটে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা আজ দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। জাতি এখন দ্বিধাবিভক্ত। জিয়াউর রহমান তো নিজে রাজনীতিতে আসেননি। তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল। ‘৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্ব দেখে ৭৫ সালে সৈনিকরা তাকে ফের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।’  

তিনি বলেন, ‘আজকে পত্রিকা খুললে শুধু লুট আর লুটের খবর। কারা লুট করছে? যারা বড় বড় কর্তা। সেই আর্মির প্রধান, পুলিশের সাবেক আইজি তারা কী করেছে? সংসদে ভদ্রলোক কয়জন খুঁজে পাবেন? বাংলাদেশ ব্যাংক লুট করছে। রিজার্ভের ডলার লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। শেয়ারবাজারে রথি-মহারথিরা লুট করছে। তারা এত বড় মানুষ তাদের পাশে যাওয়া যায় না। কেউ দরবেশ, কেউ মাফিয়া, কেউ হুজুর। আজকে চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণ গায়েব হয়ে গেছে। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই।’ 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলে মনে হয় তারা কী যেন হয়ে গেছে। আজকে তাদের বাহিনীর প্রধান (বেনজীর) কোথায়? আর তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি নাকি বেনজীর সম্পর্কে জানেন না। রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঋণের বোঝা বইতে হবে। মাথাপিছু ঋণ এখন ১৫৫ হাজার টাকা।’  

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানিসহ বড় বড় প্রকল্পের নামে যেসব চুক্তি করা হয়েছে তা কোনো দেশপ্রেমিক লোক করতে পারে না। আজকে আমাদেরকে দেশ রক্ষা করতে হলে জিয়াউর রহমানের মতো নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন। যেভাবে তারেক রহমান মাথা উঁচু করে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেটা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শরিক হই। জেলে যেতে হচ্ছে, মার খেতে হচ্ছে। তবুও বসে থাকলে চলবে না। রুখে দাঁড়াতে হবে।’  

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকের ছেলেমেয়েরা পড়তে চায় না। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জানতে হলে পড়তে হবে। না হলে তো জানা যাবে না। সে জন্য বই পড়তে হবে।’ 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক  ডা. গাজী মাজহারুল হক, অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক ড. আক্তার হোসেন, অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম, প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, ডা. মো. মেহেদী হাসান, প্রকৌশলী শাহীন হাওলাদার, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, অধ্যাপক ড. নাহারিন ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট নাদিম ভূঁইয়া, মিসেস শামিমা রহিম, দবির উদ্দিন তুষার, ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম তারিক।

শফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/